সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নন্দন মেলা

"নন্দনমেলা"
কলাভবন, বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতন

কলাভবনের নন্দন মেলা কিন্তু নন্দলাল বসুর নাম অনুসারে নয়। এই মেলার একটা আলাদা গল্প আছে।
নন্দলাল বসুর আদি বাসস্থান ছিল হুগলি জেলার তারকেশ্বর ও হরিপালের মাঝে জেজুর গ্রামে। ছোটো বেলা থেকেই তিনি দেব দেবীর মূর্তি তৈরি করতে ও রং করতে ভালোবাসতেন। সিদ্ধিদাতা গণেশ এর ছবি এঁকে তিনি আর্টস কলেজে ভর্তির  সুযোগ পান। এই ভাবেই তিনি ধীরে ধীরে পরিচিতি পান তাঁর নানা কাজের মাধ্যমে। তাঁর আঁকা শান্তিনিকেতন ও  শ্রী নিকেতন -এর দেওয়াল চিত্র তাঁকে দেশ বিদেশ জুড়ে অনেক পরিচিতি দেয়। ভারতীয় সংবিধানের সচিত্র সংস্করণ করেন নন্দলাল বসু। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে শিল্পকর্মে কাজে লাগান নানা ভাবে। এত গেলো নন্দলাল বসুর কথা।তাঁর জন্মদিনের দু দিন আগেই তাই কলা ভবনে শুরু হয় এই নন্দন মেলা। 
এরপর ফিরে আসি নন্দন মেলায়, ১৯৭২ সালে কলা ভবনের এক জন ছাত্র গুরুতর জখম হন দুর্ঘটনায়। সেই ছাত্রের নাম বীরেন ভোরা।সেই ছাত্রের চিকিৎসার জন্য একটি ফান্ড গঠন করতে হবে। সেই সময় ছাত্র ও শিক্ষকরা টাকা সংগ্রহের জন্য একটি তহবিল গঠন করেন। এই ভাবেই সেই সময় কলা ভবনে তৈরি হল ফান্ড গঠনের জন্য তহবিল।
 আর ঠিক তার পরের বছর ১৯৭৩ সালে কলা ভবনে শুরু হলো নন্দন মেলা। যে মেলা এই বছর দেখতে দেখতে ৫০ বছরে পা দিল। এই নন্দন মেলা আজ আন্তর্জতিক স্তরে পৌঁছে গেছে।দেশ ,বিদেশের নানা জায়গায় যারা কলা ভবনের প্রাক্তনী ,তারা এই দুটো দিন ছুটে আসেন সকলে মিলে মিলিত হবেন বলে কলাভবনে। নিজের হাতের জিনিষ নিয়ে বসে পড়ে ছাত্র ছাত্রীরা মাঠে। গান, নাটক করে জমিয়ে দেওয়া হয় মেলা প্রাঙ্গণ। নন্দন মেলার আকর্ষণ জগঝম্প এই বারও তারা দর্শকদের নজর কেড়েছে। মেলার মূল মঞ্চে উদাত্ত গলায় গানের তালে নেচে উঠেছে সবাই আনন্দে হাত তালি দিয়ে। সে এক আলাদা অনুভুতি। সাথে রয়েছে নানা ফুড স্টল।
একদিকে মেলায় এসে পুরোনো দিনের বন্ধুর সাথে দেখা করতে পেরে খুশি প্রবীণরা। আর অন্যদিকে  নবীনরা সেজে গুজে  নিজেদের ছবি তোলায় ব্যস্ত। সব মিলিয়ে নন্দন মেলা আজ দিন বদলের সাথে সাথে কিছুটা কি কৌলিন্য হারিয়ে ফেলছে।বদলে যাচ্ছে সে। ঘুরতে ঘুরতে সেই প্রশ্নটা মাথায় ঘুরছে আমার। সেই প্রশ্নের উত্তর এত সহজে মিলবে না। আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।
তবে শতাব্দী প্রাচীন কলাভবনের মাঠে যে ভীড় উপচে পড়েছে,সেটা দেখে মনটা বড়ই ভাল লাগে। শিল্প আর শিল্পীর এই মিলন মেলায় নিজেকে হারিয়ে দিতে ভালো লাগে প্রতি বছর। এক বছর আগে এই মেলার মাঠে কলকাতার যে বিশিষ্ট সাংবাদিক কে আমি দেখে ছিলাম। সাহস করে তাঁর সাথে কথা বলতে পারিনি। এই বছর ও দেখলাম তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন মেলায় সস্ত্রীক। বড়ো ভালো লাগলো দেখে। যদিও সাহস করে এই বার ও কথা বলতে মন চাইলেও পারলাম না। কেনো কে জানে। কিছুটা জড়তা আর লজ্জা।
এই ভাবে মেলায় ঘুরতে ঘুরতে তাই হাঁটতে হাঁটতে ঢুকে পড়ি আমি আর মেয়ে মুখোশ -এর ঘরে। যে ঘরে লোক অনেক কম অন্য স্টলের থেকে। এই ঘরটি একটি গাছ তলায়। আর ঘরের দেয়ালে টাঙ্গানো নানা ধরনের মুখোশ। যার যা ইচ্ছা মুখোশ দেওয়াল থেকে খুলে, পড়ে নাও। আর ঘুরে বেড়াও এদিক ওদিক। সত্যিই বড়ো ভালো লাগলো আমার এই মুখোশ ঘরটি মেলার মধ্যে। বহু স্টল বসেছে মেলায় কিন্তু মুখোশ ঘরটি তুলনায় কিছু ফাঁকা। তাহলে কি এই ঘরে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন মেলায় ঘুরতে আসা দর্শকরা। নবীন প্রবীণ দর্শকরা আসছেন না এই ঘরে। কে জানে হয়তো তাই।
মুখোশ পড়তে ভয় পাচ্ছেন সকলে, যারা মেলায় ঘুরতে আসছেন। নাকি নিজেকে মুখোশের আড়ালে লুকোতে সংকোচ বোধ করছেন সবার সামনে। বুঝতে পারলাম না আমি। কিন্তু আমি আর আমার বুটা নিঃসংকোচে মুখোশের ঘরে বুক ফুলিয়ে ঢুকলাম মুখোশের টানে। দেয়াল থেকে মুখোশ নামিয়ে পড়লাম।আর তারপর মুখোশের আড়ালে নিজেকে কিছুক্ষন লুকিয়ে রাখলাম অন্ততঃ সবার সামনে থেকে। যাতে কেউ চিনতে না পারে আমাদের। মুখ আর মুখোশের আড়ালে আবডালে নিজেকে লুকিয়ে রাখলাম বেশ কিছুক্ষন নিশ্চিন্তে। যাতে কেউ আমায় চিনতে না পারে এই মেলার ভীড়ে।
আমার জ্বালা, যন্ত্রণা, অপমানে ক্ষত বিক্ষত রক্তস্নাত হৃদয়ের সন্ধান কেউ না পায়। সত্যিই আমি আর মেয়ে মেলার ভীড়ে মুখোশ পড়ে হারিয়ে গেলাম। হাজারো মানুষের ভীড়ে মুখোশ পড়ে নিজেকে সত্যিই বড়ো অচেনা মনে হলো আমার। যে বদলানোর জন্য কত চেষ্টা করেছি জীবন ভর। যে বিশ্বাস নিয়ে নিজেকে বাঁচাতে, কিন্তু আমি নিজেকে বদলে ফেলতে পারিনি কিছুতেই। সেই আমি কি মুখোশ ঘরে এসে, সত্যিই নিজেকে বদলে ফেললাম। কে জানে। একটু যেনো ভয় হলো আমার।
দ্রুত মুখ থেকে মুখোশ খুলে বেড়িয়ে পড়লাম মুখোশ ঘর থেকে।আর মেলার মাঠে জনারণ্যে মিশে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিলাম।মনে মনে বললাম না, আমি মুখোশের আড়ালে আবডালে নিজেকে লুকিয়ে রেখে বাঁচতে চাই না। আমি আমার নিজের মুখ নিয়ে বাঁচতে চাই।যেভাবে এত দিন আমি বেঁচে এসেছি।
আমার কথা শুনে দেয়ালে টাঙ্গানো নানা মুখোশ আমায় তখন দূর থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে,আয় আয় বলে। আমি দ্রুত মেয়ের হাত ধরে ভীড় ঠেলে বেরিয়ে এলাম মেলা প্রাঙ্গণ থেকে। ভীড় এড়িয়ে দ্রুত হাঁটতে হাঁটতে, মেলা ছেড়ে চলে গেলাম দূরে অনেক দূরে। যেখানে আর কোনও মুখোশের হাতছানি থাকবে না।
আমি কলাভবন পেরিয়ে, উপাসনা গৃহ পেরিয়ে হেঁটে চললাম। দেখলাম তাল গাছ এক পায় দাঁড়িয়ে আছে। আর আমায় দেখে মনে মনে হাসছে সে মিটি মিটি। কী ভেবে কে জানে। হয়তো ও জেনে গেছে, আমার মুখোশ পরে বদলে যাওয়ার কথা। 
আমি আরো জোরে হাঁটতে লাগলাম ,রাস্তা ধরে দ্রুত। মনে মনে বললাম ,না আমি বদলে যাইনি, বিশ্বাস করো তোমরা সবাই। জানি না কেউ বিশ্বাস করবে কি না। তবু চিৎকার করে বলতে থাকলাম আমি বদলে যাইনি বিশ্বাস করো। বলতে বলতে বুটার হাত ধরে এগিয়ে চললাম ঘরের দিকে।
💛

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...