এ যেন ঠিক মহাসমুদ্রের মাঝে হঠাৎ জলদস্যুর হানা দেওয়া। সেই একচোখে কালো কাপড় বাঁধা সেই জলদস্যু ভয়ঙ্কর তার রূপ। যে রূপ দেখে পিলে চমকে যাবার উপক্রম। আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে সেই কালান্তক যম। মৃত্যুর দূত। হ্যাঁ, এই অজানা অচেনা মহাসাগরে ভেসে বেড়ানো ফেসবুকের দেওয়ালে কখনও বন্ধু পরিচয় দিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরা। আগলে রাখা। সম্পর্ক স্থাপন করা হাসিমুখে। হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে সহজেই খুঁজে পাওয়া। আবার কখনও ছদ্মবেশে হাসি মুখে এক ছবি দিয়ে বন্ধু সাজার ভান করে সম্পর্ক স্থাপনের নকল চেষ্টা করা। সত্যিই এক মহাসমুদ্রের মাঝে এই ডুবে যাওয়া আর ভেসে বেড়ানোর মাঝে শুধু আসল আর নকলের এই খেলা দেখে মনটা ভরে যায় আমার।
সত্যিই এই বন্ধু সাজার নাটক করে কেমন করে যে কত গভীর গোপন সম্পর্ক স্থাপন হয় এই ছোট্ট জীবনে তার কি শেষ আছে কোনো। আর সেই বন্ধুকে বন্ধু বলে কাছে টেনে নিয়ে বিপদে পড়ারও শেষ নেই কোনও। এত গেলো রক্ত আর মাংসের জীবনের বন্ধু আর নকল বন্ধুর খেলনা বাটি খেলার সংসার এর কথা। যে সংসারে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা সবাই হাসি মুখে। কিন্তু এই যে ফেসবুক নামক অজানা অচেনা মহাসমুদ্রে বন্ধুর বেশে হানা দিয়ে বন্ধু ছিনিয়ে নেবার অপচেষ্টা তাকে সামাল দেবো কি করে।
তাই এই আজকের ধ্রুবর এই ফেসবুকে ওর কাতর আবেদন, ওর উদ্বিগ্ন মুখ, ওর দুশ্চিন্তা, ওর পোস্ট দেখে মনে হলো সত্যিই আমরা বোধহয় এই অন্ধকার সমুদ্রের সফেন ঢেউ এর মাঝে ভাসতে ভাসতে অনবরত প্রাণের বন্ধুর খোঁজ করে চলি। যে বন্ধু আমার জীবনের পরতে পরতে ভালোবাসায় দুঃখে কষ্টে যন্ত্রণায় জড়িয়ে থাকে কেমন নিজে থেকেই। আর সেই বন্ধু যদি নকল হয়ে হানা দেয় আমাদের জীবনে তাহলে তো উচাটন হবেই মন। কু ডাকবেই মন। বলবে সতর্ক হয়ে যাও সবাই। এই বন্ধু আমি নয়, আমার ছবি দেওয়া অন্য কেউ।
জীবনের এই আসল আর নকল এর খেলায় অংশ গ্রহণ করে। হাজার বিপদে পরেও শিক্ষা লাভ না করেও আমরা যে সতর্ক হয়ে উঠতে পারি না কিছুতেই। কে আসল আর কে নকল বন্ধু সেটা বুঝতেই পারিনা আমরা। তবু ভালো যে এই ফেসবুকের মহাসমুদ্রের বন্ধুকে না হয় একটু ভিন্ন চোখে দেখা যায় ভিন্ন ভাবে অনুভব করা যায়। টেলিস্কোপের সাহায্যে নয়, খোলা চোখে, খোলা মনে দেখতে পেয়ে সতর্ক হওয়া যায় কিছুটা। কিন্তু আমাদের জীবনের চারপাশে ঘুরে বেড়ানো হাত পা ওলা বন্ধুরূপী নানা বহুরূপীদের থেকে এরা তবু কিছুটা ভালো মনে হয় আমার। আর তাই ধ্রুবর ফেক অ্যাকাউন্ট এর এই আবেদন পড়ে আমার মনে হলো কিছু লিখে ফেলি আজ সাদা জীবনের কালো কথায়। জীবনের এই আসল আর নকল এর খেলায় জীবন বাঁচানোর তাগিদে আমরা যে সত্যিই বড়ো ক্লান্ত। বিশ্বাস করুন খুব ক্লান্ত। কে আসল আর কে নকল সেটা ভাবতে ভাবতেই যে জীবন শেষ।
আসল আর নকল বন্ধু - অভিজিৎ বসু।
ছয় অক্টোবর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন