সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ম্যানেজিং এডিটর ধ্রুবর ফোন

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক লড়াই করা সাংবাদিকের জীবন কথা। যে  সাংবাদিক বহরমপুর থেকে কলকাতার সাদা বাড়িতে মাত্র তিন হাজার টাকা দিয়ে জীবনের কাজ শুরু করে সে ট্রেনি সাংবাদিক হয়ে। যে ছেলে পেটের খিদে চেপে রাখতে দুপুরের খাবার বিকেলে খেয়ে সাংবাদিকতার পাঠশালায় পড়া শুরু করে হাঁটি হাঁটি পা পা করে কলকাতার কঠিন রাস্তায়। ধীরে ধীরে কঠোর পরিশ্রম আর নিজের অনমনীয় জেদ নিয়ে বহরমপুরের গঙ্গা সাঁতরে আজ সে বাংলার মাটি ছেড়ে এখন দিল্লীতে কর্মরত অনেক উচ্চপদে। 
বাংলার সবার সেই ধ্রুব, কারুর ধ্রুবদা, অনেকের কাছে রোলমডেল,আবার কারুর কাছে রাফ এন্ড টাফ একজন মানুষ। সেই ধ্রুব আজ দিল্লির একটি সর্বভারতীয় চ্যানেলের ম্যানেজিং এডিটর হয়ে গেছে ক্লাস্টার এডিটর থেকে একেবারে ডবল প্রমোশন পেয়ে বাংলার ছেলে হয়েও সে তিনটি চ্যানেলের মাথা হয়ে কখনও দিল্লী , কখনও মুম্বাই, কখনও গৌহাটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে চরকির মত। সেই মানুষটার ফোন এলো আমার কাছে আজ দুপুরে। যে নেটওয়ার্কে ম্যানেজিং এডিটর পদে কোনো বাংলার প্রতিনিধি নেই দশ জনের মধ্যে একজনও সেই মানুষটা আমায় ফোন করছেন একটু অবাক হলাম। 
 শনিবার দুপুরে ফোনটা এসেছিল আমার কাছে বহুদিন পরে। মোবাইল স্ক্রীনে ওর নামটা ভেসে উঠলো ধ্রুব। হোয়াটস অ্যাপ কল নয়।একদম সরাসরি মোবাইলে ফোনে বহুদিন পর ওর সেই জলদগম্ভীর স্বর দাদা কি খবর তার। কেমন আছো তুমি দাদা। আমি একটু অবাক হয়ে কিছুটা মনমরা আর একটু অভিমান নিয়ে বললাম দাদা এই তো আছি আমি। চলে যাচ্ছে আমার। তোমার কি খবর। ঘড়ি ধরে মোট 42 মিনিট 41 সেকেন্ডের ফোনে বাক্যালাপ হলো বহুদিন পর। ঘড়ি ধরে সময় মেপে নয়, একদম দাদা আর ভাই এর আলাপ। ঠিক যেনো দুজনের বিকেলের বৈঠকী আড্ডা গ্রামের বাড়িতে উঠোনে বসে মুড়ি খেতে খেতে কথা হলো দুজনের। একজন দিল্লির রাস্তায় তখন দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে যমুনা নদী পার করে ছুটে চলেছে নিজের ঘরে নয়ডাতে। মুম্বই থেকে ফিরে সপ্তাহের শেষে ছেলের কাছে। সেই যাত্রা পথে চলতে চলতে দু একটা কথা। আমার অভিমান, রাগ সব গলে জল হয়ে গেলো।
আসলে আমার টিআরপি নিয়ে কাল রাতের লেখা পড়ে ওর বোধহয় অতীত দিনের স্মৃতি মেদূরতা একটু ওকে রাতে ওর ঘুমের ব্যাঘাত করেছিল। তাই রাতে মেসেজ এসেছিল দাদা ঘুমোলে। রাত তখন দেড়টা বাজে। হয়তো সেই টিআরপি নিয়ে লেখার জারক রসে জারিত হয়ে কাল রাতেই ওর কথা বলতে ইচ্ছা জাগে আমার সাথে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার আমি সেই মেসেজ দেখিনি। আজ তাই আবার দুপুরে ফোন করলো ধ্রুব নিজেই। যেটা আমায় বেশ অবাক করলো। এত ব্যস্ত একজন মানুষ যে তিনটে চ্যানেলের ক্লাস্টার এডিটর থেকে দু ধাপ প্রমোশন পেয়ে ম্যানেজিং এডিটর হয়ে গেছে নিজের যোগ্যতায়। সেই বিখ্যাত সাংবাদিকের ফোন আমার মত একজন অকিঞ্চিৎকর টোটো চালকের কাছে। তাও আবার দাদা কেমন আছো জানতে।
 আসলে আমি বেশ এই ধরনের ফোনকে উপভোগ করি আমি। একজন খুব ক্ষুদ্র মানুষকে যে জীবনের সর্বস্তরে হেরে গেছে, পিছিয়ে গেছে তার কাছে এমন সফল একজন মানুষের ফোন পেয়ে। নিজেকে বেশ কেউকেটা মনে হয় আমার এই রকম পরিস্থিতিতে। তাই প্রথমে জড়তা থাকলেও পরে আমার আর ওর স্বাভাবিক ভাবেই কথা হলো প্রায় বিয়াল্লিশ মিনিট। 
আসলে সত্যিই বলতে কি ওর সাথে আমার সেই কুড়ি বছর বা তার বেশি পরিচয় এর বয়স। ওর সুখ দুঃখ যন্ত্রনা অনেকটা আমি হয়তো জানি কিছু কিছু। আমার জীবনের যন্ত্রণা পিছিয়ে পড়ার ইতিহাস ও জানে। এই ভাবেই দুজনের এই সম্পর্ক এর মাঝে লেনাদেনা কিছুই নেই। একদম খাঁটি নির্ভেজাল একটা সম্পর্ক যেখানে হিসেব নিকেশ কিছুই নেই। আছে শুধু আবেগ সর্বস্ব একটা সম্পর্কের বন্ধন যে সম্পর্ক এত দিনেও মলিন হয়নি আমাদের দুজনের। যে সম্পর্ক এতদিনেও ছিন্ন হয়ে যায়নি আজও অনেক দূরে থেকেও।
সেই গভীর গোপন একটা সম্পর্কের মানুষ দূরে চলে গেলে মনে হয় যদি এই মানুষটা আবার কলকাতায় ফিরে আসে তাহলে হয়তো আমার আবার একটা হিল্লে হবে কাজের সুযোগ আসবে। আবার আমি গলা তুলে কলার তুলে কাজ করতে পারব দৌড়তে পারবো। কিন্তু মনে হয় যে উচ্চতায় অবস্থিত এখন ধ্রুব তাতে বাংলায় ফিরে কি করবে এই পঙ্কিল রাজনীতি সর্বস্ব ঘূর্ণাবর্তের মাঝে। যেখানে আবার তাকে প্যাঁচে ফেলতে চেষ্টা করবে এই তথাকথিত  মিডিয়ার কিছু বন্ধুরূপী বহুরূপীর দল। 
যারা সব সময় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ল্যাঙ মেরে ফেলে দিয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের কথা ভেবে। রাজনীতির হাত ধরে বাংলা থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজেদের পথের কাঁটা সরিয়ে নিষ্কণ্টক হতে চেয়েছে তারা। কিন্তু যে কাঁটা সরিয়ে দিয়ে কণ্টকহীন হতে চাইলো সেই দূরে চলে যাওয়া মানুষটা কি সত্যি কাঁটা হয়ে থেকে গেলো না দূরে গিয়েও। এই ম্যানেজিং এডিটর হয়ে কে জানে।
 
ধান ভানতে শিবের গীত গাইছি আজ এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে আমার স্মৃতি। কত কথা ভীড় করে আসছে এই শুধু একটা ম্যানেজিং এডিটর এর ফোনে। স্মৃতি রোমন্থন করে তার উত্তাপ নিয়েই তো বেঁচে থাকার চেষ্টা করা। আর সেই স্মৃতি ঝলমল কথাকে আঁকিবুঁকি অক্ষরে লিখে রাখা নানা ভাবে নানা সময়ে।
আচ্ছা সেই যে যেদিন ভিখারী পাসোয়ানের বাবা মারা গেলো রাতের বেলায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন এলো আকবর আলি খোন্দকার এর কাছে। বৃষ্টি পড়ছে তখন। রাত বারোটার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে পৌঁছলেন ভিখারী পাসোয়ানের বাড়িতে। মোটর সাইকেল করে আমি আর আমার ক্যামেরাম্যান মিন্টে ভালো নাম জ্যোতির্ময় বসু ভিজতে ভিজতে খবর করতে গেছিলাম। সেই বৃষ্টির রাতে ধ্রুব তো সেই রাতে হায়দরাবাদ এ সারা রাত জেগে ছিল। যদিও হয়তো ওর এলাকায় বৃষ্টি হয়নি সেই রাতে। আর মাঝে মাঝেই ফোন করে বলছিলো দাদা সাবধানে গাড়ি চালিয়ে যাও দেখো তুমি দুর্ঘটনা না হয়। সাবধানে দাদা। আর আমি সেই ক্যামেরা ব্যাগকে বুকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এটাই বোধহয় ওর ইউএসপি। একজন সাধারণ জেলার রিপোর্টার এর সাথে রাত জাগা একজন ডেপুটি নিউজ কো অর্ডিনেটর এর। সেদিন থেকেই আমি ওর প্রেমে পরে যাই। 
আসলে এই যে মিশে যাওয়া, মিলে যাওয়া ম্যানেজিং এডিটর হয়েও সেটাই বোধহয় ওকে সাফল্য এনে দিয়েছে আজ। তাই নিউজ 18 এর উড়িষ্যা চ্যানেলকে যে চ্যানেল ছয় নম্বরে ছিল সেই চ্যানেল কোনো ল্যান্ডিং না করে দু নম্বরে এসে গেছে।আর মুম্বাই এর লোকমত চ্যানেলকেও সফলতার মুখ দেখালো ওর জেদ, চেপে ধরে কাজ আদায় করা, হাসি মুখে, গাল দিয়ে, চিৎকার করে, পিঠ চাপড়ে ভোকাল টনিক দিয়ে সেই যে কোন কর্মীর কাছ থেকে তার সেরাটা আদায় করে নেওয়া।
আর আজ সেই সব কিছুই হয়তো তাকে আজ একেবারে দু ধাপ প্রমোশন দিয়ে ম্যানেজিং এডিটর করে দিলো সবার অলক্ষ্যে। আমি জানিনা বাংলা মিডিয়াতে পড়ে থাকলে ওর এই সুযোগ হতো কি না। কিন্তু ওর অনমনীয় জেদ আর সাহসকে বুকে নিয়ে যে বহরমপুরের গঙ্গা সাঁতরে পার হয়ে একদিন তার চরম রাজনৈতিক শত্রুর চোখে ধুলো দিতে পেরেছিল। আজ এতদিন পর ওর যমুনা নদী পার হতে হতে নিশ্চয়ই ওর মনে হচ্ছে ভাগ্যিস কিছু তার সুহৃদ সহকর্মী বন্ধু তাকে বাংলা ছাড়া করেছিল। না হলে কি আর একজন শাস্তি পাওয়া হাইকোর্ট এর পাতি রিপোর্টার থেকে ম্যানেজিং এডিটর হতে পারত সে। 
এই গ্রামের সেই উজ্জ্বল মুখের দু চোখে স্বপ্ন দেখা আমাদের সবার ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক। যাকে দেখে আমার আজ গর্ব হয়। একজন আমার মত হেরে যাওয়া মানুষকে ফোন করে শনিবারের দুপুরে এই খবর যখন নিজে নিজেই বলে সে তখন আমার সব অভিমান গলে জল হয়ে যায়। ও বার বার বলে দাদা তুমি ভেবো না। আমি আছি মেয়ের পড়া বন্ধ করো না তুমি। আমি চুপ করে শুনি ওর কথা।
একি আমাদের সবার সেই কাছের মানুষ ধ্রুব নাকি বাংলা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া এক সাংবাদিক যে আজ ম্যানেজিং এডিটর হলো নিজের কলজের জোরে কোনো নেতা,মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে তৈলমর্দন করে নয়। দাদা তুমি ভালো থেকো। শিরদাঁড়া সোজা রেখে মাথা উঁচু করে বাঁচো তুমি। আর মাঝে মাঝে মনে করে আমার মত বাতিল হয়ে যাওয়া এই লোকটাকে ফোন করে আশা ভরসা দিও। আর আমি তোমার ফোন পেয়ে আঁকাবাঁকা অক্ষরে কিছু সাদা জীবনের এমন কালো কথা নয়, ভালো কথা লিখি। দাদা ভালো থেকো তুমি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...