সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জং ধরা সম্পর্ক ও শুভ বিজয়া মেসেজ

আসলে কিছু কিছু ঘটনা জীবনের বন্ধ হয়ে যাওয়া জং পড়া সম্পর্ককে কিছুটা নাড়িয়ে দিয়ে যায় যেনো। সেই বহু দিনের চেনা মিষ্টি মধুর সম্পর্ক, যে সম্পর্কের মাঝে মহুয়ার গন্ধ, লাল পলাশের ছোঁয়া, সেই রাতজাগা তারার নিওন আলোর রোশনাই, সেই হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানীর গন্ধ, সেই পান্তা ভাত আর কাঁচা পেঁয়াজের গন্ধ লুকিয়ে থাকে। যে সম্পর্ক হয়তো রক্তের নয় কিন্তু বেশ ভালো মজবুত একটা সম্পর্ক। যে সম্পর্ক হঠাৎ করেই কেমন নিস্প্রভ হয়ে যায় নিজে নিজেই। হ্যাঁ, সেই ঠাণ্ডা ঘরে চলে যাওয়া একটা শীতল সম্পর্ক কেমন করে যেন পাহাড় পর্বত ডিঙিয়ে নানা বাধা টপকে আজ এই দশমীর মন কেমন করা সন্ধ্যায় শুভ বিজয়ার মেসেজ এলো আমার ফোনে। সেই ঠাণ্ডা ঘরে চলে যাওয়া সেই জং ধরা সম্পর্ক থেকে। 

বেশ অবাক হলাম আমি এই মেসেজটা পেয়ে। এই শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে সত্যিই একটু অবাক হলাম আজ। খুব আবেগ প্রবন মানুষ আমি তাই বেশ ভালো লাগলো আমার এই শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা মেসেজ পেয়ে। এই যে চেনা, খুব চেনা মানুষের হঠাৎ করেই অচেনা হয়ে যাওয়া। ক্ষমতার মসনদে বসে আর কিছুটা আত্মগর্বে গর্বিত হয়ে। তাই এমন একজন অতি ক্ষমতাবান মানুষ যাঁর হাতের মুঠোয় সব। সে আমার মত অতি সাধারণ মানুষকে কেনই বা এটা করবে দেবে এই মেসেজ। কেনো আমায় মনে রেখে শুভেচ্ছা বিনিময় করবে সে। আমার সাথে তো কোনো লেনা আর দেনা নেই তার আর। সেই বিখ্যাত বাংলার এই বিশেষ সাংবাদিক এর এই শুভ বিজয়া মেসেজ পেয়েই তাই আমি লিখতে বসে গেলাম আজ এই রাত দুপুরে। আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। যে কথা আমার নিজের জীবনের কথা, অনুভূতির কথা। 

হ্যাঁ, যার কথা আমি লিখতে বসেছি সেই এক সময়ের সেই ইটিভি বাংলার বিখ্যাত প্রতিনিধি। ইটিভির জেলার বস হয়ে ইটিভির সেই সর্বময় কর্তা সিদ্ধার্থ সরকারের কাছের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে যাওয়া। আর বর্তমানে চোখে চোখ রেখে কথা বলা চ্যানেলের সিনিয়র এডিটর সেই বিখ্যাত সাংবাদিক শুভ্রাংশু চট্টোপাধ্যায়। হ্যাঁ যে অনায়াসে হাসতে হাসতে বলতে পারে কাউকে, যে তুমি যদি আমার চ্যানেলে কাজ করতে আসো তাহলে তো তুমি বস হবে দাদা আমার। তাহলে আমার আর বস থাকা যাবে না যে। কি অকপট স্বীকারোক্তি এই বিখ্যাত সাংবাদিকের। 

যে মাঝে অনেক কষ্ট করে ইটিভির কাজ ছেড়ে হায়দরাবাদ থেকে কলকাতার চব্বিশ ঘন্টা চ্যানেলে কলম পেশার কাজ করত বেজার মুখে। তার মতে এই কাজ তাঁর জন্য নয়। যার হাতের তালুর মধ্যে গোটা জেলার খবর বন্দী থাকে সব সময় তাকে দিয়ে কলম পেশানো আর জেলার কপি লেখার কাজ করানো এযে মহাপাপ কাজ। যাঁরা এই কাজ করাচ্ছেন তাঁকে দিয়ে নিশ্চয়ই একদিন এর ফল পাবে। হ্যাঁ, ঠিক কথাই বলেছে সে হাতেনাতে ফল মিলেছে সেই সব মাতব্বরদের।

আসলে সেই সিঙ্গুরে অন্দোলনের সময় নানা ভাবে জেলার ছবি করে ওকে বলে ধরিয়ে দেওয়া ইটিভির সেই পাঁচ মিনিটের খবরে। ভালো কপি লিখে ওর মন কেড়ে নেওয়া। তারপর সেই হায়দরাবাদ বেড়াতে গিয়ে জটাদার বাড়িতে ভাগ্যলতায় বৌদির হাতে ডাল আর পোস্ত নয় পোস্তু খাবার জন্য ওর আবদার করা। এগুলো যে আজও মনে পড়ে যায় আমার এই রাতের বেলায়। এমন রাত বিরেতে খবর হলেই কেমন করে দৌড়ে অফিসে গিয়ে সেটাকে সামাল দেওয়া হাসি মুখে। ওর এই খবরময় জীবনটা আমার বেশ ভালই লাগত যে। যার জন্য দুজনের মধ্যে একটা মিষ্টি মধুর সম্পর্ক স্থাপন হয়ে গেছিল কোনো কারণ ছাড়াই, হিসেব না কষেই। 

কিন্তু সব কি আর নিয়ম মেনে চলে। জীবনের পথ কখনো মসৃণ আবার কখনও এবড়ো খেবড়ো হয়। আর তাই সেই উঁচু নিচু রাস্তায় হাঁটতে নেমে আমার আর সেই শুভ্রাংশুর সেই মিষ্টি মধুর হাসির সম্পর্ক গড়ে ওঠা মানুষটার সাথে কি করে যে দুরত্ব তৈরি হয়ে গেলো কে জানে। যে দুরত্ব কমলো না বেড়েই গেলো তো দিনদিন। সেই ওর রাত পর্যন্ত আমায় জেলার কাজ দেবে বলে ইন্টারভিউ হবে বলে বসিয়ে রাখা। সেই গঙ্গা পেরিয়ে শ্রীরামপুর থেকে ব্যারাকপুরে স্ট্রিংগার এর কাজ করতে বলে নানা রকম কথা বলে খুব কম টাকার কাজ এর কথা বলা ইনিয়ে বিনিয়ে। তারপর সেই কম টাকার কাজ করবো বলে আমি রাজি হয়ে যাওয়ায়, তারপর সেটাকেও নাকচ করে দেওয়া। এমন হাজারো উদাহরণ ছড়িয়ে আছে আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায়।

 সত্যিই বোধহয় ক্ষমতা আর পদ মানুষকে নতুন করে নিজেকে গড়ে তুলতে সাহায্য করে কিছুটা। যার জন্য বোধহয় চেনা টুকরো মুখ, চেনা মানুষ কেমন করে যে অচেনা হয়ে যায় আমাদের মত সাধারণ মানুষের কাছে কে জানে এই এক জীবনে। আর তাই আমাদের সবার সেই চেনা হাসিমুখের শুভ্রাংশু, সেই দাদা বলে এডিটর এর ঘরে ঢুকে নিজের সুখ দুঃখের কথা আর অফিসের বড়ো চেহারার মাতব্বরদের অত্যাচার আর চাপ দেবার কাহিনী বলে সহানুভুতি আদায় করে নেওয়া শুভ্রাংশু। 

পূজোর সময় সুন্দর সাদা দামী জামা আদায় করে নেওয়া এডিটর এর কাছ থেকে সেই শুভ্রাংশু। তার কাছ থেকেই আচমকা অনেক বড়ো পাঁচিল টপকে চলে এলো একটা মেসেজ। শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা। আজ কিছুটা অভিভূত হলাম আমি ওর এই মেসেজ পেয়ে। সেই যে রাতের বেলায় ডিউটি সেরে বাড়ি যাবার জন্য রাত এগারোটায় মোকামা প্যাসেঞ্জার ধরা ওর। ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে দৌড়ে কোনরকমে ছেলের টানে ওর ঘরে ফেরা। এসব কথাই যে আমি জানতাম। ওর সেই রাতের সঙ্গী ছিলাম আমিও অফিস ফেরতা।

ওর কথায় দাদা আমাদের বাড়ির সবাই কিন্তু রেল এ কাজ করে। একমাত্র আমি শুধু সাংবাদিক হবো বলে দাদা এই টাইপিস্ট এর কাজ করছি দাদা। এটা আমার কাজ দাদা তুমি বলো। এমন একরাশ হতাশা, দুঃখ আর বিরক্তি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা বলতো আমায় সে চব্বিশ ঘণ্টার অফিসে বসে। যে কাজ তার করার কথা নয় সেই কাজ তাকে কেমন জোর করে করাচ্ছেন ওই সব মাতব্বর এর দল। এমন অভিযোগ নিয়েই তার ডেস্ক এর জীবন কাটত। সেই চব্বিশ ঘণ্টার বিখ্যাত লিড আউটপুট যে শুধু এডিটর এর একনম্বর লোক হবার সুবাদে। তাকে বাড়ী যাবার দিন ছেলের কাছে ছুটে যাবার দিন তাকে জোর করে এমন শিফট এর কাজ দিত, ডিউটি দিত যাতে সে বাড়ী পৌঁছবার ট্রেন না পায় রাতে। এমন হাজারো অভিযোগ নিয়েই তার দিন কেটে যেতো যে চব্বিশ ঘণ্টার কাজের জীবনে। 

আর আজ সেই শুভ্রাংশু চ্যাটার্জী আবার আমায় সব বাধা টপকে,পাঁচিল ঘেরা ঝোপ ঝাড়, জঙ্গল কাঁটা গাছ পেরিয়ে, বন্ধ হয়ে যাওয়া সম্পর্কের বন্ধনকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে কেমন অনায়াসে নিশ্চিন্তে হাসতে হাসতে শুভ বিজয়ার মেসেজ দিয়ে দিলো হঠাৎ করেই। যে মেসেজ পেয়ে আমিও কেমন অমনি গলে জল হয়ে গেলাম একদম। কই আমি তো পারলাম না এমন বন্ধ হয়ে যাওয়া সম্পর্কের দরজায় হঠাৎ করেই কড়া নাড়তে। কাউকে মেসেজ দিয়ে বলতে শুভ বিজয়া। 

কে জানে আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় তাই আজ এই ওর কথাই লিখে ফেললাম আমি। যে অকথিত কথা আরও হয়তো লেখা যেতো কিন্তু না আজ থাক। ওর সেই বদলে যাওয়া মুখ  নয়, ওর সেই পুরনো মুখের হাসি, চোখের চাওনি, সেই মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়ানোর গল্প, সেই ওর পান্তা ভাতে পেয়াঁজ দিয়ে খাওয়ার গল্প, ওর বাড়িতে গাছ বসানোর গল্প, ওর বাড়ির গল্প, ওর বাবার গল্প শুনতে যে বেশ ভালো লাগতো আমার। কেনো যে এমন মেঠো সম্পর্ক অমন কোর্ট প্যান্ট পরে বদলে গেলো একদিন হঠাৎ করে কে জানে। শুভ বিজয়া শুভ্রাংশু বাবু। আপনি ভালো থাকবেন। 

জং ধরা সম্পর্ক ও শুভ বিজয়া মেসেজ -
অভিজিৎ বসু।
চোদ্দ অক্টোবর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...