সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছাতা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ তো শুধুই আমার ছোট্ট বুটার কথা। না, আজ ওর জন্মদিন নয় কিন্তু। যে যার জন্য ওর কথা আমি বলছি আপনাদের। ওর গল্প বলছি আপনাদের আজ শুধু মাত্র অন্য একটা বিশেষ কারণে। হ্যাঁ জানি কেউ কেউ আবার বলেন ওই পোড়ো বাড়ির ভেঙে পরা শ্যাওলা জমা দেওয়ালে কি রং করলে আর বাড়ির হাল ফেরে। জানি ফেরে না। তবু যে রং করতে সাধ হয় আমার, সাধ্য না হলেও। 
কি হবে এসব মৃত দেওয়ালে রং করে। লেখার আঁচড় কেটে। লাভ কি হবে। যারা শুধু ওই শুধু মাত্র নিজের জন্য ওই ফেসবুকের না বলে ফেইকবুকের দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে,বসে, শুয়ে সারাদিন আড়মোড়া ভাঙে তাদের তো কোনো দাম নেই এই সমাজে। আর কাজও নেই কোনও। তাই তো এই দেওয়ালে লিখে আর কি হবে। চরিত্র চিত্রন করেই বা কি হবে। শুধুই ওই দেওয়ালে বমি করা আর কি। 
অন্য আর পাঁচটা দিনের মতই আজ ভোরবেলায় বৃষ্টির ছোঁয়া নিয়ে ঘুম ভেঙে গেল আমার সাত সকালেই। রাত জাগা পাখির মতই ঘুম আসেনা কিছুতেই আমার। হয়তো বয়স হচ্ছে বলেই। তার মাঝেই বুটা এসে আমার ঘুম জড়ানো চোখে খবর দিলো সে, যে বিদেশী  ভাষা নিয়ে পড়ছে সেই ভাষার একটা পরীক্ষায় পাশ করে গেছে। যেটাকে বলা হয় জাপানীজ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি টেস্ট বা যাকে সংক্ষেপে বলা হয় জেএলপিটি। দুই ধাপ পর পর পাশ করার পর এন ফাইভ, এন ফোর এর পর কেমন করে যেনো এন থ্রি ধাপেও পাশ করে গেলো বুটা পড়াশোনায় একটু সিরিয়াস না হয়েও। 
এই খবরটা পেয়ে সাত সকালেই মনটা আমার খুশিতে কেমন ভরে গেলো। আসলে জীবনের হাজারও খারাপ এর মাঝে একটা ছোট্ট ভালো খবর যেনো শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিনের সকাল বেলায় জীবনের কত কিছুই যে বদলে দিল কে জানে। ওকে বুকে জড়িয়ে বললাম দেখ ঠিক কষ্ট করে পড়ার চেষ্টা করছিস তুই তার দাম পাবি একদিন নিশ্চয়ই। যারা তোর পড়ায় সাহায্য করছে খুশী হবেন তারাও। কতো সময় যে এই বৃষ্টি ভেজা সকালে চুপটি করে একে অপরের বুকের ভিতর ওই যন্ত্রটার ধুকপুক আওয়াজ শুনলাম কে জানে।
 নিজের আত্মজার এই শুধু মাত্র একটা পাশের খবরে কেমন যেনো আপ্লুত হলাম আমি। আসলে হেরে যাওয়া, ফেল করে যাওয়া একটা মানুষের জীবনে এই পাশ করা যে শুধু মাত্র খাতায় কলমে একটা পাশ করা নয়। আরও অনেক কিছু সেটা বুঝতে পারলাম একটু পরে। ধীর গলায় বুটা আমায় বলল এরপর থেকে আমি জাপানী ভাষা নিয়ে যে কোনো চাকরির জন্য আবেদন করতে পারব বু। তুমি আর চিন্তা করো না। 
ওর ধীর স্থির এই ছোট্ট কথা আমায় কেমন যেনো নাড়িয়ে দিলো। চুপ করে শুনলাম আমি। কি বলছে ও।ঠিক শুনলাম তো আমি। সেই ছোট্ট একরত্তি মেয়েটা কি তাহলে একটা পরীক্ষায় পাশ করে সত্যিই অনেক বড়ো হয়ে গেলো জীবনের পরীক্ষায়। এক দৃষ্টিতে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি। 
সেই যে কাবা কাবা বলে গান করে যাকে সারারাত জেগে ঘুম পাড়িয়ে দিতাম আমি। যে আমার কোল ঘেঁষে সারাদিন ঘুর ঘুর করতো সেই ছোটো বেলা থেকে বু বু বলে। সেই যে শীতের দুপুর বেলায় ঘুড়ি আর লাটাই নিয়ে ছাদে উঠে আকাশ দেখে মন ভরাতাম আমরা দুজনে। তারপর আকাশের ঘুড়ি উৎসবে সামিল হতাম অন্য সবার সঙ্গে হৈ হৈ করে। আর ঘুড়ি ছিঁড়ে গেলে ও কেমন করে যে ওর মাকে লুকিয়ে ভাত এনে বলতো এই নাও ঘুড়িটা জুড়ে নাও তুমি। মা ঘুমোচ্ছে বুঝতে পারেনি কিছুই। 
যে মেয়েটা প্রতিদিন সকাল হলেই স্কুলে যাওয়ার আগে প্রায় চৌদ্দ বছর ধরে আমায় ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়েছে। আর বলেছে আমি উঠে পড়েছি বু কেনো ঘুমোবে ওকে তুলে দাও মা। এই বলে ওর স্কুলের ব্যাগ দিয়ে বলেছে যাও দেখো স্কুলের গাড়ি এলে আমায় ডেকে দেবে, আমি আসছি। পুজোর সময় যে মেয়েটা নানা দোকান ঘুরে আবদার করে বু এর কাছে যে ওটা তার চাই। সেই মেয়েটা বলছে এই বার আমি কাজ এর জন্য আবেদন করতে পারব।কোনো চিন্তা করো না তুমি।
এই কথা বলেই যদিও সে বলে কিছু কি আর চিন্তা ভাবনা করে তুমি কিছু কাজ করো জীবনে। যা মনে হয়, মনে আসে সেটাই করে যাও তুমি। সংসার চলবে কি করে ভাবো তুমি কোনো সময় কোনো দিন। আমি চুপ করে বুটার কথা শুনি। সত্যিই তো ঠিক কথাই বলছে ও। এই জীবনে কি আর ভেবে,চিনতে, হিসেব করে বুঝে চলতে পারলাম আমি কোনো দিন কোনো সময়। ঠিক কথাই বলেছে ও। সত্যিই তো বুটা আমার বেশ বড়ই হয়ে গেছে তাহলে। যে তার বু কে বলতে পারে এরপর থেকে আমি কাজের জন্য আবেদন করতে পারব। কোনো চিন্তা করো না তুমি। 
বিশ্বাস করুন আপনারা হয়তো এটাকে খুব ছোট ঘটনা বলবেন। মনে মনে বিড়বিড় করে বলবেন এর জন্য রাত দুপুরে ভাট না বকলেও হতো। ছেলে মেয়ে তো বাবা মা কে আগলে রাখে বড়ো হয়ে কোনো হিসেব না করেই। তেমন বুটাও আজ আমায় বলে দিলো এরপর থেকে সেও কাজ খুঁজবে। যে কাজ পেলে আমাদের একটু এই জীবনে বেঁচে থাকার সুবিধা হবে। এমন আমার মত কর্মহীন হয়ে ঘুরতে হবে না। 
যারা আমায় সব থেকে বেশি করে সাহায্য করেন আমার বাঁচার জন্য। সেই উত্তরপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব কে জানালাম এই খবর। শুনে খুব খুশি হলেন তিনি। মেয়েকে তিনি বললেন, ভালো করে পড়াশোনা করতে। আমি এই ভালো খবর জানালাম আরও বেশ কয়েক জনকে যারা আমায় বাঁচতে সাহায্য করেন এই কঠিন পরিস্হিতিতে নানা ভাবে। দিল্লীতে এক বাংলার বিখ্যাত সাংবাদিক কে জানালাম। মুর্শিদাবাদ এর এক বিখ্যাত দাপুটে মহিলা সাংবাদিক কে বললাম এই খবর। জানালাম কলকাতার এক বিখ্যাত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এক সাংবাদিককেও। যিনি এই খবর শুনে খুব খুশি হলেন। 
 আসলে একটুকরো চাঁদের মায়াবী আলোর একটা রূপোলী রেখা আমার সেই ছোট্ট বুটা। আজ বেশ বড় হয়ে গেছে যেনো ও নিজেই কেমন করে আমি বুঝতে পারিনি এতদিনেও। যে রেখা আমাদের জীবনকে বদলে দেয়। যে রেখা জীবনের হিসেব নিকেশ উল্টে পাল্টে দেয়। যে রেখা আমায় বকে চোখ পাকিয়ে মাঝে মাঝেই। আবার এমন ভোরবেলায় বৃষ্টিভেজা সকাল বেলায় বুকের মাঝে লেপ্টে গিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে বলে আমি এইবার কাজ শুরু করতে পারবো আর কোনো চিন্তা নেই তোমার। তুমি আঁকাবাঁকা অক্ষরে লিখে যাও আর ঘুরে বেড়াও। কি কোনো কাজ তো নেই তোমার। 
আমি কেমন ফ্যাল ফ্যাল করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি চুপটি করে। নির্নিমেষ নয়নে ওকে দেখি। শুধুই ওকে দেখি দু চোখ ভরে। আমার  দু চোখ বেয়ে অবিরাম জলের ধারা নামে। বাইরে তখন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমেছে। আর ঘরের মাঝেও অঝোরে বৃষ্টির ধারায় স্নান করি আমরা দুজন চুপ করে। একে অপরকে আরও আশ্লেষে জড়িয়ে ধরি। আর আমি দেখি কেমন করে আমার সেই ছোট্টো বুটা বেশ বড়ো হয়ে গেলো। যে আমার পাশে ছাতা হয়ে গেলো ধীরে ধীরে কেমন করে কে জানে। 
ছাতা -  অভিজিৎ বসু।
সাতাশে আগস্ট, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...