সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

চেনা মুখে অচেনার ছায়া

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক মিছিল আর প্রতিবাদের পাল্টা সংগঠিত মিছিল এর নানা টুকরো কথা। যে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। যার জন্য অনেক পথ হাঁটতে হয়েছে তাঁকে ও তাঁর সমর্থকদের এদিন। তাদের একটাই দাবি আর জি কর এর ঘটনায় অভিযুক্ত দোষী ব্যক্তির ফাঁসি চাই। সেই দাবিতেই অনড় হয়েছে আকাশ বাতাস, মুখরিত হয়েছে চারিদিক। 

তাঁরা যে করে হোক পথে নেমে নিজেদের সংগঠনের ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করে কিছুটা সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে দিলেন এদিন স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদ আর সাংগঠনিক প্রতিবাদের ধরন একদমই আলাদা। কে জিতল, আর কে হারল সেটা বড় কথা নয়। রাস্তায় নেমে নিজেদের অস্তিত্ব, নিজেদের ক্ষমতা, নিজেদের অধিকার বুঝিয়ে দেওয়া হলো এই মিছিল থেকেই এদিন। স্লোগান উঠলো আমরাও চাই দোষীর কঠোর শাস্তি। যে সময় এই পদযাত্রা সেই সময়ে এই শহরের আর এক প্রান্তে আর জি কর এর সুপার সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই রাস্তা থেকে আটক করে নিলো। সত্যিই অসাধারন এই সব দৃশ্যের স্বাক্ষী থাকলো আজ কল্লোলিনী, তিলোত্তমা কলকাতা।
গণ আন্দোলন, গণ প্রতিবাদ, পদযাত্রা, মিছিল, আমরণ অনশন কর্মসূচি করেই তো এই ক্ষমতার মসনদে বসতে পেরেছেন তিনি। যাঁর সারা জীবনটাই আন্দোলন করে আর প্রতিবাদ করেই কেটে গেছে। তাঁর যে প্রতিবাদ প্রথমে তেমন কোনো সংগঠন এর ভীত এর উপর গড়ে ওঠেনি। শুধু নিজের মনের জোর,আর নিজের ইচ্ছার জোরে এত লড়াই করেছেন তিনি সবাইকে সাথে নিয়ে।
 কিন্তু আজ যেন এক অসম লড়াই। যে লড়াই করতে নেমে পথে নেমে মনে হচ্ছে ওই ছোট্ট স্ফুলিঙ্গের ডাক কে তিনি হারিয়ে দিতে পারবেন। যে ডাক এর মধ্যে কোনো পরিকল্পনা নেই, সংগঠন এর জোর নেই শুধু একটা কথার কথা আছে মাত্র। যে কথা যে দৃপ্ত ভঙ্গির আহবান আর শিরদাঁড়া সোজা রেখে যে ডাক সেই ডাক শুনেই তো হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষ পথে বেরোলেন। কোনো রকম হিসেব নিকেশ না করেই।ভাবনা চিন্তা না করেই।
 তাহলে কি করে সেই স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনকে সংগঠন আর নিজের ক্যারিশমা দিয়ে মোকাবিলা করবেন তিনি। কিছুটা কি এই লড়াইটা কঠিন হয়ে পড়ছে। কে জানে সেটা হয়তো ভবিষ্যত বলবে। হাজার হাজার মানুষ নিয়ে কলকাতার রাজপথে হাঁটতে হাঁটতে এই কথাই কি আজ মনে মনে ভাবছিলেন বাংলার জননেত্রী অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 
সেদিনের কথা কি তাঁর খুব মনে পড়ছিল সেই রাজভবন থেকে পায়ে হেঁটে মহাকরণে মূখ্যমন্ত্রী হয়ে আসার কথা। যেদিন রাস্তার দুধারে কাতারে কাতারে মানুষ তাঁকে অভিবাদন জানিয়েছিলেন, আশীর্বাদ করেছিলেন, তাঁকে একটিবার ছোঁয়ার জন্য আঁকুপাঁকু করেছিলেন। আর তাঁরা মনে মনে স্বপ্ন দেখেছিলেন চৌত্রিশ বছরের পুরোনো একটা জগদ্দল পাথরকে যে সরাতে পেরেছে সে নিশ্চয়ই আমাদের কথা একটু ভাববে। সাধারণ মানুষের দুঃখ,কষ্ট, যন্ত্রণা বুঝবে। তাদের মুখে একটু হাসি ফোটাবে। 
আজ বোধহয় তাই রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার আমজনতা কিছুটা অবাক হয়েই দেখছিলেন ওই প্রতিবাদী চেনা মুখ এর তাদের ঘরের মেয়ে, কাছের মেয়ে, ভালোবাসার স্পর্শ অনুভব করা মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিছুটা অবাক নয়নে। 

চেনা মুখে অচেনার ছায়া - অভিজিৎ বসু।
ষোলো আগস্ট, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...