জন্মদিন কি ডেকে আনে মৃত্যুর দিনকে চুপিসারে, রাধার অভিসারের মতই।
উল্লাস প্রকাশ করা একটা দিনের সাঁঝ বেলায়, কেমন করে গুটি সুটি মেরে, হামাগুড়ি দিয়ে অপেক্ষা করে, মৃত্যুর দিনের ঘণ্টা ধ্বনি।
ঢং ঢং করে ঘন্টা বাজে, শিব মন্দিরের চাতাল জুড়ে।
গির্জার চূড়োয় তখন,পশ্চিমী রোদের তেরছা আলো, পিছলে পড়েছে।
শ্যাওলা ধরা সবুজ দেওয়ালে, তখন ভেজা মাটির, সবুজ গন্ধরাজের মাতোয়ারা গন্ধ।
ঘন্টার আওয়াজে বিদীর্ণ হয়, আমার জীবনের মেঠো পথের ধুলো মাখা রাস্তা, ঘাট, বন, পথ, প্রান্তর, আরও কত কি।
সাঁঝ বেলার শঙ্খের আওয়াজে, কেমন যেন অচেনা লাগে চেনা পথ, ঘাট, নদীর পাড়।
তবু তো বছর বছর জন্মদিন আসে, এই ভাবেই ঘড়ির সময় মেপে, নিয়ম করে বসন্তের মতো।
কখনও চুপিসারে, কখনও হামাগুড়ি দিয়ে অপেক্ষা করে, সিঁড়ির নিচে মৃত্যুর দিনও।
তারও যে ডাক পড়বে, যে কোনো সময়।
সটান সিঁড়ি ঘর পেরিয়ে, সোজা সে চলে যাবে ড্রয়িং রুমে।
সেখান থেকে গুটি গুটি পায়ে,
আমার প্রিয় ঘরের চৌহদ্দীতে ঘুরপাক মারবে।
আমার ঘরে তখন এলো মেলো, ছড়ানো ছিটানো সংসার।
অগোছালো অবিন্যস্ত নুজ্ব্য, ভেঙে পড়া একটা গোটা জীবন।
সেই জীবনকেই দু হাত বাড়িয়ে আলিঙ্গন করে নেবে, সে পরম মমতায়।
ওই যে মৃত্যু নামক জীবনের খেলার সাথীর হাত ধরে, আমিও কেমন সব ছেড়ে রওনা দেবো।
নিজের ঘর, দুয়ার,চেনা মাঠ, নদীর পাড়, ছোটবেলার শৈশব, বার্ধক্যের শরীর সব ছেড়ে চলে যাব আমি।
অজানা, অচেনা পথের পথিক হয়ে যাবো।
জন্মদিনের হাতছানি - অভিজিৎ বসু।
ঊনত্রিশ মে, দু হাজার চব্বিশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন