সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের সবার উপেন

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ হুগলীর তারা নিউজ এর সেই বিখ্যাত সাংবাদিক উপেন কল্ল্যার কথা। আসলে অনেকেই ভাবেন কি যে শুরু হয়েছে এই এক রাত দুপুরে সাদা জীবনের কালো কথায় নানা লোকের কথা, নানা গল্প,আর কাহিনী লেখার কি দরকার বাবা। কে এসব লিখতে বলেছে। আসলে কি জানেন তো আমার সাংবাদিক জীবনের এই দীর্ঘ পথে,নানা সময়ে, নানা মুহূর্তে, নানা ধরনের মানুষের সাথে পরিচয় হয়, দেখা হয়, আলাপ হয়। কিছু কিছু আলাপ,পরিচয় কিছু মানুষের সাথে যোগাযোগ কেমন করে যেনো রয়ে যায় সারাটা জীবন ধরেই। সে আমি যত দূরেই চলে যাই আর যাই করি তারপরেও।

 উপেন এর সাথে আমার কি করে আলাপ হলো সেটা আর মনে নেই আজ এতদিন পরে এত বছর পরে। তবে আমার ইটিভির চাকরির সুবাদে সেই যে ওদের গ্রাম সুগন্ধার গটুতে গেলাম। সেই পোলবার সুগন্ধ্যার ময়ূর বাঁচাও এর খবর করলাম সেই সময় দেখা হয়ে ছিল উপেন আর আমার মনে হয়। সালটা দু হাজার সাল হবে। আর একজন ময়ূর নিয়ে কাজ করতেন সেই সময় সেই নিমাই জানা। আজ নিশ্চয়ই তিনি আর বেঁচে নেই হয়তো। উপেন এর কথায় আসি। গ্রামের সাদা মাটা এক সহজ সরল ছেলে। সব সময় মুখে হাসি খুশি ভাব। ওর নিজের গ্রামে নিয়ে গেলো আমাদের। 

 লাল মাটির রাস্তা দিয়ে মোটর সাইকেল করে সেই বড়ো বড়ো গাছে ঘেরা সুন্দর সবুজ গ্রামে পৌঁছে গেলাম আমরা। গ্রামের পাশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে। মজা নদী হলেও কিন্তু হালকা জলের রেখা দেখলাম শীতের দুপুরে। কেমন ফাঁকা এই ছবির মত গ্রাম, ওর বাড়ি দেখে, সবুজ চাষের মাঠ দেখে মনটা বড়ো ভালো হয়ে গেলো আমার। আরও ভালো হলো যখন দেখলাম ওদের বাড়ির দাওয়ায় ঝপ করে উড়ে এসে ময়ূরের আনাগোনা যা আমাদের কাছে আশ্চর্যের ব্যাপার হলেও ওদের কাছে সেটা ছিল একদম জলভাত। চিড়িয়াখানায় ময়ূর দেখা লোক আমি সে হঠাৎ এই ভাবে ময়ূর দেখে যারপরনাই আনন্দিত ও উদ্বেলিত হয়ে পড়লো আর কি। খবরের সাথে এটা তো বাড়তি পাওনা আর কি। ওর বাড়ির লোকদের আদর আপ্যায়ন মনে থাকবে আমার বহুদিন।

দিন কেটে যায় খবরের চাপে খবরের জগতে উপেন তখন ধীরে ধীরে কাজ শুরু করেছে জেলায় এদিক ওদিক ঘুরে। ওর একরোখা মনোভাব,ওর কঠোর পরিশ্রম আর সততা ওর কাজের প্রতি নিষ্ঠা দেখে আমি বেশ অবাক হতাম। শহুরে সুন্দর দেখতে সাংবাদিক না হলেও কেমন যেন একটা ওর সুন্দর জনসংযোগ খবরের ময়দানে কাজে লেগে গেলো সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়। উপেন তখন তারা নিউজ এর সংবাদদাতা  হুগলী জেলার।

 নির্ভীক নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করা তারা নিউজ গ্রামে গঞ্জে তখন বেশ জনপ্রিয়। আর উপেন এর দিদির বাড়ী সিঙ্গুরের ঘেরা জমির মাঠের ধারে। ব্যাস একদিকে সিঙ্গুরের চাষীদের জমি আন্দোলন অন্য দিকে ওর গ্রামীন জনসংযোগের মাধ্যমে সব খবর পুলিশের আগে ওর জেনে যাওয়া আর সেই মত পরিকল্পনা করে এগিয়ে চলা জেলা সাংবাদিকদের। এই ভাবেই তো সিঙ্গুরের সব খবর সবার আগে উপেন আমাদের সবাইকে দিয়েছে অকাতরে। কোনো বাছ বিচার না করেই শুধুই বন্ধুত্ব এর খাতিরে। 

সারাদিন সিঙ্গুরে ঘুরে খবর করে ক্লান্ত আমরা জেলার সাংবাদিকরা। সারাদিন পর ওর দিদির বাড়ির দাওয়ায় বসে মুড়ি আর শশা খেয়ে আর টিউবয়েলের জল খেয়ে দিন কাটিয়েছি আমরা সবাই কতদিন দুপুর বেলায়।মমতার ধর্না মঞ্চের পাশে বসে একটা ঘুগনি কিনে উপেন এর বাড়ী থেকে আনা মুড়ি দিয়ে মেখে খেয়ে দিন কাটিয়েছি আমরা সবাই মিলে। আসলে সিঙ্গুরের সেই অধ্যায়ে জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে একটা একতা কাজ করেছিল আর তার সাথে সাংবাদিকদের অনমনীয় জেদ। সেই দুটোর ফল দেখা গেছিলো বার বার। আমি জানিনা আজকাল আর হুগলী জেলায় সেই একতা আর জেদ দেখা যায় কি না কে জানে। জেদ ছাড়া কি আর খবর করা যায় কোনোদিন।

শেওড়াফুলিতে নকশালদের মিছিলে পুলিশের মার খেয়ে আক্রান্ত সাংবাদিকরা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। এসপি হুগলীর সুপ্রতিম সরকার। দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এসেছিলেন সেই মিছিলে, গঙ্গা পার হয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে লুকিয়ে এসেছিলেন কানু সান্যাল। যে খবর জানতাম একমাত্র আমি। পুলিশের লাঠির মারে আক্রান্ত হলো সাংবাদিকরা। কারণ এই মিছিলের ছবি তোলা যাবে না। উপেন,বাপি, মিন্টে আরও বেশ কয়েকজন ছিটকে পড়লো রাস্তায় জিটি রোডে। ওদের সবাইকে শ্রীরামপুরের ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। হৈ চৈ পড়ে গেলো সেই দিন। উপেন আর বাপি আর মিন্টে সেদিন সব জেলার সাংবাদিকরা বুক চিতিয়ে পুলিশের লাঠির সামনে লড়াই করেছিল। 

আজ বোধ হয় সেসব অতীত দিন। আজ কি আর এমন কোনো ঘটনায় এমন বুক চিতিয়ে লড়াই করা যাবে কে জানে। সাংবাদিকরা কি এই ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে খবর করতে পারবে কে জানে। জানি না আমি এতদিন পরে আমার সেই স্বপ্নের সময়ে যে সময় বুক ফুলিয়ে খবর করতে পারতাম আমরা সবাই অকুতোভয়ে। উপেন এর এই খবরের প্রতি টান ভালোবাসা নিয়ে তো এতদিন চালিয়ে গেলো এইভাবেই হাসি মুখে। একদিকে মাঠের চাষ বাস করে অন্যদিকে খবরের টানে ছুটে বেরিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলো উপেন। 

একদিন কথায় কথায় বলছিলো দাদা মেয়েটা বড়ো হয়েছে ঘরটা একটু পাকা করার চেষ্টা করেছি তবে ঘরের আগে বাথরুমটা তৈরি করলাম। তারপর ধীরে সুস্থে বাড়িটা করবো একটু একটু করে। এই হলো আমাদের উপেন এর জীবন দর্শন। সহজ সরল জীবন দর্শন। ঘরের আগে মেয়ের জন্য বাথরুম করে তারপর ঘর পাকা করে  কষ্ট করে বাঁচার জীবন দর্শন। আমার বেশ ভালো লেগেছিল সেইদিন ওর এই কথাটা। আসলে আজকাল তো শুনি সাংবাদিকতা মানেই উপরি আয় আর বাড়তি পাওনা। দামী গাড়ি,বাড়ী, হাতে দামী মোবাইল ফোন, গলায় সোনার চেন, কই আমিতো তেমন কিছু দেখলাম না আমার জীবনে। হয়তো উপেনও তার সন্ধান পায়নি কোনদিন। 

মাঝে মাঝেই ওর সাথে ফোনে কথা হয় আমার। আমরা দুজনে একসাথে স্মৃতিচারণ করি দুজন মিলে। সেই সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনে উত্তাল দিনগুলোর কথা। যেসব দিনগুলো আমার মনে হয় হুগলীর সাংবাদিকদের কাছে একটা স্বর্ণযুগ ছিল সেই সময় সেই অধ্যায়। যে দিনগুলো আর হয়তো কোনোদিন ফিরে পাবো না আমরা কেউই। উপেন হয়তো খুব বড় মাপের বড়ো কোনো মিডিয়া হাউসের সাংবাদিক হতে পারেনি। হয়তো ওর গ্রাম্য ভাব শহুরে বাবুদের পছন্দ হবে না কোনো দিন। তবে ওর মতো খবরের নেশায় সব কিছু ভুলে মেতে থাকা সাংবাদিক আমি খুব কম দেখেছি। 

টাকার মূল্য দিয়ে কোনোদিন হয়তো ও ওর কাজকে মূল্যায়ন করেনি। আর তাই আজ এতদিন পরেও মাঝে মাঝেই আমায় ফোন করে বলে চলে এসো দাদা তুমি আবার ফিরে এসো মাঠে নামো দেখবে কত কিছুই যে ঘটে যাবে। আবার সবাই মিলে একসাথে চলো কাজ করি আবার আমি আর তুমি। আমিও মনে মনে ওর এই কথা শুনে ভাবি হুগলীর মাটি, হুগলী জেলার সেই খবরের চেনা মাঠ, ঘাট সবাই কেমন করে আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে আবার। মনে মনে ভাবি একবার এই শেষ বয়সে মাঠে খেলতে নামলে কেমন হয়। 

উপেন এর কথায় মনে মনে স্বপ্ন দেখি আমি আজও, হয়তো আবার একদিন আমি, উপেন,বাপি, তাপস, সৌগত,বিধান, রানা,সৌমেন, মিন্টে, সৌরভ, ধোলে মিল্টন, কিট্টু,,সুদীপ কোলে,সমীর সাহা, সুব্রত যশ, গৌতমদা, ফাল্গুনী দা,তরুণ দা সবাই একসাথে খবরের জন্য দৌড়ে বেড়াচ্ছি আমরা এক সাথে এক হয়ে। পুলিশের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছি আমরা। রাজনৈতিক নেতাদের মাতব্বরিকে রুখে দিচ্ছি আমরা। আর সবাই বলছে এইরে সব যে মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। কি করে এদের ম্যানেজ করা হবে এখন। সেই চিন্তায় মগ্ন হুগলী জেলার পুলিশ,নেতা সবাই। বেশ ভালই হবে কি বল উপেন। আমি জানি উপেন এটা শুনে একগাল হেসে বলবে, দাদা ঠিক বলেছো তুমি।

আমাদের সবার উপেন - অভিজিৎ বসু।
তেরো সেপ্টেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

  1. একসময় তারা নিউজে থাকার সুবাদে উপেন কল্যাকে আমি চিনি।পরিশ্রমী সাংবাদিক, পাশাপাশি সে একজন ভালোমানুষ। সিঙ্গুর আন্দোলনের উত্তাল সময়ে যে কয়েকজন জেলা সাংবাদিকের নাম একযোগে উচ্চারিত হত তাঁদের মধ্যে উপেন অন্যতম।অফিসের কাজে হোক বা ব্যক্তিগত আলাপে সবক্ষেত্রেই সে ছিল হাসিমুখের মানুষ।এই লেখা পড়ে তাকে ঘিরে মনে পড়ে যাচ্ছে অনেক ঘটনাই - যদিও সেসব বলার পরিসর এটা নয়। উপেনের কথা ফের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...