সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জয় মা মঙ্গলচন্ডী

মা মঙ্গলচণ্ডী, যাঁহার নাম মধুর ও মনোহর, যাঁহার হস্তে বর ও অভয় মুদ্রা, যিনি দ্বিভুজা ও গৌরবর্ণা, যিনি রক্তপদ্মাসনে উপবিষ্টা ও মুকুট দ্বারা উজ্জ্বলরূপে ভূষিতা, যিনি রক্তবর্ণ কৌষেয় (চেলির) বস্ত্র পরিধান করিয়া আছেন, যিনি সহাস্যবদনা, সুন্দরাননা ও নবযৌবনা, যিনি সুন্দরাঙ্গী ও মধুর লাবণ্যযুক্তা, তিনিই হলেন দেবী মঙ্গলচণ্ডী।

বিশ্বের মূল স্বরূপা প্রকৃতিদেবীর মুখ হ’তে মঙ্গলচণ্ডী দেবী উৎপন্না হয়েছেন। তিনি সৃষ্টিকার্য্যে মঙ্গলরূপা এবং সংহারকার্য্যে কোপরূপিণী, এইজন্য পণ্ডিতগণ তাঁকে মঙ্গলচণ্ডী বলিয়া অভিহিত করেন।” “দক্ষ অর্থে চণ্ডী এবং কল্যাণ অর্থে মঙ্গল। মঙ্গলকর বস্তুর মধ্যে দক্ষ বলে তিনি মঙ্গলচণ্ডী নামে প্রসিদ্ধ। প্রতি মঙ্গলবারে তাঁহার পূজা বিধেয়। মনু বংশীয় মঙ্গল রাজা নিরন্তর তাঁহার পূজা করিতেন।”

জৈষ্ঠ্যমাসের প্রতি মঙ্গলবারে মা চণ্ডীর আরাধনা করা হয় বলে এই ব্রতের নাম মঙ্গলচণ্ডী ব্রত। জীবনে শ্রেষ্ঠ মাঙ্গল্যের প্রতিষ্ঠার জন্যই এ ব্রতের অনুষ্ঠান। মঙ্গলচণ্ডী ব্রতের নানা রূপ আছে। কুমারীরা যে মঙ্গলচণ্ডী ব্রতের আচরণ করে, তা অতি সহজ ও সংক্ষিপ্ত। দেবী অপ্রাকৃত মহিমার প্রশস্তিগীতি ব্রতের ছড়ায় এসে ধরা দেয়।

জয় মঙ্গলবারের ব্রতকথা নিয়ে নানা গল্প কথা আছে।
এক দেশে একজন সওদাগর আর একজন বেনে বাস করত। সওদাগরের সাত ছেলে, একটিও মেয়ে হয়নি।বেনের আবার সাত মেয়ে, ছেলে হয়নি। ‘একদিন মা মঙ্গলচণ্ডী বৃদ্ধ ব্রাহ্মণীর বেশধরে ছলতে গেল। আগে গেলেন বেনের বাড়ি ; গিয়ে বললেন, ‘ওমা! দুটি ভিক্ষা দাও গো। ‘বেনেবউ তাড়াতাড়ি ভিক্ষা নিয়ে এল ব্রাহ্মণী বললেন, ‘তোমার কটি ছেলে, কটি মেয়ে মা? ‘আমার সাতটি মেয়ে, ছেলে হয়নি বাছা! ‘’ছেলে হয়নি! আমি ছেলে – আটকুড়র মুখ দেখিনা, মেয়ে – আঁটকুড়ার ভিক্ষা লই না। ‘এই বলে ব্রাহ্মণী যেমনি চলে যাবে, অমনি বেনে বউ পায়ে ধরে কাঁদতে লাগল। ব্রাহ্মণী একটি ফুল দিয়ে বললেন, এই ফুল ধুয়ে জল খেলে তোমার ছেলে হবে, নাম রেখো জয়দেব।

 ‘এই বলে সেখান থেকে সওদাগরের বাড়ি চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে অনুরূপ ভাবে ভিক্ষা চাইলেন। সওদাগরের বউ ভিক্ষা নিয়ে এলে ব্রাহ্মণী তা নিতে অস্বীকার করেন। কারন তিনি ছেলে আঁটকুড়ার মুখ দেখেন না। তিনি বললেন ‘এই ফলটি রেখে দাও, ধুয়ে জল খেও।তাহলে তোমার একটি মেয়ে হবে, তার নাম রেখো জয়াবতী। ‘এই কথা বলে তিনি অন্তর্ধান হলেন। তারা সেই ফল খেতে দুজনেই অন্তঃসত্ত্বা হল।

 সওদাগরের মেয়ে হল, বেনের ছেলে হল। ছেলের নাম হল জয়দেব, মেয়ের নাম হল জয়াবতী। দুজন দিনে দিনে বড় হতে লাগলো। জয়াবতী ফুল তুলে, পূজা করে, মঙ্গলবার করে – কথা শোনে। একদিন জয়দেব বললে মা! আমি জয়াবতীকে বিবাহ করবো। মা বললেন, ‘সে কি বাবা! তুমি গরিব ছেলে – বড় মানুষের মেয়ে তোমার সঙ্গে বিয়ে দেবে কেনো? তারপর মা মঙ্গলচণ্ডী অন্তর্ধান হলেন। সওদাগরের ভয়ে আকুল হয়ে, সেই পাত্রের সাথে জয়াবতীর বিয়ে দিলেন। সোনা, দানা,বাউটি দিয়ে, হাওদা বেঁধে বর কনে পাঠিয়ে দিলেন।

পথে যেতে যেতে জয়াবতীর মনে পড়ল আজ মঙ্গলবার। তখন জয়াবতী গুনগুন করে কথা বলতে লাগল। জয়দেব বললো..’ও কি জয়াবতী? কি গুনগুন করছো, বিড় বিড় করে বকছো কেন?”, জয়াবতী বললে – ‘গুনগুন কিছুই করিনি, আজ মঙ্গলবার, তাই মা মঙ্গলচন্ডীর কথা শুনছি।’ জয়দেব বললো – ‘মঙ্গলবার করলে কি হয়?’, জয়াবতী – ‘হারালে পায়, স্বামী পুত্র জলে ডোবে না, আগুনে পোড়ে না, মরলে বাঁচে।’ 

খানিক পথ গিয়ে জয়দেব বললো, ‘জয়াবতী! এখানে বড় ডাকাতের ভয়! ওই যে নদী দেখছ, ওইখান থেকে ডাকাতেরা এসে সব লুটপাট করে নিয়ে যায়, তোমার গায়ের সব গয়না আমায় খুলে দাও।’ জয়দেব গয়না খুলে নিয়ে একটা পুঁটলি করে ঝপাং করে জলে ফেলে দিলো। জয়াবতী চুপ করে রইল, কিছু বললো না। বর কনে ঘরে গেল। জয়দেবের মা ও সাত বোন বরণ করে বর-কনে কে ঘরে তুলল। পাড়ার সব মেয়ে বউরা দেখতে এলো। যে দেখে সেই নিন্দে করে, বলে ‘ওমা! বড় মানুষের মেয়ে যে গো? গায়ে একটু রাঙরত্তি কিছুই দেয়নি যে। একখানি ভালো কাপড় পর্যন্ত দেয়নি।’ বেনেগিন্নি বললো, ‘চুপ করো বোন, কিছু বলো না। আমার যেমন বরাত।’

আজ বউভাত হবে, মা মঙ্গলচন্ডী দেশের সব মাছ হরণ করলেন, কোথাও মাছ পাওয়া গেল না। সাত খানা গাঁয়ের বেনে কুটুম্ব খেতে বলা হয়েছে। কী হবে? নদীতে জাল ফেলে একটা প্রকাণ্ড রাঘব বোয়াল পাওয়া গেল। সে মাছ কেউ কুটতে পারলো না। কুড়ুল ভেঙে গেল, তবু মাছ কেউ কুটতে পারলো না। জয়দেব বললো – ‘মা! জয়াবতীকে মাছ কুটতে দাও।’ জয়দেবে মা বললে- ‘তুই কি ক্ষেপেছিস? ও ছেলেমানুষ, ও কি মাছ কুটতে পারে?’, ‘হ্যাঁ পারবে’ বলে জয়দেব বঁটি এগিয়ে দিল। জয়াবতী ঘোমটা দিয়ে মা মঙ্গলচন্ডীর নাম করে যেমনি মাছটি তুলে বঁটিতে ধরেছে, অমনি মাছটি দুখান হয়ে গেল। মাছের পেটের ভেতর থেকে জয়াবতীর সেই গয়নার পু্ঁটলি বের হয়ে এলো। জয়াবতী মাছ ফেলে রেখে পু্ঁটলিটি নিয়ে ঘরে চলে গেল। কিছুক্ষন পর ভালো কাপড় পড়ে, সাথে হিরে জড়োয়ার গয়না পড়ে, ঝম ঝম করে বাইরে এসে মাছ কুটতে বসলো।

সবাই অবাক হয়ে চেয়ে রইল, জয়দেব হাসতে থাকল। তারপর সকলে ভেবে অস্থির, এত লোকের রান্না কে রাঁধবে? জয়দেব বললো – ‘কেন? জয়াবতী রাঁধবে।’ জয়াবতী মাথা নেড়ে স্বীকার করলো.. মা মঙ্গলচন্ডীকে স্মরণ করে রান্নাঘরে যেতেই এক দন্ডের মধ্যে ৫০০ লোকের রান্না হয়ে গেল। লোকজন সব খেয়ে বলতে লাগলো – ‘এমন খাওয়া আমরা কখনো খাইনি। কী চমৎকার রান্না।’ – বলে ধন্যি ধন্যি করে চলে গেল।

 কিছুদিন পর জয়াবতীর এক ছেলে হল। নাতির মুখ দেখে জয়াবতীর শ্বশুর-শ্বাশুড়ি স্বর্গে গেলেন। জয়াবতী ছেলেকে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে কাজকর্ম করছে, এমন সময় জয়দেব ছেলেটিকে তুলে নিয়ে কুমোরদের পনের মধ্যে গুঁজে রেখে এলো। তারা যতই পনে আগুন দেয়, ততই নিভে যায়। কুমোরদের গিন্নি গিয়ে দেখে, জয়াবতীর ছেলে পনের ভেতর শুয়ে খেলা করছে। সে তখন তাড়াতাড়ি ছেলেকে নিয়ে জয়াবতীর কাছে দিয়ে এল। আর একদিন জয়দেব ছেলেটিকে নিয়ে নদীর জলে ফেলে দিয়ে এল। জয়াবতী জল আনতে গেলে, ছেলেটিও তার সাথে সাথে উঠে এলো। জয়দেব দেখে আশ্চর্য হল কিন্তু ভ্রম গেল না। তারপর জয়াবতীর আর একটি ছেলে ও একটি মেয়ে হল। একদিন জয়াবতীর ছোট ছেলেটি দোতলায় শুয়ে আছে, ছেলে মেয়ে দুটি সেখানে খেলা করছে। জয়দেব একখান কাতান নিয়ে ছোট ছেলেটির গলায় কোপ মারছে কিন্তু ছেলে কাটা যাচ্ছে না। জয়াবতী তাড়াতাড়ি জয়দেবের হাত ধরে বললো, ‘একি তুমি কি করছো? এতবার এত পরীক্ষা করলে, তবুও বিশ্বাস হল না? আমি তো বলছি যে, মা মঙ্গলচন্ডীর কৃপায় আমার কোন অমঙ্গল ঘটবে না।’ তখন জয়দেব বললো – ‘তুমি যখন এমন ব্রত জানো, তাহলে আমরা মর্ত্যে থাকি কেন, চলো স্বর্গে যাই।’ জয়াবতী বললে – ‘আগে ছেলে মেয়ের বিয়ে হোক, বউমা হোক, জামাই হোক, তারপর স্বর্গে যাব।’ দিন কতক পরে জয়াবতীর ছেলে মেয়ের বিয়ে হল। মনের সুখে দিন কতক সংসার করে, জয়াবতী বউ-ঝিয়েদের ঘরকন্না বুঝিয়ে দিলে। স্বর্গ থেকে পুষ্পক রথ নেমে এল, চুয়া চন্দনের ছড়া পড়তে লাগলো। বউ ঝিয়ে দের জয় মঙ্গলবারের ব্রত করতে বলে, জয়দেব ও জয়াবতী স্বর্গে চলে গেল। সেই অবধি জয় মঙ্গলবার পৃথিবীতে প্রচার হল চারিদিকে।

মঙ্গলচণ্ডী ব্রতঃ
দেবী অপ্রাকৃত মহিমার প্রশস্তিগীতি ব্রতের ছড়ায় এসে ধরা দেয়।
যথা —
সোনার মা ঘট বামনী।
রূপোর মা মঙ্গলচণ্ডী।।
এতক্ষণ গিয়েছিলেন না
কাহার বাড়ি?
হাসতে খেলতে তেল সিন্দুর মাখতে
পাটের শাড়ি পরতে সোনার দোলায় দুলতে
হয়েছে এত দেরী।
নির্ধনের ধন দিতে
কানায় নয়ন দিতে
নিপুত্রের পুত্র দিতে
খোঁড়ায় চলতে দিতে
হয়েছে এত দেরী।”

মঙ্গলচণ্ডীর পুজোয় এখনও মেয়েরা আওড়ায় এই মন্ত্র ,
“আটকাটি,
আটমুঠি সোনার মঙ্গলচণ্ডী রুপোর পা,
কেন মাগো মঙ্গলচণ্ডী হল এত বেলা?
হাসতে খেলতে ,
তেলহলুদ মাখতে ,
আঘাটায় ঘাট করতে ,
আইবুড়োর বিয়ে দিতে ,
অন্ধের চক্ষু দিতে ,
বোবার বোল ফোটাতে,
ঘরের ঝি বৌ রাখতে ঢাকতে হল এত বেলা৷”

– এ ভাবেই সংসারের রমণীটি সংসারের সার্বিক সুখ শান্তি কামনা করে থাকে৷ আর একটা কারণ হল, গ্রীষ্মের দাবদাহে ফুটিফাটা বাংলার মাঠঘাট৷ মা চণ্ডীর পুজোয় যদি সময়মতো বর্ষা নামে, সেই আশায় মা চণ্ডীর শরণাপন্ন হওয়া৷

অভীষ্ট সিদ্ধিমানসে হিন্দু মহিলা মঙ্গলবারে মঙ্গলচণ্ডী দেবীর অর্চনা ও ব্রত উপসাবাদি করে থাকেন। ধনপতি সওদাগরের পত্নী খুল্লনা প্রথম মঙ্গলচণ্ডীদেবীর পূজার প্রবর্তন করেন। এই খুল্লনার নামানুসারেই বাংলাদেশের ‘খুলনা’ জেলার নামকরণ হয়েছে বলে জনশ্রুতি। দেবীর করুণাশক্তি অমোঘ। তাঁর শরণাগত হলে নির্ধন ধনী হয়, অন্ধ নয়ন পায়, বন্ধ্যা পুত্র লাভ করে, খঞ্জ চরণযুক্ত হয়। সংসারজীবনে এই মঙ্গলময়ীর আরাধনা তাই একান্তই প্রয়োজন। কুমারীজীবন থেকেই তারা আরাধনা শুরু করে এবং সমগ্র জীবনব্যাপী তা চলতে থাকে।

আজ জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ মঙ্গলবার আজকের পুজোর সাথে সাথে এবছরের মতোন জয় মঙ্গলবারের ব্রত শেষ হলো। মায়ের কাছে প্রার্থনা করি সারা বছর যেন মায়ের আশীর্বাদ‌ সকলের সাথে থাকে। এই পূজোর দিন উত্তরপাড়ায় চেয়ারম্যান দিলীপ দার বাড়ী গেলাম। বহুদিন ধরেই এই পূজো করে আসছেন তিনি। বহু পুরোনো মানুষজন এর সাথে দেখা হলো। আগের বছর যেতে পারিনি আমি। আমার মা মারা যাবার জন্য কাল অশৌচ ছিল তাই। এইবার বোলপুর থেকে এসে গেলাম তাই দিলীপ দার বাড়ী।

"আজি দুখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী--
তোমার অভয় বাজে হৃদয়মাঝে হৃদয়হরণী!
ওগো মা, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে!
তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে ॥"
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

জয় মা🙏🙏🙏

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...