সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অন্য ছবি

আর জি কর এর চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সঠিক বিচার চেয়ে একটা বৃহৎ আন্দোলন হচ্ছে। যা আমাদের সবাইকে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে, টলিয়ে দিয়ে গেছে অনেকটাই। শহরের রাস্তায় রাতভোর বসে থেকে অপেক্ষা করে চলেছে আন্দোলন। দাবি একটাই বিচার চাই। যে আন্দোলনে উত্তাল গোটা বাংলা। সেই উত্তাল বাংলায় নতুন কিছু টুকরো টুকরো ছবির কথা। সাদা জীবনের কালো কথায় আজ শুধু সেই কিছু মন ভালো করা ছবির কথা।
 যা এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে সমাজ মাধ্যমে নানা রূপে, নানা ভাবে। আন্দোলনের ঢেউ এর মাঝে কেমন করে মোচার ভেলায় ভেসে বেড়াচ্ছে সেই সব মন ভালো করা কিছু ছবি। যে টুকরো টুকরো ছবি লুকিয়ে থাকে অন্দোলনের মাঝে,ভীড়ের মাঝে গোপনে। যে ছবি দেখে হাজারও প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ এর মাঝে মনে হয় এই শহরটি এখনো কেমন যেন বদলে যায়নি। এতদিন পরেও যে সে আমার এই চেনা শহর হয়েই আছে এতদিন পরেও। 
 এই শহরের মানুষরাও কেমন বেশ মানবিক অধিকার আর আবেদন নিয়েই তো একে অপরের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সস্নেহে আনন্দে একে অপরের দিকে পরম ভালোবেসে কাছে টেনে নিয়েছেন চেনা অচেনার গণ্ডী পার করে। আর আন্দোলনকারীদের হাতে তুলে দিয়েছেন খাবার,পানীয় জল আরও কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। 
স্কুল ফেরত ছোটো মেয়ে জলের বোতল এগিয়ে দিয়েছে রাস্তায় বসে we want justice চাওয়া আন্দোলনকারীদের হাতে হাসি মুখে। কেউ ঘরের তৈরী খাবার নিয়ে এসে হাসি মুখে সেটা বিলি করেছেন রাতভোর বসে থাকা জুনিয়র ডাক্তারের হাতে। কেউ আবার ঝুলি ভরে খাবার কিনে এনে সেটা বিক্রি না করেই বিলি করেছেন রাস্তায় বসে থাকা মানুষদের। যা সত্যি এক বাক্যে অভূতপূর্ব ঘটনা।
তবে যে ছবিটা সব থেকে বেশি নজর কেড়েছে সমাজ মাধ্যমে। সেটা হলো এক পুলিশ কর্মীর নিজে সাদা পুলিশের পোশাক পরে আছেন।আর সেই অবস্থায় তিনি নিজের হাতে ঠাণ্ডা জল আর গলা ভেজানোর জন্য ঠাণ্ডা ফ্রুটির প্যাকেট তুলে দিচ্ছেন তিনি আন্দোলনকারীদের হাতে হাসি মুখে। যাতে তারা একটু গলা ভেজাতে পারে। তাদের কষ্ট লাঘব হয়।
কলকাতা থেকে একজন সাংবাদিক তীর্থঙ্কর আমায় বললেন দাদা এই ছবিটা দিলাম। তুমি এদের দেখে কিছু লিখো দাদা। সত্যিই তো জীবনের এই সব নানা অভিজ্ঞতা, নানা রঙের উজ্জ্বল ছোপ ছোপ ছবি দেখে বড়ো লিখতে ইচ্ছা হয় আমার নিজের ব্লগে। মনে হয় এমন ছবির জন্য বেঁচে থাকতে যে বড়ো সাধ হয় আমারও। কংক্রিটের জঙ্গলে ঘেরা ট্রাম লাইন পাতা ধূসর শহরে এ কোন ছবি। 
যে পুলিশের বিরুদ্ধে এত প্রতিবাদ সেই পুলিশ  ঠাণ্ডা জল দিচ্ছে রাস্তায় বসে থাকা মানুষদের হাসি মুখে। যাদের জন্য এত কিছু আন্দোলন তারাই কেমন করে যে এই কাজ করছেন কে জানে। তবে এই কঠিন আন্দোলনকে সামনে রেখে জয় আর পরাজয়কে সামনে রেখেও, যে বিরল কিছু মিষ্টিছবির সন্ধান পেলাম আমরা। 
সেটা দেখে শুধু মনে হলো বদলে যাওয়া এই অচেনা শহরে রাতের অন্ধকারে আচমকা কেউ আক্রমণ করতে পারে কোনো মেয়েকে। আবার সেই শহরেই রাতের অন্ধকারে কেউ কেউ আবার খাবার নিয়ে হাত বাড়িয়ে দেয় এইভাবেই। যার জন্য এত ঘটনার পরেও মনটা কেমন বড়ো ভালো হয়ে যায়। মনে হয় এর জন্য কল্লোলিনী কলকাতা, তিলোত্তমা কলকাতা, আর আমার প্রাণের শহর কলকাতা আজও বড়ো আদরের আর ভালোবাসার শহর হয়েই বেঁচে থাকবে যুগ যুগ ধরে। 

অন্য ছবি - অভিজিৎ বসু।
চৌঠা সেপ্টেম্বর দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...