সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সিঙ্গুরের সুহৃদ দত্ত

খবরটা শুনে মনটা একটু থমকে গেল। আজ মারা গেছেন সিঙ্গুরের তাপসী মালিক ধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত। কত স্মৃতি উপচে পড়ছে মনের কোনে কোনে।কত অচেনা অজানা কথা মনে পড়ে গেল আমার। মনের কোনে কত স্মৃতি ভীড় করে দাঁড়িয়ে আছে। তাপসীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক সময় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। তাতে নাম জড়িয়ে যায় সুহৃদ দত্তের। 
তখন তিনি ছিলেন সিপিএমের সিঙ্গুর জোনাল সম্পাদক। ২০০৭ সালের জুন মাসে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন সুহৃদ দত্ত এবং দেবু মালিক। প্রায় দু’বছর জেলে ছিলেন তিনি। তারপর ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে জামিনে ছাড়া পান তিনি। জেল থেকে ছাড়া পেলেও আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি সুহৃদ দত্ত। অসুস্থতা তাঁকে গ্রাস করে ধীরে ধীরে। গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত ঘা। অনেক ডাক্তার দেখিয়েও তাকে আর সুস্থ করা যায় না। শেষ জীবনে তার স্মৃতিশক্তিও অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়। সিঙ্গুরের জলাপাড়ায় তার বাড়ি ছিল। সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা যেখানে তৈরি হয়েছিল, সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে জলাপাড়া এলাকা। কাজের সুত্রে অনেক বার গেছি তার বাড়ি।
সিঙ্গুরের দগ দগে ঘাকে বুকে চেপে নিয়ে তিনি বলতেন, আবার কি হলো রে বাবা কি দরকার তোদের, সব তো হয়ে গেছে আমি কিছুই বলবো না কিছুই যা তোরা আমায় আর বিরক্ত করিস না। এই বলে ধীর পায় ঘরে ঢুকে পড়তেন। তার ঘরের দেওয়ালে রামকৃষ্ণ, স্ট্যালিন, মার্কস এর ছবি। ভাবলেও অবাক লাগে আমার। এই লোকটাই সিঙ্গুরের কারখানার জন্যে দিন রাত এক করে সকলকে এককাট্টা করে ছিলেন জমির জন্য। আবার সে লোকটাই এমন কাজ করতে পারে। কেন জানিনা মনটা খারাপ হয়ে যেত সুহৃদ দাকে দেখে। ফ্যাল ফ্যাল করা ওর শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমাদের  বলতেন যা তোরা আর জ্বালাস না তোরা। 
মনে হতো সত্যিই বোধ হয় বলছে মানুষটা কিন্তু তাহলে সেই আঠারো ডিসেম্বর এর ভোর বেলা শীতের রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন আমি। হটাৎ ভোর চারটা কুড়ি মাথার পাশে রাখা মোবাইল ফোনের আওয়াজ। ঘুম জড়ানো চোখে হাত বাড়িয়ে ফোনটা ধরি আলগোছে। ওপর প্রান্তে তৃণমূল নেতা মদন মিত্রর গলা অভিজিৎ দিদি কথা বলবে ধর ফোনটা। এক ঝটকায় ঘুমের ঘোর কেটে যায় আমার। ধড়মড় করে উঠে বসি বিছানায়। ওপর প্রান্তে তখন ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আওয়াজ ভাই অভিজিৎ,আমার উত্তর হ্যা দিদি বলুন , ভাই ওরা তাপসীকে পুড়িয়ে মেরেছে সিপিএমের গুন্ডারা সব। একটু দেখো তুমি। এখন ওরা অন্য প্ল্যান করছে এটা ধর্ষণ করে খুন করে ওরা তাপসীর দেহ পুড়িয়ে দিয়েছে একটু দেখো তুমি ভাই। সি পি এম বলছে তাপসী আত্মহত্যা করেছে তা নয়, ওরা এটা মিথ্যা কথা বলছে সিপিএম। দীর্ঘ অনশনে কাহিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কটি কথা বলে ফোন কেটে দিলেন। 
সারা শরীরে আগুন জ্বলে উঠলো আমার। সেকি এই ভাবে অত্যাচার করে একটা নিরীহ মেয়েকে মেরে ফেলে চুপি চুপি পুড়িয়ে দেবে প্রমাণ লোপাট করতে। এটা হতে দেওয়া যায় না কোনো ভাবে। সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার সিঙ্গুরের ক্যামেরাম্যান রানা কর্মকারকে ফোন করলাম। ফোন করলাম কলকাতা টিভির কামেরামান গৌতম ঢোলে কে। বললাম এক্ষুনি তাপসীর গ্রামে যা দেখ বডি পুড়ছে পুলিশ গায়েব করে দেবে তাপসীর বডি। যে করে হোক এই ছবিটা কর তোরা আমি আসছি একটু ভোর হলেই। 
রাতের অন্ধকারে আচমকা এই খবরে আমিও কিছুটা দিশেহারা। কি করবো বুঝতে পারলাম না। তার ওপর মমতার ফোন ভাই অভিজিৎ দেখো একটু।সারা শরীরে একটা শিহরণ খেলে গেল আমার ওই ফোন পেয়ে।ঘুমের ঘোরে বউ বললো কি হলো কি রে বাবা রাত দুপুরে ঘুমোতে পারি না আমি। আমি বললাম উঠে পরো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেছেন। সিঙ্গুরে বড় খবর হয়েছে আমি বের হবো এক্ষনি। 
দিনের আলো ছড়িয়ে পড়তেই  ঝাঁপিয়ে পড়ল গোটা মিডিয়া। হই হই করে খবরের শিরোনামে তাপসীর ঝলসানো আধ পোড়া দেহ। যা পুলিশ গাড়িতে কম্বল জড়িয়ে লুকিয়ে তোলার সময় ছবি করে ফেলে গৌতম আর রানা। শীতের রাতে ওরাও এই ছবি করতে গিয়ে ঘেমে যায় একি দেখছে তারা। কেনো ছবি তোলা হচ্ছে এই বলে পুলিশ অনেক ভয় দেখায় তাদের। ছবি তোলার লোক আসার খবর পেয়ে পুলিশ তাপসীর বডি নিয়ে টাটার ঘেরা জমির ওপর দিয়ে জীপ চালিয়ে চম্পট দেয়। 
এসব তো ইতিহাস। সেই ইতিহাসের অন্যতম নায়ক আজ নেই। আর সেই ঘটনার নায়ক আজ নেই চলে গেল দূরে অনেক দূরে। যার কোনো ভাবে বিচার হলো না সে দোষ করেছে না করেনি করেনি  ,জানতে পারলো না সে নিজেও। শুধু কটা বছর জেল খেটে ঘরে বসে অসুস্থ্ হয়ে কিছু স্মৃতিকে আগলে রেখে মরে গেলো মানুষটা।
জীবনের সব কিছু দিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল গ্রামে কারখানা হবে। যে কারখানা হলে তার গ্রামের ছেলেরা কাজ পাবে। সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় একটা মেয়ের মৃত্যুতে। যে মৃত্যুর দায় তার ওপর বর্তায় মমতার দল। আর তাপসীর ঝলসানো আধ পোড়া দেহ নিয়ে রাজনীতির কারবারিরা তাদের সুদ আসল একে বারে তুলে নেয় দাড়িপাল্লা মেপে। রাজনীতির ময়দানে এক ধাপে অনেক এগিয়ে যায় তারা। নিজের দল ও একসময় ভাবতে থাকে বোধহয় বিবাগী বাউল বিয়ে না করা এই লোকটা বোধ হয় সত্যিই এই জঘন্য অপরাধ করেছে। আর এই সব যন্ত্রণা নিয়ে কোনো ভাবে দিন যাপন করেছেন সুহৃদ দত্ত অন্ধকার ঘরে মুখ লুকিয়ে একা একা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন নিশ্চয়ই একদিন আমি অপরাধী নয় এটা বুঝতে পারবে সিঙ্গুরের মানুষরা। এটাও বুঝবে সেদিন আমি হয়তো মারা যাবো থাকবো না কিন্তু আমি যে জমির জন্য চেষ্টা করেছি ,কারখানার জন্য চিন্তা করেছি আমার নিজের জন্য নয় ,গ্রামের ছেলে মেয়েদের জন্য সেটাও তারা বুঝবে একদিন।
আজ সুহৃদ দত্তর চলে যাওয়া অনেক কিছু প্রশ্নকে আমাদের সামনে নিয়ে এলো। সত্যিটা কি আর কোনো দিন জানতে পারবেন তিনি। না পারবেন না এই ঘৃণ্য পৃথিবীর নগ্ন রূপ দেখে দুর থেকে তিনি ভাববেন ভালই হলো ওই নিজের বাড়ি, গ্রাম, সিঙ্গুরের তিন ফসলি জমির ঘ্রাণ ফেলে তিনি চুপি চুপি হারিয়ে যাচ্ছেন অচিনলোকে। পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে দূরে অনেক দূরে। যেখানে নিঝুম রাতে গোপন অভিসারে মেতে ওঠে সকলে বাজনা বাজিয়ে বাঁশি বাজিয়ে গান গেয়ে দিন কাটায়। না সেখানে রাজনীতির কারবারিরা ভিড় জমায় না। এ ওর গায় কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করে না নিজের আখের গোছাতে। যে যার নিজের মতো বাঁচে। বুক ভরে শ্বাস টেনে নিয়ে তিনি বলেন এটাই ভালো হলো বেশ। তাই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে যেতে কষ্ট হয় না কমরেড সুহৃদ দত্তর। কমরেড লাল সেলাম আপনাকে। আপনি চির নিদ্রায় শায়িত থাকুন এই বিশ্বাস নিয়ে আপনি অপরাধী নন। যারা আপনাকে অপরাধী বানিয়ে ফয়দা লুটেছে আসল অপরাধী তারাই। ঘুমিয়ে থাকুন আপনি কমরেড।
 শান্তির দেবদূত একদিন নিশ্চয়ই এসে আপনাকে বলে দেবে আসল সত্যি কথাটা। সেদিন নিশ্চয়ই আপনি আবার ফিরতে চাইবেন সিঙ্গুরের কারখানার জমিতে। সেই জমির ওপর বসে হাউ হাউ করে ডুকরে কেঁদে উঠে বলবেন, দাও দাও আমার হারিয়ে যাওয়া যন্ত্রণার আঁধার রাতের জীবনটা ফিরিয়ে দাও তোমরা সবাই। হয়তো কমরেড আপনার সেই কথা শোনার কোনো লোক সেদিন থাকবে না সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া, খাসেরভেরি গ্রামে। শুধু আপনার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাবে সাদা মেঘ। এক পশলা বৃষ্টি পড়বে আর আপনি সেই বৃষ্টিতে স্নাত হবেন আর বলবেন সত্যিই কি আরাম আমার আর কোন জ্বালা নেই, যন্ত্রনা নেই। সব এক নিমেষে দুর হয়ে গেছে।ভালো থাকবেন সুহৃদ দা আমার প্রনাম নেবেন আপনি।

ইতি, 
অভিজিৎ বসু।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...