সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নতুন ভোরের অপেক্ষায়

আজ আবার রাত দখলের ডাক। যে রাত দখলের ডাক দিয়ে সারা দেশ জুড়ে we want justice এর আওয়াজ তুলেছিলেন সেই আগুন ঝরা আন্দোলনের কথা বলে যে মেয়েটি সেই রিমঝিম। আসলে সেই রিমঝিম আজ বিখ্যাত হয়ে গেছেন এই একমাসেই। আসলে আমি কিছুটা বোধহয় ওর ফ্যান হয়ে গেছি। আন্দোলন, প্রতিবাদ, ওর এই একরোখা জেদী মনোভাব আমায় বেশ মুগ্ধ করেছে। আর তাই এই রাতের বেলায় ওর উদাত্ত কণ্ঠের ডাক শুনে ওর মুখে ঘোঁটবাজ শব্দ চয়ন করা আর নানা দলের কথা শুনে বেশ ভালো লাগলো। 
আসলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে গেলে যে করেই হোক সেই ঘটনাকে ছোটো তুচ্ছ বলে একপাশে সরিয়ে দিতে দেখা যায়। কিন্তু এই বিচার না পেয়ে রাস্তা ছাড়ছি না এই নাছোড়বান্দা মনোভাব। আমরা অনেক দেখেছি এই সব নানা দলের রাজনীতির নেতাদের। যাঁরা কে কি করেছেন সেটা পরিষ্কার। পার্লামেন্টে আপনাদের ভূমিকা কি সেটাও আমরা জানি। তাই জাস্টিস না পেলে রাস্তা ছাড়া হবে না কোনভাবেই। এই মনোভাবটা সত্যিই অসাধারন। যে রাস্তায় নেমে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এর গান গেয়ে বিচার দাবি করছেন তারা সবাই। তিলোত্তমার মৃত্যুর বিচার চান তারা সকলেই। যে দাবি সবার শহরের মানুষের, গ্রামের মানুষের, মফস্বলের মানুষের, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের। এটাই বোধ হয় রিমঝিমের ছোট্ট একটা সাফল্য এই আন্দোলনে। 
আসলে এই রিমঝিমের দু হাত তুলে দু চোখে আগুন দেখে মনে হয় সত্যিই তো অবাক করা কাণ্ড। এমন একজন মানুষ যিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলতে পারেন বিচার আমদের দিতে হবেই। যে বিচার চেয়ে তারা পথে নেমেছেন টানা একমাস ধরে। নন স্টপ একটা আন্দোলন সংঘটিত করছেন তাঁরা রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে। এই যে বিচারের দাবিতে লেগে থাকা বেশ সাধুবাদ দেয়। গা ছাড়া মনোভাব ছেড়ে একটা গা ঝেড়ে সবাইকে পথে নামিয়ে দিয়ে একটা বেশ গতি এনে দিয়েছে। সমাজের সব জায়গায় একটা আওয়াজ উঠেছে বিচার চাই। যে বিচারের জন্য রাত জাগতেও ভয় পাচ্ছে না কেউই। 
আমার মনে হয় এই আর জি কর এর ঘটনায় এই যে সংঘটিত একটা প্রতিবাদ। যে প্রতিবাদের ডাক প্রথমে শুনেও মনে হয় নি এত বৃহৎ আকার নেবে সেই ডাক। কিন্তু আজ সেই ডাক দেশ, রাজ্য ছেড়ে একদম বিদেশের মাটিতে পা দিয়েছে। কলকাতার তিলোত্তমার নাম সবাই জেনে গেছে। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির আগের রাতে তাই রাতভোর জেগে এটাই বুঝিয়ে দেওয়া বিচার না পেলে কিছুতেই রাস্তা ছেড়ে দেবে না তারা। আর এতে কিছুটা হলেও রাজনীতির কলাকুশলীরা একটু যেনো আতান্তরে পড়ে গেছে। 
সে যেই আতান্তরে পড়ে যাক যাই হোক একজনের ডাকে এইভাবে রাতভোর জেগে আন্দোলন করা বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমে না ঘুমিয়ে জেগে আন্দোলন করা এটা একটা নতুন স্বাদ। সত্যিই তো কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়। যে রঙ্গ তামাশা বাংলার মানুষ বহুদিনের পর দেখছে। এতদিন তো এমনটা দেখা যায়নি। সত্যিই কত কিছুই না ঘটে যায়। 
এমন রাত জেগে নিশ্চয়ই একদিন নতুন ভোর আসবে, বিচার মিলবে তিলোত্তমার। আন্দোলন, প্রতিবাদ করে সফল হবে তাদের আসল উদ্দেশ্য। সেদিন নতুন ভোরের আলোয় দু হাত তুলে আকাশ পানে তাকিয়ে রিমঝিমরা গান করবে উদাত্ত কণ্ঠে, আমরা করবো জয় নিশ্চয়ই। সেই ভোরের অপেক্ষায় আমরা সবাই।আর রাতচরা পাখিরা নতুন ভোরের আলো গায়ে মেখে ধীরে সুস্থে ঘরে ফিরে যাবে ডানা ঝাপটে ক্লান্ত হয়ে। রিমঝিম আমরা সবাই সেই নতুন ভোরের অপেক্ষায়। 

নতুন ভোরের অপেক্ষায় - অভিজিৎ বসু।
নয় সেপ্টেম্বর দুহাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...