সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমলকী গাছের বন্ধুত্ব

পৃথিবী তে ভালো লোক দ্রুত কমছে। তার মধ্য দিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।ভালো-খারাপ এর মাঝে টিকে থাকতে হয় আমাদের সকলকে সাথে নিয়ে।এদের অনেকেই খারাপ হয়ে বেঁচে আছে, তবু তো এরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে বেঁচে আছে। সত্যিই এই ছবিটা পুরুলিয়ার এক প্রত্যন্ত কোনো গ্রামের ছবি। যে ছবিটা দেখে মনটা বড় ভালো হয়ে গেলো আমার। সত্যিই কি অদ্ভুত অনুভূতি নিয়ে বাঁচতে জানে, এই সব মানুষ গুলো। অজ গ্রামের এই প্রান্তিক মানুষ গুলোর জীবনে কষ্ট, যন্ত্রণা, দুঃখ থাকলেও কি অক্লেশে, এরা সব কিছু ভুলে সহ্য করতে জানে হাসি মুখে।এদের সারল্য দেখে আমি অবাক হই। ভাবি মানুষ এত প্যাঁচ পয়জার হীন হয় কি করে। হিসেব নিকেশ না করে এরা বেঁচে থাকে কি করে। 
একদম নিশ্চিত হয়ে কাটিয়ে দেয় ওরা, ঠিক হলুদ ছোপ ছোপ সেই বসন্ত বৌরি পাখির মত। যে পাখিটি নিশ্চিন্তে নিরাপদে, আমলকী গাছের ডালে বসে আপন মনে খুঁজে বেড়ায় তার প্রিয় ফল কে।আমলকী- বন কাঁপে যেনো তার, বুক করে দুরু দুরু। পেয়েছে খবর, পাতা খসানোর, সময় হয়েছে শুরু। সত্যি বলতে কি এই সব মানুষগুলোর বুক দুরু দুরু করে না কোনো দিন। এরা ভাবে না কি করে একে অন্যকে ঠেলে দিয়ে ওপরে উঠবে। এরা বোধ হয় একে অপরকে জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকতে জানে। তাই ওরা সব এক হয়ে, দল বেঁধে জীবনের উত্তাপ নেয় হাসি মুখে।না হলে পদে পদে যে জীবনে দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণাকে সহ্য করেও কি করে ওরা এরা এত অমলিন থাকে কে জানে।
ধুলির ধূসরতা ওদের জীবনে কোনো ছাপ ফেলে না কেনো কে জানে।কই আমরা তো তা পারি না। হিসেব নিকেশ করেও, লাভ ক্ষতির জমা খাতা বের করে বার বার দেখি। তবু কেমন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা হয় আমাদের বার বার।জীবনের এই ওলোট পালোট চিত্রকে আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। একই শ্রষ্টার সৃষ্টি মানুষের দুটো জীবন, দুটো ভাবনা। এ কেমন যেন অচেনা অজানা লাগে আমার কাছে।একদল শুধু কি করে মই বেয়ে ওপরে উঠবে, তার চিন্তায় ব্যাপৃত থাকবে, আর অন্য দল জোনাকির মতো দুর আকাশে উড়ে বেড়াবে। কিম্বা ফিংয়ের মত নেচে বেড়াবে আনন্দে আত্মহারা হয়ে।কই আমরা তো পারি না ওদের মত বিন্দাস থাকতে, জীবন নিয়ে এইভাবে ছিনিমিনি খেলতে। 
বোধ হয় কিছুটা ভয় পাই আমরা ওদের। যদিও সেই ভয়কে জয় করতে না পারলেও বুক ঠুকে অনেক কিছু বলি আমরা জোর গলায়। জীবনের লেজার বুক আগলে রেখে, দিন রাত অবিরাম কেঁদে উঠি শুধু কিছুই করতে পারলাম না বলে। এক এক সময় আমার খুব রাগ হয়। ভাবি এমন কেনো দু ধরনের মানুষ তৈরি করলেন ভগবান। যিনি নিজেই সব জানেন তবু কেনো এমন ফারাক। কেউ নিজেকে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর ভেবে আনন্দ পাবে।আর কেউ দুর থেকে সেটা দেখে অন্ধকার ঘরের দাওয়ায় দাড়িয়ে মিটি মিটি হাসবে এক পেট খিদে নিয়ে। 
একে কেমন যেন অচেনা অজানা মনে হয় আমার নিজের।কবির কথাই ঠিক, ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়।যেখানে নিঝুম পদ্যর কোনো স্থান নেই মনে হয়।তবে জীবন তো শুধু বন্ধুর নয়, এই জীবনের উঠোনে তো আমলকী গাছের ছায়া রয়েছে। যে ছায়ায় দাড়িয়ে আমি একসময় শুনে ছিলাম বন্ধুত্ব আজও বেঁচে থাকে, হলুদ ছোপ ছোপ সেই বসন্ত বৌরীর মতোই। যে আমলকীর ডালে বসে আপন মনে ঘাড় উঁচিয়ে অনুভুব করে তার সাথে গাছের অমলিন বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথা।যাকে সে কোনো মূল্যে বিক্রি হতে দেবে না কোনো দিনই।আর এই গাছও বোধ হয় সেটা বুঝতে পারে তাই সময় হলেই অপেক্ষা করে তার জন্য, কখন আসবে হলুদ ছোপ রঙা পাখীটি তার কোলে এসে বসবে নিশ্চিন্তে,নির্ভয়ে। আর সেই সময় ঝিরি ঝিরি পাতার আওয়াজে কেঁপে কেঁপে ওঠে সে। কিছুটা লজ্জায় ,কিছুটা ভালোবাসায়।
এই জীবনে তাহলে শুধু ব্রম্ভারাই অহংকার নিয়ে বাঁচে না। এই জীবনে জোনাকী আছে, আমলকী গাছের ছায়া সুনিবিড় বন্ধুত্ব আছে, গ্রামের উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকা খিদে পেটে আনন্দ নিয়ে বাঁচতে জানা ছোটো ছোটো জীবন আছে। অক্লেশে ক্ষমতা পেয়ে তাকে আড়াল করে ছেড়ে দিয়ে, চলে আসা কিছু মানুষ আছে। যারা মুখোশ পড়া লোকদের থেকে দূরে সরে থাকতে ভালবাসে। সেই সব মানুষ আছে,যাদের লুকিয়ে বাঁচতে হয় না এই পঙ্কিল পৃথিবীতে। যাদের জীবনের লেজার বুক একদম শুন্য, কিন্তু তারা বেঁচে থাকে হলুদ বসন্ত বৌরির মতোই। কিছুটা হলেও নিজের কলজের জোরে আর ভালোবাসার মানুষদের উত্তাপ নিয়ে। যারা মুখোশ না পরে সত্যিই তাকে ভালোবাসে, ছায়া দেয়, সাহায্য করে। 
এই জীবনে তাহলে শুধু দুঃখ নয়। আরো অনেক কিছুই আছে যা নিয়ে বাঁচা যায় অক্লেশে। শুধু লেজার বুক আগলে আর মই বেয়ে ওপরে ওঠার তাড়া নিয়ে বাঁচতে হয় না তাদের। ভাবতে থাকি আমি অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে ভাবি। যে রাগ হয়েছিল ধীরে ধীরে সেই রাগ, অনুরাগে মুক্তি পায়। সৃষ্টি কর্তাকে মনে মনে প্রনাম জানাই আমি। সত্যিই তিনি ঠিক করেছেন এই দু ধরনের মানুষ তৈরি করে। না হলে যে আমিও সেই লেজার বুক আর মই নিয়ে কাড়াকাড়ি করতাম। চোখে পড়ত না ঘরের পাশের আমলকী গাছের পাতা। চোখে পড়ত না হলুদ ছোপ ছোপ সেই বসন্ত বৌরির, ঘাড় ঘুরিয়ে ছোটো চোখে তাকিয়ে থাকা। দেখতে পেতাম না খিদে পেটে চেপে, হাসি মুখে খুশি মনে বেঁচে থাকা শিশুদের অমলিন বন্ধুত্বের বন্ধন কে। এগুলো নজর এড়ালে বাঁচতে সত্যিই কষ্ট হতো আমার।
চোখের সামনে এদের দেখেও যদি না দেখতে পেতাম চোখের সামনে ঝাপসা দেখতাম এদের তাহলে বোধহয় যন্ত্রণা আরও পেতাম। ভাবতে থাকি আমি, সত্যি বলতে কি এই ভাবনা ভুল না ঠিক বুঝে উঠতে পারি না আমি। জীবনের দৌড়ে পিছিয়ে যেতে যেতে ভাবি সত্যিই কি কোনো দাম আছে এই সবের। আদর্শ নিয়ে বাঁচা, শিরদাঁড়া সোজা রেখে চলা, মই নিয়ে দৌড়ে যাওয়া বন্ধুর মুখোশ পরা লোকদের থেকে দূরে থাকা। এসবের কি কোনো দাম মেলে জীবনে।
ভালো করে পুরুলিয়ার গ্রামের শিশুদের ছবিটা চোখে পড়ে,দেখি আর মন ভরে যায় আমার। চোখে পড়ে সেই একা দাঁড়িয়ে থাকা আমলকী গাছকে। তার পাতার ঝিরি ঝিরি হাওয়া অনুভব করি আমি শীতের সন্ধ্যায়। ওরা যেনো ফিস ফিস করে আমায় বলে,তুমি বদলে যেও না। যে বিশ্বাস,যে আদর্শ নিয়ে বেঁচে আছো এত দিন ধরে, তাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকো বাকি জীবন। দেখো ঠিক ভালো থাকবে আমাদের মতই। ভুল করেও পা পিছলে পড়ে যেও না তুমি।
 আমিও ওদের কথা শুনে একটু ভরসা পাই। বাকি জীবন, এই ভাবে না হয় কাটিয়ে দেব কোনো ভাবে ওদের মতোই।কি দরকার আর এই বুড়ো বয়সে এসে নিজেকে বদলে ফেলার। জানলা দিয়ে আমি একদৃষ্টিতে ওই আমলকী গাছের দিকে তাকিয়ে থাকি।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...