সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জয় গণেশায় নমঃ

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ সেই আমার বন্ধু গণেশের কথা। হ্যাঁ সেই বিখ্যাত সিনেমার ওহ my friend গনেশার, আজ সেই গণেশের জন্মদিনের কথা। দু হাজার সাত সালে তৈরি হওয়া সেই বিখ্যাত হিন্দি ছবি। সেই ছোটো ছেলে আশুবাবা আর গাঙ্গুবাই এর কথা মনে পড়ে গেলো আমার আজকের এই গণেশ চতুর্থীর দিনে। 

জীবনের হাজার সমস্যা আর ঝড় ঝাপটা যে সব সময় সামলে দেয় সেই ছোট্ট ছেলে আশুবাবার সেই গনেশজির কথা। সেই ছোটো আশুবাবা বন্দী একটা ছোট্ট ফ্ল্যাটে। বড়ই একা সে। তার একাকীত্ব কাটে না কিছুতেই। তার মা বাবা খুব ব্যস্ত। কিন্তু হঠাৎ তার সাথে বন্ধু হয়ে যায় বিঘ্নবিনাশকারী সেই গণেশ এর। যে আশুবাবার সব দুঃখ কষ্ট সমস্যাকে এক লহমায় কাটিয়ে দেয়। গভীর প্রগাঢ় বন্ধুত্ব হয়ে যায় দুজনের মধ্যে। ছোটো বন্ধুর যে কোনো বিপদেই ঝাঁপিয়ে পড়ে সিদ্ধিদাতা গণেশ। একবার চোখ বুজে স্মরণ করলেই হলো সব সময় হাজির তিনি। 

হ্যাঁ, আজ সেই সিদ্ধিদাতা গণেশ চতুর্থী। গনেশ হলেন হিন্দু ধর্মের সর্বাধিক পরিচিত ও সর্বাধিক পূজিত দেবতাদের মধ্য অন্যতম দেবতা। তিনি হলেন গণপতি, তিনি হলেন বিঘ্নেশ্বর, তিনি হলেন গজপতি। গনেশ নামটি একটি সংস্কৃত শব্দবন্ধ। গণ ও ঈশ এই দুই শব্দ মিলে হলো গণেশ। গণ শব্দের অর্থ একটি গোষ্ঠী। আর ঈশ শব্দের অর্থ হলো ঈশ্বর বা প্রভু। গণেশের অপর নাম হলো গণপতি। 
খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দে রচিত ঋগ্বেদের গ্রন্থেও তাঁর কথার উল্লেখ আছে। তামিল ভাষায় গনেশকে বলা হয় পিল্লই। এই পিল্লাই শব্দের অর্থ মহান শিশু। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে গণেশের মুর্তি প্রাধান্য লাভ করে। ইলোরা গুহাতে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর একটি প্রাচীন গণেশ মুর্তি পাওয়া যায়। এই মূর্তিতে গণেশের চতুর্ভুজ রূপ দেখা যায়। 

গণেশের জন্ম নিয়ে নানা গল্প প্রচলিত আছে। শিবপুরানে এক ধরনের গল্প। স্কন্দপূরাণে আর এক ধরনের জন্মকাহিনী পাওয়া যায়। তবে সব ক্ষেত্রে সেই গল্পে শিব এর সাথে গণেশের যুদ্ধের কাহিনী। দ্বার রক্ষার কাহিনী। বৃহদ্ধর্ম পুরাণে অন্য গল্প পার্বতী পুত্র সন্তান লাভের জন্য বাসনা প্রকাশ করলেও সেই সময় অনিচ্ছা প্রকাশ করেন শিব। এরপর পার্বতীর পীড়াপীড়িতে শিব পার্বতীর নিজের বস্ত্র টেনে সেটিকে পুত্রজ্ঞানে চুম্বন করতে বলেন। পার্বতী সেটাই করেন।পার্বতী সেই বস্ত্রকে পুত্রের আকার দিতেই জীবিত হয়ে ওঠেন পুত্র। 

তখন শিব পুত্রকে কোলে নিয়ে বলেন এই পুত্র স্বল্পায়ু। শিশুটির মাথা ছিন্ন হয়ে যায়। পার্বতী কেঁদে ভাসান। এই সময় দৈববাণী হয় উত্তরদিকে মাথা করে শুয়ে আছে এমন কাউকে এনে দিলে পুত্র বাঁচবে। পার্বতী নন্দীকে পাঠান সেই সন্ধান করতে কে এমন করে শুয়ে আছে। নন্দী ইন্দ্রের বাহন ঐরাবতকে দেখেন শুয়ে আছে উত্তরদিকে মাথা দিয়ে। তার মাথা কেটে আনেন। দেবতারা বাধা দিলেও ব্যর্থ হন সেটা আটকাতে। এই মাথা জুড়ে শিবের পুত্রকে জীবিত করা হয়। আর শিবের বরে ইন্দ্র ঐরাবত এর মাথা ফিরে পান সমুদ্রে ফেলে দিয়ে। এই গল্প বহুল প্রচলিত।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে শঙ্খ চক্র গদা পদ্মধারী শ্রী কৃষ্ণকে দেখে মোহিত হন মুগ্ধ হন দেবী পার্বতী। তিনি অনুরূপ একটি পুত্র সন্তান চান শিবের কাছে। কৃষ্ণ তাঁকে এই ইচ্ছাপূরণের বর দেন। এরপর একদিন ভিক্ষুকের বেশ ধরে ভিক্ষা নিতে আসেন তিনি। পার্বতী তাঁকে ভিক্ষা দিতে গেলে সেই সময় শিবের বীর্য পতিত হয় মাটিতে। শ্রীকৃষ্ণ শিশুর বেশে আবির্ভূত হন। আর সেই সময় বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ অন্তর্হিত হন। 
পার্বতী তখন সেই শিশুকে দেখে মুগ্ধ হন। এরপর সব দেবতারা আসেন দেখতে সেই পুত্রকে শিবের ভবনে। শনিদেবও আসেন সেই সময় পুত্রকে দেখতে। শনি নিজের কুদৃষ্টির কথা পার্বতীকে জানান। পার্বতী তবু তাঁকে পীড়াপীড়ি করলে শনিদেব তাঁর বাঁ চোখ দিয়ে শিশুকে দেখলে শিশুর মস্তক ছিন্ন হয়ে যায়। সেই মস্তক বৈকুণ্ঠের শ্রী কৃষ্ণের দেহের সাথে গিয়ে মিশে যায়। পার্বতী বিহ্বল হয়ে পড়েন পুত্রকে হারিয়ে।
 তখন বিষ্ণু গরুড়ে আরোহণ করে পুষ্পভদ্রা নদীর তীরে এসে দেখেন উত্তরদিকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে একটি হাতি। তার মাথা ছিন্ন করেন। তখন হস্তিনী ও তার শাবকরা কাঁদতে থাকেন আর বিষ্ণুর স্তব করতে থাকেন। তখন প্রভু বিষ্ণু ওই মুণ্ডটি থেকে দুটি মুন্ড তৈরি করেন। একটি হাতির মাথায় বসিয়ে দেন। অন্যটি গণেশের মাথায় জুড়ে দেন। দুজনকেই জীবিত করে দেন শ্রী বিষ্ণু। 
এরপরে শিবের অনুগ্রহে গনেশ সকল দেবতার আগে পূজো পাবার অধিকার লাভ করেন। সেই থেকেই তো সিদ্ধিদাতা গনেশায় নমঃ। সেই গনেশ চতুর্থীর দিনে সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে এই সিদ্ধি লাভ এর দেবতার পূজা। ভাদ্র মাস ও মাঘ মাসের শুক্লা চতুর্থীকে গণেশ চতুর্থী বলা হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস মতে এই দিনটি হলো গণেশের জন্মদিন। 
একটি গল্প আছে এমন গনেশ চতুর্থীর দিনে গনেশ দেবতা সব বাড়ী থেকে মোদক খেয়ে ফিরছিলেন তিনি ইঁদুরের পিঠে চেপে। কিন্তু রাস্তায় হলো মহাবিপদ ইঁদুরের সামনে এসে পড়ল একটি সাপ। ভয় পেলো ইঁদুর। আর সেই সময় গনেশ উল্টে পড়ে গেলেন রাস্তায়। তার পেট ফেটে গেলো। সব মোদক রাস্তায় পড়ে গেলো। গণেশ উঠে সেগুলিকে কুড়িয়ে নিয়ে পেটের মধ্য পুরে ফেলেন আর ওই পেটের ফাটা জায়গা সাপ দিয়ে বেঁধে দেন। আর এই অবস্থা দেখে আকাশ থেকে চন্দ্রদেব হেসে ফেলেন। তাই সেই সময় গণেশ তাকে সাপ দেন যে চতুর্থীর দিনে চাঁদ কেউ দেখবে না।
আজ সেই গনেশ চতুর্থীর দিন। যে গণেশের পূজা নিয়ে সব থেকে ধুমধাম হয় মুম্বইতে। সেই পূজো হয় গোটা মুম্বই জুড়ে। গণপতি পূজো শুধু সারা ভারতে নয় বিশ্বের নানা দেশে হয়। কারণ প্রভুকে সিদ্ধিদাতাকে খুশি রাখা। তাঁর বর লাভ করা। তাঁর আশীর্বাদ পাওয়া। যে আশীর্বাদে জীবন হয়ে উঠবে সুন্দর।  তাই গণেশের প্রনাম মন্ত্র হলো-
 একদন্ত্বং মহাকায়ং লম্বোদরঙ গজাননঙ।
বিঘ্ননাশকরঙ দেবং হেরম্বং প্রণমাম্যহম।

যিনি একদন্ত, মহাকায়, লম্বোদর,  গজানন এবং বিঘ্ন বিনাশকারী সেই হেরম্বোদেবকে আমি প্রনাম জানাই। মানে হলো দেবরাজ ইন্দ্রের মস্তকে বিরাজিত মন্দার পুষ্পের পরাগসমূহের দ্বারা রক্তিম হেরম্বের পাদপদ্মের রেণুসমূহ আমার সব বিঘ্ন হরণ করুক। এই প্রার্থনা করি আমি। 
আসলে জীবনের সব বাধা বিঘ্ন হরণ করে জীবনকে সুন্দর করার জন্য তো এই বিঘ্ননাশকারী দেবতার পূজা করা। তাঁকে কাছে টেনে নিয়ে জীবনের সব বাধা বিপত্তিকে দুর করে দেওয়া। তবে বাধা অতিক্রম করে চলাই তো জীবন। বাধা না থাকলে কি আর জীবনে চলতে আনন্দ লাগে। 
সেই সিনেমার আশু বাবার মতো আমারও মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় ছোটো হয়ে যেতে। যখন তখন বন্ধু গণেশকে বিপদে পড়লে সমস্যা হলেই তাঁকে ডেকে আনতে। এক লহমায় সব বিপদ কেটে যাবে। সমস্যা কেটে যাবে। সমাধান হয়ে যাবে সব কিছু। এমন একটা গণেশ বন্ধুকে যদি পাওয়া যেত তাহলে কি ভালই যে হতো। জয় গণেশায় নমঃ।

জয় গণেশায় নমঃ - অভিজিৎ বসু।
সাত সেপ্টেম্বর দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...