সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জাম কথা

গরমকালে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় অনেক ফলমূল। আম, জাম, কাঁঠাল এর গন্ধে ম ম করে গোটা বাজার চত্বর। বোলপুরে আমাদের ভাড়া বাড়ির পাশেই হাট তলা বাজার। তেমনি এই বাজারে গরমে পাওয়া যায় সুন্দর সুন্দর দেখতে কালো কুচ কুচে কালো জাম। কালো জাম খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিতেও ভরপুর এই ফল। তাছাড়া লবণ-মরিচ আর চিনি দিয়ে দুপুর বেলায় ভাত খেয়ে জাম মেখে খাওয়ার আনন্দ তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

ছোটো বেলায় মনে আছে রিষড়াতে সৌদামিনী নগরে পাড়ায় বুড়োদের বাড়িতে একটা বড় জাম গাছ ছিল। গরমের দুপুরে সেই জাম গাছ থেকে জাম পড়তো টুপ টাপ করে। বুড়োর মা জাম খেতে দিতেন আমাদের। ওই গাছের পাশেই ছিল কাঁচা মিঠে একটা আম গাছ। গরম এর ছুটির সময় স্কুলের দুপুর বেলায় আম, জাম পেড়ে খেয়ে দিন কাটতো বেশ ভালই। 

সেই সময় বেশ এই বাড়ির ছেলে ওই বাড়ীতে এসে হাজির হয়ে যেতো অনায়াসে। তাতে কেউ কিছু মনে করত না একদম। আজ জাম কথা লিখতে বসে বুড়োদের সেই জাম গাছের ছায়া, মায়া, সেই গাছের কায়ার কথা মনে পড়ে গেলো আমার। পরে বুড়োর দাদা সেই জায়গায় বিশাল দোতলা বাড়ি করলো কাটা পড়ল জামগাছ, কাটা পড়ল আম গাছটিও।

তবে জাম শুধু মুখের স্বাদই দেয় না, শরীরে আরও নানা উপকার লাগে এই ফল। ত্বকের সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, রক্তচাপসহ একাধিক রোগ ভোগ থেকে মুক্তি মিলতে পারে এই জাম খেলে। তাই সবার এই ফলের উপকারগুলো জেনে রাখা উচিত।

হার্ট ভালো রাখে: হার্ট সুস্থ রাখে পটাশিয়ামে ভরপুর জাম, যা হৃদরোগের আশঙ্কাও অনেক খানি কমাতে পারে বলে মনে করা হয়। এই ফলটি উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো রোগ-ব্যাধি প্রতিরোধ করে। এর পাশাপাশি ধমনীও সুস্থ রাখে।

রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে: ডায়াবিটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার হতে পারে জাম। এটি ডায়াবিটিসের বিভিন্ন লক্ষণ নিরাময় করতে পারে। এতে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। জামের বীজ, গাছের ছাল ও পাতা ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে।

অ্যানিমিয়ার সমস্যা কমায়: এই ফল হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে। ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ কালো জাম হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায় শরীরে। ফলে রক্ত শরীরের অঙ্গগুলিতে আরও অক্সিজেন বহন করে এবং শরীর সুস্থ রাখে। এ ছাড়া, রক্ত পরিশুদ্ধ করতেও জামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়।

মাড়ি ও দাঁত মজবুত করে: কালো জাম মাড়ি ও দাঁতের জন্য অত্যন্ত উপকারী। জাম গাছের পাতায় আছে ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণ। এটি মাড়ির রক্তপাত রোধ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে টুথ পাউডার হিসেবে ব্যবহার করলে সুফল মেলে। এটি মাড়ির রক্তপাত এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি মুখের আলসারের চিকিৎসাতেও সাহায্য করে বলে জানা যায়।

রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়: জামে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফেক্টিভ এবং  অ্যান্টি ম্যালেরিয়া গুণ রয়েছে। এ ছাড়াও এই ফলে ম্যালিক অ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড এবং বেটুলিক অ্যাসিড রয়েছে। যে কারণে কালো জাম সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

এছাড়াও জাম খেলে হজমে সাহায্য করে। মুখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে জাম খেলে তা মাড়ির রক্তক্ষরণ এবং মাড়ির প্রদাহের চিকিৎসায় সাহায্য করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তের জন্য জাম ফল খুব ভালো। ওজন কমাতে সাহায্য করে । ত্বকের জন্য ভালো। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারী এই জাম।

গ্রীষ্মের ফল জাম উঠে গেছে বাজারে। ফলটিতে মেলে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, ভিটামিন সি, থিয়ামিন। গর্ভাবস্থায় জামের উপকারিতা অনেক। জামে থাকা প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও লোহা হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য চমৎকারভাবে কাজ করে। জামে অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট রয়েছে। ফলে ত্বকের নানা রোগের ক্ষেত্রে খুব উপকারি। যাঁদের ব্রন, ফুসকুরির সমস্যা রয়েছে, বা যাদের ত্বক উজ্জ্বল নয় তারা জাম খেতে পারেন অনেক উপকার পাবেন। মানসিকভাবে সতেজ রাখে এই কালো জাম। কারণ জামে গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ রয়েছে, যা মানুষকে জোগায় কাজ করার শক্তি। 

এই জাম এর (ইংরেজি: Java plum, Jambul, Malabar plum), বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium cumini, Myrtaceae পরিবারভুক্ত একটি ফল। জাম নানা দেশে নানা নামে পরিচিত, যেমন জাম্বুল, জাম্ভুল, জাম্বু, জাম্বুলা, জাভা প্লাম, জামুন, কালোজাম, জামব্লাং, জাম্বোলান, কালো প্লাম, ড্যামসন প্লাম, ডুহাট প্লাম, জাম্বোলান প্লাম, পর্তুগিজ প্লাম ইত্যাদি। তেলুগু ভাষায় একে বলা হয় নেরেদু পান্ডু, মালায়ালাম ভাষায় নাভাল পাজহাম, তামিল ভাষায় নাভা পাজহাম এবং কন্নড় ভাষায় নেরালে হান্নু। ফিলিপাইনে একে বলা হয় ডুহাট।

জাম ফল দেখতে ১ থেকে ২.৫ সেন্টিমিটার লম্বা, প্রায় আয়তাকার। গাছ ১৪ থেকে ৬০ ফুট বা এর বেশিও লম্বা হতে পারে। পাতা সরল, বড়, চামড়া পুরু এবং চকচকে। গাছ চিরসবুজ। চকচকে পাতা এবং চিরসবুজ হবার কারণে এর আলংকরিক মান বেশ ভালো।
জাম গাছে বছরের মার্চ এপ্রিলে ফুল আসে। জামের ফুল ছোট এবং ঘ্রাণওয়ালা। মে জুন মাসে ফল বড় হয়। ফলটি লম্বাটে ডিম্বাকার। শুরুতে এটি সবুজ থাকে যা পরে গোলাপী হয় এবং পাকলে কালো বা কালচে বেগুনি হয়ে যায়। এটি খেলে জিহ্বা বেগুনি হয়ে যায়।

জাম ভারতবর্ষ থেকে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়েছে এবং বর্তমানে এটি সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে বেশ দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রধানত দুই জাতের জাম পাওয়া জায়। জাতগুলি হলো ক্ষুদি- খুব ছোট জাত এবং মহিষে- বেশ বড় ও মিষ্টি জাতের জাম। এটি বর্ষাকালে পাওয়া যায়। ফলের গা কালো এবং খুব মসৃণ পাতলা আবরণ দিয়ে ঢাকা। ফলের বহিরা বরণের ঠিক নিচ থেকেই গাঢ় গোলাপী রংয়ের টক মিষ্টি শাস মেলে।

জামের প্রধান ব্যবহার খাদ্য হিসেবে। টক মিষ্টি সুস্বাদু এই ফলটি বেশ জনপ্রিয়। কবিরাজী বা হেকিমী চিকিৎসায় এর কিছু ব্যবহার আছে; বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ, ভারতবর্ষ, ইন্দোনেশিয়া এবং চীন-এ জামের ব্যবহার হয়ে আসছে। জামের বীজ দিয়ে নানান রোগের আয়ুর্বেদী চিকিৎসা করা হয়, যেমন বহুমুত্র। ইউনানী এবং চৈনিক চিকিৎসাতেও এর ব্যবহার আছে।
 হজমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, মাড়ির প্রদাহ ইত্যাদি রোগে জামের বীজ, ছাল ও পাতা ব্যবহৃত হয়। জাম থেকে মদ ও সিরকা তৈরি করা যায়। জামে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি আছে।  পরিণত জাম গাছের গুঁড়ি থেকে যে কাঠ পাওয়া যায় তা দিয়ে দরজা জানালার ফ্রেম আসবাবপত্র তৈরি করা যায়। তবে গরম কালে জাম খান উপকার পাবেন। আসলে এই সব ফল খুব কম মেলে বাজারে আজকাল। দিন দিন যেভাবে গাছ কমছে তাতে আর কতদিন যে আম, জাম, কাঁঠাল গাছের ফল খাওয়া যাবে কে জানে। তবু এই কালো জাম খান উপকার পাবেন।

জাম কথা - অভিজিৎ বসু।
নয় জুন, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...