সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।


 কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা। 

সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও কেমন সুন্দর খবরের নানা ধরনের ভাবনা আর খবর নিয়ে নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে বুঁদ হয়ে থাকা সেই ছোটো পরিসরে কাজ করা আমাদের প্রদীপ দা। যিনি জানেন মাথা উঁচু করে খবরাখবর করলে নিজেকে বিকিয়ে না দিয়ে গ্রামের লোকজন তাদের আর যাই হোক লোকজন কিন্তু বেশ সম্মান করে তাদের মনে মনে বলে এই লোকটা কিন্তু সেই সবার মত নয়। সাংবাদিক মানেই যে রাজনীতির ময়দানে ঘুরে বেড়ানো নেতাদের মত নয় সবাই সেটাই আসল কথা। 

কিছু কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা শুধুই এই দীর্ঘদিন মিডিয়ার কর্মী হিসেবে কাজ করেও, কোনোও হিসেব নিকেষ না করেই নিজের স্বার্থে না বেঁচেই শুধু মানুষের ভালোর কথা ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়তে জানেন আর ছুটে বেড়ান। আর খবর করে বেড়ান। আর তাই আমি মাত্র কয়েক ঘণ্টার আলাপ পর্বে মনে হলো এমন মানুষকে নিয়ে কিছু কথা লিখলে কেমন হয়। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে।

 বর্ধমানের সেই ২৪ ঘণ্টার অরূপ লাহা আর পার্থ চৌধুরীর পরিচিত সেই আমাদের প্রদীপ দা। ওদের দুজনের পরিচিত সেই আমায় ফোন নম্বর দেওয়া সেই সদা প্রাণবন্ত হাস্যময় প্রদীপ দা। যিনি আমি এই জামালপুরে আসছি খবর পেয়েই হাজির হলেন এক দৌড়ে সেই ডাক্তারের চেম্বারে। কথা হলো ওনার সাথে নানা বিষয়ে, ওনার লেখা নানা খবর পড়লাম আমি।

 
সেই ছোটো কাগজ সংবাদ বন্ধ হবার পর বর্তমানে উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রতিনিধি তিনি বর্ধমান জেলার। টিউশন করে একসময় জীবন চালানো একজন ঘুরে বেড়ানো ব্যক্তি ছোটো এলাকায় খবর করে পরিচিত হয়েও কেমন এই দ্রুত বদলে যাওয়া মিডিয়ার যুগেও কেমন একদম এক রয়ে গেলেন আজও তিনি এক ভাবেই। আর তাই বোধহয় সেই আমার ডাক্তার এর কাছে আসার খবর পেয়েই ছুটে এলেন তিনি সানিকে নিয়ে আমার কাছে। 

সানির গল্প লিখবো অন্য একদিন। শুধু ফোনে কথা বলেই নয় একে বারে সামনে সশরীরে হাজির হয়ে যাওয়া কত অল্প সময়ের আলাপে। এটা একটু অন্য অনুভূতি দিলো আমায়। সত্যিই কত যে বিচিত্র জীবন আর বিচিত্র মানুষ এই দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ান শুধু শিরদাঁড়া সোজা রেখে তার শেষ নেই। আর তাইতো আজ এই নানা চরিত্রের ভীড়ে আমি লিখে ফেলি একটু আলাদা সেই গ্রামের মেঠো সাংবাদিক প্রদীপ দার কথা। 

যাঁর সাথে অল্প আলাপেই হাসি মুখে দুজনে মুঠো ফোনে একসাথে ছবি তুলে ফেলি কাঁধে হাত রেখে কোনোও সংকোচ না করেই আর কোনোও দূরত্ব না রেখেই। সত্যিই জীবন বড়ই বিচিত্র। আত্মীয় স্বজন না হয়েও কেমন রক্তের সম্পর্ক না হয়েও আমাদের দুজনের এই অল্প আলাপের আড্ডা বেশ ভালোই লাগলো কিন্তু সেই বর্ধিষ্ণু গ্রাম্য পরিবেশের জামালপুরে সেই লুকোচুরি খেলা,পুলিশকে দৌড় করানো খবর ছেপে এই গল্প শুনে মজা লাগলো আমার।

 মনে হলো তাহলে এমন মানুষ শুধু এখনও কিছু টিকে আছেন আজও এই গ্রামেগঞ্জে। যাঁরা সেই আজও এক টাকার কাগজের সাংবাদিক হয়েও, সেই বাঁশের বেড়ার ওপারে থাকা সাংবাদিক হয়েও কেমন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ান দামোদরের তীরে মাঠের আলপথ ধরে। আর হাসি মুখেই খবর করে যান তিনি এই খবরকে ভালোবাসা মানুষটা। ভালো থাকবেন আপনি প্রদীপ দা। শুধুই এই আপনার পুরোনো দিনের আদর্শ, বিশ্বাস, আর ঐকান্তিক নিষ্ঠা নিয়ে। 

জামালপুরের প্রদীপ দা - অভিজিৎ বসু।
ছাব্বিশ জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি নিজের মোবাইল ক্যামেরায় তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...