সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মন্দারমণির সেই রাত

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ বাতিল হয়ে যাওয়া দুই সাংবাদিক এর মন্দiরমণি ভ্রমণের রোমহর্ষক সেই গল্পের কথা। চাকরি জীবনের কিছু কিছু সম্পর্ক কেমন করে যে জোলো আর পান্তা ভাতের মতই বেশ গেঁজে গিয়েও কেমন করে যে টিকে যায় সেটা বড় আশ্চর্যের বিষয়। আসলে কর্ম জীবনের বন্ধু, বন্ধুত্বের সম্পর্ক, সেই সম্পর্কের বন্ধন তৈরি হয়ে একসাথে সমুদ্র দর্শন করতে বেড়াতে যাওয়া আর সেই বেড়াতে গিয়ে একসাথে সমুদ্রের ঢেউ এর মাঝে ডুবে মরতে মরতে কোনো রকমে বেঁচে ফেরা। 

আসলে মৃত্যুর এত কাছ থেকে ফেরা সেই দিনের গল্প কথা মনে পড়ে গেলো এই সেই বহু পুরোনো দিনের স্মৃতি চিহ্ন গুলো দেখে। আসলে ছবি বড়ো বেদনার, আবার এই ছবি কত কিছু যে মনে করিয়ে দেয় মানুষকে কে জানে। ছবিময় জীবন আর জীবনের নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তো বেঁচে থাকে কিছু কিছু মরে যাওয়া হেজে যাওয়া অমলিন সম্পর্ক। যে সম্পর্কগুলো বাতিল হয়েও টিকে থাকে কেমন করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কে জানে। ঠিক যেনো লাউ ডগার মত জড়িয়ে থাকে সেই লিকলিকে সম্পর্ক একে অপরকে স্বার্থহীন ভাবেই। 
শৌনক আর আমার দুজনের পরিচয় আর আলাপ বন্ধুত্ব সেই ইটিভির আমল থেকেই। সালটা সেই দু হাজার সাল হবে। শৌনক, তীর্থ, রজত, পলাশ, সনৎ, সুরজিৎ, শাশ্বত, নবেন্দু দা, গৌতম দা, এমন কত নাম আর বলবো। যাঁরা বাদ পড়লেন ইচ্ছাকৃত নয় কিন্তু। সেই পুরোনো ইটিভির সব দিকপাল লোকজন এক একজন। এদের মাঝে আমি তো সেই হংস মাঝে বক সেথা। আজ কারুর সাথেই আর এই বুড়ো বয়সে যোগাযোগ নেই আমার গুটিকয় মানুষ ছাড়া। 
একে বাতিলের দলে আর অন্য দিকে এগিয়ে যাওয়া সব দাপুটে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে আর কথা বলতে বিশেষ ইচ্ছাও করে না আর আজকাল। কিছুটা লজ্জা এর কিছুটা সংকোচ। একটু দূরে দূরে সংগোপনে থাকা ভালো বেশ। বন্ধুত্ব আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ঘিরে কত কিছুই যে ঘটে যায় এই জীবনে সে কি আর বোঝা যায়। যাকগে বাদ দিন এসব কথা সেই মন্দারমণির গল্পে ফিরে আসি আবার। 
চব্বিশ ঘণ্টা চ্যানেলে তখন আমরা দুজনে একসাথে চাকরি করি ইটিভির চাকরি ছেড়ে। একসাথে কাজ করার সুবাদে দুজনে প্ল্যান করলাম গাড়ি নিয়ে মন্দারমণি যাওয়া হবে। আমার কম গুরুত্ব পূর্ণ চাকরি হলেও শৌনকের কিন্তু বেশি গুরুত্ব পূর্ণ আর দায়িত্ব অনেক কাজের ওর। অফিস ছুটি পাওয়া ওর পক্ষে বেশ কষ্টের। তবুও দুজন ম্যানেজ করে বেরিয়ে পড়লাম দেওয়ালির রাত কাটাতে সমুদ্রের ধারে নিরিবিলিতে আর নির্জনে দুই পরিবার একসাথে। 
গাড়ি নিয়ে দুজনেই গেলাম। দুজনের পরিবার নিয়ে সাথে ড্রাইভার সহ। কোলাঘাট পার হয়ে বেশ সুন্দর ভাবেই আমরা পৌঁছে গেলাম মন্দারমনিতে। একটি ভালো হোটেল দেখে উঠে পড়লাম আমরা দুই পরিবার। খুব সম্ভবত দু হাজার ষোলো সালের ঘটনা হবে মনে হয়। আজ থেকে প্রায় আট বছর আগের ঘটনা। বেশ ভালো ব্যবস্থা হোটেলের। সামনেই সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। আমাদের দুই বন্ধুর পরিবার আর সাথে দুই পরিবারের শাশুড়ী সহ এই ভ্রমণ। হোটেলে পৌঁছে দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে বিশ্রাম নিয়ে নিলাম আমরা একটু। এত পথ গাড়িতে এসে সবাই বেশ ক্লান্ত তখন। 
যাই হোক বিকেল বিকেল হঠাৎ করেই শৌনক বললো দীঘা ঘুরতে যাবে ও একা গাড়ি নিয়ে। এই বলে ওর গাড়ি আর ড্রাইভার সহ বেরিয়ে পড়ল দীঘার উদ্দেশ্যে। এদিকে ওর বাড়ির লোকের চিন্তা রাত হলে ফিরবে কি করে। কারণ একটাই রাত সাতটা বেজে গেলে সমুদ্রের জল বেড়ে যাবে আর তাহলে হোটেলে প্রবেশ করা যাবে না কোনো ভাবেই সেই রাতে। এই কথা শুনে আমিও আমাদের গাড়ি নিয়ে দীঘার দিকে রওনা দিলাম যাতে তাড়াতাড়ি ওকে ফিরিয়ে আনা যায়। আমাদের গাড়ি নিয়ে বের হবার সময় হোটেলের কর্মীরা একটা কথা বলে দিলো দাদা তাড়াতাড়ি ফিরবেন কিন্তু বেশি রাত করবেন না তাহলে বিপদে পড়বেন কিন্তু আপনারা। কিন্তু আমরা হলাম শহুরে হুজুগে মানুষ আমরা। ডোন্ট কেয়ার মনোভাব আমাদের সব সময়। তার ওপর আবার মিডিয়াতে কাজ করা সব লোকজন আমরা ভাবলাম কি আর হবে এরা হয়তো ভয় দেখাতে এমন কথা বলছে। রাতে ওরা তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চায় তাই আমরা ফিরে এলে ডিনার দিয়ে কাজ সেরে সব ঘুমোতে যাবে আর কি। 
তবুও আমি বার বার শৌনককে বলে দুটো গাড়ী করে দ্রুত গতিতে দুই পরিবার নিয়ে দীঘা থেকে ঘুরে ফিরে এলাম মন্দারমণিতে। তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার চারিদিক। রাত প্রায় সাড়ে সাতটা বাজে। ইঁটের এবড়ো খেবড়ো রাস্তা ধরে কোনো রকমে দ্রুত গতিতে গাড়ি নিয়ে আমাদের ড্রাইভার সমুদ্রের ঢেউ সামলে গাড়ি নামিয়ে দিয়েছে সমুদ্রের তীরে হোটেলে ফেরার পথ ধরে। দুর থেকে ভেসে আসছে শুধু সমুদ্রের ঢেউ আর গর্জন। 
এদিকে আমাদের রাস্তায় না এসে শৌনক তখন অন্য একটু ঘুর পথের রাস্তায় গিয়ে পুলিশের সামনে পড়ে যায় গাড়ি নিয়ে। পুলিশ বলে জল বাড়ছে কোনো ভাবেই নামা যাবে না সমুদ্রের ধার ধরে এইভাবে। সাংবাদিক পরিচয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে একপ্রকার জোর করেই নেমে পরে ও জলের ঢেউ এর মাঝে ভেসে যাওয়া রাস্তায়। এদিকে আমরা কোনো রকমে এগিয়ে চলেছি একটু একটু করে। বাইরে প্রবল ঢেউ এর ঝাপটা। মোচার খোলার মত আমাদের গাড়ি ভাসছে প্রায় এদিক থেকে ওদিক। ঢেউ এর জল যখন আসছে তখন একভাবে গাড়ি বালির চড়াতে আটকে যাচ্ছে আর জল ফিরে গেলে তার টানে গাড়ি শুদ্ধ আমাদের নিচে টেনে নিয়ে যাচ্ছে দূরে অনেক দূরে। 
এদিকে অনেক পিছনে শৌনকের গাড়ির অবস্থা আরো খারাপ। জল বাড়ছে দ্রুত। দুটো গাড়ির ভেতর দুই পরিবার মুখ শুকনো করে বসে আছি আমরা। কারুর মুখে কোন কথা নেই। গাড়ির জানালার কাঁচে জল আর বালির ঝাপটা লাগছে। কোনো রকমে গাড়ির স্টার্ট যাতে বন্ধ না হয় প্রাণপণে চেষ্টা করে যাচ্ছে দুই ড্রাইভার। কতক্ষন যে এই অবস্থায় ছিলাম আমরা জানিনা। এদিকে হোটেলে তখন কান্না শুরু করে দিয়েছেন আমাদের দুই বৃদ্ধা শাশুড়ী। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখার সুযোগ আর সৌভাগ্য একসাথে দুই বন্ধুর এমন ভাগ্য কজনের হয় বলুন তো। 
আমরা অবশেষে অনেক কষ্টে হোটেলের সেই ওপরে ওঠার জায়গা খুঁজে পেলাম অন্ধকার অনেকটা পথ পেরিয়ে। দেখলাম অন্ধকারে হোটেলের কর্মীরা টর্চ হাতে ভীড় করে দাঁড়িয়ে আছেন সবাই হোটেলের লনের ওপরে। একটু পর শৌনকের গাড়িকেও দেখা গেলো। প্রবল জলের ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে জলে চান করে হোটেলের লনে এসে উঠলো অনেক কষ্টে গাড়ি দুটো। আর হাঁফ ছেড়ে বাঁচল সবাই।
সেদিন রাতের অন্ধকারে এই যে সমুদ্রের তীরে দিনের বেলায় ছাতা হাতে দুই পরিবার হাসি হাসি মুখে ছবি তুলেছি আমরা একসাথে। আমার মেয়ে ওর ছেলে দৌড়ে বেরিয়েছে এই সমুদ্রের তীরে। খেলা করেছে একসাথে ওরা দুজন বালির চড়ায়। যে সমুদ্রের তীরে বসে আমরা একসাথে কত গল্প করেছি দুই পরিবার। সেই সমুদ্রের রাতের সেই ভয়ঙ্কর রূপ এর কথা সারা জীবন মনে থাকবে আমাদের।
আজ আমার সেই সাদা জীবনের কালো কথায় এই ছবিগুলো দেখে মনে পড়ে গেলো সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা আর রাতের কথা। মৃত্যুর খুব কাছ থেকে বেঁচে ফিরে আসা দুই পরিবারের কথা। যে দুই পরিবার এর সাথে আজও যোগাযোগ রয়ে গেছে আমাদের একে অপরের সাথে। বাতিল মাল হলেও আমরা মাঝে মাঝেই প্ল্যান করি কি করে আবার বেরিয়ে পরা যায় এই অনিশ্চিত জীবনেও। যেমন সারারাত সেই জগদ্ধাত্রী পূজোর সময় চন্দননগরে ঘুরে বেড়ানো। একসাথে ঘুরে দুই পরিবার এর ঠাকুর দেখতে যাওয়া। আসলে এতদিন পর মনে হলো কিছু কথা লিখে ফেলি। সেই রাতের অন্ধকারে মৃত্যুর কোল থেকে বেঁচে ফেরার কথা। 
সেদিন আমাদের দুই পরিবারের বেঁচে যাওয়া হোটেলের কর্মীরা অনেকেই বলেছিলেন এই ভাবে কেউ ফিরতে পারে না আপনারা কি করে ফিরলেন কে জানে। ওই জন্য আপনাদের বারবার বারণ করেছিলাম আমরা। সেই জন্য তো আপনাদের বলেছিলাম বেশি রাত করবেন না। এমন কথা না শুনে যে কি হচ্ছিল তার ফল আমরা সেদিন হাতেনাতে পেলাম। বহুদিন হলো দেখা হয় নি দুই পরিবারের একসাথে। আমাদের ছেলে মেয়েরা সব বড়ো হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। কিন্তু সেই মন্দারমনি যাওয়া ও তার যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ফিরেছি আমরা তা সারাজীবন মনে থাকবে আমাদের।
এখন শুনেছি এখন রাস্তা ঘাট আরও ভালো হয়ে গেছে ওই এলাকায়। সমুদ্রের তীর ধরে আর হোটেলে পৌঁছতে হয় না রাতের অন্ধকারে। তবু এই ছবিগুলো দেখে আমাদের সেই রাত এর কথা মনে করিয়ে দিলো আবার। যে রাতে অল্পক্ষণের জন্য হলেও মনে হয়েছিল আমাদের, আমরা মানুষ ক্ষমতাধর মানুষ, আত্মগর্ব করা মানুষ সত্যিই কত অসহায়। প্রকৃতির ভয়ঙ্কর রূপ এর কাছে আমরা সবাই বড়ো মাতব্বর হয়েও কেমন যেনো মিইয়ে যাই। ভাগ্যিস সেদিন বেঁচে ফিরেছিলাম তাই আজ এতদিন পর দুই পরিবারের এই ছবিগুলো দেখে লিখতে পারলাম সেই কথা। সাদা জীবনের কালো কথায় মন্দারমণির এই ছবি আমাদের জীবনে রঙিন হয়ে বেঁচে থাকবে। 

মন্দারমণির সেই রাত - অভিজিৎ বসু।
দশ সেপ্টেম্বর দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...