সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টিআরপি ও আমি

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আর কোনো ব্যক্তির কথা নয়। আজ যার কথা বলব সে এক অবয়বহীন হাত পা ছাড়া কন্ধকাটার মত অন্য এক গ্রহের জীব। যাকে প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে সংখ্যা তত্ত্বের ভিত্তিতে সূচকের মত ওঠা নামা করতে দেখা যায়। কখনও সে বৃদ্ধি পায় আবার কোনো সময় সে ঝপ করে কমে যায়। আর এই ওঠা আর নামার সাথে কত গল্প, কত মধুর স্মৃতি যে জড়িয়ে আছে তার হিসাব নেই। আজ তেমনই এই তৈলাক্ত ত্বকের মত তৈলাক্ত বাঁশের অংকের মত ওঠা আর নামা সেই টিআরপির গল্প। 
কিছুদিন টিভির জগতে কাজ করার সুযোগ পেয়ে এই জিনিসটিকে বেশ কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। আসলে জানেন তো মন্দদর্শী মানুষ আমি। সোজা জিনিসকে সোজা ভাবে দেখার চোখ ও মন কোনোটাই নেই আমার কোনো দিন। তাই এই টিআরপি নামক বাঁশ এর ওঠা নামার হিসেব নিকেশ নিয়ে মাথা ঘামানোর কথা ভাবতাম না আমি কোনো দিন। শুধু জানতাম এই দৌড়ের খেলায় যে ভাবে হোক টপকে যেতে হবে খবরের দৌড়ে অন্যদের থেকে সবার আগে। সে যে পদ্ধতিতেই হোক। 

আর এই দৌড়ের প্রধান কারিগর যিনি ছিলেন সব সময় যিনি আমায় সাহস বল ভরসা দিতেন। এই খবরের দৌড়ে সামিল হবার জন্য। সব সময় সহযোগিতা করার হাত বাড়িয়ে দিতেন সেই মানুষটি হলেন আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু, সহকর্মী, জীবনের ঝড় ঝাপটা, বিপদে আপদের  একমাত্র ত্রাতা ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক। সেই সময় সে চব্বিশ ঘন্টা চ্যানেলের ডেপুটি এডিটর। যার কথা নানা উপদেশ আমি আমার কর্মজীবনে না শুনলেও সে কিন্তু আমার কথা শুনেই নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই খবরের দৌড়ের খেলায়। যার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। 
আসলে কি জানেন এই যে একটি দৌড়ে পিছিয়ে গিয়ে হেরে যাবার যে জ্বালা। সেটা কে ঘুরিয়ে দিয়ে সবাইকে একজোট করে সুযোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে লড়াই এর ময়দানে ফিরে আসার মজাই আলাদা। আর সেই মজা নিয়েই কাজ করতাম আমরা সবাই বিন্দাস হয়ে এই টিভি চ্যানেলে একটি পরিবার হয়ে। যে পরিবারের মাথা ছিলেন এডিটর অনির্বাণ চৌধুরী। শুধু একটাই কথা ভেবে যে করে হোক টপকে যেতে হবে একনম্বর চ্যানেলের ওই অধরা নম্বরকে। এই লক্ষ্যে অবিচল থেকে স্থির বিশ্বাস আর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থেকে সেটাই প্রায় করে এনেছিল ধ্রুব নিজের কলজের জোরে। কিন্তু মাইল স্টোনের কাছে পৌঁছেও হয়তো সেটা টপকে যাওয়া যায় নি। সেই কারণ তার হিসাব নিকাশ আলাদা। আজ শুধুই অন্য গল্প।

প্রতি সপ্তাহের লক্ষীবার বৃহস্পতি বার এলেই সকাল থেকেই সাজ সাজ রব। আজ ফল প্রকাশের দিন। বাবুরা যাদের কাঁধে গুরু দায়িত্ব পালনের গুরু ভার তারাও সেদিন কেমন যেন দ্রুত গতিতে অফিস এসেই কম্পিউটার এর সামনে বসে পড়তেন। এই ওঠা আর নামার হিসাব কষতে। উদ্বিগ্ন মুখে টো এর উপর ভর করে যিনি সাংবাদিকতা শিখেছিলেন বিদেশী জার্নালিস্ট এর কাছে ট্রেনিং নিয়ে। সেই অনেক দুর ট্রেন পথে আসা সেই বিখ্যাত সাংবাদিক কেমন আপাত নিরীহ নিষ্পাপ মুখ নিয়ে গম্ভীর হয়ে কম্পিউটার এর স্ক্রীনে তাকিয়ে বসে থাকতেন। 
আর দেখতেন সকালে তার অফিসে থাকার সময়ে টিআরপি বাড়লো না কমে গেলো আবার ঝপ করে। তাহলেই তো সব চেপে ধরবে কি হলো সকালের টিআরপি পড়ে গেলো কি করে। অন্য সব সহর্মীদের রক্তচক্ষু আর প্রশ্ন এড়াতে কি যে টেনশন হতো সেদিন তার। তাহলে যে সুন্দর ভোর ভোর অফিস এসে পাঁচটা বাজলে মুড়ি খেতে খেতে ঘরে ফেরা যাবে না আর ট্রেন ধরে। যদি এই টি আরপির চাপে নিজের কাজের শিফট বদলে যায়। কি উদ্বিগ্ন মুখ দেখতাম আমি এই ফল প্রকাশের দিন সেদিন তাঁর। সেটা দেখে আমার বেশ মজা ও করুণা দুই হতো। আসলে এরা সব বিখ্যাত সাংবাদিক বলে কথা।
 
তবে ওর মতো টেনশন আর পাঁচজনের মুখে দেখিনি আমি। সে যেই হোক আর যতবড় পদের লোক হোক। আসলে সংখ্যা বেড়ে যাওয়া আর কমে যাওয়ার হিসাব ধরতে সারাদিন ধরে একটা চ্যানেলের সারাদিন এর প্রোগ্রাম ইনজেস্ট এর অর্ডার দিলেন এক বাবু। কথা কম বলেন তিনি। ইশারায় বুঝিয়ে দেন তিনি এডিটর এর একমাত্র লোক। অতএব তাঁর কথাই শেষ কথা। সেই কথা আদেশ মানতে গিয়ে কত যে হ্যাপা পোহাতে হতো এসাইনমেন্ট এর লোকদের সে যারা সামলাত তারাই একমাত্র জানে। কিন্তু বাবুর অর্ডার না মানলেই বিপদ যে বড়। কি জানেন সংবাদ মাধ্যমের অফিস হলো কে কত বড় কত ক্ষমতা সেটা বুঝিয়ে দেবার একটা খুড়োর কল। আপনি সেটা মেনে চলতে পারলে টিকে যাবেন না হলে টিকতে পারবেন না আপনি।
কিন্তু এসবের মাঝে এই টিআরপি নামক বাঁশ এর ওঠা নামার হিসেব পেলাম বৃহস্পতিবার। মিডিয়া ছেড়ে দিলেও আমার এক বন্ধু তথা ভাই সে দিলো টিআরপি বেরিয়েছে আবার। অভ্যাস বসত নানা জনকে দেওয়ার মাঝে মাত্র আমার পুরোনো আমলের চ্যানেলের দুজনকে টিআরপি তালিকা দিয়ে দিলাম আমি। আর তাতেই বুঝলাম ভুল পিচে বাউন্সার দিয়ে ফেলেছি আমি। যেটা অন্ততঃ টোটো চালকের দেওয়া উচিত হয়নি ওই দুঁদে সাংবাদিকদের। 
যে সংখ্যা তত্ত্বের হিসাব নিয়ে ভাবিত চ্যানেলের বাঘা বাঘা সব সাংবাদিকগণ। সেখানে একজন টোটো চালকের কাছ থেকে এটা কেনো এলো সেই প্রশ্ন তোলেন তারা। মনে মনে ভাবেন হয়তো ইচ্ছা করেই আমি সেটা দিয়েছি তাদের। কিন্তু তাদের বিশ্বাস না করাতে পারলেও এটা সত্যিই যে আমি এমনি দিয়ে দিয়েছি সেই টিআরপি তালিকা শুধু তাদের নয় আরো অন্তত পঞ্চাশজন কে দিয়েছি। শুধু একটা পুরোনো দিনের স্মৃতি কথা ভেবেই। 
এই দিনেই তো ফল প্রকাশ হলে ফল ভালো হলে আনন্দ পেতাম আমরা অফিসের সবাই। সারা সপ্তাহ খেটে ফল খারাপ হলে মন খারাপ হতো আমাদের সবার। ভাবতাম তাহলে কি আমি নিজেই দৌড়ে পিছিয়ে পড়ছি। পারছি না কাজ করতে ঠিক মত। আবার দৌড় শুরু করতাম পরের সপ্তাহের জন্য। দেখতাম সেই সময় ধ্রুবর কঠিন কঠোর মুখ চোয়াল শক্ত করে সে বলছে, দাদা আর একটু দাদা ধরে ফেলব আমরা। আর ওর কথা শুনে আমি, আমরা সবাই ওর ভোকাল টনিক শুনে আবার দৌড়তাম। স্বপ্ন দেখতাম নিশ্চয়ই একদিন টপকে যাবো সেই অধরা নম্বর।
 এই লড়াই,এই দৌড় থেকে আজ আমি অনেক অনেক দূরে। কিন্তু টিআরপির সেই দিন, সেই তালিকা আজও আমায় টানে প্রতি বৃহস্পতিবার। অজানা অচেনা পথের দিকে টেনে নিয়ে যায়। জানি সেই পথে মরীচিকা আছে। যে মরীচিকার চোরা শ্রোতে হারিয়ে যাবার ভয় আছে। তবু তো হারিয়ে যেতে আজও ইচ্ছা করে আমার এই শেষ জীবনে।

টিআরপি ও আমি - অভিজিৎ বসু।
উনিশে জুলাই, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...