সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মহাকরণের সেই অরবিন্দ দুবে

আজ সেই মহাকরণের হিন্দি কাগজের সাংবাদিক অরবিন্দ কেজরিওয়াল নয়, অরবিন্দ দুবের কথা। কিছু কিছু মানুষের কথা আমি বেমালুম ভুলেই গেছিলাম। আসলে বোঝা গেলো আমার স্মৃতিটা বিট্রে করতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। তবু তার মাঝেই সেই ঠিক দুপুর বেলায় দুটোর পর মহাকরণে কাঁচের দরজা ঠেলে হাসিমুখে প্রবেশ করত সেই দুবেজি। মুখে হাসি। ফুল হাতা জামা পরা। আর ওর গালে কাঁচা পাকা দাড়ি। আর এসে পাশে বসেই জিজ্ঞাসা করা দাদা কুছ হ্যায়। খবর কুছ হোতা হ্যায়। আমরা কেউ ওকে একটু তাচ্ছিল্য করেই বলতাম, না না কুছ নেহি দুবে ভাই। আবার কেউ দু লাইন যা হয়েছে সেটা বলে দিতাম ওকে। আর ও হাসিমুখে ওর পকেট থেকে পেন আর নোটবুক বার করে টুকে নিত সেই দু চার লাইনের খবর। আর সেটা দেখে কুন্ডুদা ওকে বলতো সব খালি জোগাড় করে আর ম্যানেজ করে রিপোর্টারি করা। কোথা থেকে যে আসে এরা সব। আর সেই কথা শুনে মুখে খৈনি খেতে খেতে দরজা ঠেলে বাইরে গিয়ে হাসি মুখে থুতু ফেলার জন্য উঠে যাওয়া দুবের। 


এই দুবেকে জনসত্তা, দৈনিক জাগরণ হিন্দি কাগজের সেই দুবে কে কি করে যে আমি বেমালুম ভুলে গেলাম কে জানে। সেই প্রেস ক্লাবের ভোটে দাঁড়িয়ে সবার কাছে হাত জোড় করে হাসি মুখে ভোট চেয়ে জিতে যাওয়া দুবেকে ভুলে গেলাম আমি। সেই কলকাতা প্রেস ক্লাবের ভোটে জিতে যাওয়ার পর নিজের কাগজে সেই খবর আর প্রেস ক্লাবের নতুন কমিটির নাম ছাপিয়ে বের করার পর সেটা কাগজে বের করে সবাইকে সেটা এনে মহাকরণে দেখানোর কথা ভুলেই গেলাম যে। না, এটা কিছুতেই ঠিক কাজ হয়নি কিন্তু আমার একদম।

সেই সময় নানা হিন্দি কাগজের সাংবাদিকরা মহাকরণে আসত সেই সময়। আর সেই কথাই আমায় মনে করিয়ে দিলেন আনন্দবাজার পত্রিকার বিশিষ্ট সাংবাদিক অশোক সেনগুপ্ত। অশোকদা এই দুবের সাথে নিজের ছবি আর দুবের সেই অ্যালবামের কথা না লিখলে, আমায় সেটা না দিলে আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায়। আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে দুবের কথা আর লেখাই হতো না কোনোদিনই। কেমন আড়ালে আবডালেই থেকে যেতো সেই চুপচাপ থাকা সাংবাদিক অরবিন্দ দুবে। সেই মহাকরণে সব রিপোর্টারদের পিছনে দাঁড়িয়ে খবরের নোট নেওয়া অরবিন্দ দুবে। আর তাই অশোকদার নিজের লেখার নিজের স্মৃতিচারণের সেই দুবের অ্যালবামের কিছু অংশ তুলে দিলাম আমি। 

*দুবের অ্যালবাম*

১২ বছর আগে অরবিন্দ দুবে খবর সংগ্রহের জন্য মহাকরণে আসত। আমিও নিয়মিত সাংবাদিকতার সূত্রে সেসময় মহাকরণে যেতাম। তা, দুবে ওর প্রকাশিত বাইলাইন খবরের কাটিং সংরক্ষণ করত না। ওকে বলতাম সেগুলো জমাতে। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীমায় হালকা হেসে দার্শনিকের মতো বলত, “কী হোবে এসবে অশোকদা?” একদিন বেশ ধমক দিলাম ওর এই নিরাসক্তির জন্য। বললাম, প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত যেন ওর বাইলাইন খবরের কাটিংগুলো আমাকে দেয়। 

দুবে দিতে শুরু করল। সেগুলো একত্রিত করে, এ ফোর সাদা কাগজে তারিখ-সহ সেঁটে একটা অ্যালবাম করলাম। কয়েকটা হেরিটেজ সফরে ও আমার সঙ্গে গিয়েছিল। সেগুলোয় তোলা ওর কিছু ছবির কালার প্রিন্ট, কিছু স্বীকৃতির প্রকাশিত খবর এবং ওর জীবনপঞ্জীও যুক্ত করলাম অ্যালবামে। ওকে সেটা দিলাম বিস্ময়-উপহার হিসাবে। ও খুব খুশি হলো ওটার সামগ্রিক পরিকল্পনায়। 

এক যুগে অনেক কিছু বদলে গেছে। রাজ্যের প্রধান সচিবালয় সরে গিয়েছে নবান্নে। দুবে সপরিবারে কলকাতা থেকে অনেক দূরে। স্থায়ী নিবাস করেছে গোরক্ষপুরে নিজের তিনতলা বাড়িতে। অবসরজীবন। ওর আন্তরিক আবেদনে সাড়া দিয়ে গোরক্ষপুরে এসেছি। আশপাশের দর্শনীয় নানা জায়গা দেখছি। আজ (৩১/১২/২৪) সকালে ওর ছাদে রোদ্দুর পোহাচ্ছিলাম। অ্যালবামটা এনে হাসিমুখে প্রশ্ন করল, “অশোকদা, মনে পড়ে এটার কথা?” 

আমি সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম। তবে ওটা দেখেই মনে পড়ল এক লহমায়। সংকলনটা একটু জীর্ণ হয়েছে। তবু এরকম একটা সংগ্রহ যে কীভাবে কারও অতীতের ব্যস্ত সময়ের দর্পণ হয়ে উঠতে পারে, অনুভব করলাম অ্যালবামটা দেখে। 
 
২০১২-তে দুবের ছোটো ছেলে শচীন ক্লাশ ফাইভে পড়ত। এখন আইনের ছাত্র। মুঠোফোনে ধরে রাখল বর্ষশেষের সেই স্মৃতিচারণের দৃশ্য। আমরা চাই বা না চাই, অতীতকে ভুলে যেতে পারিনা। ২০২৪ অতীত হয়ে গেল। স্মৃতিহারা কি কেউ হতে পারবো? স্মৃতিমাখা ২০২৪ই ঢুকে পড়বে নতুন দেওয়াল পঞ্জিকার অদৃশ্য পাতায়।

আমার এই অরবিন্দ দুবেকে নিয়ে লেখার সুযোগ করে দেবার জন্য ধন্যবাদ সাংবাদিক অশোক সেনগুপ্তকে। না হলে কি আর ওর এই কথা লেখা হয়ে উঠত আমার আর কোনোদিন আমার এই ব্লগে। সেই নির্বিরোধী হাসি মুখের দুবে। সেই বিখ্যাত কুন্ডু দা। যে কুন্ডু দা সবার প্রিয় ছিল তাঁর বিখ্যাত সব ইংরেজিতে মূখ্যমন্ত্রী সহ অন্য মন্ত্রীদের প্রশ্ন করার জন্যে। সেই ফটোগ্রাফার গুরুজী। সেই একজন আকাশবাণীর মহিলা সাংবাদিক রত্নাদি বোধহয় নাম। আর একজন ফিটফাট সুন্দর সেজে গুজে আসতেন হিন্দি কাগজের সাংবাদিক নামটা মনে নেই আমার। আর সেই যে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে সরকারি চাকরি করে অবসর নেওয়া লাহিড়ীদা পরে যিনি কালান্তর কাগজে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন মহাকরণে আসতেন তিনিও। সেই আমার নিজের জেলার রূপম চট্টোপাধ্যায়দা। কোন্নগর থেকে আসতেন তিনি। 

এমন কত যে জন ছিল সেই সময় মহাকরণের প্রেস কর্নারে। আসলে বড্ড ভালো ছিল সেই ফেলে আসা দিনগুলো। বড্ড ভালো ছিল সাংবাদিকতার সেই সময়টা আর সেই অধ্যায়টি। যে সময়ে মহাকরণের বারান্দায় এদিক ওদিক কোনও নজরদারি ছাড়া পুলিশের বাধা ছাড়াই সাংবাদিকরা এই ঘর থেকে ওই ঘরে ঘুরে বেড়াতে পারতেন হাসিমুখে। পকেটে নোটবুক আর কলম নিয়ে বুকে সাহস নিয়ে। মন্ত্রী ঘরে না থাকলেও তাঁর ঘরের সচিবদের কাছ থেকে খবরের টিপস পেতেন সাংবাদিকরা সেই সময়। আর পরদিন সেই সব নানা খবর বাইলাইনে বের হতো সংবাদপত্রের প্রথম পাতায়।

 কিন্তু ধীরে ধীরে দিন বদলে গেলো। মহাকরণে প্রেস কার্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সাংবাদিকদের পায়েও কেমন করে যেন বেড়ি পড়ানো হলো। মহাকরণ চলে গেলো কিছুটা দূরে নবান্নে। একটি ঘরে বসে সাংবাদিক বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করে বন্দী হয়েই সাংবাদিকতা করতে হলো নবান্নের সাংবাদিকদের। তবু তো এর মাঝেই সেই পুরোনো স্মৃতি আর পুরোনো দিনের কিছু মানুষের কথা মনে পড়ে গেলো আমার। অশোক সেনগুপ্ত দা যদি অরবিন্দ দুবের ডাকে তার দেশের বাড়ি না যেতো। সেই সময় এর অ্যালবাম এর দর্শন না পেতো তাহলে হয়তো এমন একটা মানুষকে নিয়ে আমার লেখাই হয়ে উঠতো না আর কোনোদিন।‌ ভালো থেকো দুবেজি। আর এই লেখার আমায় সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে অশোক সেনগুপ্ত দা। আপনিও ভালো থাকবেন দাদা।

মহাকরণের সেই অরবিন্দ দুবে - অভিজিৎ বসু।
দোসরা জানুয়ারি, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য অশোক সেনগুপ্ত।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...