সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার ভালোবাসার সেই শ্রী শ্রী বড়দা

আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আজ শুধু সেই আচার্য্যদেব শ্রী শ্রী বড়দার কথা। আসলে কি জানেন সেই ছোটো বয়সে কবে যে মার হাত ধরে সেই ছোটো বেলায় দীক্ষা নিতে ডুমুরদহ স্টেশনে ভোর বেলায় পৌঁছে গেছিলাম আজ খুব ক্ষীণ হয়ে মনে পরে। স্টেশনে নেমে গেছিলাম শ্রী শ্রী ওঙ্কারনাথ ঠাকুরের আশ্রমে। প্রবল গরমে সারাদিন অপেক্ষা করেও লাইন দিয়েও দীক্ষা হলো না মা আর বাবার সাথে আমারও। খুব জল তেষ্টায় তরমুজ এর ফালি কিনে গলা ভিজিয়েছিলাম বেলা তিনটের পরে। সবাই ফিরে এলাম বিফল মনোরথ হয়ে দীক্ষা না নিয়েই। 
আসলে ছোটো বেলায় এত তো জিজ্ঞাসা আর প্রশ্ন থাকে না মনের মধ্যে। মাটির দলাকে যেমন তেমন করে চালনা করা যায়। সেই মতই কিছুদিন বাদে সৎসঙ্গের দীক্ষা গ্রহণ করলেন আমার বাবা আর মা। দু মাস পরে আমিও দীক্ষা নিলাম সৎসঙ্গের। আসলে দীক্ষা তো জীবনে দক্ষতা অর্জন এর মাধ্যমে এগিয়ে চলার চেষ্টা করা আর কি। অদক্ষ, অপরিণত, অবুঝ মানুষকে দক্ষ, পরিণত আর বুঝদার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা। 
যে মানুষ আর যাই করুক যাই হোক সে শুধু মানুষকে ভালবাসবে, মানুষের দুঃখ কষ্ট,যন্ত্রণা, জ্বালা বুঝবে। একটু সহানুভুতি নিয়ে, ভালোবাসা নিয়ে, আর গভীর মমত্ব বোধ নিয়ে পাশে দাঁড়াবে। আর সেটাই তো হলো আসল হাত পা ওলা মানুষ হয়ে ওঠা। শুধু মাথার ওপর একটা ছাতা লাগে। যিনি জীবনে চলতে গিয়ে বলে দেন কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক দিক নির্দেশ করে দেন তিনি। সেই কাজটাই তো করে দেন আমাদের সেই গুরু। যিনি অন্ধকার রাস্তা থেকে আমাদের সবাইকে আলোক বৃত্তে নিয়ে আসেন আমাদের হাত ধরে। 
সেই গুরুকে দেখার সুযোগ আর সৌভাগ্য আমার হয়নি কোনো দিন। কিন্তু যাঁকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে সেই তিনি হলেন শ্রী শ্রী বড়দা। প্রথম দেখার সেই দিন দেখলাম বাবার কাঁধে চেপে বহু দূরে বসে আছেন তিনি নাটমণ্ডপে। তুমুল কীর্তন হচ্ছে মাথা দুলিয়ে গান শুনছেন তিনি। মুখে স্মিত হাসি, স্থির শান্ত সৌম্য দর্শন চেহারা তাঁর। ছোটবেলার সেই স্মৃতি মেদুরতা আজ মেঘের আড়ালে আবডালে লুকিয়ে গেছে। সে কতদিন আগের কথা প্রায় চল্লিশ বছর বা তার বেশি হবে। কিন্তু সেই নাট মন্দির, সেই কীর্তনের সুর, সেই শ্বেত শুভ্র বিছানায় স্থির হয়ে তাঁর বসে থাকা কেমন মোহাচ্ছন্ন করে দিয়েছিল আমায়। কিছু না বুঝেই যেনো চুম্বকের মত বার বার আকর্ষিত হয়ে ছুটে গেছি বার বার বাবা মার সাথে দেওঘরে। 
সেই ভীড় ট্রেন, ট্রেনের মাথায় বাঙ্কারে উঠে সারা দিন সারারাত জেগে আশ্রমে যাওয়া, সেই মনমোহিনী ধামে দৌড়ে গিয়ে লাইন দিয়ে দুটো করে চাটাই এনে মাটিতে পেতে থাকার জায়গা নিয়ে নেওয়া। দড়ি টাঙ্গিয়ে মশারি খাটানোর ব্যবস্থা করা, লাইন দিয়ে খিচুড়ি খাওয়া, গরম খিচুড়ির মধ্যে একটুকরো আলু বা বড়ো কুমড়ো পেলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাওয়া, সেই কোল ডিপোর মাঠে রাতে ঘুম না এলেও জেগে চুপ করে বসে থাকা কখন ভোর হবে সেই অপেক্ষায় থাকা। ভোর বেলায় রাস্তার পাশের দোকানে কয়লার উনুনে আঁচ দেওয়া, সেই ধোঁয়ায় চোখ জ্বালা করলেই ভোর বেলায় প্রাথর্নার জন্য উঠে পড়ে দৌড় দেওয়া আশ্রমে। যাতে একটু ভালো জায়গা মেলে এই আশায়। সাদা গেঞ্জি আর পাজামা পড়ে। জীবনটা বেশ আনন্দের ছিল সেই সময়। 

একদিন তো সেই বড়দার ঘরে প্রবেশের ছাড়পত্র মিলে গেলো একদিন হঠাৎ করেই। সেই বিখ্যাত বাড়ী ষোড়শী ভবনের ঘরে। যে ঘরকে দুর থেকে শুধু দেখেছি আমি। কত বিখ্যাত মানুষজন সেই ঘরে বসে থাকেন আলাপ আলোচনা হয়। হ্যাঁ, দেওঘরে সেই সময় চিড়িয়াখানা তৈরি হচ্ছে। নতুন রূপে সেজে উঠছে সৎসঙ্গের আশ্রম। কলকাতায় শোভাবাজারে ঠাকুর বাড়িতে থাকা সন্তুদা একদিন বললেন বাপি পাখি ধরার লোক পাওয়া যায় কোথায়। আমি কিছু না ভেবেই হ্যাঁ বলে দিলাম দাদা পাওয়া যাবে।
 পরে ভাবলাম বলে তো দিলাম আমি কিন্তু সেই লাঠি দিয়ে আঠা লাগিয়ে পাখি ধরার লোক পাবো কোথায়। কিন্তু আশ্চর্য আমি পেয়েও গেলাম একজনকে তেমন লোককে। আগেকার দিনে আদিবাসী কিছু লোকজন এই ভাবেই ঘুরে ঘুরে পাখি ধরে বেড়াতো। যাদের আর এখন দেখাই যায়না। তাদের নিয়ে বেশ কিছু টিয়া পাখি , অন্য পাখি ধরা হলো। তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হলো। তারপর সেই পাখিকে খাঁচায় করে কলকাতা থেকে নিয়ে যাওয়া হলো দেওঘর আশ্রমে।
 আরও কিছু পাখি হাতিবাগান থেকে কেনাও হয়েছিল সেই সময়। সন্তুদার সাথে সেই পাখি নিয়ে হাজির হলাম দুপুর বেলায় দেওঘর আশ্রমে। তখন দুপুর বেলায় শ্রী শ্রী বড়দা বিশ্রাম নেবেন। কিন্তু সন্তু এসেছে কলকাতা থেকে পাখি নিয়ে যা ছাড়া হবে দেওঘর এর চিড়িয়াখানায়।শুনে কি খুশি হলেন তিনি। মুখে উজ্জ্বল হাসি। সন্তুদা কে খুব ভালোবাসতেন শ্রী শ্রী বড়দা। খুব স্নেহ করতেন তিনি। 
দাদা বললেন বাপি পাখি ধরার লোক জোগাড় করিছে। বুনো টিয়া পাখি নিয়ে এসেছে ও চিড়িয়াখানার জন্য। এই কথা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে শান্ত চোখে তাকালেন তিনি। আমার এই এত ঘণ্টার জার্নি, কষ্ট, সব যেনো এক নিমেষে দুর হয়ে গেল। ঘরের মধ্যে আর কেউ নেই আমরা তিন জন। জীবনের সেই অভিজ্ঞতা। সেই স্মৃতির অনুরণন আজও আমি অনুভব করি। মনে হয় এমন একজন বিশাল আলোবাসার মানুষের কাছে পৌঁছে মাথা নত হয়ে যায় নিজে নিজেই। আভূমি প্রণাম জানিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম আমি। সন্তুদার মুখেও হাসি। বাবাকে খুশি করার হাসি।
আজ চল্লিশ বছর পরে এই ঘটনার কথা আজও আমায় নাড়া দেয়। কতদিন পরে সেই দেওঘর আশ্রমের চিড়িয়াখানায় গিয়ে একা একা দাঁড়িয়ে অন্ধকারে সেই টিয়া পাখিকে খুঁজে বেড়িয়েছি আমি। সন্ধ্যার অন্ধকারে একঝাঁক পাখির ডাক শুনে প্রার্থনা করে দৌড়ে গেছি যদি ওদের যদি দেখা পাই একটি বার। না ভিড়ের মাঝে ওদের আর খুঁজে পাইনি আমি কোনোদিন হয়তো ওরাও হারিয়ে গেছে। 
বহুদিন, বহু বছর কেটে গেছে এরপর। কতদিন সেই দেওঘর এর আশ্রমে যাওয়া হয়নি আর আমার। বহু বছর পরে পুরী বেড়াতে গিয়ে পুরী মন্দিরের ভিতর শ্রী শ্রী বড়দার সমাধির সামনে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে  সেদিন সন্ধ্যা বেলায় কেনো যে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলাম আমি কে জানে।

 দূরে সমুদ্রের ঢেউ মিশে যাচ্ছে সাগরের তীরে। আমি একা একদম একা দাঁড়িয়ে আছি সেই সমাধির সামনে। আর বুকের ভেতর থেকে কান্নার দলা বেরিয়ে আসছে। না, আজ কেউ নেই আর আমার পাশে। সেই বাপি বলে ডাকা সন্তু দা তিনিও নেই। সেই শ্রী শ্রী বড়দা তিনিও আজ নেই। আজ বড়ো একা হয়ে যাচ্ছি আমি ধীরে ধীরে। একা, একদম একা। ভালোবাসার মানুষ গুলো যে হারিয়ে যাচ্ছে জীবন থেকে।

আমার ভালোবাসার সেই শ্রী শ্রী বড়দা - অভিজিৎ বসু।
দশ সেপ্টেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...