এই ছবিটা আজ বিকেলে দীঘার সমূদ্রের ছবি। দীঘার সাংবাদিক চন্দন বারিক আমায় দিলো। আসলে এই প্রবল গরমের সময় সমুদ্রের ধারে বিকেল হলেই ভীড় করেন পর্যটকরা। দেখা যায় পাথরের ওপর আছড়ে পরে ঢেউ একের পর এক। দুর থেকে ভেসে আসে সমুদ্রের গর্জন আর পরের ঢেউ। সমুদ্রের গর্জন, তার এই বিশাল রূপের কাছে গেলে আমাদের কেমন যেন একটা নিজেদের খুব ক্ষুদ্র মনে হয় এই বিরাট সমুদ্রের সামনে।
সমুদ্রের এই বিশালত্ব, তার গম্ভীর রূপ দেখে থমকে দাঁড়াতে হয়। আমাদের হুঙ্কার, অহঙ্কার, ধূমায়িত চায়ের কাপের মত সব কেমন করে যেনো উবে যায় এক লহমায় তার সামনে। আমাদের মাতব্বরি এক লহমায় উবে যায়। কেমন যেনো বেবাক বোকা হয়ে যাই আর তারপর বিস্ফারিত নয়নে তাকিয়ে দেখি তার সেই রূপ।
সত্যিই সৃষ্টি কর্তার কি অপূর্ব সৃষ্টি। যাকে দেখে আমরাও বাকরহিত হয়ে যাই। মনে মনে অবাক ভাবে বলি ভাগ্যিস এই বিরাট সমুদ্রের সামনে নিজের বিরাট ভাব নিয়ে এসে দাঁড়িয়ে ছিলাম তাই তো বুঝতে পারলাম যে আমি কত ক্ষুদ্র। আমার জীবন কত ছোটো। যে জীবনের বাঙময় উপস্থিতি আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়।
এই বিশাল পৃথিবী, এই বিরাট মহাশূন্য, এই গোটা বিশ্ব, তার মাঝে এই বিরাট সমুদ্র, পাহাড়, নদী, মাঠ, ঘাট, প্রান্তর আর সেই সব এর মাঝে আমি আর আমার আমিত্ব, আমার বিরাট জীবন, জীবনের শুরু থেকে শেষ কত ক্ষুদ্র, কতই না ছোটো। সত্যিই তো খুব নগণ্য এই জীবন। খুব ছোট এই জীবন।
সেই অনুভূতি আর শিহরণ অনুভব করলাম এই বিরাট সমুদ্রের সামনে আরো একবার। তার ঢেউ এর অবিরাম রূপ দেখে মুগ্ধ হলাম। আদিগন্ত বিস্তৃত ওই এলাকা যার গর্জন, বর্ষণ অনেক বেশি আমাদের থেকে। তাই শুধু শুধু মিথ্যা হামবড়িতা আর ক্ষমতার বড়াই করে কি লাভ বলুন।
আকাশে মেঘের দেখা নেই অনেক দিন ধরেই। তার মাঝে রোদে পুড়ছে সব জায়গা। একটু জল এর দেখা পেলেই কেমন যেনো মনটা আনন্দে নেচে উঠছে। আর দীঘার সমুদ্রের সামনে তো সেই ভীড় যেনো উপচে পড়ছে বার বার। আজ দুপুরে প্রবল জলোচ্ছাস দেখা গেলো দীঘার সমুদ্রের তীরে। ছবিটা দেখে আমারও বেশ ভালো লাগলো।
সত্যিই তো জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে মানুষ এই ভাবেই আনন্দকে খুঁজে নেয়। হাজার দুঃখ, যন্ত্রণা, অপমানকে ভুলে একটু আনন্দ উপভোগ করতে পারলেই তাকে চেটেপুটে গিলে খায়। একদম ক্ষুধার্ত বাঘের মত। এটাই হলো আসল কথা জীবনে টিকে থাকার নিরন্তর চেষ্টা করা আনন্দ উপভোগ করে।
দীঘার সমুদ্র - অভিজিৎ বসু।
বিশে জুন, দু হাজার চব্বিশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন