সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মাস্টার স্ট্রোক

একেবারে মাস্টার স্ট্রোক। সোজা ধর্না মঞ্চে হাজির হলেন তিনি। একদম সেই পুরোনো ফর্মে চেনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেখতে পেলাম আমরা সবাই টিভির পর্দায়। আসলে রাজনীতির পাঠশালায় তিনি সত্যিই অসাধারণ এক রাজনীতিবিদ। যে কোনো ঘূর্ণি বলেই তিনি দু পা এগিয়ে ছয় মারতে এগিয়ে যান বরাবর কোনো ভয় না পেয়ে। আসলে সারাটা জীবন ধরে এইভাবেই তো তিনি কাটিয়ে দিতে পেরেছেন। যে কোনো কঠিন আর অতি কঠিন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে এগিয়ে চলেছেন তিনি।

 আর এই জন্য এত দিন ধরে এত ঘটনা ঘটে যাবার পরেও তিনি আজও প্রাসঙ্গিক বাংলার রাজনীতিতে শুধু নয় গোটা দেশের রাজনীতিতেই। আসলে রাজনীতিবিদ হিসেবে এই যে হঠাৎ করেই আন্দোলনস্থলে চলে যাওয়া। এটা বোধ হয় তাঁর পক্ষেই একমাত্র সম্ভব। তাই বোধহয় সেদিন সাংবাদিক সম্মেলন করতে করতে নিজেই বলে ফেলেছিলেন আমার সেই অনশন আন্দোলনে তো সিপিআইএম এর কেউ একবারও আসেনি আর আমার খবরও নেয়নি কেউ। আমি আন্দোলনকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি তাই যারা আন্দোলন করছে তাদেরকেও ভালবাসি আমি। কোনো রাগ, বিদ্বেষ কিছুই নেই আমার ওদের প্রতি। শুধু একটাই অনুরোধ আমার ওদের কাছে ওরা সবাই কাজে ফিরুক। 

আর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরাও বলেন হ্যাঁ, এই আবেদনে তারা সাড়া দিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। এই যে হাতের বাইরে একটা গেম চলে যাওয়ার পরেও কেমন করে কোন জাদুবলে যে এই ভাবে আবার খেলার মাঠে ফিরে আসতে হয় সেটাই আমায় অবাক করে বারবার। এতদিন পর এটাই হলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর ম্যাজিক। যে জাদু কাঠির সাহায্য নিয়ে তিনি এইভাবেই মাঠে ফিরে আসেন। গোল দেন। আবার জিতেও যান কেমন করে। কে জানে কিভাবে ঘটে যায় এইসব কে জানে। তিনি নিজেও কি জানেন এই ম্যাজিক কি করে হয়।
হয়তো অনেকে আমায় বলবেন, কি হলো দাদা এত দালালি করছি কেনো আমি। তাহলে কি ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। না, সেসব কিছুই নয়। শুধু পুরোনো দিনের এক রাজনীতির মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখে যে শুধু প্রতিবাদ আর আন্দোলন আর বিরোধিতা করেই বাস্তিল দুর্গের পতন ঘটিয়ে ফেললেন একা একাই। সেই মানুষটার এই চেনা মুখ আর চেনা ছবি ও চেনা দৌড় দেখে বেশ ভালো লাগে। মনে হয় বয়স এখনো তাঁকে কাবু করতে পারে নি। সেই স্পিরিট তাঁর এতটুকুও কমে যায়নি। 
সমাজ মাধ্যমে এত আলোচনা আর সমালোচনার পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই আগের রূপেই বিদ্যমান আছেন। দিদির মত, অগ্নিকন্যার মত,দাপুটে রাজনীতিবিদ এর মতো, জননেত্রীর মতই তিনি বিদ্যমান। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোধহয় এমনই। বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় বসে থাকা চিকিৎসকদের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলতে পারেন আমি এসেছি আবার আলোচনার আহ্বান করতে। বন্ধ দরজায় এই বলেই কড়া নাড়েন তিনি। ছোট্ট টোকায় বলকে ঠেলে দিয়ে অপেক্ষা করেন তিনি। কখন গোল করবেন তিনি সেটা ভাবেন। 
সত্যিই বলছি এই প্রবল নিম্নচাপের আবহাওয়ায় এমন খেলা দেখার সৌভাগ্য আর কজনের হয় বলুন। যে খেলা আমি এই কদিনে দেখতে পেলাম সেটা সত্যি অভাবনীয় খেলা। তাই এইভাবে নিজে মাটিতে বসে পড়ে হাজার ক্যামেরা, বুম এর সামনে তাঁর হাতজোড় করে আবেদন নিবেদন করা আপনারা কাজে ফিরুন। আন্দোলনের মুখ যিনি তাকে কাছে ডেকে কথা বলা সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসা।

 এটাই হলো আমাদের সবার দিদি, সবার চেনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের সবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওপরে বজ্র কঠিন আপাত কঠোর রূপ থাকলেও ভিতরে তিনি এমনিই একজন কাছের, অতি কাছের নিকটের এক আপন করে নেওয়া মানুষ। যিনি যে কোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে এগিয়ে চলতে জানেন। নিজের ইগো ঝেড়ে, ঝড় জলের মধ্যে হাসি মুখে আন্দোলন স্থলে এসে বলতে জানেন আমি চাই তোমরা  কাজে ফেরো। এর থেকে বড় রাজনীতি আর কি হতে পারে। ভালো থাকবেন দিদি আপনি।

 মাস্টার স্ট্রোক - অভিজিৎ বসু।
চোদ্দো সেপ্টেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...