সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শ্রীরামপুর লোকাল

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ সেই সকাল আটটা চল্লিশের শ্রীরামপুর লোকাল। ট্রেন হলো মানুষের জীবনের লাইফ লাইন। এই ট্রেন এর ডেলি প্যাসেঞ্জার এর জীবন একটা নিয়ম ধরে আবর্তিত হয় একদম ঠিক ঘড়ির কাঁটা ধরে। যাকে ঘিরে গোটা একটা জীবনের অনেক কিছুই উত্থান পতন সংঘটিত হয়। জীবনের ঘড়ির কাঁটা যেমন এদিক থেকে ওদিক ঘুরে যায় আপন নিয়ম মেনে ঠিক তেমন ভাবেই নিয়ম মেনে চলে ট্রেনের চাকাও নিজের নির্দিষ্ট নিয়মে সময় ধরে। 

বহুদিন পর এই শ্রীরামপুর লোকাল ধরলাম আজ সকালে। গন্তব্য সেই হাওড়া স্টেশন। যে ট্রেন ধরে দৌড় আমার জীবনের সবচেয়ে বড় একটা সকালের কাজ ছিল। সেই ট্রেন এর যাত্রী হলাম আমি আজ বহুদিন পরে। এই ট্রেন ধরে নিয়েই মাকে ফোন করে জানাতাম মা শ্রীরামপুর লোকাল পেলাম আজ এক দৌড়ে। ফোনের ওপর দিক থেকে মা বলতেন সাবধানে কাজে যা বাবা। কিছু খেয়ে বেড়িয়েছিস। কোনো দিন হ্যাঁ বলতাম। আর কোনো দিন না বলতাম। মা ফোন ছাড়ার আগে বলতেন দুগ্গা দুগ্গা, সাবধানে যাস।

 লিখতে লিখতে রিষড়া স্টেশন এসে গেলো। জানলার ধারে বসে সেই চেনা জায়গা চেনা স্টেশন পার হলাম আমি কত দিন পরে। কত চেনা অচেনা মুখ আমার আশপাশে বসে আছে। কিন্তু মাকে আর ফোন করে বলা হলো না মা আমি ট্রেন পেয়েছি আজ আবার বহুদিন পরে। বসতে পেরেছি আমি। সিট পেয়েছি আমি। মার চিন্তা ছিল জায়গা পাওয়া নিয়ে। দুলকি চালে ছুটে চলেছে সেই আমার চেনা শ্রীরামপুর লোকাল। 

স্টেশনের সেই বট গাছের নিচে ট্রেনের অপেক্ষায় কত চেনা মুখের উদ্বেগ মাখা ভীড়। ঘন ঘন কব্জি উল্টে ঘড়ি দেখা। একরাশ বিরক্তি মাখা মুখ। কখন আসবে সেই সাধের ট্রেন আজ যে অনেক লেট করছে তাদের প্রিয় ট্রেন এই শ্রীরামপুর লোকাল। অবশেষে ট্রেন এলো হুইসেল বাজিয়ে দুলে দুলে। দেখলাম ট্রেনে উঠে সেই আমার চেনা সিট এ অন্য যাত্রীর বসে থাকা। জানলার ধারে বসে পড়লাম আমি কিছুটা মন খারাপ নিয়ে। সেই কাটা সিটে বসা নিয়ে কত ঝগড়া, ঝামেলা হতো তাস খেলা যাত্রীদের সাথে। আর আজ কত অবলীলায় সেটাই মেনে নিলাম, মানিয়ে নিলাম আমি। আর তারপর মোবাইল হাতে নিয়ে খুঁটিনাটি এই আজব স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে এগিয়ে চলা।

পাশের লাইন দিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে যাওয়া সেই বর্ধমান লোকাল এর গ্যালোপিং গাড়ি আমাদের ট্রেনকে ফেলে। ঠিক যেনো জীবনের মতই একে অপরকে ফেলে ঠিক দ্রুত তালে এগিয়ে চলা দ্রুত গতিতে তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে। চলে গেলো বালি স্টেশন। এই স্টেশনে নেমে দৌড় দিতাম সল্টলেক যাবো বলে। বাস, ডানকুনি লোকাল কিংবা শাটেল ধরবো বলে। ঘড়ি ধরে এগিয়ে চলা। নিয়ম মেনে অফিস ঢুকে আঙুল ছুঁইয়ে কাজের জগতে ডুবে যাওয়া। খাওয়া দাওয়া ভুলে। সোমাকে ফোন করে বলতাম বালি নেমেছি আমি দৌড় দিয়েছি সোমা। ও বলতো সাবধানে যাও অফিস হুড়ো তাড়া করোনা সাবধান।

 ট্রেনের গতি, জীবনের দৌড় সব মিলে মিশে একাকার হয়ে যেতো। অফুরন্ত জীবনীশক্তি নিয়ে ছুটে চলা পাল্লা দিয়ে যাকে ঘিরে আবর্তিত হতো একটা গোটা সংসার, সেই সংসারের মানুষজন, পরিজন সবাই। আশপাশের লোকজন কেমন হাসি মাখা মুখে কথা বলতো। জিজ্ঞাসা করত শ্রীরামপুর লোকাল পেলাম আজ। আমি সগর্বে হেসে বলতাম হ্যাঁ পেলাম। ট্রেনের চাকায় পা দিয়ে কতদিন যে ঝুলে ট্রেন ধরে নিয়ে গর্ব করেছি অফিস গিয়ে সেটা আর বলার নয়। 

সেই পাশের লাইনের এগিয়ে চলা বর্ধমান লোকাল দাঁড়িয়ে গেছে বেলুড় স্টেশনে হুড়মুড় করে বহু যাত্রীর উঠে পড়া আগে যাবে বলে আমাদের ট্রেনে। সবার মুখে বিশ্ব জয়ের হাসি। আবার লিলুয়া স্টেশনের আগে বর্ধমান লোকাল এগিয়ে গেলো। আগে যাওয়ার বাসনা নিয়ে যারা পিছনের ট্রেনের যাত্রী হলো তাদের হা হুতাশ। কপাল চাপড়ানো। মুখের হাসি উবে গেছে। কি ডিসিশন নিলে এই বলে এক যাত্রীর অন্য যাত্রীকে আক্ষেপ করা। আমি মনে মনে ভাবলাম সত্যিই তো জীবনের সিদ্ধান্ত সঠিক ভাবে সঠিক সময়ে না নিলে একজন অপরকে ঠেলে এগিয়ে যাবে। আর বাকিরা কপাল চাপড়ে বলবে যা কি যে করলাম আমি।
 

ট্রেন দুলছে। গরম হাওয়া লাগছে গায়ে। হাওড়ার সেই পরিচিত কারশেড চলে এলো। পাশে দাঁড়িয়ে সেই একবার এগিয়ে যাওয়া একবার পিছিয়ে যাওয়া সেই গ্যালোপিং বর্ধমান লোকাল। কারুর মুখে বিশ্ব জয়ের হাসি। কারুর মুখে অভিব্যক্তি পিছিয়ে পরেও তো তোমায় ধরে ফেলেছি আমি। ঠিক সেই যেনো কচ্ছপ আর খরগোশের গল্পের মতো আমাদের জীবন। যে জীবনে এগিয়ে পড়া আছে। যে জীবনে পিছিয়ে পড়া আছে। হা হুতাশ আছে। আনন্দ আছে। নিরানন্দ আছে। জীবনের নিয়ম মেনে ছুটে চলা আছে। আবার আমার মত দাঁড়িয়ে পড়া আছে।

দেখলাম দুটো ট্রেন একসাথে হাওড়া স্টেশন প্রবেশের অনুমতি পেলো। সবার মুখে জেনো একসাথে বিশ্ব জয়ের হাসি। জয়ের সেই হাসিতে কেমন গোপন অভিব্যক্তি দেখ আমিও আজ হেরে যাইনি তোদের কাছে। আমি চুপ করে বসে রইলাম ট্রেন এর জানলার পাশে। আমার জীবনে কোনো দৌড় নেই। ছুটে চলা নেই আর। হারিয়ে যাবার ভয় নেই কোনো। অপরকে হারিয়ে দিয়ে এগিয়ে চলার বাসনা নেই আজ। 

আমি জানি এগুলো খুব অনিত্য আমাদের গোটা জীবনে। ওই ষ্টেশনের ঝুড়ি নামা বটগাছের মত স্থবির হয় গেছি আমি। যে বটগাছ আজ বুঝে গেছে যে এই পৃথিবীর সবকিছু অনিত্য, অস্থায়ী। তাই এসব নিয়ে মিথ্যা মরীচিকার পিছনে ছুটে চলে কি লাভ। এসব নিয়ে বড়াই করে কি লাভ। কেউ এগিয়ে যাবে, কেউ পিছিয়ে যাবে। ঠিক নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে জীবনের ট্রেন আমাদের তার গন্তব্যে পৌঁছে যাবে ঠিক সময়ে। কেউ একটু আগে আর কেউ একটু পরে। চলে এলো হাওড়া স্টেশন। এবার নামার পালা। 

শ্রীরামপুর লোকাল - অভিজিৎ বসু।
পনেরো জুন, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...