সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মাদল

বোলপুর শহর থেকে খুব বেশি দুর নয় জায়গাটা। মেরে কেটে পাঁচ কি ছয় কিলোমিটার হবে। নামটাও বেশ সুন্দর মহিষঢাল। কোপাই নদীর গা বেয়ে ছোট্ট এই গ্রামটা বেশ সুন্দর আর মনোরম গ্রাম। আসলে গ্রামের এই মেঠো নামটা শুনেই কেমন ভালো লাগলো আমার। দৌড়ে গেলাম ছুটির দিনে রবিবারে মহিষঢালের পথে। রাস্তার পাশে ছোটো একটা দোকানের ভিতর আধবুড়ো ক্ষয়া চেহারার একটি লোক বসে একমনে কাজ করছে। কোনো দিকেই কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই ওর।
কেমন যেনো থমকে গেলাম দোকানের সামনে গিয়ে। আচ্ছা কি বলবো আমি। কি জন্য এসেছি আমি নিজেই যে জানি না তাহলে। শুধু একটা জায়গার নাম ভালোবেসে পথে বেরিয়ে পড়েছি। যে সব জিনিস কিনতে লোকজন এখানে ভীড় করে তেমন খদ্দের তো আমি নয়। তাহলে কি জন্য এলাম আমি। এই সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে সোজা বৃদ্ধের সামনে। ঘাড় নিচু করে বসে একমনে কাজ করে চলেছেন তিনি। নামটাও জানিনা কি বলবো তাঁকে আমি। 
কেমন যেনো স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি। দোকান ঘরের চারিদিকে নানা রঙের মাদল, ঢোল এর ভীড় চারিদিকে। দেওয়ালে ঝুলছে তারা। ওরা বোধহয় বুঝতে পেরেছে আমার অবস্থাটা। ওরাও কেমন করে মিটি মিটি হাসছে আমায় দেখে দুর থেকে। আমার অবস্থা দেখে। সত্যিই তো একটা জায়গার নাম ভালো লাগলো বলে সেই জায়গায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে চলে যাওয়া এটা কি ঠিক হলো কে জানে। ঠিক বেঠিক হিসেব করে কি আর জীবনের রাস্তায় চলেছি আমি।
এমন সময় একটা হালকা ডাক শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি লাল সবুজের ডোরা কাটা শাড়ি পরে ঝলমল করছে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ডাকছে ওই বৃদ্ধকে আর বলছে, কি গো তুমার যে কোনো হুঁশ নাই গো। একবার ওই মাদল বাঁধার কাজ পেলেই হলো। বসে গেলো রাস্তার ধারে। কে কত কিনছে তার হিসাব নেই কুনো।কি টাকা আয় হলো তার কোনো হিসাব নাই। আলতো করে ঘাড় তুলে বৃদ্ধ দেখে ফুলমনি কে। ওর নাকের ওপর ছোট্ট নাকছাবি টা কেমন যেনো ঘামে ভিজে মাখা মাখামাখি হয়ে আছে। কাল চুলের সাপের মত বিনুনিটা পিঠ বেয়ে কোমর বেয়ে নেমেছে অনেকটা নিচে কোমর ছাড়িয়ে। বড়ো ভালোবাসে সে ওই
ফুলমনিকে।
ফুলমনির বুকের মাঝে কেমন লুকিয়ে থাকা ভাল- বাসার উত্তাপ জুড়িয়ে জল হয়ে গেছে অনেক দিন আগেই। সত্যিই তো জীবনের হুঁশ যদি থাকতো তার তাহলে কি আর আজ এই অবস্থা হতো তার। আবার বলে দেখ, দেখ কে এসেছে বাবু লোক। তুর কোনো খেয়াল আছে রে। কি জন্য এসেছে বাবুকে জিজ্ঞাসা কর। আমার কেমন যেনো বাধ বাধ লাগে ওদের দুজনের মাঝে এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে। 
আমি তো কোনো জিনিস কিনতে আসিনি কি বলবো ওদের তাহলে। ফুলমনির কথায় ঘাড় তুলে আমায় দেখে বৃদ্ধ। দু চোখে কেমন যেনো অচেনার ভীড়ে হারিয়ে যাওয়া মানুষকে খুঁজে পাওয়ার একটা বৃথা চেষ্টা করা। ফুলমনি বলে আরে বাবু বসেন গো। বলে একটা চাটাই এগিয়ে দেয় আমায়। আমিও ঝুপ করে বসে পড়ি। খাবারের থালাটা বসিয়ে দিয়ে বলে খেয়ে লিও তুমি। এই বলে হেঁটে চলে যায় ফুলমনি। কোপাই নদীর জলের মতো তির তির করে কালো পাথরের ওপর দিয়ে। 
আমি ওকে দেখি সত্যি কি সুন্দর ওই কাজল কালো মেয়েটি মেঘের ভেলায় ভেসে হারিয়ে গেলো কোপাই নদীর পাড়ে। বলেন বাবু কি লিবেন। এই রে কি জবাব দেব এই কথার আমি। বৃদ্ধর কথায় আমার ঘোর ভাঙ্গে বলি মানে। বোধ হয় কিছুটা বুঝতে পারেন তিনি ওই বৃদ্ধ। আলগোছে হেসে বলে ওঠে ওই ফুলির অমন কথা। ওর কথায় কিছু ভাবেন না আপনে বাবু। দুটো খেতে দেয় তাই এত চোট পাট ওর। আমি চুপ করে শুনি। মনে হয় কিছু কি বলতে চায় বৃদ্ধ। হাতের কাজ ফেলে কেমন পুরোনো স্মৃতি আওড়াতে থাকে বিড় বিড় করে বৃদ্ধ বুধিয়া।
সেতো অনেক দিনের আগের কথা ধীরে ধীরে কেমন যেন সব কিছু মনে পড়ে যায় বুধিয়ার। কোপাই নদীর তীরে তখন এত বাড়ী ঘর হয়নি। ফুলমনি তখন এই গ্রামের ফাঁকা রাস্তা পেরিয়ে কেমন করে চলে আসতো নিজের ঘর ছেড়ে বুধিয়ার কাছে দুপুর বেলায়। ওর পায়ের আওয়াজ ঠিক টের পেত সে দুর থেকে। কেমন সেও যেনো হাতের কাজ ফেলে অপেক্ষায় থাকতো ওর জন্য। ধীরে ধীরে দুজনের ভালো বাসা গড়ে উঠলো এক সময়। এই টানেই তো ওরা দুজনে অসম বয়সী হলেও কেমন করে যেন মিশে একাকার হয়ে গেলো মাদলের তালে তালে।
কিন্তু গ্রামের মেয়ের এই ভাব ভালোবাসা যে টিকলো না বেশিদিন। দূরের গ্রামে ফুলির বাবা বিয়ে ঠিক করলো। ট্রাক্টর আছে ছেলের,পাকা ঘর। পয়সা রোজগার অনেক ছেলের। দু চাকার গাড়িও আছে। ফুলিও সব শুনে চুপ করে যায়। বুধির মত অবস্থা নয় ছেলের। বাবার কাছে সব শুনে দৌড়ে আসে বুধিয়ার কাছে। কিন্তু সেদিন কোনো কথা বলে না সে। চুপ করে ঘাড় গুঁজে বসে থাকে সে। মনে মনে ভাবে তার যে এসব কিছুই নেই। অর্থ, পাকা ঘর, দু চাকার গাড়ি তাহলে ফুলিকে আটকাবে কি দিয়ে। কি দেবে সে তাকে ভালোবেসে।
মাঝ দুপুরে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে মহিষঢালে। ফুলির দু চোখ ভিজে যায়। সে মাথা নিচু করে বুধিয়ার ঘর ছেড়ে চলে যায় কোনো কথা না বলেই অভিমান করে। ধুম ধাম করে ফুলির বিয়ে হয়। বর আসে, বাজনা বাজে। গ্রামে অনেক লোক ভোজ খায়। দুর থেকে সব শোনে সে। কিন্তু কোনো কথাই বলতে পারে না বুধিয়া। কি বা বলার আছে তার। চুপ করে বুধিয়া সব কিছুই মেনে নেয় মুখ বুজে।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফুলি ঘরে ফিরে আসে, বাবার ঘরে। কেমন করে দুর্ঘটনায় মারা যায় ফুলির বর। মেয়ে ভালো নয় এই অজুহাতে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তারা ফুলিকে। ফুলির নতুন ঘরের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় এক লহমায়। সেই ফুলি দুপুর হলেই ভাত নিয়ে চলে আসে বুধিয়ার কাছে। তারপর রাগ দেখিয়ে কেমন করে যেনো খাবার দিয়ে বলে খেয়ে নাও গো বেলা হলো যে অনেক। ওই লোকটার প্রতি যে তার টান বড়ো বেশি বরাবর। বুধিয়া ভাত মেখে খায় দুর থেকে একমনে ফুলমনি দেখে তাকে। মনে মনে ভাবে বুড়ো লোকটাকে, সে না দেখলে আর দেখবে কে।
 মাদলের ছিলা ধরে শক্ত হাতে টান দেয় বুধিয়া।‌ ফুলির গলার আওয়াজ পেয়ে কেমন যেনো একটা শক্তি জেগে ওঠে তার বুকের মাঝে ভিতর থেকে। কেমন করে যেনো আচমকা দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মাদল গুলো দ্রিম দ্রিম করে বাজতে থাকে নিজে নিজেই সবার অজান্তে কেমন করে। 
ফের আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে মুষলধারে। বুধিয়া বিড় বিড় করে বলে ওঠে ওই যে ফুলি আসছে ওর পায়ের আওয়াজ,নূপুরের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন বাবু আপনে। আমি চুপ করে বসে থাকি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে। কোপাই এর তীর তখন বৃষ্টির জলে ভেসে যাচ্ছে। দূরে অনেক দুর থেকে ফুলমনি বৃষ্টির জলে ভিজতে ভিজতে ছুটে আসে বুধিয়ার কাছে। তার
ভালবাসার জলে স্নান করে।
 আমি ধীরে ধীরে উঠে পড়ি সেই সময়। হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে চলি একা একা। মাদলের দ্রিমি দ্রিমি আওয়াজকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাই আমি। মাদলের আওয়াজ কে অনেক পিছনে ফেলে আমি এগিয়ে যাই ঘরের দিকে। দুর থেকে দেখি ফুলমনি কোপাইয়ের তীর ধরে জলে ভিজে বুধিয়ার কাছে দৌড়ে আসছে। ওর সারা শরীর, মন জলে ভিজে একাকার হয়ে গেছে। মাদলের আওয়াজের টানে সে দৌড়ে, এগিয়ে আসছে নিজের ভালোবাসার কাছে।

মাদল - অভিজিৎ বসু। 
সাত মার্চ, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...