সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলা জাগোর আউটপুট এডিটর

কিছু কিছু জনকে নিয়ে লিখতে গেলে থমকে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়। মনে হয় এই রে কি ভাববেন তিনি। যদি কিছু মনে করেন। সম্পর্কের গভীরতা তো বেশি নয়। তাঁর সাথে কাজ করাও খুব বেশিদিন এর নয় মেরে কেটে দশ বা বারোদিন হবে হয়তো বা পনেরো দিন। আর তাতেই আমি লিখে ফেলব আমার সাদা জীবনের কালো কথা। তাতেই লিখে ফেলবো আমি আঁকিবুঁকি ব্লগের লেখা। যদি কিছু মনে করেন তিনি। 


সেই বাংলা জাগোর অফিস। সেই হাজরা মোড় থেকে ই ওয়ান বাস থেকে নেমে দৌড়ে অফিস পৌঁছে যাওয়া। সেই রাজাময় এর দৌলতে চাকরি পাওয়া আমার। সেই অফিস এই দেখা হলো আমার চয়নিকার সাথে। এক সময়ের জনপ্রিয় মুখ খবরের দুনিয়ায়। সেই বিখ্যাত অ্যাঙ্কর তিনি। সুন্দর মুখের জয় সর্বত্রই। সেটা বারবার প্রমান হয়েছে নানা ভাবেই। সেই বাংলা জাগো চ্যানেলের আউটপুট এডিটর মনে হয়। ভুলে যাই আজকাল বয়স হচ্ছে বলে নানা কথা। সেই ছোটো বাংলা জাগোর সংসার। সেই বিকাশ, ইন্দ্র, সন্দীপ, অঙ্কিতা, অনন্ত দা, সিরাজুল রাহুল দা , সুদীপ্ত আরও কতজনকে নিয়ে যে সুখের সংসার ছিল তাঁর। সেই কত দৌড় ঝাঁপ করা। দুতলা থেকে তিনতলায় হাঁফাতে হাঁফাতে খবর ধরিয়ে দেওয়া ঠিক যেনো রিলে রেসের মতই।

 সেই ছোট্ট অফিসে ভীড়ের মাঝে পেছনে দাঁড়িয়ে মিটিং শোনা। কে কি করবে, কি কাজ করবে শুনে নেওয়া তাঁর মুখ থেকে একটু ভয়ে ভয়ে। আমায় বলা অভিজিৎ দা কী করবেন সেটা আমি বলে দেবো ওনাকে। বেশ ভালই লাগত আমার এই সব কথা শুনে। আসলে বয়স হলে সিনিয়র হলে এগুলো বোধহয় বেশ ভালই লাগে সবার কাজের দুনিয়ায় শুনলে। আমিও তার ব্যাতিক্রম নই একদম। সেই ধ্রুবর ফোন করে দেওয়া চয়নিকাকে। আমায় বন্ধু বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ওর সাথে। কিছুটা হলেও আমার ভয় ভীতি কেটে গেছিলো আর কি তাতে একটু আর কী। 


কিন্তু সেই সুখের সংসার আমার ঠিক সহ্য হলো না। একটু বদহজম হয়ে গেলো সেটা। বারো দিন বা পনেরো দিন এর চাকরী জীবন ছেড়ে চলে এলাম আমি অনায়াসেই হাসিমুখে সেই হাজরা মোড়ের অফিস কে বিদায় জানিয়ে ঠিক পূজোর পরেই বিজয়া দশমীর পরেই। আজ বহুদিন পর সেই বিখ্যাত অ্যাঙ্কর এর একটা ছবি দেখে মনে পড়ে গেলো আমার নানা কথা। সেই ওর হেসে হেসে কথা বলা। খবর পড়া শেষ হলে একটা নিজের স্টাইলে স্টুডিও থেকে বেরিয়ে আসা। বাকী জুনিয়রদের বেশ নিজের ছায়ায় আপন করে নিয়ে একসাথে কাজ করা আর চলা। আর এটাই মনে পড়ে গেলো আমার আজ এতদিন পরে। 

হঠাৎ একদিন দেখলাম তিনি যে সংসারের সর্বময় কর্তী ছিলেন সেই সংসারে আর নেই। নতুন চ্যানেলে কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি। একটা বড়ো ব্র্যান্ড এর চ্যানেলে। একটু হলেও অবাক হয়েছিলাম আমি। সেই নিজের সংসার ছেড়ে চলে গেলেন কী করে ওই ভিড়ভাট্টার এই সংসারে। জিজ্ঞাসা করতে পারিনি সাহস করে আমি। তার সুযোগও নেই আমার। আর সেই সম্পর্কও নয় আমাদের দুজনের। তবু আজ এতদিন পরেও কেমন যেন ওই কটি দিনের কাজ এর সুযোগ, অভিজ্ঞতা, কাজের মধ্যে ডুবে থাকা আমায় কেমন যেনো বিমোহিত করে।

 আজ মনে পড়ে যায় সেই সব মিষ্টি দিনের মধুর কথা। সেই বাংলা জাগোর সুখের ছোট্টো সংসার। সেই লাইভ এর তালিকা তৈরি করে দেওয়া, সেই খবর হবার সময় দাঁড়িয়ে থাকা। উৎকণ্ঠা নিয়ে ফোন এর লাইন থ্রু করা। প্রাণপণে চেষ্টা করা যে করেই হোক সমঝোতা করে বেঁচে থাকার আর সংসারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রাণপণ লড়াই করা। সেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। কিন্তু না পারলাম না আমি। হেরে গেলাম নিজের কাছেই। আর আমি তাই সেই চাকরি ছেড়ে, সেই অফিস এর খোলা ছাদ ছেড়ে, সেই নানা ধরনের মানুষ ছেড়ে, নানা ভাবে মান আর অপমানকে সঙ্গী করে কাজ ছেড়ে চলে এলাম আমি। আমার বিন্দাস এলোমেলো, এলেবেলে, জীবন নিয়ে ঘুরে বেড়াবো বলে।

 আজ চয়নিকার একটা ছবি একটি বিখ্যাত উক্তি সমাজ মাধ্যমে লেখা দেখে এইসব কথা মনে পড়ে গেলো আমার। সত্যিই জীবন বড়ই অদ্ভুত মায়াময় পথে গদ্য আর পদ্যের একটা মিশেল। যেখানে হাসি কান্না, সুখ দুঃখ, অনুভূতি আর শিহরণ সব কিছুই কেমন যেন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকে আমাদের। জীবনের এই পথে শিউলি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে থাকে ভোরের শিশির গায়ে মেখে। জীবনের পথে এই লাল পলাশের হাসি মেখে উজ্জ্বল কিছু ছবি। যে ছবিকে ভোলা যায়না কিছুতেই কোনোভাবেই।

 ভালো থাকবেন আপনি দিদি না ম্যাডাম জানি না কি বলবো। ভয়ে ভয়ে তাই দুটোই লিখে ফেললাম আমি আজ। ভুল হলে ক্ষমা করবেন আপনি আশাকরি। আর সেই আপনার সাথে অল্প কিছু দিন কাজ এর সুন্দর অভিজ্ঞতার কথাই লিখে ফেললাম আমি আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায়। ভালো থাকবেন আপনি। 

বাংলা জাগোর আউটপুট এডিটর - অভিজিৎ বসু।
তেরো মার্চ দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জয় জগন্নাথ

রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম, ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম। পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি, মূর্তি ভাবে আমি দেব--হাসে অন্তর্যামী। রথ যাত্রার এই চিরন্তন সত্য লাইন কবি লিখেছিলেন বহুকাল আগেই। যা যুগ যুগ ধরে আমরা সবাই পড়ে আসছি, জেনে আসছি। যে জগন্নাথের রথ যাত্রা আমাদের কাছে একটা বিশেষ দিন। যে দিন জগতের প্রভু, জগৎ প্রভু রথে আরোহন করে বেরিয়ে পড়েন মাসীর বাড়ীর উদ্দেশ্যে। সাথে থাকেন বলরাম আর সুভদ্রা। আর সেই জগৎ প্রভুর রথকে ধরে টেনে নিয়ে যায় সাধারণ মানুষ। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই রথের রশিতে টান দেন। আসলে কি জানেন জগন্নাথ, যিনি আমাদের সবাইকে জগৎ সংসারে ধরে রাখেন, রক্ষা করেন। আজ তো সেই প্রভুকে রথের রশিতে টান দিয়ে একটিবার তাঁকে স্পর্শ করে,ছুঁয়ে দেখার একটা দিন। যে দিন বছরে এই একটিবার আসে। প্রভুর রথের রশিতে টান দিয়ে জীবনের সব কিছু পাপ, তাপ, কালিমা, দুঃখ, কষ্টের অবসান হয়। ভক্তকে এদিন ধরা দেন প্রভু নিজেই। তাই তো জগন্নাথ অর্থাৎ, জগতের নাথ বা জগতের প্রভু হলেন একজন হিন্দু দেবতা। ভারতের ওড়িশা, ছত্তিশগড় (বস্তার অঞ্চল), পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, আসাম, মণিপুর ও ত্...

মহম্মদ নিজামউদ্দিন - এর গল্প

আজ আপনাদের বলবো বর্ধমানের জামালপুরের মহম্মদ নিজামুদ্দিন এর গল্প। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় আজ এই ঝড়ের রাতে সেই নিজামুদ্দিন এর হাসি মুখ, নামাজ পড়ে যিনি নিজের দাড়িতে হাত বুলিয়ে বলতে পারেন, নেতাদের কথা বাদ দিন আমি আর আপনি তো এক। মানুষ আমরা, বন্ধু আমরা। কেউ কারুর শত্রু নয়। সত্যিই কি অসাধারন জীবন দর্শনের কথা কত সহজেই অবলীলায় বলে দিলেন তিনি হাসতে হাসতে। যা শুনে আমি সত্যিই অবাক হলাম এই ঝড়ের রাতে। বিহারের সমস্তিপুর জেলা থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে যিনি চলে এসেছিলেন এই বাংলায় এক সময় এই বর্ধমানের জামালপুর এলাকায়। ব্রিটিশ আমলে যাঁর বাবা এক সময় দেশের হয়ে কাজ করেছেন বলে জানান তিনি আমায় কথায় কথায়। যিনি মনে করেন এই তাঁর সাথে আমার পাশে বসে গল্প করার সুযোগ করে দিলেন তাঁর প্রিয় আল্লাহ আকবর আর আমার মা কঙ্কালী ও‌ মা তারা স্বয়ং নিজেই হয়তো।  আর তাই তো এই ঝড় জল এর রাতে তাঁর সাথে কথা বলার সুযোগ হলো আমার কলকাতার বিখ্যাত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ডাঃ সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় এর চেম্বারে বসে তাঁর সেই সুন্দর জামালপুরের গ্রামের বাড়িতে...

২৪ ঘণ্টার প্রবাল

সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় আজ প্রবালের কথা। সেই নাটকের মঞ্চে অভিনয় করা প্রবল, সেই টিভির পর্দায় ক্রাইম ব্রাঞ্চ এর প্রবাল। সেই ডেস্ক এর কপি লেখা প্রবাল। সেই নিউজ রুমে আমায় এক বাংলার বিখ্যাত জনপ্রিয় অ্যাঙ্কর চোখে চোখ রেখে কথা বলা সাংবাদিক যিনি আমার জামার কলার ধরে মেরে মাটিতে ফেলে আমায় অনেককে সিধে করে দেবার মতই আমায় সিধে করার নিদান দিচ্ছেন আর সেই সময় আমায় মাটি থেকে হাত ধরে এগিয়ে এসে তুলে ধরে সাহায্য করা সেই প্রবাল। সেই হাসিখুশি সুন্দর একটা ছেলে। যার সাথে আমার খুব বেশি দিন কাজ করা হয়নি কিন্তু ওর কথা, মিষ্টি হাসি, ওর ভালো ব্যবহার এর কথা মনে পড়ে যায় আজও।  সেই টিভির পর্দায় নানা ধরনের ক্রাইম রিপোর্টার এর অনুষ্ঠানকে ঘিরে ওর দৌড়ে বেড়ানো ছুটে বেড়ানো জীবন। সেই অনির্বাণ চৌধুরীর সুখের নিরিবিলি নিভৃতে মিডিয়ার সংসার। যে সংসারে প্রবাল, কুশল, সোমনাথ, প্রদীপ, দেবাশীষ, পত্রলেখা, তিন্নি, শ্রাবণী, দেবমতী, এমন কত যে লোকজন ছিল সেই আমলে। কেউ বেশি কাছের আর কেউ একটু দূরের জন। কিন্তু দাদাকে জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকার একটা দুর্লভ সংসার। যে সংসারে ছ...

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...