সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

একটি মৃত্যু, প্রতিবাদ আর বোধোদয়

সাদা জীবনের কালো কথায় সত্যিই আজ এ এক বড়ো অদ্ভুত সময়। এলোমেলো, উদভ্রান্ত, ক্রুদ্ধ। একটা মেয়ের এই নৃশংস ধর্ষণ আর হত্যার পর যেনো গোটা রাজ্যটাই কেমন যেনো এলোমেলো হয়ে গেছে। এমন বিক্ষোভ প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে আন্দোলিত হতে আমি দেখিনি বহুদিন। এই আপাত শান্ত বাংলার মানুষজন আজ যেনো বড়ই অশান্ত। যে বিক্ষোভের আঁচ লেগেছে গোটা দেশে, এমনকি বিদেশেও। 
কেউ কেউ বলছেন বাংলাকে ছোটো করা হচ্ছে চক্রান্ত করে। আবার কেউ কেউ বলছেন এই রাজ্যে আইনের সুশাসন হয়নি কোনো ভাবেই তাই তো রাজ্যের এমন অবস্থা। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকে। কিন্তু বিবেকের ডাকে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন আজ আট থেকে আশি সবাই। ধনী থেকে গরীব সকলেই। দিন মজুর থেকে ক্ষেত মজুর সব শ্রেণীর মানুষ। গ্রামের আটপৌরে সস্তার শাড়ি পরা ওই মহিলা থেকে দামী কালো পোশাক পরা শহুরে মহিলারাও আজ পথে নেমেছেন। একটাই দাবি সকলের, বিচার চাই। 
আসলে এই প্রতিবাদের কোনো রং দেখা যায়নি এখনো। একটা নিষ্পাপ মেয়ের জন্য যাকে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে সে যেই হোক। তার পরিচয় যাই হোক। ডাক্তার, উকিল, ইঞ্জিনিয়ার,শিক্ষক যাই হোক। সে তো একটি মেয়ে। যে মেয়ের খুনীর অপরাধীর ফাঁসি চেয়ে রাস্তায় শাসক, বিরোধী, সাধারণ মানুষ সবাই আজ পথে নেমে পড়েছেন।
 হিসাব আর পাল্টা হিসাবের পরিসংখ্যান পেশ করে চলছে নানা ধরনের রাজনৈতিক দলের চাপান আর উতর এর ইতর এক ধরনের খেলা। একে অপরের পদত্যাগ আর পাল্টা পদত্যাগের দাবি সনদ পেশ করে গলার শিরা ফুলিয়ে আওয়াজ করে গোঙাচ্ছে সবাই কেমন জোর করে কিছু একটা ফায়দা তোলার আশায়। সাদা পোশাকে গলায় কালো উড়নি জড়িয়ে বিধানসভায় এক পক্ষের বহুদিন পর আলোচনায় অংশ নিতে আগমন দেখে ভালই লাগে বেশ। 
আর অন্য সরকার পক্ষের সেই আগমনকে কটাক্ষ করে জবাব দিতে গিয়ে ঝড়ের গতিতে শুধুই সারা দেশে ধর্ষণের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বুঝিয়ে দেওয়া যে দেশ অনেক এগিয়ে আছে এই সামাজিক ব্যাধি থেকে এই ছোটো রাজ্যর থেকে। তবু তারা সংবেদনশীল, আর তাই তারা এই ঘটনার পরপরই সক্রিয় হয়েছেন। নির্যাতিতার পরিবার এর কাছে সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। আর দোষী ব্যক্তির বিচার চেয়ে ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরাও সরকারে থেকেও।
 এই বিষয়ে তাদের সদিচ্ছার প্রকাশ কতটা সেটা বোঝাতে গিয়ে নানান পরিসংখ্যান পেশ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন আসলে সাক্ষ্য প্রমাণ আর সংখ্যা বড়োই গোলমেলে জিনিস। এই নানা সংখ্যা তত্ত্বের খেলায় গোটা একটা হারিয়ে যাওয়া জীবন কেমন যেন দূরে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আমার মনে হয় আর জি করের ঘটনায় প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল গোটা বাংলা, গোটা দেশ । না হলে কি আর এত কিছু দেখার জানার শোনার সৌভাগ্য হতো আমাদের মত এই ছাপোষা অতি সাধারণ মানুষের।
 যারা শুধু নিজেদের আত্মস্বার্থ নিয়েই বেঁচে থাকে তারা কি জানতে পারত কোন রাজ্যে কত কি ঘটে যায় সবার অজান্তেই আর অলক্ষ্যে। সেই পুরোনো একটা কথা মনে পড়ে গেলো আমার, সব কিছুই হয় গো, তুমি যে কিছুই জানতি পারো না কর্তা। সত্যিই কত কিছুই যে ঘটে যায় আমাদের অগোচরে আমরা কিছুই জানতে পারি না সে সব। 
আর যেটা জানাজানি হয়, তখন প্রতিবাদ হয়, উত্তাল হয়, ধর্না হয়, বিক্ষোভ হয় তখন যে সব কিছুই দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যায় সবকিছুই। যে পরিষ্কার দিনের আলোয় ওই মেয়েটার কান্না মাখা যন্ত্রণা ক্লিষ্ট মুখটা দেখতে পাই আমরা। যে প্রাণপণে শেষ বারের মত পুরুষ নামক একটি হাত পা ওলা মানুষের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করার শেষ চেষ্টা করেছিল। যে বাঁচতে চেয়েছিল প্রাণপণে। কিন্তু বাঁচতে পারে নি। যে স্বপ্ন দেখেছিল একটা সুন্দর জীবনের। যে ভেবেছিল নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সংসারে বাবা মার মুখে হাসি ফোটাবে। সমাজের মানুষের সেবা করে চিকিৎসা করে তাদের পাশে থাকবে। না, সব শেষ হয়ে যায় এক নিমেষে। 
আজ তাই এত দিন পরে বিধানসভার অন্দরে হৈ হুল্লোড় হট্টগোল দেখে মনে হয় সত্যিই বিচিত্র এই রাজনীতি। তাই বোধহয় সমাজ মাধ্যমে এত হৈ চৈ পড়ে গেলো। রাত দখলের আওয়াজ উঠলো। বিধানসভায় তড়িঘড়ি করে বিল পেশ করা হলো। যে আওয়াজে মুখরিত আজ আকাশ বাতাস। যার জন্য আজ কিছুটা হলেও চাপে পড়তে হয়েছে সরকারকে। ডাক্তারদের রাতভোর আন্দোলনের চাপে ব্যারিকেড খুলে দিতে হয়েছে পুলিশকে। সবটাই যে ওই হারিয়ে যাওয়া মেয়েটার কৃতিত্ব।
 যার জন্য ঘরের কোণে সারাবজীবন চোখের জল ফেলবেন আর হা হুতাশ করবেন ওর মা আর বাবা অতি সংগোপনে। রাজনীতি এর পাল্টা রণনীতি করে গোটা ঘটনা সারা দেশের কাছে পৌঁছে যাবে এক লহমায়। বাংলার এক চিকিৎসকের রাতের অন্ধকারে হাসপাতালের অন্দরে ডিউটি করার সময়ে করুণ এক মৃত্যুর কাহিনীর কথা। কিন্তু তাতে কি ফিরবে মায়ের কোল খালি করে চলে যাওয়া মেয়েটি কোনোদিন। না, সে আর কোনোদিনই ফিরবে না।


প্রতিবাদের কথা বলতে গিয়ে নেতারা বাজার গরম করতে টিভির পর্দায় গলা ফাটিয়ে বিবেকের ভূমিকায় মঞ্চে অবতীর্ণ হয়েছেন। টিভির বিতর্কে উঠে এসেছে কামদুনির নাম। হাঁসখালী বনাম হাথরস, মনিপুর বনাম বানতলা আর ধানতলার উদাহরন। এই প্রথম এমন একটা ঘটনা ঘটছে শুধু একটি মেয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাতে। যে বাংলা বহুদিন পর এমন একটা আন্দোলনের সাক্ষী হলো। 
একসময় এই বাংলায় নিজের বাপ ঠাকুর্দার জমি জোর করে দখলের জন্য প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল সেই সময় বাম আমলের ঘটনা। রাস্তায় নেমেছিল হাজার হাজার মানুষ। সরকার জোর করে জমি অধিগ্রহণ করছে এর জন্য পথে নেমে ছিল মানুষ দল মত নির্বিশেষে। কোনো বাছবিচার না করেই। যার জমি আছে সেও রাস্তায়। আর যার জমি নেই সেও রাস্তায় নেমেছিল সেই সময়। 
আর আজ জমি নয়, জোর করে নারীর সম্মান কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ইজ্জত কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। লুণ্ঠন করা হচ্ছে নারীর অধিকার। সব কিছুই গায়ের জোরে আর ক্ষমতার জোরে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যারা এমনটা করছে তারা জানে যে কিছুই হবে না তাদের। কারন মাথার উপর ভরসা দেওয়া দীর্ঘদিনের একটা ক্ষমতাসীন সরকার আছে তাদের। যাকে সামনে রেখে যা ইচ্ছা তাই করে ফেলা যায় নিশ্চিন্তে আর কিছুটা নির্ভয়ে। 
কিন্তু সেই পরম নির্ভরতা যে একদিন সরকারের বিরুদ্ধে চলে যায়। পিঠ ঠেকে যাওয়া জনগণ একদিন প্রতিবাদে মুখর হয়ে গর্জে ওঠে।আর তখন বোধ হয় কিছুটা হলেও ভয় পায় কেউ কেউ। আর তাই সেদিন বোধহয় গলা ফাটিয়ে বলতে হয় আমরা কত ভালো অন্যদের থেকে। আমার কলকাতা কত নিরাপদ অন্যদের থেকে। অন্যদের রাজ্যে কত খারাপ অভিজ্ঞতা হয় আমাদের এই রাজ্যের থেকে। সত্যিই তো কত উদাহরণ টেনে এনে কিছুটা প্রবোধ দেওয়ার চেষ্টা করা।
আসুন না এই মাতঙ্গিণী হাজরা আর প্রীতিলতাদের বাংলায় আমরা নিজেরাই আবার সবাই এক হয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। আজ আবার সবাই মিলে আমরা একসাথে এক হয়ে কাজ করি। যে বাংলা আবার পথ দেখাক এই অন্ধকার সময়ে। বাংলা আবার শেখাক অন্যদের যে তারাই পারে এমন কিছু ঘটনা হতে না দিয়ে। 
সত্যিকারের এক স্বপ্নের রাজ্যে গড়ে তুলতে আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে চলি। রাজনীতি ভুলে পাল্টা রননীতি ভুলে। সেদিন হয়তো দুর থেকে বহু দুরের আকাশ থেকে ওই মেয়েটি মিটিমিটি হাসবে। আর সে মনে মনে বলবে সেই তোমরা সবাই বুঝলে কিন্তু বড্ড দেরিতে বুঝতে পারলে। একটু আগে বুঝলে হয়তো আর তোমাদের সবাইকে ছেড়ে, আমার মা আর বাবাকে ছেড়ে আমায় এত দূরে চলে আসতে হতো না। 
তোমরা সবাই ভালো থেকো।

একটি মৃত্যু, প্রতিবাদ, আর বোধোদয় -
অভিজিৎ বসু।
তেসরা সেপ্টেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...