সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দু হাজার চব্বিশের সেরা ছবি

ছবি কথা বলে। শুধু একটা ছবি। হাসপাতালের মর্গে হাঁটু গেড়ে বসে কোলে ধবধবে সাদা কাফনে মোড়ানো একটি শিশুর লাশ জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন এক ফিলিস্তিনের নারী। এই মর্মস্পর্শী গাজার হাসপাতালে এক মহিলার কান্নার হৃদয় বিদারক ছবিটাই এই বছর দু হাজার চব্বিশ সালের‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছে।
 যা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বলা যায়। এই ছবিকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে কত কান্নার, যন্ত্রণার অব্যক্ত কথা। আসলে প্রিয়জনকে যুদ্ধে হারিয়ে এই ভাবে বুকে চেপে আগলে বসে থাকার পরেও তো যুদ্ধ, হানাহানি আক্রমণ থামে না কিছুতেই এটাই যে রূঢ় সত্য কথা।
 
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার দক্ষিণে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের মর্গের ওই ছবি গত বছরের ১৭ অক্টোবর তুলেছিলেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ সালেম। ইসরায়েলের হামলায় গাজার হাজারো মানুষের মৃত্যু আর স্বজনদের আর্তনাদের চিত্র তুলে ধরে এ বছরের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো অব দ্য ইয়ার পুরস্কার জিতেছেন তিনি।

গাজার নাসের হাসপাতালের মর্গে স্বজনদের লাশ খুঁজছিলেন ইসরায়েলের হামলায় প্রিয়জন হারা ফিলিস্তিনিরা। সেসময় ৩৬ বছর বয়সী নারী ইনাস আবু মামার মর্গে তার ভাতিজীকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কাঁদছিলেন। ইসরায়েলের বোমা বর্ষণে নিহত পাঁচ বছরের ওই শিশু সেলির মরদেহ ছিল কাফনে মোড়া।
আর সেই ছবি ২০২৪ সালের ‘প্রেস ফটো অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত ছবি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। যা সত্যিই খুব মর্মস্পর্শী।

ইনাস এর কথায়, “মর্গে সেলিকে দেখেই আমি বোধশক্তি হারিয়ে ফেলি। তাকে কোলে জড়িয়ে নিই। ডাক্তাররা বলেছিল, চলে যেতে। কিন্তু তাদের বলেছিলাম, সেলিকে আমার কাছে ছেড়ে দিন।” এটাই বোধ হয় প্রিয়জনকে হারিয়ে ইনাস এর প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল। তাই তিনি হাসপাতালের মর্গেই বসে পড়েন প্রাণের সেলিকে বুকে জড়িয়ে ধরে।

পুরস্কার গ্রহণ করে ফটো সাংবাদিক মোহাম্মদ সালেম বলেন, “পুরস্কার জিতে উদযাপন করার মত ছবি এটি নয়।” সত্যিই তো এই ছবি হয়তো পুরস্কার এনে দিলো কিন্তু সেটা কি একজন চিত্র গ্রাহকের কাছে খুব সম্মানের না কষ্টের, যন্ত্রণার। যে ছবি তুলতে গিয়ে হয়তো সালেম নিজেও একটু থমকে গেছেন।

 
সালেমকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের ছবি ও ভিডিওর গ্লোবাল এডিটর রিকি রজার্স নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে পুরস্কার গ্রহণের অনুষ্ঠানে বলেন, যুদ্ধের ফলে মানবিক কী প্রভাব পড়ে, এই পুরস্কারের মধ্যে দিয়ে সে ব্যাপারে গোটা বিশ্ব আরো সচেতন হবে বলে সালেম প্রত্যাশা করেছেন। কিন্তু প্রত্যাশা করলেই কি আর সব আশা মেটে সবার। 

মোট ১৩০টি দেশের ৩ হাজার ৮৫১ জন ফটোগ্রাফারের ৬১ হাজার ৬২টি ছবি থেকে সেরা ছবিগুলো বেছে নেয় জুরি বোর্ড। নেদারল্যান্ডসের ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো’ ফাউন্ডেশন এই পুরস্কার দিয়ে থাকে। জুরি সদস্য, গার্ডিয়ান নিউজ অ্যান্ড মিডিয়ার ফটোগ্রাফি প্রধান ফিওনা শিল্ড সালেমের তোলা ছবি সম্পর্কে বলেন, ‘ছবিটি গভীর মর্মভেদী’।
৩৯ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি ফটো সাংবাদিক সালেম ২০০৩ সাল থেকে রয়টার্সের সঙ্গে কাজ করছেন। ২০১০ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রতিযোগিতায়ও একটি পুরস্কার জেতেন। তবে এবারে তার ছবি সেরা ছবি হলো বছরের সেরা ছবি। যদিও তাঁর মতে,“পুরস্কার জিতে উদযাপন করার মত ছবি এটি নয়,”।  সত্যিই তো জীবনের এই ছবি কি আমাদের কিছুই শিক্ষা দেয় না কে জানে। হয়তো সব জেনেও, দেখেও কোনো শিক্ষা গ্রহণ করি না আমরা।

ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো হলো বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বার্ষিক প্রেস ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা। যে প্রতিযোগিতায় যারা বিজয়ী হয় তাদের ছবিগুলি প্রতি এপ্রিলে আমস্টারডামের নিউয়ে কার্কে তাদের বিশ্ব ভ্রমণ শুরু করে সেখানে প্রদর্শিত হয়৷  
আমস্টারডামে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রতি বছর, সারা বিশ্ব থেকে পেশাদার প্রেস ফটোগ্রাফার, ফটো এজেন্সি, সংবাদপত্র এবং ম্যাগাজিনগুলিকে আগের বছরের থেকে তাদের শীর্ষ সংবাদ-সম্পর্কিত ছবিগুলি জমা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সর্বোত্তম কাজগুলি 200 টিরও বেশি চিত্রের একটি ভ্রমণ প্রদর্শনীতে একত্রিত করা হয়। 
কীভাবে প্রেস ফটোগ্রাফাররা বিশ্বজুড়ে তাদের কাজকে মোকাবিলা করে এবং প্রেস কীভাবে চিত্রগুলির মাধ্যমে সংবাদকে সংযুক্ত করে তার একটি ওভারভিউ তৈরি করে এই প্রদর্শনীতে৷ ড্যাম স্কোয়ারে নিউয়ে কার্কে প্রদর্শনীটি শুধুমাত্র কয়েক মাসের জন্য হয় এই শহরে। যা দেখতে ভিড় জমান অনেক মানুষ।

ফটোসাংবাদিকতায় সর্বশেষ ফটোসাংবাদিকতার প্রবণতা এবং উন্নয়নের প্রতিফলন, এটি শুধুমাত্র বিশ্ব মঞ্চে সংবাদ এবং বর্তমান ঘটনা এবং ঘটনাগুলির (কখনো ভয়ঙ্কর) বাস্তবতাই উপস্থাপন করে না, বরং জীবন, ক্রীড়া, শিল্প, বিজ্ঞান এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যও উপস্থাপন করে। আবেগঘন মুহূর্তকেও লেন্স বন্দী করা হয়। আসলে লেন্সে চোখ দিয়ে যা দেখে অবাক হয়ে থমকে গেছিলেন সালেম। হয়তো ভেবেছিলেন কি করে এই ছবি তুলবেন তিনি। কিন্তু নিজের পেশায় সেই ছবিকেই তুলে তিনি সেরা ছবির পুরষ্কার পেলেন। 
সাদা জীবনের কালো কথা লিখতে বসে এই সাদা কাপড় জড়ানো ছবিটা দেখে রাতে মনটা বড়ো খারাপ হয়ে গেলো। সত্যিই তো আত্মীয় স্বজন, প্রিয়জন, সবাইকেই তো একদিন মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হয় এই পৃথিবী ছেড়ে। কিন্তু ওই পাঁচ বছরের শিশুর কি দোষ ছিল কে জানে। যাকে চলে যেতে হলো এই ভাবে।
যার জন্য আজ শুধু ঐ নারী নয় আমরাও বোধ হয় একটু চুপ করে গেছি ছবিটা দেখে। হাজারো ঘটনার ঘনঘটায় এই ছবির জন্য লজ্জা হয় আমাদের। শুধু যুদ্ধ, নিজের ক্ষমতার দম্ভ আর অহঙ্কার নিয়ে যারা এসব করে তাদের ভাবা উচিৎ একবার ওই শিশুর কথা। 
যারা আজ এই ভাবে হারিয়ে যাচ্ছে তাদের পরিবারের কথা ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধ করে কি লাভ হয় কে জানে। একটু কম ক্ষমতার অধিকারী হয়ে সবাইকে নিয়ে একসাথে বেঁচে থাকলে ক্ষতি কি। না হয় যুদ্ধ হানাহানি আর করলাম না আর কেউ আমরা। 
আর যেনো এমন ছবি তোলা না হয় কোনো দিন। তাহলে হয়তো এই পৃথিবীর চিত্রটাও একদিন সত্যিই বদলে যাবে। সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছি আমরা সবাই। সালেম, তোমাকে সেলাম জানাই।

দু হাজার চব্বিশ এর সেরা ছবি - ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটোগ্রাফি তে।

অভিজিৎ বসু। দু হাজার চব্বিশ, বিশে এপ্রিল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...