সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জ্যন রোজ এর বার্তা রিমঝিমকে

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক নতুন শুভেচ্ছা বার্তার কথা। যে শুভেচ্ছা বার্তা এলো রাত দখলের ডাক দেওয়া সেই রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাওয়া মেয়ে রিমঝিম এর কাছে। তার কাছে এলো জ্যন রোজ এর অভিবাদন। কে এই জ্যন রোজ। যাঁর কাছ থেকে মেসেঞ্জারে অভিবাদন পেয়ে একদম শিহরিত হয়েছেন রিমঝিম। কিছুটা অভিভূত হয়ে পড়েছেন তিনি। 
 তাহলে একটু পিছিয়ে যেতে হয় আমদের। যিনি মাত্র সতেরো বছর বয়সে উনিশশো সাতষট্টি সালে ভিয়েতনাম এর যুদ্ধে সেনাবাহিনীর বন্দুকের নলের সামনে ফুল গুঁজে দিয়েছিলেন। যে বিখ্যাত সেই ছবি তুলেছিলেন এক ফটোগ্রাফার মার্ক রিবউড। বহু বছর পর এই ছবি দেখা যায় একটি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। সেনাবাহিনীর বেয়নেটের সামনে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি সেই জ্যন রোজ। যাঁর হাতে সেদিন ছিল চন্দ্রমল্লিকা ফুল।
 পেন্টাগনে ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্সের দপ্তরের সামনে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সেদিন হাজির হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষের সাথে তিনিও। যারা প্রতিবাদ করতে এসেছিলেন সেদিন তার মতই রাস্তায় নেমেছিলেন। সেদিন সবাই এই ভিয়েতনামের যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু সেনারা তাদের বন্দুকের নল দিয়ে তাদের প্রতিবাদের মোকাবিলা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই বন্দুকের নলের দিকে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে ফুল গুঁজে দেয় সেদিন সতোরো বছরের জ্যন।
 সেদিনকার সেই জ্যন রোজ আজ বেশ অসুস্থ। পেশায় চিকিৎসক তিনি এখন আর ভালো করে হাঁটা চলা করতে পারেন না। প্রায় চুয়াত্তর বছর বয়স হয়েছে তাঁর। তিনি হুইল চেয়ার নিয়ে চলা ফেরা করেন। তবু সেই তিনি জ্যন রোজ আজ রিমঝিমকে অভিবাদন জানিয়েছেন মেসেঞ্জার এর মাধ্যমে। রিমঝিম এই কথা তাঁর ফেসবুক পোস্ট করে জানিয়েছেন। তাঁর কাছেও পৌঁছে গেছে এই রাত দখলের কথা। তিনি বলেছেন এইভাবেই সকল আন্দোলনের পূর্বে আমাদের ভারতের নারীরা আমাদের ভারতের নারীদের মুক্তির পথে আলো হয়ে থাকুন।
যা দেখে, যে বার্তা পেয়ে, যে অভিবাদন বার্তা পেয়ে আজ অভিভূত হয়েছেন রিমঝিম নিজেও। হয়তো সারা দেশ থেকে অনেকেই তাকে এই প্রতিবাদের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই প্রতিবাদে সামিল হবার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই প্রতিবাদ সফল হবার জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন। কিন্তু সেই সব বার্তাকে উপেক্ষা করে জ্যন রোজ এর বার্তা তার কাছে অনেক বড় শক্তি এনে দিয়েছে।আগামী দিনে পথ চলার সাহস জুগিয়েছে। 
 প্রায় ঊনিশ বছর ধরে চলা সেই ভিয়েতনাম যুদ্ধের একজন প্রতিবাদী মানুষ। যিনি বেয়নেটের সামনে হাসি মুখে ফুল গুঁজে দিয়েছিলেন কাউকে ভয় না পেয়ে। সেই জ্যন রোজ এর অভিবাদন বার্তা রিমঝিমকে আরো শক্তি যোগালো। তাই বোধ হয় তিনি তাঁর ফেসবুক বার্তায় সে কথাই বলেছেন আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হবে। অনেকটাই পথ বাকি এখনো। সবে তো শুরু হলো এই লড়াই। নিশ্চয়ই একদিন অন্ধকার রাত কেটে নতুন ভোরের আলো ফুটবেই।

জ্যন রোজ এর বার্তা রিমঝিমকে - অভিজিৎ বসু।
ষোলো আগস্ট, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

  1. প্রতিকুলতার সঙ্গে লড়াই করতে করতে এক সময় ঘুরে দাড়াতেই একসময় প্রতিবাদে নামে মানুষ।স্থান-কাল ভেদে বিশ্বজুড়ে নানা সময়ে মানুষের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছে নানারকম।রাত দখলের ডাক দেওয়া রিমঝিম সিনহার কাছে জ্যন রোজ এর বার্তা ইস্যুতে এই লেখা পড়ে পাঠক হিসেবে সমৃদ্ধ হলাম।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...