সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছোট্ট একটা নোটিশ

ছোট্ট একটি নোটিশ।আর এই নোটিশ এই পৌষ মেলার ভবিষৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়ে গেলো। নিশ্চুপ নিরবতার মাঝে। আজ অর্থাৎ সোমবার দুপুরে জানা গেলো এবছরও মেলার মাঠে, মেলা হচ্ছে না। আর দু লাইনের এই ছোট্ট নোটিশে হৈ চৈ পড়ে গেলো, গোটা সমাজ মাধ্যমে। পোস্টের পর পোস্ট আছড়ে পড়ছে ফেসবুকের দেওয়ালে।
ঠিক যেনো পুরীর সমুদ্রের ঢেউ একের পর এক আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের তীরে। বলতে নেই ঠিক সেই দেবতার গ্রাস কবিতার , প্রথম লাইন মনে পড়ে গেলো আমার। 
গ্রামে গ্রামে সেই বার্তা রটি গেলো ক্রমে। মৈত্র মহাশয় যাবেন সাগর সঙ্গমে তীর্থ স্নান লাগি। সঙ্গী দল গেলো জুটি কত বাল বৃদ্ধ নর নারী, নৌকা দুটি প্রস্তুত হইল ঘাটে।
একদম ঠিক কথাই বটে, ঘাটে নৌকা প্রস্তুতির মতই মেলার নৌকা যা একটু নড়েচড়ে এগোবার চেষ্টা করছিল। সেটা একদম স্থবির হয়ে গেলো এক লহমায়। ছোট্ট একটি নোটিশ এর বেড়া জালে আটকে পড়ে।
বলতে কি একটা আশঙ্কা আমারও ছিল। কাল যখন মাঠের মাঝখানে রাতচরা পাখি একা বসে ছিল, ক্ষমা চাইলো মাঠের কাছে। আমি পারলাম না তখন ভেবে ছিলাম আমি। সব কিছু আবার গন্ডগোল হয়ে যাবে না তো শেষ বেলায়। নিয়মের বেড়া জালে আটকে আবার বন্ধ হয়ে যাবে না তো, এই মাঠে মেলার আয়োজন। 
কিন্তু না, আমি এই কথা বলতে, ভাবতে, আমার মন চায় নি একদম। কেনো আমার মনের কু ডাক কে সামনে আনবো। কে কি বলবে। এই ভেবে এক দম চুপ করেই ঘরে ফিরেছি আমি, কিছুটা বিষন্ন মনে। ঘরে ফিরেও কেমন যেনো একটা অস্বস্তি নিজের মধ্যে লেগে ছিল। কাউকে কিছু বলিনি আমি।
ভেবেছি আমার ভাবনা চিন্তা ভুল। কেনো এমন হবে।নিশ্চয়ই মাঠ তার আগের মত মেলার ভীড়ে হারিয়ে যাবে। মাঠের সোঁদা গন্ধ গায়ে মেখে ঘুরে বেড়াবে পৌষ মেলায় ঘুরতে আসা দর্শকরা। কত আশা নিয়ে বুক বেঁধেছি সারা রাত ধরে আমি। 
জানিনা আমার মত রাতচরা পাখিটাও হয়তো, সারা রাত জেগে থেকেছে। আর ভেবেছে নিশ্চয়ই এই বার তারা এই মাঠে মেলা দেখতে পাবে আগের মতোই। 
তিন দিন ধরে সারা রাত, কত লোক আসবে এই মাঠে। জনসমাগমে ভরে উঠবে গোটা মাঠ। রাতে তারা ঘুমানোর সময় পাবে না একদম। সারা রাত তাদের এই তিন দিন জেগে থাকতে হবে।আর তারা দেখবে আলোর রোশনাইতে শীতের হিমেল হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে তাদের সুন্দরী মাঠ। সত্যিই ভাবলেই আনন্দের শিহরণ বয়ে যায় তাদের।
কিন্তু সব হিসেব ওলোট পালোট করে দিলো এই ছোট্ট নোটিস। কেউ বলছেন আগেই ভবিষৎ নির্ধারণ করা হয়ে গেছিলো। কেউ বলছেন না, সব নাকি রাজনীতির ময়দানে অনুষ্ঠিত নতুন বাঘ বন্দীর খেলা। যেখানে আমরা সব কুশীলব মাত্র। আগে থাকতেই নির্ধারণ করা ছিল এর ভবিষৎ। 
ভবিষৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ যেই করুক। যার চিন্তার জন্য হোক , এই ভাবে নৌকায় চড়ে বসার পর নৌকাকে ঘাটে প্রস্তুত করে যাত্রীদের নৌকা থেকে নামিয়ে দেওয়া কি ঠিক হলো। কে জানে গভীর, গোপন,সংগোপনে ফিস ফিস করে কথা বলতে গেলেও ভয় হয় আজ কাল আমার। কে কি বলবে। কে কি ভাববে। বয়েস হয়েছে তাই বোধ হয়, একটুতেই ভয় পাই আমি আজ কাল।
রাতের অন্ধকারে তাই আমি একা একাই গোপনে, ঘুম চোখে একাই চলে এলাম আমি মাঠের ধারে। তাকে দেখতে কি হচ্ছে তাঁর মনে আজ এই রাতের আঁধারে। সত্যিই কি সে আমাদের মতই বিধুর। নাকি সে তার নিজের দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণাকে সহ্য করে বাঁচতে পারে। যা আমরা পারি না। অল্প কষ্ট পেলে কাতর হয়ে যাই আমরা।
দুর থেকে দেখি তাকে গাছের ফাঁক দিয়ে। একি আদিগন্ত বিস্তৃত মাঠের মাঝখানে আজ একটা রাতচরা নয়,কত পাখি ভীড় করেছে আজ এই নিশুতি রাতে। সবাই কেমন চুপ করে যেনো নীরবতা পালন করছে। সবাই গোল হয়ে দাঁড়িয়ে মাঠের মাঝখানে। 
আমিও ধীরে ধীরে মাথা নিচু করে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম মাঠের মাঝখানে। চুপ করে ওদের মতই মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে রইলাম মাথা নিচু করে। ওদের সবার সাথে। আমায় দেখে ওরা কেউ উড়ে গেলো না, ভয় পেয়ে। আমিও মিশে গেলাম ওদের সাথে, ওদের মতই।
 মাটির সোঁদা গন্ধ গায়ে মেখে নিলাম আমরা সবাই একসাথে।শীতের হিমেল হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছি আমরা সবাই একসাথে। দূরে মাঠের পাশের বড়ো ছাতিম গাছের পাতাগুলো, আনন্দে তির তির করে যেনো কেঁপে উঠল আচমকাই।
গরম কালে হলুদ রঙের ফুলে ভরে যাওয়া সেই 
অমলতাস গাছটা কেমন যেন একটা অচেনা গন্ধ ছড়িয়ে দিল মাঠের চারপাশে। আমার মনে হলো এর থেকে ভালো তর্পণ আর কি হতে পারে আমাদের। 
একটা ছোট নোটিশ বোর্ডের কটা শব্দ হয়তো এই মাঠে মেলা বন্ধ করে দিতে পারে, এক ঝটকায়। এক লহমায় কিন্তু তারা তো,তাদের এই রাতের অন্ধকারের জমায়েতকে বন্ধ করতে পারবে না কোনো ভাবেই। রাত গড়িয়ে ভোর হবে একটু পরেই। আলো ফুটবে পুব আকাশে।
 ধুলি ধূসর কুয়াশার আস্তরণ গায় মেখে। গোটা মাঠ যেনো ডানা মেলে, উড়ে বেড়াচ্ছে এদিক ওদিক আমাদের চারপাশে। লাল নীল সবুজ প্রজাপতির মতো ডানা মেলে উড়ছে সে, আনন্দে বিহবল হয়ে। 
আর তাকে দেখে, সব রাতের অন্ধকারে জড়ো হওয়া রাত পাখিরা গোল হয়ে ঘুরতে থাকলো আনন্দে। এক অদ্ভুত দৃশ্য  তখন গোটা মাঠ জুড়ে। অনুভূতির জারক রসে জারিত হয়ে, রোমাঞ্চে নিজেদের মথিত করে আমরা সবাই একসাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেলাম একে অপরের সাথে ভেদাভেদ ভুলে।
যে লজ্জা সরম নিয়ে আগের দিন রাতে ক্ষমা চাইতে পারিনি আমি মাঠের কাছে। সেই অনুশোচনা যেনো এক লহমায় কেটে গেলো আমারও। আবেশে চোখ বুজে এলো আমার মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে। 
যখন চোখ খুললাম দেখলাম রাত শেষ হয়ে ভোর হচ্ছে ধীরে ধীরে। রাতের আধার কেটে যেতেই সব রাত পাখিরা উধাও হয়ে গেছে আমায় ফেলে রেখে।
আমি একা মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি। 
কিন্তু আমার কোনো লজ্জা নেই,শরম নেই, 
অনুশোচনা নেই। আমার আত্ম অহংকার নেই।শীতের  হালকা কুয়াশা গায় মেখে। অনেকটা নিজেকে অনেকটা হাল্কা লাগলো যেনো আমার।
ধীরে ধীরে আমিও যেনো, পাখিদের মতই কোথায় হারিয়ে গেলাম ভোর হবার আগেই। রাতের আধার কেটে ভোরের আলো ফোটার আগেই। কোথায় হারিয়ে গেলাম কে জানে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...