সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হারিয়ে যাওয়া নেতাজীকে আঁকড়ে ধরা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক দূরে, অনেক দূরে চলে যাওয়া হারিয়ে যাওয়া এক মানুষের গল্পকথা। যে মানুষটা আর হয়তো কোনো দিন আমাদের কাছে ফিরেই আসবে না। রূপকথার সেই কল্পলোকে হারিয়ে গেছেন তিনি কবেই। আমরা জানিনা তিনি কোথায় হারিয়ে গেছেন। কত দূরে চলে গেছেন আমাদের সবাইকে ছেড়ে। 
কিন্তু তবু সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষের জীবন, তাঁর জীবনের দর্শন, তাঁর জীবনের নানা গল্প আজও আমাদের তাড়া করে ফেরে। দিনের আলোয় খুঁজে ফিরি আমরা তাঁকেই। রাতের অন্ধকারে গুমড়ে মরি আমরা তাঁর জন্যে। সত্যিই তো জীবনের এই নানা মণিমানিক্য ভরা মানুষের আনাগোনা আমাদের সবাইকে শিক্ষা দেয়। আর তাই বোধ হয় হারিয়ে যাবার এতদিন পরেও তিনি আজও প্রাসঙ্গিক আমাদের জীবনে এত দিন, এত বছর পরেও। তাঁর জন্য আজও আমাদের হৃদয় উথলে ওঠে, আন্দোলিত হয়।
 
হ্যাঁ সত্যিই বলছি বিশ্বাস করুন একটা মানুষের জন্যে এত দিন পরেও এমন আবেগ, এমন ভালোবাসা লুকিয়ে আছে এই নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছে সেটা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। যার জন্য আমি কলম ধরলাম। মনে হলো এটা বোধহয় একটু লেখা দরকার। যা হয়ত আগামী দিনে আমাদের আরো বেশি করে সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষটাকে ভালবাসতে শেখাবে। তাঁর আদর্শ, তাঁর ভাবনা, তাঁর দেশপ্রেম আমদের নতুন করে বাঁচার রসদ যোগাবে এই স্বার্থপর রাজনীতির ঘূর্ণাবর্তে। 
আসলে কি জানেন তো একজন সাংবাদিক এর আসল জিনিস হলো কৌতুহল। এই কৌতুহল যার যত বেশি সে কিন্তু এই পেশায় অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবে। আমি এই পেশা থেকে এখন অনেক দূরে সরে থাকলেও কৌতুহল ছাড়তে পারিনি কোনো সময়। যে কোনো ঘটনা নিজের চোখের সামনে ঘটতে দেখলে আমার স্বভাবতই কৌতুহল সৃষ্টি হয়। মনে হয় দেখি তো কি আছে এর মধ্যে লুকিয়ে।  সেরকম কিছু ছবি দেখে আমার একটু কৌতূহল হলো।
যদিও কিছুই নেই সেই ছবিতে কিছু মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতি পড়ুয়াদের সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি। হুগলী জেলার উত্তরপাড়া কোতরং পুরসভার তরফে এই আয়োজন করা হয়। বেশ একটা আনন্দের গর্বের বিষয়। শহরের বিভিন্ন স্কুলের কৃতী ছাত্রছাত্রীদের হাতে পুরস্কার, মিষ্টি, ফুল তুলে দেবার এই বিষয়টা আমার বেশ ভালো লাগে। সবাই তো আর প্রথম, দ্বিতীয় হতে পারে না পরীক্ষায়। যারা ভালো ফল করলো নিজের শহরে তাদেরও স্বীকৃতি দিতে একটু আয়োজন করা এই আর কি। 
এই অবধি সব কিছুই ঠিক ছিল। কোনো কৌতুহল জাগেনি আমার মনে। এমন তো কতই হয়। পাড়ায় পাড়ায় এখন এই সবের চল হয়েছে খুব।মানুষের সাথে জনসংযোগের নতুন নতুন উপায় আর কি। খারাপ কি বেশ ভালই তো। পাড়ার ছেলে মেয়ে পরীক্ষায় পাশ করে ফুল মিষ্টি আর বই উপহার নিয়ে নিজের ছবি নিয়ে হাসি মুখে ঘরে ফিরলো। এই অবধি সব কিছুই তো ঠিক ছিল। কিন্তু গোল বাঁধলো যে অন্য জায়গায়।
সদ্য পাশ করা পড়ুয়াদের হাতে বই তুলে দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন উত্তরপাড়া কোতরং পুরসভার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। কিন্তু কি বই দেওয়া হবে ছাত্র ছাত্রীদের হাতে, কে কোন বই পড়তে তারা পছন্দ করেন, কার বই তারা ভালোবাসেন তেমন তিনটে বই এর নাম পাঠিয়ে দেওয়া হলো বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে। সদ্য পাশ করা পড়ুয়াদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাদেরই নিজের পছন্দের মানুষের বই তাদের হাতেই তুলে দিলেন পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। অনুষ্ঠানে হাজির উত্তরপাড়া পুরসভার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা ও পুরসভার কাউন্সিলররা। সত্যিই একটা ভালো ভাবনা।
 
যে তিনটে বইকে এই তালিকায় রাখা হলো তার মধ্যে একটি বই হলো An Indian pilgrim সুভাষ চন্দ্র বসুর আত্মজীবনী মূলক বই।আর অন্য বইটি হলো মহাত্মা গান্ধীর আত্মজীবনী The Story Of My Experiments  With Truth. আর একটি বই হলো জীবন ও জীবনের নানা ঘটনাকে নিয়ে লেখা সুধা মুর্তির বিখ্যাত সেই বই Wise and Otherwise. 
এই তিনটি বিখ্যাত বই এর মধ্যে কে কোন বই নেবে তার তালিকা চলে এলো পুরসভায় অনুষ্ঠানের দিন কয়েক আগেই। প্রায় 113 জন ছাত্র ছাত্রীদের হাতে তাদের পছন্দের মানুষের বই, ফুল, সংবর্ধনা দেওয়া হলো সবার সামনে। হাজির স্কুলের সবাই, হাজির পুরসভার পুরপ্রধান থেকে শুরু করে সকলেই। উত্তরপাড়া গণভবনে হলো এই সংবর্ধনার অনুষ্ঠান। হাসি মুখে ছবি তুলে, প্রিয় মানুষের বই নিয়ে ঘরে ফিরল আগামীদিনের ভবিষ্যতের নাগরিকরা। যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যারা দেশকে ভালবাসবে।
  
আসল গল্প বোধ হয় এখান থেকেই শুরু হলো। কিছুটা নিজের কৌতুহল নিয়ে আমি পুরপ্রধান দিলীপ যাদবকে জিজ্ঞাসা করলাম এই ধরনের নিজেদের পছন্দের বই দেবার ভাবনা কেনো। তাঁর সাফ জবাব, আমার মনে হয় জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। কে কি পড়বেন, কোন জিনিস পছন্দ করবেন সেটা তার নিজের ব্যক্তিগত বিষয়। তাই আমার মনে হয়েছিল যারা এই ছাত্রছাত্রী আগামী দিনের দেশের ভবিষ্যত তাদের মনের ইচ্ছা জেনেই আমরা তাদের হাতে ওদের পছন্দের বই তুলে দিলাম। এতে কোনো রাজনীতি নেই, সমাজনীতি নেই। শুধুই তাদের ভালোবাসার মানুষের লেখা বইকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া। জোর করে কোনো কিছুই চাপিয়ে দেওয়া নয়। সত্যিই তো বেশ ভালো ভাবনা। জোর করে কি আর কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায়। 
আর এই ভাবনার মাঝেই লুকিয়ে আছে কত গভীর ভালোবাসা। হ্যাঁ সেটাই প্রকাশ হয়েছে এই সুন্দর অনুষ্ঠানে। প্রায় একশো তেরো জন এর মধ্যে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বইকে পছন্দ করেছেন সব থেকে বেশি ছাত্র ছাত্রীরা। প্রায় ষাট জন পড়ুয়া এই নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বইকে পছন্দ করেছেন। তারপর উনচল্লিশ জন ছাত্রছাত্রী পছন্দ করেছে সুধামুর্তির বইকে। আর চৌদ্দ জন পড়ুয়া মহাত্মা গান্ধীর জীবনের বইকে ভালোবেসে নিজেদের ঘরে নিয়ে গেছে।
এই An Indian Pilgrim এই বইটিতে সুভাষ চন্দ্র বসুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী রয়েছে। সুভাষ চন্দ্র বসু পরীক্ষায় ৪র্থ র‍্যাঙ্ক পেয়েও আইএএস-এর কেরিয়ার ফিরিয়ে দেন। ভারতকে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য তিনি ভারতীয় মুক্তিবাহিনীকে সংগঠিত করেছিলেন। এই বইয়ে তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ শাসিত ভারতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বর্ণনা করেছেন। তিনি তার জীবন সংগ্রামের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি ভারতের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করার সময় যেসব লোকের সাথে তার দেখা হয়েছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন। এটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের একটি মূল্যবান সম্পদ। যে কথা জানতে চেয়ে সব থেকে বেশি পড়ুয়া এই বইকেই ঘরে নিয়ে গেছে।
 দেশের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এই ছোট্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন এর মধ্য দিয়ে এত দিন পরেও সেই মানুষটার কথা আজও ভুলতে পারেনি এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরাও। অজানা তাঁর জীবনের কৌতুহল নিরসন করতে তাই হয়তো তাঁর জীবনের অসমাপ্ত আত্মজীবনী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চেয়েছে তারা। 
যাকে কোনোদিন আর ফিরে পাওয়া যাবে না, ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না কিন্তু তাঁর জীবন, জীবনের দর্শন, তাঁর আদর্শকে পাথেয় করেই এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা, আমরা সবাই এগিয়ে যাব। স্বাধীনতার এত দিন পরেও সত্যিই বোধহয় সেই দূরে, অনেক দূরে চলে যাওয়া মানুষটার জন্য আজও সবার মন কাঁদে।

হারিয়ে যাওয়া নেতাজীকে আঁকড়ে ধরা - অভিজিৎ বসু।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...