সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আশ্বিনের প্রথম সকাল

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ শুধু সেই আশ্বিনের প্রথম সকালের কথা। যে আশ্বিন নিয়ে আমাদের কত আনন্দ আর সুখ অপেক্ষা করে। যে আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে ওঠে পূজোর ঘণ্টা। আকাশে বাতাসে কেমন উড়ো মেঘের ওড়াউড়ি মন ভালো করে দেয়। যে আশ্বিন আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে ঠক ঠক করে।আজ তো সেই আশ্বিনের প্রথম দিন। পয়লা আশ্বিন। 

 হ্যাঁ, সন্ধ্যার আকাশে আবির্ভূত হওয়া প্রথম তারা হলো অশ্বিনী। ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী এটি হলো মেষ রাশির মাথা। সাতাশটি নক্ষত্রের সর্ব প্রথম নক্ষত্র। যে হিন্দু পূরাণ মতে দুর্ভাগ্য ও অসুস্থতার জন্য একে মনে করা হয়। আবার যে রাশির মধ্যে সূর্যোদয়ের ও সূর্যাস্তের দীপ্তি লুকিয়ে থাকে। গোধূলি বেলায় আশ্বিনদের আলো এবং অন্ধকারের মিশ্রণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

 এটি  শরৎ ঋতুতে পড়ে। হিন্দু মতে আশ্বিন হলো সূর্যের কন্যা রাশিতে প্রবেশের সাথে সাথেই শুরু হয়। যে আশ্বিন নিয়ে আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পয়লা আশ্বিন - কবিতা লিখেছিলেন বাংলার তেরশো উনচল্লিশ সালের পয়লা আশ্বিন। 

পয়লা আশ্বিন...

হিমের শিহর লেগেছে আজ মৃদু হাওয়ায়
           আশ্বিনের এই প্রথম দিনে।
    ভোরবেলাকার চাঁদের আলো
           মিলিয়ে আসে শ্বেতকরবীর রঙে।
শিউলিফুলের নিশ্বাস বয়
        ভিজে ঘাসের 'পরে,
    তপস্বিনী উষার পরা পুজোর চেলির
           গন্ধ যেন
               আশ্বিনের এই প্রথম দিনে।
 
পুব আকাশে শুভ্র আলোর শঙ্খ বাজে -
    বুকের মধ্যে শব্দ যে তার
        রক্তে লাগায় দোলা।
    কত যুগের কত দেশের বিশ্ববিজয়ী
           মৃত্যুপথে ছুটেছিল
               অমর প্রাণের অসাধ্য সন্ধানে।
    তাদেরই সেই বিজয়শঙ্খ
           রেখে গেছে অরব ধ্বনি
               শিশির-ধোওয়া রোদে।
        বাজল রে আজ বাজল রে তার
                   ঘর-ছাড়ানো ডাক
               আশ্বিনের এই প্রথম দিনে।

ধনের বোঝা, খ্যাতির বোঝা, দুর্ভাবনার বোঝা
           ধুলোয় ফেলে দিয়ে
        নিরুদ্‌বেগে চলেছিল জটিল সংকটে।
           ললাট তাদের লক্ষ্য ক'রে
               পঙ্কপিণ্ড হেনেছিল
           দুর্জনেরা মলিন হাতে;
        নেমেছিল উল্কা আকাশ থেকে,
           পায়ের তলায় নীরস নিঠুর পথ
        তুলেছিল গুপ্ত ক্ষুদ্র কুটিল কাঁটা।
    পায় নি আরাম, পায় নি বিরাম,
           চায় নি পিছন ফিরে;
        তাদেরই সেই শুভ্রকেতনগুলি
               ওই উড়েছে শরৎপ্রাতের মেঘে
                   আশ্বিনের এই প্রথম দিনে।

ভয় কোরো না, লোভ কোরো না, ক্ষোভ কোরো না,
               জাগো আমার মন -
        গান জাগিয়ে চলো সমুখ-পথে
    যেখানে ওই কাশের চামর দোলে
           নবসূর্যোদয়ের দিকে।
               নৈরাশ্যের নখর হতে
    রক্ত-ঝরা আপ্‌নাকে আজ ছিন্ন করে আনো
আশার মোহ-শিকড়গুলো উপড়ে দিয়ে যাও -
           লালসাকে দলো পায়ের তলায়।
    মৃত্যুতোরণ যখন হবে পার
পরাজয়ের গ্লানিভরে মাথা তোমার না হয় যেন নত।
        ইতিহাসের আত্মজয়ী বিশ্ববিজয়ী
    তাদের মাভৈঃ বাণী বাজে নীরব নির্ঘোষণে
               নির্মল এই শরৎ-রৌদ্রালোকে
                       আশ্বিনের এই প্রথম দিনে।
 

  ১ আশ্বিন, ১৩৩৯

সত্যিই কি কথা না লিখেছিলেন তিনি। ধনের বোঝা, খ্যাতির বোঝা, দুর্ভাবনার বোঝা ধুলোয় ফেলে দিয়ে নিরুদ্বেগ হয়ে জীবন চলছে জটিল সংকটে। যে জীবনে এই আশ্বিনের সকালে ভিজে ঘাসের পরে শিউলির নিশ্বাস পড়ে। তপস্বিনী উষার পরা পূজোর চেলির গন্ধ ভেসে আসে এই আশ্বিনের প্রথম দিনে। যে গন্ধে ম ম করে আকাশ বাতাস চারিদিক। আর এই সকালেই শিশির ধোয়া রোদে বেজে ওঠে বিজয় শঙ্খ। যে ডাকে উমা ঘর ছাড়েন কৈলাস থেকে। আর কবির কথায় সেই সময় ভয় করো না, লোভ করো না, ক্ষোভ করো না কোনো। 

নতুন আশ্বিনের সকালে সূর্যের দিকে তাকিয়ে কাশ ফুলের চামর দুলে ওঠে মাঠের ধারে। আর সেই সময় যেনো আমরা আমাদের লালসা, আশা, মোহকে সব উপড়ে ফেলতে পারি ধীরে ধীরে। জীবনে পরাজয় হলেও, গ্লানি হলেও যেনো মাথা নিচু না হয়। এই নির্মল এই শরৎ এর রোদের হাসি মাখা আলোকের আশ্বিনের প্রথম দিনে। সত্যিই কি গভীর গোপন অনুভূতি আর জীবনের কথা কবি লিখে গেছেন এই আশ্বিনের প্রথম দিনে কবিতায়। আজ সেই পয়লা আশ্বিন। যে আশ্বিন মাস এখন থেকে একত্রিশ দিন এর। আর ত্রিশ দিনের নয়। 

আর এমন আশ্বিনের প্রথম সকালেই তো ঘুম ভেঙে মনে পড়ে যায় সেই বিখ্যাত লাইন,
 আশ্বিনের শারদ প্রাতে 
বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির,
ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা,
প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত
জ্যোতির্ময়ী জগৎ মাতার আগমন বার্তা,
আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি অসীম ছন্দে
বেজে উঠে রূপলোক ও রসলোকে আনে 
নবভাব মাধুরীর সঞ্জীবন।
তাই আনন্দিতা শ্যামলী মাতৃকার চিন্ময়ীকে 
মৃন্ময়ীতে আবাহন।
আজ চিছ্বক্তি রূপিনী বিশ্বজননীর শারদস্মৃতি মন্ডিত প্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানমহিতা।

সত্যিই আশ্বিনের এই শারদ প্রাতে বেজে ওঠে দিকে দিকে এই সুর। মন্দ্রিত হয় আকাশ বাতাস। হাজার দুঃখ কষ্ট আর যন্ত্রণার মাঝে কেমন করে যে খুশিতে ভরে যায় এই বিধুর ভারী বৃষ্টি ভেজা মন কে জানে। কিছুদিন পরেই হবে পিতৃপক্ষের অবসান শুরু হবে মাতৃপক্ষের। যে পক্ষের অপেক্ষায় থাকা সারাটা বছর ভোর। যে ভোরবেলায় আমার জানলার কাঁচের দেয়াল জুড়ে হালকা শিশিরের শব্দ ছুঁয়ে যায় কেমন চুপিসারে। আর আমি ঘুমের পাশ ফিরে ভোর বেলায় স্বপ্ন দেখি সেই শিশির ভেজা গাছের পাতায় কেমন হিমের পরশ লাগছে ধীরে সুস্থে। 

ভোর বেলায় দেখি আমার হারিয়ে যাওয়া মা জানলার কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছেন আমার মাথার পাশে কেমন চুপটি করে। হাত বাড়িয়ে ধরতে যাই মাকে কিন্তু না ভেঙে যায় ভোরের আলোয় মাখামাখি হওয়া সেই স্বপ্ন। যে স্বপ্ন দেখে মন খারাপ হয়ে যায় আমার। দূরে ঢাকের বাদ্যি বাজে। অস্ফুটে মা বলে ডেকে উঠি ঘুমের ঘোরে। কাশের বনের মধ্যে দিয়ে আমার স্বপ্ন দেখা মা মিলিয়ে যায়। দূরে অনেক দূরে। 

আশ্বিনের সকালে উঠে দেখি না সত্যিই তো জীবনের এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার আর পূরণ হবে না কোনোদিনই। আমার মা, আমার উমা আর  ঘরে ফিরবে না কোনোদিন। আর পুজোর সময় একদিন ছুটি নিয়ে মার কাছে দুপুরে খেতে যাওয়া হবে না কোনোদিন। বুকের মাঝে চাপা একটা আর্তি ছড়িয়ে পড়ে। আমি হাউ হাউ করে কেঁদে উঠি। চোখের জলে, আর ভোরের শিশিরের শব্দ কেমন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। মনে পড়ে যায় কবির সেই বিখ্যাত লেখা লাইন,

 মৃত্যুতোরণ যখন হবে পার,
পরাজয়ের গ্লানিভরে মাথা তোমার না হয় যেনো নত।

সত্যিই তো জীবন আর মৃত্যুর মাঝে ওই তোরণ পেরিয়ে মা যে আজ অনেক, অনেক দূরে চলে গেছেন আমায় ছেড়ে দিয়ে একা ফেলে রেখে এই ধূলি ধূসর পৃথিবীতে। যে পৃথিবীতে আমি আজ বড়ো একা নিঃসঙ্গ। এই আশ্বিনের সকাল যে আমায় ভাসিয়ে দিল ফের, কাঁদিয়ে দিলো, মনের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিলো। এমন সকাল যে বহুদিন পর দেখলাম আমি। চুপ করে মুখ গুঁজে পড়ে রইলাম বিছানায়। আশ্বিনের প্রথম সকালে এক বুক শুন্যতাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে। না, আমার মা যে আর কোনোদিন ফিরে আসবে না আর এই আশ্বিনের প্রথম সকালে।

আশ্বিনের প্রথম সকাল -  অভিজিৎ বসু।
আঠারো সেপ্টেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...