ঝড় আসছে বলে দরজা, জানলায়, কুপি আঁটা হয়েছে অনেক আগেই।
নদীর পাড়ের মানুষ গুলো সব কেমন যেন মিইয়ে গেছে, হঠাৎ করেই এক ধাক্কায়।
বছর বছর ওই সমুদ্রের তাণ্ডবে ঘর সংসার ছেড়ে দূরে, চলে যেতে কার আর ভালো লাগে।
তবুও তো ঝড় আসে, সফেদ জীবনের লাল মোরাম ফেলা রাস্তায়, হু হু করে।
শান্ত নিটোল জীবনে চলতে চলতে, কেমন ঝড় ওঠে আচমকাই।
লণ্ডভণ্ড হয় পথ, ঘাট, প্রান্তর, ধূ ধূ বাঁশবনের পাশের সেই খোলা মাঠ।
ফিঙের লেজে ঝড়ের হাওয়ার ঝাপটা লাগে বার বার।
আকাশে গোল হয়ে উড়ে বেড়ায়, সাদা-কালো পায়রার দল কেমন আপনমনে।
আদিগন্ত ওই সমুদ্রের ঢেউ দেখে আলু থালু শাড়ি পরা, ওই বাগদি পাড়ার বউ এর চোখে কেমন ভয়ার্ত দৃষ্টি।
কালো পলিথিন মোড়া বাড়ির ছাদে, তখন হাজার কাকের চিল চিৎকার।
ওরাও বোধ হয় জেনে গেছে ওই ঝড় আসছে।
যে ঝড়ে ওদের ডানায় ঠাণ্ডা বাতাসের ঝাপটা লাগে, আচমকাই।
তাল হারিয়ে ওরাও কেমন, বেসামাল হয় বার বার।
তবুও ঝড় আসে, অনেক দূর থেকে ঝড় আসে।
এক সময় অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়, ঝড়ের দাপাদাপি শেষ হয়।
শান্ত নিটোল সমুদ্রের কিনারে জলের ছলাৎ ছলাৎ,
শব্দ ওঠে মেপে মেপে।
লাল কাঁকড়ার আনাগোনা বাড়ে, ভেজা বালির পথ ধরে, সর সর করে।
সফেদ হাসির ঝিলিক ফেরে, বাগদি পাড়ার ওই কালোপানা বউ এর চাঁদ মুখে।
ঝড়ের শেষে নতুন করে সূর্য ওঠে, ওই মাঠের কোণে। নিকষ কালো রাতের আঁধার কাটে, নরম ভোরের মোমের আলো গায়ে মেখে।
ঝড় - অভিজিৎ বসু।
ছাব্বিশে মে, দুহাজার চব্বিশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন