সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কাকতাড়ুয়া

কাকতাড়ুয়া দের আর চোখে পড়ে না আজ কাল।শহুরে জীবনে কাক তাড়ুয়া আর কোথায় পাবো আমরা। গ্রামে গেলে নিশ্চয়ই দেখা মিলবে ওদের। কিন্তু সেটাও খুব কম সংখ্যক এখন।
 সত্যিই বলতে কি আগে ছোটো বেলাতে যখন স্কুল যেতাম তখন রাস্তার পাশে মাঠ পার হবার সময়। দক্ষিণপাড়ার দিকের এক টুকরো ছোটো ধান জমিতে দেখতাম সাদা ছেঁড়া ধুতি পরে হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছে সে। গোল গোল চোখ দিয়ে দেখছে সে আমাদের। আর সেই দেখেই হাঁ করে দাঁড়িয়ে পড়তাম আমি রাস্তায় স্কুল যাওয়া ভুলে। পিঠে স্কুল ব্যাগ নিয়ে এক মনে দেখতাম ওকে। সত্যিই কি সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হতো এদের। ঠিক যেনো একবারে সত্যিই করে কেউ পাহারা দিচ্ছে।
আসলে কাক তাড়ুয়া কে কেনো যে অমন করে সাজিয়ে রাখা হতো।সেটা ছোটো বেলায় ঠিক বুঝে উঠতে পারতাম না আমি। শুধু এটুকু বুঝতাম যে এদের দেখলে ভয় পায় অনেকেই। সে পাখি হোক বা অন্য কোনো জীব, পরে জেনেছি এদের দিয়ে ভয় দেখানো হতো। ফসল রক্ষার জন্য এদের ব্যবহার করা হতো। এদের দেখে সত্যিই কেমন মনে হতো আমার। মানুষের পোশাক পরিয়ে নকল অবয়ব তৈরি করে ভয় দেখানোর একটা বৃথা চেষ্টা যেনো। তাতে আদৌ কেউ ভয় পেত কি না সেটা জানার সুযোগ হয়নি কোনো দিন। 
লাল সালোয়ার পরে, গলায় ওড়না পেচিয়ে,কানে বড়ো দুল পড়ে। চোখে লম্বা কাজল টেনে দাঁড়িয়ে আছে লাউ মাচার মাঝখানে। এক জন সুন্দরী মহিলা সেজে গুজে। একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বিলাতি কায়দায় অপেক্ষা করছে সে যেনো কারুর জন্য, মাথায় টুপি পরে। একদম সিনেমা হলের সামনে বয় ফ্রেন্ডের জন্য অপেক্ষা করার স্টাইলে। এই দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থা দেখে ওকে আমার ভারী মিষ্টি লাগে। ওর দেহে প্রাণ নেই, হৃদপিণ্ডের ধুক পুকুনি নেই ওর মধ্য। ওর শরীরে রক্ত বয় না একদম।ওর শরীরে ভালোবাসার নদী তির তির করে বয় না।তবু একদম মানুষের মত অবিকল সে, কিন্তু নকল মানুষের রূপ নিয়েছে সে। আর তাকে তৈরি করেছে আস্ত প্রাণওলা একটা মানুষ। সত্যিই বেশ মজার ব্যাপার কি বলুন।
মনে মনে আমার বড়ো মায়া হয় ওকে দেখে। প্রাণহীন পুতুলকে দিয়ে ফসল পাহারা দিয়ে ভয় দেখানোর এই পন্থা অবলম্বনকে, আমার কেমন যেনো একটু মেকি মনে হয়। যারা ভয় পায় এদের দেখে তারা যদি কোনো দিন জানতে পারে এরা সব নকল। এদের শরীরে লাল রক্ত বয় না। এরা রেগে গেলে শক্ত হাতে লাঠি ধরতে পারে না। আসলে এরা সব নকল বুদির রাজা। যাদের শরীরে হিংসা, রাগ, অভিমান, ক্লান্তি কিছুই নেই।শুধু চুপ করে এরা দাঁড়িয়ে থাকে আর অভিনয় করে।তাহলে কি মাঠের আল ধরে এগিয়ে আসবে অনেকে ফসল খেতে। এগিয়ে আসবে নাম না জানা পাখির দল ফসল খেতে। যারা আকাশ থেকে উড়ে এসে এদের দেখে মনে মনে ভয় পেতো। মাঠে নামতে সাহস পেত না।
এগিয়ে আসবে মেঠো ইঁদুর দৌড়ে। যে এত দিন দুর থেকে মিট মিট চোখে তাকিয়ে দেখেছে আর ভয় পেয়ে গর্তে ঢুকে পড়েছে এক পেট খিদে নিয়ে। কে জানে এরাও সব জেনে গেলে কি বেরিয়ে পরবে দলে দলে সবাই গর্ত থেকে। আসলে সেই পরীক্ষা তো কোনো দিন দিতে হয় নি কাকতাড়ুয়া দের। 
আশ পাশে চোখ কচলে দেখি আরে পাশের বাড়ির রুমা হেঁটে যাচ্ছে যে। আচ্ছা ডাক সাইটে সুন্দরী রুমাকে যদি ওর প্রাণ না থাকতো দেহে তাহলে ওকেও কি এই ভাবে মাঠে বসিয়ে রেখে দেওয়া যেত। ওকে দেখে ভয় পেত পশু,পাখিরা কে জানে। যদিও পাড়ার অনেক ছেলেই রুমাকে ভয় পায়। প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে তারা সেটা বুঝতে পেরেছে ভালই হাড়ে হাড়ে। কিন্তু রুমা কি কাকতাড়ুয়া হয়ে বাঁচতে পারবে কোনো দিন। সে কি পাহারা দিতে পারবে মাঠ, ফসল কে জানে।
 কিম্বা ওই যে সরকার বাবু যিনি নিজেকে খুব বড় পুলিশের অফিসার ইনচার্জ এসআই বলেন, পাড়ায় হম্বি তম্বি করেন খুব। সকলকে বুঝিয়ে দেন তিনি কত বড় মাতবর লোক। তাকে যদি কাকতাড়ুয়া সাজিয়ে রাখা হয় ধু ধু সবুজ মাঠে, তাহলে সেকি অমন হম্বী তম্বি করতে পারবেন, কে জানে। নাকি শুধুই একটা জাঙ্গিয়া ছাড়া, ছেড়া প্যান্ট আর ঢোলা জামা পরে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকবেন আদিগন্ত বিস্তৃত মাঠের পানে। আমার খুব দেখতে ইচ্ছা করে ওদের কি অবস্থা হয় তা দেখতে। দাপুটে মানুষ থেকে যদি হঠাৎ কেউ কাকতাড়ুয়া হয়ে গেলে তার অবস্থা কেমন হয় দেখতে বড়ো ইচ্ছা হয় আমার।
 কিম্বা ওই যে পাড়ার লাহিড়ী জেঠিমা যিনি সব সময় পাড়ার সব বাড়ী ঘুরে নিজের ছেলের বিদেশে চাকরির খবর বিলিয়ে বেড়ান। তাকে যদি সাদা শাড়ী পরিয়ে মাঠের মাঝ খানে চুপ করিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, তিনি কি পারবেন দাঁড়িয়ে থাকতে, কোনো কথা না বলে চুপ করে। মনে হয় পারবেন না। সবাই দৌড়ে গিয়ে বলবেন আমরা মানুষ, আমাদের রক্ত আছে। আমাদের হৃদযের যন্ত্র ধুক পুক করে আওয়াজ করে।আমরা কেউ প্রাণহীন কাকতাড়ুয়া নই।তাহলে কেনো আমাদের সকলকে মাঠ পাহারা দিতে এনেছ তোমরা।
 আমি মনে মনে বড়ো আনন্দ পাই। ভাবি দেখ কেমন লাগে, খুব বড় বোল চাল, সব এক নিমেষই শেষ। ফুস হয়ে গেলো তো। আসলে কি জানেন আমরা সবাই তো ওই আসলে কাকতাড়ুয়াই। একটা লাল নীল পোশাক পড়ে কোনো ভাবে, নানা ভূমিকায় অভিনয় করছি আমরা। মঞ্চের অভিনয় শেষ হলে ফিরে যেতে হবে পোশাক খুলে রেখে। কেউ বাবার অভিনয় করছি, কেউ সন্তানের অভিনয় করছি। এই ভাবেই নানা অভিনয় করেই চলেছি আমরা। একদিন অভিনয় শেষ হলে আমরা ফিরে যাবো যে যার নিজের আসল মঞ্চে। যেখানে বসে আছে সকলে আমার জন্য অপেক্ষা করে।
দুর থেকে দেখি সত্যিই আজ কাল মাঠে কমছে কাক
 তাড়ুয়ার সংখ্যাও। আগের মত আর নকল মানুষের পোশাক পরে তারা দাঁড়িয়ে থাকে না সবুজ মাঠের মাঝ খানে। কিন্তু কেনো কে জানে। আমি ভাবতে থাকি ডুব দি ছোটো বেলার স্মৃতিতে।ছোটো বেলায় কত আনন্দ পেতাম এদের দেখে।
 হঠাৎ দেখি কাকের দল লাইন করে এসে ঘুরছে মাঠের ধারে। এদের খুব কাছ থেকে দেখে, বুঝে গেছে এরা নকল সেজে তাদের এত দিন ভয় দেখিয়ে এসেছে। ক্ষমতা দেখিয়ে এসেছে।আসলে ওরা সব ক্ষমতাহীন, হৃদয়হীন এক একটা নকল মানুষের অবয়ব। যাদের দেখে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই তাদের।
 তারপর সেই কালো কালো কাক গুলো, কাক তাড়ুয়ার অবয়বকে ঠোকরাতে থাকে ক্রমাগত জোরে জোরে। আর তাদের আক্রমণে একে একে তাদের দেহ থেকে খসে পড়ে তাদের জামা,কাপড়,নকল চুল,হাত,পা। কাকতাড়ুয়ার আসল রূপ বেরিয়ে পড়ে সকলের সামনে। আর তা দেখে সবুজ মাঠের ওপর ,মাঝ আকাশে কা কা করে আনন্দে আত্মহারা হয়ে চিৎকার করে কালো কাকের দল।
মাঠের আল এর গর্ত থেকে মুখ বাড়িয়ে সেই লুকিয়ে পড়া মেঠো ইঁদুরটা, মুখ বাড়িয়ে দেখতে থাকে কি হলো রে বাবা এত আওয়াজ কেনো। চোখ পিট পিট করে সে দেখে, একি অবস্থা হলো কাকতাড়ুয়ার, সবুজ মাঠের মাঝখানে হাত পা ছড়িয়ে পড়ে আছে সে। একি অবস্থা হলো দোর্দন্ড প্রতাপ কাকতাড়ুয়ার। এই দেখে গর্ত ছেড়ে এক লাফে বেরিয়ে আসে সেও। আনন্দে আত্মহারা হয়ে সেও সবুজ মাঠের মাঝখানে লাফাতে থাকে। এদিক ওদিক দৌড়তে থাকে, আনন্দে বহুদিন পর। আর খোলা আকাশের নীচে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে, নকল অভিনয় করে ভয় দেখানো, কাক তাড়ুয়ার অবয়ব।

কাকতাড়ুয়া - অভিজিৎ বসু।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...