সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আঁকিবুঁকি ব্লগের কথা

সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি 
ব্লগে লিখতে গিয়ে নানা জীবনের কথা, নানা চরিত্র, নানা মানুষের কথা মনে পড়ে যায় আমার। আসলে লেখা তো মানুষের জীবনের মনের আয়না। যে আয়নায় নিজের মুখ দেখে কখনও ভালো লাগে। আবার কোনো সময় সেই মনটা খারাপ হয়ে যায় আমার। তবুও হাজারো মুখ এর ভীড়ে, চরিত্রের ভীড়ে কিছু কিছু মানুষকে ভোলা যায়না কিছুতেই। যাদের কোনো ভাবেই ভোলা যায় না তাদের কথাই লিখতে ইচ্ছা করে আমার। অনেকে আমায় বলেন আমার ঝাঁজ কমে গেছে আমি নাকি পক্ষ ধারণ করে গা বাঁচিয়ে চলছি। নিজের গায়ে যাতে কোনো দাগ না লাগে তেমন ভাবেই লিখছি আমি। প্রতিবাদে মুখর না হয়ে। আবার কেউ কেউ বলছেন সাদা জীবনের কালো লেখাতো শুধু স্তাবকতা করা নয় অন্যদের। তাতে কি আর বৃহৎ পরিসরে কিছু লাভ হয়। যিনি লেখেন তার স্বার্থ রক্ষিত হলেও যাকে নিয়ে লেখেন তার কিছুই হয় না। সাদা কে সাদা আর কালোকে কালো বলাই যদি না যায় তাহলে আর কি হবে এই সব লিখে। 


আসলে আমাদের এই আপাত সাদা জীবনে চলতে চলতে কালো কথাই বেশি শুনতে চাই আমরা। যে কালো আমাদের হৃদয় জুড়ে বিরাজ করে। যে কালো মেঘের এদিক ওদিক আনাগোনা কেমন করে যেনো আমাদের স্থবির জীবনকেও কেমন করে আন্দোলিত করে বার বার। তবে আমার এই জীবনের নানা কথা। নানা জীবনের গভীর গোপন কথা তো একান্তই আমার কথা। যে কথার ভীড়ে লুকিয়ে আছে ঢাকের বাদ্যি, শিউলির ভোরের সুবাস,গঙ্গার ঘোলা জলের সোঁদা গন্ধ, কলকাতার রাজপথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ঝাঁ চকচকে অফিস এর সুন্দর আলোয় মোড়া ঘর, যে কথার ভীড়ে লুকিয়ে আছে আমার গভীর গোপন না পাওয়ার জীবনের নানা সুখ আর দুঃখের কাহিনী। যা একান্তই আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় থেকে লিখে যাই আমি। তাতে হয়তো কারুর মনে হয় স্তাবকতা করা হচ্ছে। কারুর মনে হয় উল্টো পথে হাঁটি আমি ঝাঁজ কমিয়ে ফেলে হিসেব করে। কিন্তু না, সারা জীবন যে মানুষটা হিসেব করে চলতে পারলো না সে এই আঁকাবাঁকা অক্ষরে আঁকিবুঁকি ব্লগে কিছু লেখায় আর কি স্তাবকতা করবে নিজের ঝাঁজ কমিয়ে ফেলে। 

মাঝে মাঝে রাত দুপুরে তাই মন খারাপ নিয়েই কলম ধরি আমি। লিখে যাই আর ভাবি সত্যিই যদি ঝাঁজ কমে যেতো আমার। স্তাবকতা করতে পারতাম গুছিয়ে হিসেব কষে তাহলে কি আর বুড়ো বয়সে রাস্তায় বসে ফিরি করতে হতো আমায়। তাহলে কি আর বাতিলের দলে পড়ে কেমন করে খবরের মাঠের বাইরে বসে থাকতে হতো আমায়। দুর থেকে দেখতে হতো খেলা মাঠের বাইরে বসে বসে শুকনো মুখে চুপটি করে। জানিনা আমি বিশ্বাস করুন আপনারা আমি নিজেকে বদলে ফেলতে পারলে ভালই হতো আমার নিজের। কিন্তু সেটা পারিনি আমি এই এতদিনে এত বছরেও। আর তাই বোধহয় সাদা জীবনের কালো কথায় কিছু ভালো কথা কিছু কালো কথা লিখে ফেলি আমি। তাতে কেউ খুশি হন, কেউ ভাবেন স্তাবকতা করছি আমি। বিশ্বাস করুন আপনারা আমি সেটা করিনা।

জীবনের এই শেষ পর্বে এসে ফেলে আসা জীবনের নানা ঘূড়িকে উড়তে দেখি আর মনে মনে ভাবি সত্যিই তো জীবনের এই সব রঙিন মানুষ গুলো ছিল আমার অতীত দিনের জীবনে নানা রূপে আর নানা ভাবে। কেউ ভালো রূপে, কেউ খারাপ রূপে। আর সেই সব কথাই লিখে ফেলি আমি আমার মনের তাড়নায়। তার মধ্যে রাজনীতির কোনও মারপ্যাঁচ নেই। সমাজনীতির দোদুল্যমানতা নেই। চাওয়া আর পাওয়ার হিসেব নিকেষ নেই কোনও। শুধু ফেলে আসা অতীত দিনের স্মৃতিচারণের মৃদু মন্দ বাতাস বুকে নিয়ে, গায়ে মেখে ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষায় প্রহর গুনি আমি। নতুন ভোরের অপেক্ষায় থাকি আমি। যে ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে যায় আমার সুখ আর দুঃখের স্পর্শ মাখা এই ধূসর জীবন। যে জীবনের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমি দেখতে পাই সাদা আর কালোর নানা রূপরেখা। আমি সেটা দেখে মুগ্ধ হই। আর সেই মুগ্ধতা অক্ষর রূপে ঝরে পড়ে আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে আঁকাবাঁকা অক্ষরে। 

আঁকিবুঁকি ব্লগের কথা - অভিজিৎ বসু।
সতেরো সেপ্টেম্বর দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...