সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ট্রাম কথা

রাস্তা চলেছে যত অজগর সাপ/পিঠে তার ট্রাম গাড়ি পড়ে ধুপধাপ--- রবীন্দ্রনাথের লেখা লাইনটা হঠাৎ মনে পড়ল। আসলে এই দেড়শো বছরের শহর কলকাতা ছেড়ে ট্রাম এর ঘন্টির আওয়াজ আর শোনা যাবে না এই কথা শোনা যেতেই চারিদিকে হৈ চৈ আর হুল্লোড় পড়ে গেছে। এই ট্রাম বাঁচানোর দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন ট্রাম প্রেমীরা। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে প্রতিবাদ তো চলছিল। সেই প্রতিবাদ একদম রাস্তায় নেমে পড়লো। শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হলেন কিছু লোক জন। এদিকে আগামী পাঁচ অক্টোবর কলেজ স্ট্রিটে ট্রাম বাঁচাতে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হলো নাগরিকদের তরফে। দাবি একটাই এই কলকাতার গর্বের নস্টালজিয়ার ট্রামকে কয়েকটি রুটে চালাতেই হবে।

যদিও এই প্রসঙ্গে সরকার কি ভাবছে। পরিবহন মন্ত্রী কি ভাবছেন সেটা জানতে ইচ্ছা হলো আমার। এই ট্রাম নিয়ে কি ভাবছে সরকার। রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী আমায় ফোনে বলেন, ট্রাম নিয়ে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো যে এখন এটি আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। আদালত যা বলবেন আমরা সেটাই মান্যতা দিয়ে করবো। কিন্তু হেরিটেজ হিসেবে এই ট্রাম চলবে একটি নির্দিষ্ট রুটে। যাকে সাজিয়ে গুছিয়ে নতুন করে তার রূপদান করে আমরা আমাদের গর্বের ট্রামকে শহরে রেখে দেবো। যাতে এই দেড়শো বছরের ইতিহাসকে আগলে রাখতে পারি আমরা। এই কথাই জানালেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী।

সত্যিই তো সেই কবে যে শুধু মাল বয়ে নিয়ে যাবার জন্য এই ট্রাম এর পথ চলা শুরু হলো। আঠারোশো তিয়াত্তর সালে প্রথম ট্রাম পরিষেবা চালু হয় ঘোড়ার সাহায্য নিয়ে। কিন্তু পরে উনিশশো দুই সালে বিদ্যুতের ব্যবহার করা হয় ট্রামে। প্রথমে আর্মেনিয়া ঘাট থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত তিনদশমিক নয় কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তায় ট্রাম চলে। কিন্তু সেটি পরে বন্ধ হয়ে যায়। ঘোড়ায় টানা ট্রাম এর জন্য শীতের দেশ থেকে ঘোড়া আনা হতো। প্রায় একহাজার ঘোড়া ব্যবহার করা হতো ট্রাম এর জন্য। যাদের খাবার জলের জায়গা কলকাতার রাস্তার পাশে করা থাকতো। 

কিন্তু উনিশ শো দুই সালে প্রথম ট্রামের বৈদ্যুতিকরণ শুরু হয়। স্বাধীনতার কিছুদিন পরে ট্রামওয়েজ কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মোট সাতটি ট্রাম ডিপো আছে কলকাতায়। সবচেয়ে বড় ডিপো রাজাবাজার ও টালিগঞ্জ ডিপো। সবচেয়ে পুরোনো ডিপো খিদিরপুর। আর সবচেয়ে ছোট ডিপো হলো কালীঘাট। ট্রামের ওয়ার্কশপ অবস্থিত নোনাপুকুর এলাকায় শিয়ালদহতে। এই ট্রামগাড়িকে স্ট্রীট কারও বলা হয়।

 বিদেশে বিংশ শতাব্দীর মাঝে ব্রিটিশ, কানাডিয়ান, ফরাসি ও মার্কিন শহর থেকে কিন্তু ট্রাম উঠে যায়। কিন্তু ইউরোপের অনেক দেশেই ট্রাম পরিবহন ব্যবস্থা চালু থাকে। নেদারল্যান্ডস এর মত কিছু দেশে ট্রাম এর যাত্রপথকে সংকুচিত করা হয়। উনিশশো আশির দশক থেকে অনেক দেশে ট্রাম আবার ফিরে আসে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্সে ও অন্য কয়েকটি দেশে ট্রাম নেটওয়ার্ক চালু হয়। কিন্তু পশ্চিমের দেশগুলির যেখানে ট্রাম চলে সেখানকার আর্থিক কাঠামো জনঘনত্ব, রাস্তার জন্য বরাদ্দ জমি এসবের সাথে ঘনবসতিপূর্ণ কলকাতার তুলনাই চলে না কোনো।

কারণ কলকাতায় মাত্র ছয় শতাংশ জায়গা রাস্তার জন্য বরাদ্দ করা আছে। যেখানে দিল্লী ও মুম্বাইতে আঠারো ও দশ শতাংশ জমি রাস্তার জন্য বরাদ্দ। মেলবোর্ন শহরে ট্রাম চলা আর কলকাতার এই শহরে ট্রাম চলা তো এক ব্যাপার নয় মন্তব্য পরিবহণ মন্ত্রীর। ভিয়েনা, মিলান, বার্লিন, লিসবন, মেলবোর্ন শহরে ট্রাম চলে। কিন্তু এই সব জায়গার জনঘনত্ব আর কলকাতার জনঘনত্ব এক নয়। উনিশশো বিরানব্বই সালে বামফ্রন্টের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এই ট্রাম কোম্পানি কে দিয়ে বাস চালানো শুরু করেন। যেখানে ছয় এর দশকে সাঁইত্রিশটি রুটে ট্রাম চলতো সেখানে বাম আমলের শেষ দিকে এসে মাত্র তেরো চৌদ্দ রুটে ট্রাম চলে। 

একসময়ে অতীত কালের কথা স্মরণ করলে মনে পড়ে যায় সেই একপয়সার ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধির জন্য বামেদের অন্দোলন এর কথা। আসলে এই ট্রাম নিয়ে যে হৈ চৈ হুল্লোড় হচ্ছে সেটা আগেও বিদ্যমান ছিল কিছুটা। যে মানুষটা এই ট্রাম এর তলায় চাপা পড়ে মারা গেলেন সেই কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন,
 শেষ ট্রাম মুছে গেছে, শেষ শব্দ, কলকাতা এখন জীবনের জগতের প্রকৃতির অন্তিম নিশীথ। চারিদিকে ঘর বাড়ি পোড়ো সাঁকো সমাধির ভীড়, সে অনেক ক্লান্তি, ক্ষয়, অবিনশ্বর পথে ফিরে, যেনো ঢের মহাসাগরের থেকে এসেছে নারীর পুরোনো হৃদয় নব নিবিড় শরীরে। কবি জীবনানন্দের মৃত্যু আর ময়দানের বুক চিরে ট্রাম এর ছুটে যাওয়া কেমন যেন মিলে মিশে সব একাকার হয়ে গেছে। 

সেই সন্ধ্যা নামার বেলায় ঘরে ফেরা পাখির কল কাকলিতে মুখর ময়দানের পাশ দিয়ে ছুটে চলা ট্রামের ঘণ্টার আওয়াজ। রিনরিনে আওয়াজ ধীরে ধীরে কেমন যেন মিলিয়ে যায় অন্ধকার ময়দানের গাছের আড়ালে আবডালে। মিলিয়ে যায় দেড়শো বছরের পুরোনো এই শহরের ইতিহাস। মনে পড়ে যায় বহুদিন আগের এক সন্ধ্যার কথা,আমি আর সেই দিব্যেন্দু দুজন মিলে সেই সান্ধ্য কাগজ পট পরিবর্তনের মৌলালির অফিসে ডিউটি সেরে পকেটে দুটো টাটকা কাগজ নিয়ে সেই মৌলালি ওয়েলিংটন এর রাস্তা ধরে ট্রাম চেপে চলে আসতাম ডালহৌসিতে। তারপর লাল দীঘির পাড়ে বসে থাকতাম আমরা দুজনে। আড্ডা মারতাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা। 

দুর থেকে সেই লালবাড়ির ইমারত দেখে ভাবতাম কি সুন্দর ক্ষমতা ধরে রেখে দিব্যি বেঁচে আছে সে সুখে দিনযাপন করছে বছরের পর বছর আর দিনের পর দিন। সন্ধ্যা নামতো আমাদের মাথার ওপর। দুই পঁচিশ বছর বয়সের যুবকের মাথায় চিন্তা একটাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে যে করেই হোক। ডালহৌসিতে ট্রাম এর চাকার ঘড় ঘড় আওয়াজ, ট্রাম এর ঘণ্টার আওয়াজ, সন্ধ্যার সময় পাখির ঘরে ফিরে যাওয়া, লাল দীঘির জলে সন্ধ্যার চাঁদের আলো পড়ে কেমন যেন মায়ায় ভরে যেত গোটা এলাকা। আর হেলে দুলে ঘন্টা বাজিয়ে সুন্দরী ট্রাম চোখের সামনে দিয়ে কেমন সর্পিল গতিতে এগিয়ে যেত। 


ফাঁকা ট্রাম কলকাতার সেই চেনা রাস্তা ধরে ছুটে চলতো মায়াবী জ্যোৎস্নার আলো গায়ে মেখে। আমরা দুজন মিলে দেখতাম আর ভাবতাম এইভাবে যদি ওই ট্রামের মতো নিজেদের জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম কি ভালই যে হতো তাহলে। 

ট্রাম কথা - অভিজিৎ বসু।
ঊনত্রিশ সেপ্টেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...