সাদা জীবনের কালো কথায় আজ সত্যিই একটা কালো দিন এর কথা। কালো অন্ধকার রাতের কথা। যে রাতের সাক্ষী হলাম আমরা সবাই। যে অন্ধকার রাত দখল করার ডাক দিয়ে সারা দেশে হৈ চৈ ফেলে দিলো রিমঝিমের ছোট্ট একটা আবেদন। যে আবেদনে সাড়া দিয়ে আট থেকে আশি হাজার হাজার মানুষ, লক্ষ লক্ষ মানুষ সবাই পথে নামলেন। রাত দখলের স্বপ্নকে সফল করতে সচেষ্ট হলেন। প্রতিবাদের ঝড় তুললেন সবাই মিলে। সবাই মিলে আওয়াজ তুললেন, আমরা সঠিক বিচার চাই।
আর সেই ঝড়কে থামাতে পরিকল্পনা করে চিত্রনাট্যকে সাজিয়ে গুছিয়ে হামলা করা হলো, ভাঙচুর হলো সেই আর জি কর হাসপাতালেই। যেখানে সেই প্রতিবাদের মঞ্চ তাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো। হাসপাতালের ভিতরে তাণ্ডব চালিয়ে হাসিমুখে বীরবিক্রমে চলে গেলো কিছু মানুষ বুক ফুলিয়ে। আর এই গোটা ঘটনায় সব কিছু দেখেও ভয়ে মুখ লুকিয়ে কিছুক্ষণ সেঁধিয়ে থাকলো উর্দিধারী পুলিশের দল। তারা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া তখন। কিন্তু কেনো এমন একটা ঘটনার আঁচ পেলেন না বিশ্বের সেরা পুলিশের তকমা পাওয়া তাদের দুঁদে গোয়েন্দারা। কেনো আগে থাকতেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হলো না আর জি কর এর চারপাশ। কেনো হাজার হাজার পুলিশ, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স দিয়ে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখা হলো না আমাদের এই সাধের আর জি কর কে।
না, সেটার অনুধাবন বোধহয় কিছুতেই করতে পারেন নি, এই বিশ্ব তালিকায় এক নম্বর স্থানে থাকা কলকাতা পুলিশ এর বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দলবল। তারা বোধ হয় সেই সময় খুব ব্যস্ত ছিলেন কি করে এই গোটা চিত্রনাট্যকে সঠিকভাবে সফল রূপায়ণ করা যায়, সেদিকেই নজর ছিল তাঁদের। ওপর মহলের সেই বিশেষ নির্দেশকে পালন করতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা সেই সময়। এটাই তো স্বাভাবিক ঘটনা।
যে কোনো আন্দোলনকে এইভাবেই তার অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতে ভাঙচুর, লুঠপাট, করেই তো জয় ছিনিয়ে আনতে হয়। যা আমরা অতীতে বারবার দেখেছি সে সিঙ্গুর আন্দোলন, নন্দীগ্রাম আন্দোলন, বিধানসভায় ভাঙচুর, এমন সব ইতিহাস তো আমাদের কারুর কাছেই আজ আর অজানা নয়। তাই এমন ঘটনা দেখে আজ আর আমার অবাক লাগে না কিছুতেই। আর জি করের এই ঘটনার পর কলকাতা পুলিশের এই পোস্ট দেখে মনে মনে হাসি পায়। যারা ভাঙচুর করেছে এদের সন্ধান পেলে পুলিশের কাছে জানাবার আবেদন। যাতে এদের ধরতে পারে পুলিশ। সত্যিই তো কি অসাধারন এই চিত্রনাট্য। অসাধারণ এই বিশ্বের সেরা পুলিশের আবেদন।
এসব দেখে আজ আর লজ্জা, ঘৃণা হয় না আমার। শুধু মনে হয় সরকার, প্রশাসন, প্রশাসনের কর্তারা বোধহয় এমন ধরনের হয়। যারা শুধু উপর মহলের আদেশ পালন করতেই ব্যস্ত থাকেন সব সময়। নিজেদের বোধ, বুদ্ধি, বিচার, বিবেচনা সব কিছুকে ত্যাগ করে সেই আদেশ পালন করে যান তাঁরা হাসি মুখে। শুধুই একটু সরকার নামের ওই মনিবকে একটু খুশী করার জন্যে। একটু উপঢৌকন পাবার জন্য। সত্যিই অসাধারন স্বাধীনতার দিন আপনাকে স্যালুট সরকার বাহাদুর, আপনাকে স্যালুট জানাই।
স্যালুট সরকার বাহাদুর - অভিজিৎ বসু।
পনেরো আগস্ট, দু হাজার চব্বিশ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন