"মেয়েরা রাত দখল করো, দিন বদল করো" পক্ষ থেকে ৮ তারিখ রাতে কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হলো। যার নাম শাসকের ঘুম ভাঙাতে, নতুন গানের ভোর। রাত ১১ টা থেকে ভোর পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। সঙ্গীত, নৃত্যশিল্পীদের আহ্বান করা হয়েছে। যে যার নিজ এলাকায় এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠক করে এই কথাই জানানো হোলো।
আসল কথা হলো শাসকের দরজায় ঠকঠক করে কড়া নাড়া বারবার। যাতে ঘুম ভাঙে শাসকের। ঘুম থেকে উঠে মনে হয় সত্যিই তো এই ঘটনার সঠিক বিচার হওয়া দরকার আর করাও দরকার। কারণ সংঘবদ্ধ প্রতিবাদের ঠেলায় ঘুম চটকে গেছে যে শাসকের। যে সুখের নিদ্রার বাঘ্যাত ঘটলেও মুখ ফুটে কিছুই বলতে পারা যাচ্ছে না কাউকেই। রক্তচক্ষু দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করাও যাচ্ছে না কোনো ভাবেই। কারণ একটাই এই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল মুখর আট থেকে আশি সবাই। কাকে কি বলবে এই ঘুমিয়ে পড়া শাসক।
গুপী বাঘার সেই বিখ্যাত সিনেমার দৃশ্য দেখিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন রিমঝিম সিনহা ও তাঁর সঙ্গীরা। সেই সিনেমার দৃশ্যে বেসুরো গান গাওয়ার অপরাধে কি সাজা হয়েছিল আমরা সেটা সকলেই জানি। গ্রাম ছাড়া হতে হয়েছিল বেসুরো গান গেয়ে শাসকের ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য। কিন্তু এই প্রতিবাদ আন্দোলন এর পক্ষে যারা তাদের কোনো সাজা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না কোনো ভাবেই।
নানা জন নানা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন এই সাংবাদিক বৈঠকে। তাঁদের কথায় রাজনীতির লোকদের জন্য নয় এই আন্দোলন। কারণ তাঁরা রাজনীতির ময়দানের লোকরা কেউ এত দিন ধরে সব জেনেও কিছুই করেন নি। তাঁরা চান এই গোটা সিস্টেম এর একটা বদল হোক। আবার কারুর মতে এই যে জাস্টিস চাই বলে বিষ্ণুপুর এর প্রত্যন্ত অঞ্চলে আওয়াজ উঠেছে সেটাই তো একটা বড় ব্যাপার। শুধু শহর নয় গ্রাম জুড়েও এক আওয়াজ। গ্রামের খেতে খাওয়া মানুষদের মুখেও এক কথা we want justice এই বিচারের আশায় অপেক্ষায় সবাই। একদিন অন্ধকার কেটে নতুন ভোরের অপেক্ষায় থাকা।
এই অপেক্ষা করে যে বদল আসবে তাদের হাত ধরেই এই আশায় লড়াই চালিয়ে যাওয়া যতক্ষন না জয় আসে তাদের। কিন্তু সেই বদল আনতে গিয়ে যেনো কাউকে বিশেষ করে কোনো মহিলাকে আঘাত না দেওয়া হয়। এই ভাবেই তারা এগোতে চান ধীরে ধীরে। যাতে কলকাতার তিলোত্তমার ওপর যে অপরাধ হয়েছে তার কঠিন সাজা হয়, বিচার হয়।
যে সাজার জন্য তাদের এত লড়াই, আন্দোলন, আর ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধিতা করা। না কোনো রাজনীতি করতে তারা আসেন নি। কে কি করছে কিভাবে এই ঘটনাকে সামনে রেখে রাজনীতির খেলা খেলছেন সেটা তো তাদের হাতে নেই কোনোভাবেই। যারা এসব করছেন সেই দায় তাদের। তাঁরা শুধু চান বিচার হোক, সঠিক বিচার হোক আর অপরাধীর সাজা হোক।
রিমঝিমের মতে, যে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে যেনো নো কাঁদে। একদিন এই সিনেমার গুপী বাঘার দৃশ্য অবলোকন করে আমরা যা দেখলাম, গান গাওয়ার অপরাধে কি অবস্থা হলো গায়কের কিন্তু শাসকের ঘুম তো ভেঙে গেলো। সেই ভাবেই তারা ধাপে ধাপে রাত জেগে গান গেয়ে শাসকের ঘুম ভাঙিয়ে দিতে চান। নতুন গানের ভোর বেলায় নতুন দিনের সূচনা করতে চান তারা। যে দিন আর কোনো তিলোত্তমার ওপর এমন অত্যাচার এর ঘটনা ঘটবে না। যেদিন বিচার চেয়ে এমন করে রাস্তায় ঘুরে মরতে হবে না। দিন বদলাবে, নতুন ভোর আসবেই।
নতুন ভোরের গান - অভিজিৎ বসু।
সাত সেপ্টেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন