সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের সৌম্য সিনহা

কিছু কিছু স্মৃতি। কিছু কিছু সময়কে ভোলা যায় না কিছুতেই। আসলে এই সব ফেলে আসা সময়। ফেলে আসা মানুষজনকে নিয়েই তো দিন রাত দুপুর বিকেল সন্ধ্যার যুদ্ধ লেগে থাকতো একটা সময়। যে যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে গিয়ে এক এক সময় ভালোই লাগে আমার। আবার এক এক সময় মনে হয় এই তিন চাকার টোটোর জীবন ভালো, না দু পায়ের শিরদাঁড়ার জোরে সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারা নুয়ে পড়া, ভেঙে পড়া, পায়ে লুটিয়ে পড়া মানুষের জীবন ভালো। কে জানে কোনটা ভালো।


 আজ একটা টোটো চালকের একটি লেখা পড়ে আমার এক পুরোনো দিনের বন্ধু বলা যায় না মনে হয় সেই পর্যায়ে আমাদের সম্পর্ক নয় দুজনের কারুরই। এক সময়ের কাজের জায়গার সহকর্মী হিসেবে পুরোনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করা আর কি। যাঁদের ঠিক বন্ধু বলা যায়না কিছুতেই। যে আমার একটা লেখা পড়ে আজ আমায় লিখলো টোটো চালকের লেখা ভালো। যা খুব একটা কেউ বলে না আমায় আর কেউই। কারণ আমার এই তিন চাকার জীবনের সাথে দু পায়ের জীবনের ফারাক যে অনেক। 

সেই ভালো শুনেই আমি একেবারেই গলে জল। রাগ অভিমান দুঃখ অপমান কাটিয়ে লিখতে ইচ্ছা হলো আমার তাঁকে নিয়ে। সেই সাংবাদিক, কবি, সদা হাস্যময় একটি উজ্জ্বল যুবক। সেই চন্ডীতলার গ্রামের বাড়ী। অনেক জমি আছে ওদের গ্রামের বাড়ীতে হুগলী জেলায়। সেই জমি নিয়ে কিছু একটা সমস্যা ছিল
 সেই পিউ রায় এর সেই পুরোনো আমলের ভাইরাল ২৪ যা বেশ জনপ্রিয় ছিলো টিআরপি তে সেই সময়।

সেই ভাইরাল এর কপি সাতটা লিখবেন না আটটা সেটা নিয়ে লিড আউটপুট শৌনক ঘোষ এর সঙ্গে তার সাথে দড়ি টানাটানি চলছে। বেশ মজার লাগতো সেই আমলে। আজ সেই সব কথা মনে পড়ে গেলো আমার এতদিন পর। সেই আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আম আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই বিখ্যাত সৌম্য সিনহার গল্প। সেই ইন্টার্নদের গুরু ছিলেন তিনি। যাঁর হাতে ছিল পোদ্দার কোর্টের ইন্টার্নদের ভূত ভবিষ্যৎ। 

 কে কি কাজ পাবে কোন রিপোর্টার এর সাথে কে কোন স্পটে বেরোবেন সবটাই ছিল তাঁর অঙ্গুলির হেলনে। যা নিয়ে ইন্টার্নদের ক্ষোভ থাকলেও কেউই কিছুই বলতে পারে নি কোনো সময় তাঁকে। আর আমি তখন সবে নতুন কাজের সুযোগ পেয়ে ধীরে ধীরে সেই বিখ্যাত অফিসে পোদ্দার কোর্টে বড়ো বড়ো সাংবাদিকদের দেখে কাজ শুরু করেছি মাত্র। যে সময় তাঁকেও দেখলাম আমি সেই প্রোডিউসার হয়ে কাজ করছেন তিনি একমনে। আর ঠিক সময় হলেই কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়া তার ডিউটি শেষ বলে। সময় মেপে কাজ করা একদম। 

সেই সৌম্য সিনহা, সেই অদিতি সিনহা বোধহয়, সেই পত্রলেখা, তিন্নি, ইনজেস্ট এর প্রদীপ, আরও কতজন যে ছিল সেই সময়। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিস। সেই ট্রাম লাইন এর ধারে কালামের চা খেয়ে জীবন কাটিয়ে দেওয়া। সেই প্রবাল, কুশল, প্রদীপ, ধ্রুব, অনির্বাণ চৌধুরী বেশ সুখের সংসার আর কী বলেন। সেই শ্রাবণী ডেস্ক এর, সেই মাটি বলে ডাকা দেবমতী, সেই ২৪ ঘণ্টার বিখ্যাত সোমনাথ আর প্রদীপ এর জুটি। সেই ডেস্ক এর ধ্রুব বর্তমানে এবিপিতে কাজ করে। আরও কতজন যে ছিল।

 সেই ইন্টার্নদের সার্টিফিকেটে সই করে দিত সে। আজ সেই সব কথা মনে পড়ে গেলো আমার এই গভীর রাতে। যে রাত বড়ো বেদনার। যে রাত বড়ো নিঃসঙ্গ একা। যে রাতে দেরিতে হলেও ঘুম আসে না আমার। শুধু ভাবি সত্যিই বড্ড ভালো ছিল সেই পুরোনো দিনগুলো কি বলো। সেই সৌম্য সিনহা কবিতা নিয়ে আলোচনা করা। সেই কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়া।আর মুখে সেই সদাহাস্যময় হাসি। সেই জীবন ছেড়ে বর্তমানে গৌহাটিতে চলে যাওয়া বেতন বৃদ্ধি করে। সত্যিই অসাধারণ এই মিডিয়ার জীবন। ভালো থেকো তুমি সৌম্য। আমার কথা মনে করে লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাই তোমায়। আমাদের সেই সৌম্য সিনহা যিনি আমার কন্টেন্টকে ভালো বলেছেন। আর তাতেই লিখে ফেলা আমার কিছু কথা আমার ব্লগে। ভালো থেকো তুমি।

আমাদের সৌম্য সিনহা _ অভিজিৎ বসু।
সতেরো মার্চ, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...