সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লেবু পাতার গন্ধ মাখা জীবন

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ রিষড়ার সেই চেনা পথে অচেনা পথিক হয়ে ঘুরে বেড়ানোর গল্প। যে পথের পাঁচালীর গল্প আমার বহু দিন ধরেই জানা আছে। যে গল্পের কুশীলবরা সব কেমন যেন হারিয়ে গেছে ধীরে ধীরে এদিক থেকে ওদিক। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে কিছু স্মৃতি চিহ্ন শুধু। তবু হারিয়ে যাওয়া মানুষ, হারিয়ে যাওয়া পথ, হারিয়ে যাওয়া রাস্তায় দুপুর বেলায় ঘুরে বেড়ালাম আমি একা একা। একদম একা চুপ করে হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম আমার সেই ছোটো বেলার শহর কত বদলে গেছে আজ। যে জল,কাদা, গর্ত খুঁড়ে রাখা এবড়ো খেবড়ো শহর কত সুন্দর হয়ে গেছে এখন।মাটির রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো শহর আজ পাকা হয়েছে। 

 শ্রীরামপুর থেকে ট্রেনে চেপে হঠাৎ করেই রিষড়াতে নেমে পড়লাম আমি। স্টেশন থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগোতে থাকলাম নিজের বাড়ির দিকে। কিন্তু আমি সেই আগের মত রিক্সা ধরলাম না। টোটো করে চেপে দ্রুত পৌঁছে গেলাম না বাড়ির কাছে হুশ করে।কারণ জীবনের কোনো তাড়া নেই আমার। তাই স্টেশন থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম রেল লাইন পার হয়ে পশ্চিম পাড়ে। রেল লাইন এর পাশ দিয়ে আপনমনে হাঁটতে থাকলাম একা একা। কতদিন পর কোনো কাজ ছাড়া আমি এমন একা একা এই পুরোনো চেনা পথের পথিক হলাম আবার কে জানে। 

আসলে এই ভাবেই ফিরে যাওয়া, পুরোনোকে নতুন করে উপলব্ধি করা একবার এই জীবনে। যে উপলব্ধির মাঝে লুকিয়ে আছে নতুন কিছু অভিজ্ঞতা। নতুন দর্শন। নতুন ভাবনা। নতুন নিয়ম মেনে চলা। নতুন বদলে যাওয়া জীবনের নতুন রূপ এর প্রত্যক্ষ দর্শন করা। যে দর্শনে হয় আত্ম উপলব্ধি। যাক গে কিছুটা হেঁটে এসেই দাঁড়িয়ে পড়লাম বন্ধ জঙ্গলে ভরা লক্ষী নারায়ণ কটন মিলের গেটের সামনে। যে মিলের জমিতে গড়ে উঠেছে বহুতল আবাসন। দূরে আকাশ ছাড়িয়ে তার উঁচু মাথা দুর থেকে দেখতে পেলাম। 

বেলা দুটো বাজলেই এই মিলের ভোঁ বাজে না‌ আর। মিলের শ্রমিকরা সুতো কেটে হাতে মুখে মাথায় সুতোর রোয়া ওঠা ধুলো মেখে ঘরে ফেরে না আর কেউ। এই ছোটো গেটের সামনে দুটোর আগে ভোঁ বাজার ছুটির সময় হলেই কত দিন যে গোবিন্দর মা হাসি মাখা ক্লান্ত মুখে গেট ধরে দাঁড়িয়ে থাকত আপনমনে। ঘরে ফিরে আসার জন্য সেই শ্রমিকদের লাইন পড়তো এই মিলের গেটে। ছুটির ঘন্টা বাজার শোনার জন্য উদ্বিগ্ন সব শ্রমিকদের মুখ দেখতে পেতাম আমি। আর মাস পার হলেই বেতনের টাকা মিলতো তাদের। সেই টাকার গন্ধ,আর গরম ভাতের গন্ধ যে মিলে মিশে একাকার হয়ে যেতো।

 গোবিন্দর মা প্রতিদিন ভোর হলেই হেঁটে হেঁটে চলে যেতো এই মিলে সকাল ছটার শিফটে কাজ করতে। সংসার চালাতে কি কঠিন পরিশ্রম করতেন‌ তিনি। তিন মেয়ে এক ছেলের সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হতো তাঁকে। তবু তাঁর মুখের অমলিন হাসিটা মিলিয়ে যেতে দেখিনি কোনো দিন হাজারো কষ্টের মধ্যে। সেই মিলটাই আজ এমন জঙ্গলে ভরে গেছে। চারিদিকে সাপখোপের বাস। মিলের ভোঁ বাজে না আর। মিলের গেটের চায়ের দোকানে ঝাঁপ পড়েছে বহুকাল আগেই।

 একটু মন খারাপ নিয়ে এগোলাম দেখলাম জে কে স্টিল কারখানার গেটেও তালা পড়েছে বহুদিন আগেই। শ্রমিকদের বকেয়া টাকা দেবার দাবি জানিয়ে কিছু কাগজে লেখা আছে গেটের সামনে মারা হয়েছে পোস্টার। পাশাপাশি দুটো যমজ ভাইয়ের এই অবস্থা দেখে মনটা উদাস হয়ে গেলো। দুটো কারখানার মাঝে সেই ফাঁকা রাস্তা। গাছের ছায়া ঘেরা রাস্তা আর নেই। দূরে আকাশ ছাড়ানো বহুতল দেখে মনে পড়ে যায় আমার টালির ঘরের কথা। যে ঘরে আজ আর মা নেই। এই দুপুর বেলায় কোনোদিন যে হাজির হতে পারিনি মার কাছে তাই চুপিসারে চলে এলাম নিজের ঘরে একা একা। রাস্তার পাশে ভেজা পতাকা মাথা তুলে একদৃষ্টে আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।

আসলে সাংবাদিক হলেও আমি তো একজন মানুষ। তাই এসব দেখে মন খারাপ হয়। দাশপাড়া পার হয়ে নিজের বাড়ির পথ ধরে এগোতেই বহুতল এর দেওয়ালে চোখ আটকে গেলো আমার। খেলার মাঠ,পুকুর সব সাফ হয়ে গেছে ধীরে ধীরে। শুধু বাড়ী, দেওয়াল, আর মানুষের ঘরের সাথে পাশের ঘরের ধাক্কাধাক্কি। এর মাঝে সেই বন্ধ রমেশের ফ্ল্যাট দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার পাশে একবুক দুঃখ আর চাপা কষ্ট নিয়ে। অবশেষে সেই টালির ঘরের সামনে এসে বেল দিলাম। বাবা দরজা খুলে দিলো। ফাঁকা ঘরে আমি ফিরে এলাম বহুদিন পর। 

যে ঘরে আমার শৈশব কেটেছে, বড়ো হয়েছি কৈশোর কেটেছে এই ঘরে। যৌবনের জোয়ার এসেছে এই ঘরেই। যাদের হাত ধরে ছোটো থেকে বড়ো হয়েছি। সেই মা নেই আমার আজ এই ঘরে। যে ঘর তিনি নিজের হাতে তৈরী করেছিলেন একদিন। সেই ঘর দুয়ার উঠোন গাছ পালা সব ছেড়ে চলে গেছেন তিনি বহু দূরে। বন্ধ কারখানায় জঙ্গলে ভরা রাস্তায় হয়তো হারিয়ে গেছে আমার মা, গোবিন্দর মা দুজনেই। কোনো দিন আর ফিরে আসবেন না তারা আমাদের কাছে কোনো দিনই। বদলে যাওয়া জীবনে আর কোনোদিন হয়তো দেখা হবে না তাদের সাথে আমাদের। তবে তাদের জন্য এই এই হুতাশ। এই যে কষ্ট সেটা নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে একা একা। 

ঘর থেকে বেরিয়ে বাড়ির পেছনে লেবু গাছের গন্ধ মাখা পাতা, ফল দেখলাম। গাছ ভরে লেবু হয়েছে এই বার। মনটা বড়ো ভালো হয়ে গেলো আমার। মার নিজের হাতে বসানো এই গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আবদার করতে ইচ্ছা হলো মা একবার যদি বকে আমায়। এই কেনো দুপুরে গাছে উঠেছিস একা একা। সেই পেয়ারা গাছটা নেই আর, যে গাছে উঠে বসে বসে এই বর্ষার সময় পেয়ারা খেতাম আমি। আম গাছের ডালে পাকা আধ খাওয়া আম দেখে মনটা ভরে গেলো। 

কই না তো সব ঠিক আছে তো। মার সাজানো গোছানো বাগান, সেই সব গাছ, ফুল, পাতা, সব ঠিক আছে আজও। পাশের বাড়ির সেজমা, অসীম দে, রনজিৎ এরা সবাই বেশ ঠিক আছে কেউ দেখে চিনতে পারল আমায় কেউ চিনতে পারলো না। কিন্তু আমি শ্রীরামপুরে ফিরে এলাম লেবু পাতার গন্ধ মাখা জীবন নিয়ে।  যে জীবনে জড়িয়ে আছে মার মিষ্টি ওম মাখা গন্ধ। যে গন্ধ হারিয়ে গেলেও হারিয়ে যায় না কিছুতেই। যাকে অনুভব করা যায় জীবনে, মরণে, শয়নে, স্বপনে।ভালো থেকো মা তুমি।

লেবু পাতার গন্ধ মাখা জীবন - অভিজিৎ বসু।
চার জুলাই, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...