সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সেই আমাদের পিন্টু

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ সেই হারিয়ে যাওয়া আমাদের পিন্টুর কথা। কতদিন যে ওকে দেখিনি। ওর সাথে কথা হয়নি কে জানে। কোথায় যে চলে গেলো ও সেটাও আর জানি না আমি। সেই আমাদের সবার প্রিয় পিন্টু। নামটাই জানি ওর পদবী জানিনা আমি আজও। শুধু জানতাম যে সেই কাজীদার সাথে কাজী ইলাহীর সাথে সিএন নিউজ এর ক্যামেরাম্যান এর কাজ করত পিন্টু। বেলা এগারোটা বাজলেই ক্যামেরার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বউবাজারের সিটি অফিস থেকে প্লাস্টিকের চটি পড়ে হাসি মুখে রাইটার্স ঢুকে যেতো ঠিক সময়ে একদম ঘড়ি ধরে।

 একটু পা টেনে টেনে চলতো পিন্টু হাতে খৈনি নিয়ে। ওর মা আর ভাইকে নিয়ে রিষড়াতে থাকতো পিন্টু। সেই সিএন চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান হয়ে কত কম টাকায় কাজ করত পিন্টু হাসি মুখে বহু বছর ধরেই। সেই বিরাটি অফিস এর মেজদা ছিল ওর মালিক। কাজীদার সাথে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতো ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা নিয়ে। রাইটার্স বিল্ডিং এর নানা প্রান্তে ওর ছিল অবাধ আর স্বচ্ছন্দ বিচরণ। বেশ বিন্দাস আর মজার জীবন ছিল আমাদের সেই সময়।

 কাজ এর চাপ কম থাকলে আমি আর পিন্টু বসে বসে গল্প করতাম মহাকরণের সেই পেছন দিকের গেটের ধারে বসে। আর সাংবাদিক সম্মেলন এর খবর পেলেই একছুটে দৌড় দিয়ে চলে আসতাম পোডিয়াম এর সামনে দুজনে। এই ভাবেই চলতো আমাদের মহাকরণের টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকতার নানা দিনলিপি। আর মাঝে মাঝে সময় পেলে এই পিন্টু আর আমার সাথে গল্প করতে আসতো বাংলার বিখ্যাত সাংবাদিক এবিপি আনন্দ চ্যানেল এর সেই দীপক ঘোষ। সদা হাসিখুশি মুখে থাকা এই মানুষটি কেমন যেন পিন্টু আর আমার বন্ধু হয়ে গেছিল উচ্চবর্ণের ও উচ্চমাপের সাংবাদিক হয়েও।

 পুলিশ, সাংবাদিক, ফটোগ্রাফার সব একসাথে মিলে মিশে আড্ডা আর গল্প চলছে বিকেল বেলায় জোর কদমে। ওদিকে প্রেস কর্ণারে তখন আজকাল পত্রিকার সেই অংশু চক্রবর্তীদার জোর আওয়াজ কাল সকালে দেখা যাবে কাগজে বড়ো খবর, বড়ো খবর বলে জোর আওয়াজ। এই কথা শুনে সেই শ্যামলদার সুন্দর মিষ্টি হাসি, মালদা থেকে আসা সেই সোমনাথদার মুখ বুজে থাকা, শ্যামলেন্দুদার হাসি দিয়ে অরূপ রায় এর ঘরে চা খেতে চলে যাওয়া। আর এই কথা শুনে গম্ভীর মুখে জরিপ করা আনন্দবাজার পত্রিকার কুলিন সাংবাদিক প্রভাত ঘোষ আর রঞ্জন সেনগুপ্ত ও তার দলবল এর অংশুদার মুখের দিকে তাকিয়ে। তাহলে কি এক নম্বর কাগজের স্ট্রাইকারদের টপকে কোনো বড়ো খবর করে ফেলল অন্য কেউ। যেটা ওই একনম্বর কাগজের প্রতিনিধিরা কিছুতেই মেনে নিতে পারতেন না একেবারেই। আবার সেটা সহ্য করতে পারতেন না তারা কিছুতেই। 

এদিকে এককোনে বসে এই কথা শুনে সেই ইংরাজি তে প্রশ্ন করা হিন্দি চ্যানেলের বিখ্যাত সাংবাদিক কুন্ডুদার উক্তি কাল কিছুই দেখতে পাওয়া যাবে না কাগজে। ও সব ফালতু কথা আওয়াজ দিচ্ছে অংশু। আর লাহিড়ী দা মিটি মিটি হেসে উপভোগ করছেন সেই কুন্ডুদার কথা। সোফায় হেলান দিয়ে আধঘুমে থাকা আনন্দবাজার পত্রিকার সুকান্তদার এসব কান না দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা আপন মনে। এমন নানা চিত্র ফুটে উঠল মহাকরণের সেই প্রেস কর্ণারে পিন্টুর কথা মনে পড়ায়। সেই সুতপা সেন, সুমন ঘড়াই এর অবিচ্ছেদ্য জুটি। সেই বর্তমান বিজেপির বড়ো রাজ্য নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় এর গম্ভীর মুখে এসব দেখে মুখ্য সচিবের ঘরের দিকে হেঁটে হেঁটে হেলেদুলে চলে যাওয়া। আর দেবাঞ্জন দাস আর সঞ্জয় এর চুপ করে বসে থাকা। এসব ছিল প্রতিদিনের মহাকরণের রোজ নামচা। 

সেই হাসি মুখের তরুণ দা, রূপমদা একসাথে বসে গল্প করা। সেই  আমার  বহু পুরোনো ইটিভির বন্ধু শাশ্বতর বাবা শুভময় চট্টোপাধ্যায়ের একা একা বসে থাকা মুড়ি খাওয়া। সেই আনন্দবাজার পত্রিকার বিখ্যাত এক সাংবাদিক একটু পা টেনে টেনে সারা মহাকরণ এ নজর রাখতেন যিনি কে কোথায় যাচ্ছে। নামটা মনে পড়ছে না তার সবাইকে জরিপ করা চেয়ারে বসে। এর মাঝেই উপেন বিশ্বাস এর ঘর থেকে আমার কাছে ফোন আসা চলে এসো গল্প করব আমরা। সেই বিখ্যাত চার্লস নন্দী এসব তো সেই চেনা টুকরো টুকরো ছবি। সেই ক্যামেরা ম্যান সুনীল মুন্দ্রা কোথায় যে হারিয়ে গেলো কে জানে। সেই বিখ্যাত চিত্র সাংবাদিক অমিত ধর, শ্যামল মৈত্র, সেই হিন্দি কাগজের গুরুজী। সব ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসছে সব স্মৃতি আমার।
এর মাঝেই সেই পিন্টুর কথা মনে পড়ে যায় বার বার। সেই সিএন চ্যানেলে কাজ করার সময় বিরাটির অফিসে একবার দেখা হলো ওর সাথে আমার। অনেকবার বলেছিলাম ওর কাজ হলে ভালো হয় সেই বিরাটির চ্যানেল এর মালিককে। কিন্তু না হয়নি সেই কাজ। হঠাৎ মিডিয়া ছেড়ে সব ছেড়ে কোথায় যে চলে গেলো কে জানে। একদিন খবর পেলাম ওর মা অসুস্থ পুড়ে গেছে ও আহত। ওর মা ছিল জীবনের সবচেয়ে কাছের জন। হাসপাতালে ভর্তি হলো ওর মা। কিন্তু কদিন পর খবর পেলাম পিন্টুর মা নেই।  মা চলে যাবার পরে পিন্টু ঘর ছেড়ে ভাইকে ছেড়ে চলে গেলো কোথায়। 

কোথায় কে জানে কখনও কাশ্মীর, কখনও চেন্নাই, কোনো সময় ওড়িশা বা মধ্যপ্রদেশ রাজস্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে গাড়ি নিয়ে। মাঝে মাঝেই ছবি পোস্ট করে দিয়ে বলে ওর শরীর ভালো নেই খারাপ খুব শরীর ওর। মাঝে মাঝেই লেখে আমার জীবনে কেউ নেই আমি একা। আমার বেঁচে থেকে কি লাভ। আমার মা নেই। ঘর নেই কেউ নেই যে।  এমন নানা কথা লেখে ও আমায় মাঝে মাঝেই। সেই ডিটেকটিভ এজেন্সি আই এন এ র হয়ে নানা পোস্ট। একটা কাগজ করতো পিন্টু সবাইকে দিত এই নাও আমার কাগজ বলে। গোয়েন্দা দের নানা খোঁজ খবর রাখতো ও কেমন করে।

 সেই পিন্টুর কথা লিখতে বসলাম ওর একটা ফেসবুকে ওর আজকের একটা ছবি দেখে। মনে হলো ওর চেহারা খুব খারাপ হয়ে গেছে। শরীর খারাপ লাগল ওকে দেখে। আমি ওকে লিখলাম তোকে দেখে ভালো লাগছে না। ও তার উত্তরে লিখলো না আমার শরীর খুব খারাপ। সত্যিই এইভাবেই কত স্মৃতি যে মনে পড়ে যায় আমার কে জানে। 

সাদা জীবনের কালো কথায় পিন্টুকে তাই এই পূজোর সময় আমার মনে পড়ে গেলো। জানি না আমি ও কোথায় আছে। কেমন আছে। কি করছে। কি করে বেঁচে আছে। একা একাই জীবনের এতগুলো বছর কাটিয়ে দিলো পিন্টু। কেমন মিডিয়া ছেড়ে, ক্যামেরা ছেড়ে, মিডিয়ার উত্তাপ ছেড়ে তথাকথিত মিডিয়ার বন্ধু দের ছেড়ে। 

আজ বিশ্বাস করুন আপনারা এই দেবীপক্ষের সময় পিন্টুর কথা বড়ো বেশি করে মনে পড়ে যাচ্ছে আমার। ওর সেই হাসি মুখ। ওর সেই ডোন্ট কেয়ার মনোভাব। ওর সেই সকাল সকাল মহাকরণে চলে আসা। ওর সেই ডাক অভিজিৎ দা এই মিডিয়ার আর কিছুই হবে না সব শেষ হয়ে গেছে দাদা। সত্যিই কত অবলীলায় হাসতে হাসতে খৈনি খেতে খেতে চরম সত্য কথাটা বলে দিতে পারতো পিন্টু হাসি মুখে। 

সেই আমাদের পিন্টু - অভিজিৎ বসু।
চৌঠা অক্টোবর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...