সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ব্লগ অভিজিৎ বসু লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বৃষ্টিভেজা রাত ও বিন্দাস জীবন

জীবন নিয়ে কাটা ছেঁড়া করতে আমার বেশ ভালোই লাগে এই বুড়ো বয়সে পৌঁছেও। একদম সেই কলেজ জীবনের জুলজি পড়তে গিয়ে যেমন গঙ্গার ধারে এই শ্রাবণের জলে বৃষ্টি ভেজা দুপুরে ছুরি চালাতাম আমি আধমরা ব্যাঙের পেটের উপর দিয়ে শান্ত হয়ে আর চোয়াল শক্ত করে। কোনও ভাবে বাঁচার জন্য ছটফট করতো সেই বর্ষায় নাকডাকা ভিজে জবজবে ব্যাঙ ঠ্যাং ছুঁড়তো এদিক ওদিক। কেমন আপনমনে আর আপন ছন্দে এদিক ওদিক বিন্দাস জলে ভিজে ঘুরে বেড়াতো সে নিজের মতো করেই সবুজ শ্যাওলা পড়া উঠোনের এদিক ওদিক। কেমন ঘোলাটে চোখ মেলে পিটপিট করে বুঝে নিত আশপাশের সবকিছু ঠিক আছে তো। কিন্তু সেই ছটফট করে ঘুরে বেড়ানো প্রাণীটি প্রাণ বাঁচাতে পারতো না কিছুতেই এক সময়ে কেমন লড়তে লড়তে স্থির হয়ে যেতো সে। ডিসেকশন টেবিলের মোমের দুধসাদা টেবিলে কেমন চোখ উল্টে পড়ে থাকত সে আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে।  আসলে এই আমার নিজের জীবন নিয়ে বেশ ছিনিমিনি খেলতে খেলতে আমার এই উদাহরণটি মনে পড়ে গেলো এই বৃষ্টি ভেজা রাতে। সেই কটু গন্ধ ওলা ল্যাবরেটরি, সেই জলে ভেজা কলেজের রাস্তা, সেই বড়ো ক্লাসরুম, এক দঙ্গল ছেলের আর মেয়ের স্বপ্ন দেখা নতুন জীবন। ...

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

আমাদের সবার ক্যান্টিন বৌদি

আজ সেই পোদ্দার কোর্টের ক্যান্টিন বৌদির কথা। যাঁর রান্না খেতে ভীড় জমে যেত পোদ্দার কোর্টের ২৪ ঘণ্টার অফিসে। সেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। যাঁর হাতের রান্না গরম ভাত, ডাল আর গোল গোল কড়কড়ে আলু ভাজা খেয়ে আমি অফিসে কাজ করতে শুরু করতাম নিশ্চিন্তে। সেই সকালে টিফিন আর চা থেকে শুরু করে দুপুরে নানা ভালো ভালো পদের আয়োজন করতেন তিনি। সেই বর্ষার সময় ইলিশ মাছের রকমারি পদ করে খেতে দেওয়া আমাদের ক্যান্টিন বৌদির। যদিও আমি নিরামিষ আহার করি সব সময় সারা জীবন।  আর বিকেল হলেই গরম লুচি আর আলুর দম বা আলুর তরকারি সহযোগে টিফিন খেতে দেওয়া এক প্লেট করে। সেই এডিটর থেকে অফিসের সাধারণ কর্মী সবাই ক্যান্টিন বৌদির এই রান্না খেয়ে সাধু সাধু করতে ভুলতেন না কিন্তু কেউই। কোথা থেকে এলেন কার হাত ধরে এলেন কে জানে। কিন্তু মিডিয়ার অফিসে এমন রান্নাবান্না চলছে। টেবিলে টেবিলে গরম খাবার পৌঁছে যাচ্ছে। বেশ ভালই লাগত কিন্তু আমার সেই সময়ে। বিরাটিতে বাড়ী বা ভাড়া থাকতেন সেই সময় তিনি। সেই প্রাচীন আমলে বলাই ঠিক বোধহয় পুষ্পদির হাতের রান্না খেয়ে আর টানা নয় ঘন্টা ডিউটি করেই তো আমাদের দিন কোথা থেকে যে কেটে যেতো এই পোদ...

ভোরের গন্ধ

ভেঙে ফেলা আস্ত একটা বাড়ি দাঁড়িয়ে আছে চোখের আঙিনায়, কেমন দাঁত মুখ বের করে ছন্নছাড়া হয়ে, অতীতকে সযত্নে জড়িয়ে, আঁকড়ে। বাড়ির গাড়ি বারান্দার নিচে জমে থাকা সাইকেলের চাকায়, সুতো জড়িয়ে থাকার মতো কত মানুষের জীবন জড়িয়ে ছিল, এই পুরোনো বাড়িতে। বাড়ির শ্যাওলা পড়া দেওয়ালে সেই জীবনের সোঁদা গন্ধ, ঘাম এর দাগ এখনো লেগে আছে এদিক ওদিক। খুঁজলে হয়তো মিলবে আরও দু চার আনার স্মৃতির অকেজো সব তামাটে পরশ পাথর। আসলে মাটি উপড়ে,স্মৃতির উত্তাপ কে মুছে দিয়ে নতুন করে বিচিত্র সব রোজগারির, অপচেষ্টা আর কি। যে লাভের, লোভের, চেষ্টার গলায় লাগাম আর পরাবে কে। দুর থেকে জানলা দিয়ে দেখি শুকনো কলাপাতার ওই ম্রিয়মান নিষ্ফলা হাসি। বট ফলের আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা, যজ্ঞি ডুমুর গাছের পাতায় পিছলে পড়া স্মৃতির নরম উত্তাপ। যে উত্তাপে আজও জারিত হই আমি অনায়াসেই প্রতিদিন সকাল হলেই। ভোরের বেলায় পাখির ডাক শুনে ঘুম জড়ানো চোখে ওদের মন কেমন করা কথা শুনতে পাই না আর। বোধহয় ওরাও বুঝে গেছে তাদের গলায় লাগাম পড়েছে এবার আচমকাই। তাই পথ ভুলে তারাও আসেনা আর কিছুতেই  এদিক পানে। পশ্চিমী হাওয়া ঠেল...

খোলস

গুবরে পোকার মতো অন্তরীণ হয়ে বেঁচে আছি আমি আলগোছে, অতি সন্তপর্নে। মাটির বিবর্ণ দেওয়ালে কাচ পোকার মতো, অবরুদ্ধ হয়ে টিকে থাকার নিরন্তর প্রয়াস। ঝোপে, জঙ্গলে, জন অরণ্যের মাঝে লুকিয়ে বাঁচা একাকী, নিঃশব্দে। জীবনের ফুলকাটা নৌকায়, এখন স্তিমিত জলের, আলতো ঠোঁটের পেলব ছোঁয়া। রাতের অন্ধকারে দ্রিমি দ্রিমি, দ্রিম দ্রিম আওয়াজে আচমকাই ঘুম ভেঙে যায়, আমার যখন,তখন। বুকের মাঝে লুকিয়ে থাকে হাজার মান, অভিমান, প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তির নানা রঙের ছোপ ছোপ দাগ।  আকাশে তখন মেঘমল্লার রাগ, বাতাসে ভাসে ভৈরবীর তান। উদাসী বাউল আব্দুল গানের আসর বসিয়েছে নদীর তীরে অসময়ে। মাটির গন্ধ গায়ে মেখে জীবনের গান গায় আব্দুল চাচা একতারায় সুর তুলে। গানের সুরে ভেসে যায় মাঠ, ঘাট, নদী, নালা,প্রান্তর। শুকিয়ে যাওয়া নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালাতে চায়, উদাসী বাউল তার গানের মন কেমন করা সুর নিয়ে, দূরে অনেক দূরে, সবার অগোচরে।  গুবরে পোকার খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে পড়ি আমিও। মন কেমন করা গান, মাটির গন্ধ, নদীর পাড়ের টানে আমিও কেমন নড়ে চড়ে উঠি।  আমার অবরুদ্ধ জীবন কেমন করে নড়ে চড়ে ওঠে। লুকিয়ে থাকা আমি কেমন করে খোল...

জয় মা মঙ্গলচন্ডী

মা মঙ্গলচণ্ডী, যাঁহার নাম মধুর ও মনোহর, যাঁহার হস্তে বর ও অভয় মুদ্রা, যিনি দ্বিভুজা ও গৌরবর্ণা, যিনি রক্তপদ্মাসনে উপবিষ্টা ও মুকুট দ্বারা উজ্জ্বলরূপে ভূষিতা, যিনি রক্তবর্ণ কৌষেয় (চেলির) বস্ত্র পরিধান করিয়া আছেন, যিনি সহাস্যবদনা, সুন্দরাননা ও নবযৌবনা, যিনি সুন্দরাঙ্গী ও মধুর লাবণ্যযুক্তা, তিনিই হলেন দেবী মঙ্গলচণ্ডী। বিশ্বের মূল স্বরূপা প্রকৃতিদেবীর মুখ হ’তে মঙ্গলচণ্ডী দেবী উৎপন্না হয়েছেন। তিনি সৃষ্টিকার্য্যে মঙ্গলরূপা এবং সংহারকার্য্যে কোপরূপিণী, এইজন্য পণ্ডিতগণ তাঁকে মঙ্গলচণ্ডী বলিয়া অভিহিত করেন।” “দক্ষ অর্থে চণ্ডী এবং কল্যাণ অর্থে মঙ্গল। মঙ্গলকর বস্তুর মধ্যে দক্ষ বলে তিনি মঙ্গলচণ্ডী নামে প্রসিদ্ধ। প্রতি মঙ্গলবারে তাঁহার পূজা বিধেয়। মনু বংশীয় মঙ্গল রাজা নিরন্তর তাঁহার পূজা করিতেন।” জৈষ্ঠ্যমাসের প্রতি মঙ্গলবারে মা চণ্ডীর আরাধনা করা হয় বলে এই ব্রতের নাম মঙ্গলচণ্ডী ব্রত। জীবনে শ্রেষ্ঠ মাঙ্গল্যের প্রতিষ্ঠার জন্যই এ ব্রতের অনুষ্ঠান। মঙ্গলচণ্ডী ব্রতের নানা রূপ আছে। কুমারীরা যে মঙ্গলচণ্ডী ব্রতের আচরণ করে, তা অতি সহজ ও সংক্ষিপ্ত। দেবী অপ্রাকৃত মহিমার প্রশস্তিগীতি ব্রতের ছড়ায় এস...

শুভ জন্মদিন বাপি

খাতায় কলমে দুদিন আগেই নাকি বাবার জন্মদিন চলে গেলো। যা আমি বুঝতেই পারিনি একদম। আসলে আমাদের সময়ের সেই বাবা,মা, মামা, মামী, জ্যাঠা, কাকাদের তো আর কোনোদিন জন্মদিন পালন করা হয়নি ঘটা করে এই একান্নবর্তী সংসারে। তাই সেটা জানাও হয়নি কোনওদিন। বাড়ীর এইসব মানুষজন যাঁরা ছাতার মত বাস করেন আমাদের মাথার ওপর। যাঁরা আমাদের ঘিরে থাকতেন তাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গেলে মনে হতো বিরাট একটা স্থান শুন্য হলো যেনো আমাদের জীবনে। যে শূন্যতা ভরাট হবে না কিছুতেই কোনোদিনও কোনোভাবেই। তাই ফেসবুকের পর্দায় দেখলাম বাবার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন অনেকেই ঘটা করে। মা চলে যাবার পর আমাদের বাবা আর ছেলের জীবন কেমন যেনো ভিন্ন খাতে বয়ে চলেছে বেশ কিছুদিন ধরেই। প্রায় দু বছর হলো মা নেই। বাবা একা একাই ঘুরে বেরিয়ে এদিক ওদিক করে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন বেশ দিব্যি। আমিও একা একাই জীবন কাটিয়ে দিলাম কর্মহীন মানুষ হয়ে। বাবা মাকে না দেখে না টাকা দিতে পেরে। শুধুই নিজের জেদ আর অহংকার বজায় রেখে। সততার অহংকার। জানিনা সেটা ঠিক না বেঠিক।   তবে এই মা আর বাবা। দুই ভিন্ন মেরুর দুই বাসিন্দা। একজনের কাছে সন্তানের...

শুভ জন্মদিন অর্পিতা

কখনও দূরদর্শনের পর্দায় আবার কোনো সময় ২৪ ঘণ্টার চেনা মুখ হয়ে ওর খবর পড়া। সেই সব চেনা জুটির হাসি মুখের ছবি ওদের। আবার সেই হাজরা মোড়ের বাংলা জাগোর অফিসে হঠাৎ করেই আমার সাথে স্টুডিওতে একদিন ওর দেখা হয়ে যাওয়া বিকেল বেলায়। কি খবর তোমার বলে সেই ওর পরিচিত চেনা হাসি ওর। যাক তাহলে ভালো যে ভুলে যায়নি আমায়।  জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ওর কথা মনে পড়ে গেলো আমার। সেই কোয়েল, অর্পিতা, মিমি, সঞ্চিতা, অনুসুয়া, এদের সব চেনা জুটির মিস্টি মধুর সুখের ভালোবাসার সংসার। যে সংসার এক সময় জোড়া ছিল একসাথে এদের কাজ করা ছিল। টিফিন বক্স থেকে টিফিন ভাগ করে খাওয়া ছিল। পোদ্দার কোর্টের অফিসে কালাম এর দোকানে লাইন দিয়ে ওদের চা খেতে যাওয়া ছিল। পুজোয় সেই সব একসাথে প্ল্যান করে সেজে গুজে লাইভ করা ছিল। সাথে যে আরও কত কিছুই যে ছিল সে সব আর মনে পড়ে না কিছুতেই আজ। তবু আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই বিখ্যাত অ্যাঙ্কর অর্পিতার কথা। সেই ধীরে ধীরে ওর স্টুডিওতে প্রবেশ করা। চিৎকার না করেই কেমন সুন্দর ক...

কোন্নগরের রম্যাণি

কোন্নগর থেকে কলকাতা। কলকাতা হয়ে ঘুরতে ঘুরতে কেমন করে যেনো মিডিয়ার কাজ ছেড়ে ওর চলে যাওয়া সটান নিজের দেশ ছেড়ে বিদেশে। সেই একদম অন্য এক ঝাঁ চকচকে মসৃণ জীবনে। যে জীবনে জড়িয়ে আছে শুধুই সুখ আর সুখ। সেই বাংলা মিডিয়ার হিসেব নিকেশ করে এগিয়ে চলা একটা গড়পড়তা মেয়ের সাধারণ কঠিন লড়াইয়ের জীবন নয়। সেই নানা জনকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে চলা একটা বিপদ সঙ্কুল জীবন নয়। সেই বাড়ীর চেনা পরিবেশ ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাওয়া ওর। কেমন যেনো হঠাৎ করেই।  কবে কোথায় দেখা হলো ওর সাথে আমার কে জানে। সেই পোদ্দার কোর্টের ২৪ ঘন্টার অফিস। সেই লাইন দিয়ে সাংবাদিক হতে চেয়ে সবার ইন্টার্নশিপ করতে আসা ছেলে আর মেয়ের। সেই হুগলী জেলার কোন্নগর এর ওর বাড়ীর খবর পেয়ে একটু যেনো বেশি করেই নজর দেওয়া ওর দিকে। বাড়ীর মা বাবা আর দাদু দিদার আদরের মেয়ের জন্যে ওদের বাড়ির লোকের চিন্তা হওয়া। আর কবিতা আর সাংবাদিকতা করার নেশায় ওর দৌড়ে চলা ছুটে চলা এদিক থেকে ওদিক।  সেই পোদ্দার কোর্টের অফিস। সেই কত যে চেনা টুকরো স্মৃতির ঝনঝন শব্দ। সেই বৃষ্টিভেজা রাতে বাড়ী ফেরা আমাদের। হাওড়া স্টেশনে আটক...

ভোরের গন্ধ

ভেঙে ফেলা আস্ত একটা বাড়ি দাঁড়িয়ে আছে চোখের আঙিনায়, কেমন দাঁত মুখ বের করে ছন্নছাড়া হয়ে, অতীতকে সযত্নে জড়িয়ে, আঁকড়ে। বাড়ির গাড়ি বারান্দার নিচে জমে থাকা সাইকেলের চাকায়, সুতো জড়িয়ে থাকার মতো কত মানুষের জীবন জড়িয়ে ছিল, এই পুরোনো বাড়িতে। বাড়ির শ্যাওলা পড়া দেওয়ালে সেই জীবনের সোঁদা গন্ধ, ঘাম এর দাগ এখনো লেগে আছে এদিক ওদিক। খুঁজলে হয়তো মিলবে আরও দু চার আনার স্মৃতির অকেজো সব তামাটে পরশ পাথর। আসলে মাটি উপড়ে,স্মৃতির উত্তাপ কে মুছে দিয়ে নতুন করে বিচিত্র সব রোজগারির, অপচেষ্টা আর কি। যে লাভের, লোভের, চেষ্টার গলায় লাগাম আর পরাবে কে। দুর থেকে জানলা দিয়ে দেখি শুকনো কলাপাতার ওই ম্রিয়মান নিষ্ফলা হাসি। বট ফলের আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা, যজ্ঞি ডুমুর গাছের পাতায় পিছলে পড়া স্মৃতির নরম উত্তাপ। যে উত্তাপে আজও জারিত হই আমি অনায়াসেই প্রতিদিন সকাল হলেই। ভোরের বেলায় পাখির ডাক শুনে ঘুম জড়ানো চোখে ওদের মন কেমন করা কথা শুনতে পাই না আর। বোধহয় ওরাও বুঝে গেছে তাদের গলায় লাগাম পড়েছে এবার আচমকাই। তাই পথ ভুলে তারাও আসেনা আর কিছুতেই  এদিক পানে। পশ্চিমী হাওয়া ঠেল...

বাবা দিবস ও বুটা

দেখতে দেখতে বাবা দিবস পার। সকাল থেকে ফাদার্স ডের সকাল শেষ হয়ে এখন প্রায় মধ্যরাত। দূরে নাম না জানা পাখির চিল চিৎকার আর রাত পাহারা দেওয়া কুকুরের হাঁকডাক। আসলে আজকাল আমার বুটার কাছে বাবা বলে ওর সামনে দাঁড়াতে কিছুটা লজ্জাই হয় এই বুড়ো বয়সে পৌঁছে। কেনো জানিনা যে সকাল থেকেই এই কাজ না করা একজনের এত কাজের বা অকাজের ব্যস্ততা বৃদ্ধি হয়েছে ইদানীং যে মেয়ের সাথে একটু কথা বলাও হলো না আজ সময় করে আমার। যখন ওর ফোন এলো তখন আমি ব্যস্ত অন্য ফোনে।  যে বাবা কাজ না করেই দিব্যি পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলো ওকে দেখভাল না করেই, ওর পড়ার খরচ জোগাড় না করেই সে আর কি করেই বা বাবা দিবসের ক্রেডিট কার্ডে পয়েন্ট তুলতে যায় মেয়ের কাছে কোন মুখেই বা বলে সেই কথা। তবু রাতে ওর ফোন থেকে ফোন আসা আমায় বেশ আনন্দ দেয়। যে ফোন ও সচরাচর করে না কাউকেই। সেই ও ফোন করলো বোলপুর থেকে শ্রীরামপুরে আমায়। সারাদিন খাওয়া হয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করলো আমায়। রাতে ভাত খেলাম কি না সেটাও টেক্সট করে জিজ্ঞাসা করলো গভীর রাতে।  এই ওর সাথে দূরে থাকা, একসঙ্গে না থাকা, একজন বোলপুরে আর অন্যজনের শ্রীরামপুরে থেকে যাওয়া...

সুসমীর ও আমি

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার কলেজের বন্ধু সুসমীর এর কথা। ওর ভালো নাম সমীর ঘোষ। ওর বাড়ী শ্রীরামপুরে। আমার সাথে ওর আলাপ শ্রীরামপুর কলেজে পড়ার সময়। সেটা আজ থেকে প্রায় পঁচিশ বছর আগের কথা হবে। আসলে কলেজের বেঞ্চিতে বসে ওর গলার গান শুনে মুগ্ধ হয়েছি আমরা সবাই। ছেলে মেয়ে সবাই ওর গানের ভক্ত হয়ে গেলাম একদিন ওর গান শুনেই। মেয়েরা তো ওর ফ্যান হয়ে গেলো ওর গানের জন্য।  পরে আমাদের কলেজ জীবন শেষ করে আমরা এদিক ওদিক টুকটাক কাগজে লেখার জগতে দুজনেই প্রবেশ করেছি আমরা। একদিন খুব সম্ভবত বর্তমান কাগজে বিজ্ঞানের পাতায় দেখলাম সুসমীর দাস নামে এক জনের লেখা বেরিয়েছে।সেই সময় বিজ্ঞানের পাতা দেখতেন বর্তমানের রূপকুমার বসু। আমার সাথেও পড়ে রূপদার আলাপ হয়েছিল এই লেখার সূত্রেই।  মনে পড়ে প্রতি লেখায় পঞ্চাশ টাকা দিত বর্তমান‌ কাগজ সেই সময়। সমীর তখন বিজ্ঞান নিয়ে লিখছে, আকাশবাণী তে নানা অনুষ্ঠান করছে। এরপর তারা নিউজ ডেস্ক এর কাজে যোগদান করে সে। দীর্ঘ দিন তারা নিউজ এর কাজ করেছে সে। এই হলো সুসমীর এর জীবনের রেখাচিত্র।  কিন্তু আমার সাদা জীবনের এমন এক সাদা মানুষের কথা সেই হলো সমীর ওরফে সু...

শুভ জন্মদিন সোমা

আরও একটা বছরকে পিছু ফেলে লক্ষে স্থির কাণ্ডারী................ সত্যিই জন্মদিন মানেই তো একটা বছরকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া আমাদের। কিছু ভালো আর কিছু মন্দ। কিছু সুখ আর কিছু দুঃখ। কিছু সুখের নির্যাস আর কিছু দুঃখের মেঠো পথের মর্মর ধ্বনি। জীবনকে তো এইভাবেই অনুভব করতে হয় আমাদের পরতে পরতে। যে জীবন শুধুই নিজের জন্য বাঁচা নয়। যে জীবন শুধুই স্বার্থপর হয়ে নিজের কথা ভেবেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করা নয়। যে জীবন অনেকের জন্য বাঁচে। যে জীবন অনেকের কথা ভাবে। যে জীবন শুধুই নিজে একা একাই এগিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উচ্চ শিখরে পৌঁছে হাত নেড়ে টাটা করে না অন্যদের। যে জীবন মনে করে এটা তো আর বাঁচা নয়। এই বাঁচা যে মরার মতই বাঁচা। যে বাঁচার সুখ এর থেকে অসুখ বেশি। সেই হাসিমুখে কালো রোদ চশমা পড়ে বাঁচা একটি মেয়ে। যে আর পাঁচটা সাধারণ বহু মানুষদের সংসার বাঁচানো এক মহিলা সাংবাদিক এর জন্মদিন আজ। যাঁকে নিয়ে কিছু লিখতে ইচ্ছা হলো আমার একটু ভয়ে ভয়ে আর দ্বিধা নিয়ে একটু জড়তা নিয়ে বলতে পারি আমি। একজন টোটো চালকের লেখা উচ্চশিখরে ওঠা নাগাল না পাওয়া এক লেডি সাংবাদিক কে নিয়ে। আজ তাই বিখ্যাত সাংবাদিক বল...