সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিখ্যাত বিতনু চট্টোপাধ্যায়

এ যেন সেই স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের পুলিশকে নিয়ে লিখছে রাজ্য পুলিশের এক পাতি গ্রামীণ থানার বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়া কনস্টেবল। ব্যাপারটা যেমন দাঁড়ায় ঠিক তেমনি এই সাদা জীবনের কালো কথার এই আজকের লেখাও তেমন কিছু একটা ব্যাপার হচ্ছে যেনো। এই লেখার আজকের বিষয়টিও ঠিক তেমনি যেনো একটা অসম ব্যক্তিকে নিয়ে একজন বেঁটে খর্বকায় লোকের লেখা। যাঁর সমন্ধে আজ লিখতে বসেছি আমি তাঁকে নিয়ে লেখার রসদ, পুঁজি, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, গল্প, ঘটনা, আর নানা স্মৃতির চিহ্ন সবটাই খুবই কম আমার। একদম নেই বললেই চলে আর কি এই জীবনে। তবু বুকে বল আর ভরসা আর সাহস নিয়ে কলম ধরেছি আমি। তার শুধু একটা ছবি দেখেই মনে পড়ে গেলো তাঁর কথা। লোভ সামলাতে পারলাম না আমি। 

সেই কলকাতার বিখ্যাত পুলিশ বিটের একজন দাপুটে চুপচাপ খবর করা সাংবাদিক। যার খবরের সোর্স আর সেই সোর্সের তল খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন কারুর লিখে। দেখতে সুন্দর আর সুপুরুষ বেশ সে। নিজের গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে ভালোবাসে সে বরাবরই। একদম শামুকের খোলের মধ্য গুটিয়ে থাকা আর কি। হাজার খবরের বিষয়সমূহ তাঁকে একদম উত্তেজনায় প্রলুব্ধ করে না কোনও সময় কোনো কঠিন অবস্থায়। লাঠি,গুলি,অগ্নিসংযোগ,মৃত্যু বিরাট মাপের রাজনৈতিক নেতার ফোন কিছুই তাঁকে আন্দোলিত করে না কোনোভাবেই। কেমন যেনো একটা জ্যোতি বসুর সঙ্গে মিল আছে ওর আচার আচরণে এমন তো কতই হয় সাংবাদিকতা করতে এলে। এতে এত হৈ চৈ আর হুল্লোড় এর কি আছে। আর সেলফি তুলে সেটা সযত্নে রেখে দিয়েই বা কী হবে। কত মহিলা সাংবাদিক যে অফিস ফিরে তাঁর দাপুটে উচ্চ শিখরে অধিষ্ঠান করা বসের কাছে হেসে হেসে বলেছে আজ ওর সাথে কথা হলো আমার। যেনো হাতে চাঁদ পেয়েছে সেই মহিলা সাংবাদিক। যাকগে বাদ দি এইসব কথা।

এক নম্বর চ্যানেলে সেই নন্দীগ্রামে ডিউটি করতে গিয়ে অফিস এর এক দাদাকে বলে যাওয়া দাদা গুলি চললে আমি জানিয়ে দেবো তোমায় ঠিক সময়ে। সেটাই ঘটেছিল সেই রিপোর্টার এর কথা মতই নন্দীগ্রামে গুলি চলে নন্দীগ্রামে। তারপরে তো সবটাই ইতিহাস। আর ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে বাকি কথা। সেই বিধানসভায় ক্ষমতাসীন হয়ে হাসি মুখে বিধানসভায় পৌঁছে যাওয়া মূখ্যমন্ত্রী হয়ে। সেই বিধানসভার প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে কেমন চেনা মুখ এর বিশেষ করে যেনো ভালবাসার আর অপছন্দের রিপোর্টারকে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে বাইট দেওয়া সিঙ্গেল বুমে। যা বুমেরাং হয়ে আমাদের বেশ গায়ে লাগতো সেই নানা ঘটনা দেখে।

আবার সেই সিঙ্গুরের তিন ফসলি জমির মাঠে ঘাসের ওপর বসে আছেন বিরোধী দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর চোখের সামনে টাটার কর্ণধার রতন টাটার কুশপুতুল দাহ করা হবে। তার আগে টাটার কর্তাকে বাঁশের মাচা করে প্রদক্ষিণ করা। আর হরিবোল ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে যাওয়া সিঙ্গুরের ঘেরা মাঠ শেষ বিকেলের আলোয়। সেই মাঠের ধারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে মাত্র দুইজন সাংবাদিক হাজির। একজন এই পাতি গ্রামের সাংবাদিক কনস্টেবল আমি। আর অন্যজন সেই স্কটল্যান্ডের ইয়ার্ডের বিখ্যাত পুলিশ সাংবাদিক সে। কই এত লোকজন এর ভীড় তো দেখতে পেতাম না আমি সেই সময় তাঁর আশপাশে। নানা বর্তমানের চেনা মুখের ভীড় উপচে পড়তে দেখিনি সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর পাশে। 

সেই সিঙ্গুরে প্রবেশের আগে বড়া তেলিয়ার মোড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সভায় উপচে পড়া ভীড়। একনম্বর চ্যানেল এর ওবি ভ্যান ভাঙার চেষ্টা করা। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল সেই ওবি ভ্যান। হাসি মুখে সব দেখেও ভীড়ের মাঝে চুপ চাপ করে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর। আর আমি সেটা দেখে এগিয়ে যাওয়া উত্তেজনায়। তারপর আমার ক্যামেরাম্যান এর মাথা ফেটে যাওয়া। হৈ চৈ হুল্লোড় পড়ে যাওয়া। সেই গল্পও আজ অতীত ইতিহাসের পাতায় কেমন করে যেনো ঠাঁই পেয়েছে।

আর বিখ্যাত সেই ২৫ সে সেপ্টেম্বর এর রাত। সেই সিঙ্গুর বিডিও অফিস এর মধ্যে হাজার হাজার মানুষের প্রতিবাদী ভীড়। সরকারের চেক বিলির প্রতিবাদ জানিয়ে বিডিও অফিস এর দখল নিয়ে নেওয়া তৃণমূলের।। রাত বারোটার পর অন্ধকার বিডিও অফিস চত্বর। এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ আর টিয়ার গ্যাস এর শেল ফাটিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে বিডিও অফিস ফাঁকা করে দেওয়া। সেই বিখ্যাত পুলিশ সুপার সুপ্রতীম সরকার। সেই এন রমেশ বাবু। আর সেই ঠাণ্ডা মাথার পুলিশ অফিসার বাণীব্রত বসু। আই জি পশ্চিমাঞ্চল। সব কাজ শেষ করে সাংবাদিকদের বাইট দিচ্ছেন নিশ্চিন্তে তিনি হাসিমুখে কনফিডেন্ট হয়ে। 

আর যে দুই সাংবাদিক সেই গভীর রাতে সিঙ্গুর বিডিও অফিস এর অপারেশন এরপরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্তার বাইট নিচ্ছেন একজন সেই পাতি জেলার রিপোর্টার আমি। অন্যজন সেই বিখ্যাত হাসিমুখের উত্তেজনহীন একজন দাপুটে সাংবাদিক। যে আমায় নিজের অফিস এর গাড়ী করে আমায় সেই রাতে কলকাতায় পৌঁছে দেয়। কারণ আমার হুগলীর ভি স্যাট এর লাইন খারাপ ছিল সেদিন। যদিও সেটা একনম্বর চ্যানেল এর কর্মরত শৌনক ঘোষ এর সহায়তায় হয়। কিন্তু সেই যাত্রাপথে দু একটি বার কথা আমি বলার চেষ্টা করলেও সে কেমন চুপ চাপ করেই অতিক্রম করলো সেই পথ নিজের ঘেরা টোপে নিজেকে বন্দী রেখে অন্ধকার গাড়ীর ভিতরে বসে। 

আর তারপর তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমাদের দুজনের সামনে হাউ হাউ করে কান্না সেই গান্ধী মূর্তির নিচে বসে কারণ সিঙ্গুরের মাঠ থেকে তাঁর সেই অন্দোলন ভেঙে যাওয়ায়। আর নিজের ওপর রাজ্য পুলিশের নিদারুণ অত্যাচারের কথা বলে আমাদের সামনে তাঁর ছেঁড়া কাপড়কে বার বার দেখিয়ে হাউ হাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়া। আর পাশে বসে থাকা বর্তমানের বিজেপির দলে যোগ দেওয়া সোনালী গুহ যিনি মমতার ছায়াসঙ্গী ছিল একসময় তাঁর মমতাকে সান্ত্বনা দেওয়া। আর নিজের ফোনে অন্যদের খবর দেওয়া। সেই সময় সেই মুহূর্তে কেউ তো সেই ভোর রাতে সেদিনও ছিল না কিন্তু এই আমরা দুজন ছাড়া ধর্মতলায় মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির সামনে। 

তারপর তো সবটাই ইতিহাস এর পাতায় প্রবেশ করে যায়। মমতার ২৬ দিন এর অনশনে সামিল হওয়া। রাজ্য রাজনীতির দ্রুত বদলে যাওয়া। এই সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম অধ্যায়ে যে সাংবাদিক নানা ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাক্ষী সেই বিখ্যাত স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সাংবাদিক। আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। হ্যাঁ, যদিও আর তাঁর নাম বলার পরিচয় দেওয়ার দরকার নেই কোনও। সেই বর্তমান কাগজের বিতনু চট্টোপাধ্যায়। সেই স্টার আনন্দের বিতনু।

 হঠাৎ করেই যে কোথায় যে হারিয়ে গেছে কে জানে। হারিয়ে গেছি আমিও। আজ এই গভীর রাতে তাঁর কথা মনে পড়ে গেলো আমার। আর তাই লিখে ফেললাম কিছু ফেলে আসা দিনের কথা। সেই তাঁর লালগড় নিয়ে লেখা পড়ে তাঁকে মেসেঞ্জার এ লিখে দেওয়া কি ভালো লাগলো। সেও পুরোনো দিনের কথা শুনে বলে সিঙ্গুরের আন্দোলনের কথা লিখতে আমায়। দুজনের এইটুকুই কথা মাত্র। 

তবু এই সব টুকরো স্মৃতিকে বুকে আগলে রেখে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা। আর মনে মনে স্মৃতির সরণী বেয়ে এগিয়ে চলা সিঙ্গুর থেকে নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রাম থেকে লালগড়। লালগড় থেকে কেশপুর। এমন নানা জায়গা আর গ্রাম। যা আজ সত্যিই আমাদের সাংবাদিক জীবন থেকে হারিয়ে গেছে কবেই। তবু মনে আছে সেই দিনগুলোর কথা। সেই দিনের গুটিকয় মানুষের কথা। যাঁদেরকে আজ আর দেখাই যায়না কিছুতেই। ভালো থেকো তুমি বিতনু। অন্য সবার মত যিনি আমারও এই বাংলা মিডিয়ায় সেরা সাংবাদিক। যাঁর একদিন একমিনিট লাইভে দাঁড়াতে দেরি হয় বলে তাঁকেও কেমন শাস্তি পেতে হয় বাইরে কভারেজ করতে গিয়ে এক নম্বর চ্যানেলে। 

সেই বিখ্যাত সাংবাদিক এর কথা লিখতে পেরে আমার বেশ ভালই লাগলো। আমি জানিনা তাঁর বর্তমানের দিন যাপনের কথা। তবে মাঝে মাঝেই তাঁর নানা লেখা দেখে মনে হয় বাংলা মিডিয়ায় এমন একজন বিখ্যাত উত্তেজনাহীন রিপোর্টারকে হারালো যাঁর ঝুলিতে জমা আছে বহু পুরোনো দিনের কাহিনী। যে অকথিত নানা কাহিনী জানতে পারলে সমৃদ্ধ হবো আমরা। ভালো থেকো তুমি। আর নানা ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা লিখে আমাদের মুগ্ধ করো তুমি। সবার মতো আমিও তোমার খবরের বড়ো ফ্যান। 

বিখ্যাত বিতনু চট্টোপাধ্যায় - অভিজিৎ বসু।
বারো জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...