সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

উঁচু আর নিচু

জীবনে নিচে নামা ও ওপরে ওঠা এই দুই এর মধ্যে বেশ একটা মজার ব্যাপার আছে। হ্যাঁ, সেই দেওয়ালির রাতে হাউই এর মত আকাশে হুশ করে একেবারে অনেক, অনেকটা ওপরে উঠে যাওয়া সবাইকে ছাড়িয়ে। আর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা সবার কেমন অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গোল গোল চোখে তাকিয়ে থাকা ওই ওপরে ওঠা মানুষটার দিকে। কিন্তু যারা দ্রুতই ধীরে ধীরে নিচে নেমে যায়। আসতে আসতে কাদায় যাদের পা ঢুকে যায়। যাঁরা বহুকাল ধরে চেষ্টা করেও কিছুতেই ওপরে ওঠার চেষ্টা করেও সিঁড়ি খুঁজেই পায় না কিছুতেই। ব্যর্থ হয়ে ঘুরে বেড়ায় এদিক ওদিক। 


 আর তাদের এই অবস্থা দেখে আশপাশের সব চেনা লোকজন দুর থেকে ফিসফিস করে। আর সেই নিচে পরে থাকা লোকটার দিকে চোখে চোখ পড়লেই, চোখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে চলে যায় তারা আনমনে আপনমনে কিছুটা ইচ্ছা করেই। কারণ এরা যে নিচে নেমে গেছে অনেকটাই। হ্যাঁ, হঠাৎ আমার খুব পরিচিত একজনের কথা শুনে আমার মনে হলো এই ওপরে ওঠা আর নিচে নেমে যাওয়া নিয়ে কিছু লিখতে হবে। যে আমায় এই কথা বলছে সে নিচে নেমে গেছে নাকি হঠাৎ করেই অনেক নিচে। সবাই আগে যেমন তাকে বেশ সম্ভ্রমের চোখে দেখত এখন সেটা বেশ বদলে গেছে। কেমন একটা করুণা আর তাছিল্য সেই দৃষ্টিতে। 


কিন্তু না, আমার মনে হয় সে নেমে যায়নি কিছুতেই। সে যেখানে ছিল সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। যাঁরা তাকে ভাবছে নেমে গেছে আসলে তো নেমে গেছে তারাই অনেকটা। তাদের  নিজেদের অবস্থান বদলে, তাদের অল্প কিছু নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে কিছুটা হলেও বাঁচার জন্য এডজাস্ট করে বদলে গেছে যে তারাই অনেকটা। আর তাই যারা দ্রুত নিজেদেরকে বদলে নিয়েছে গিরগিটির মতই। এই সমাজে শুধু একটু ভেসে থাকার জন্য, আর কটা টাকার জন্য। আসলে যে তারাই দ্রুত অতি দ্রুত গতিতে নিচে নেমে গিয়ে অন্যদের দিকে আঙুল তুলে বলছে একি কথা তুমি টোটো চালিয়ে ঘুরে বেড়াও। আগে তুমি ওই কোন চ্যানেলের বুম হাতে ঘুরতে না রাস্তায়। এখন লজ্জা করে না এই ভাবে বাঁচতে। 

এখন টোটো চালক বলে চাকরি ছেড়ে রাস্তায় বসে কঙ্কালীতলা হাটে গাছের নিচে বসে দশ টাকার জিনিস বিক্রি করো। ছিঃ ছিঃ কি লজ্জার বিষয় বলতো এটা। কেনো যে একটু এডজাস্ট করে একটু শিরদাঁড়ার নিচে স্ক্রু দুটো টাইট দিয়ে দিলেই তো দিব্যি চলে যেতো তাহলে আর এই অবস্থায় পড়তে হতো না যে তোমার। পরিবারকে ভাত দিতে পারতে দুটো টাকা আসতো ঘরে। কেউ পাগল না হলে ওপর থেকে সব কিছু পেয়েও সব ছেড়ে দিয়ে রাস্তায় ঘুরে মাটিতে বসে পড়ে দশ টাকার জিনিস বিক্রি করতে রাস্তায়। কেউ বাঁচার জন্য চেনা লোকদের সামনে থেকে খবর না করে খাবার এনে পৌঁছে দেয় অন্যের ঘরে ঘরে। কেউ সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘড়ি ধরে দৌড়ে যায় কারখানায় কাজ করবে বলে। 


আসলে যদি হঠাৎ করেই কেউ চিকিৎসক থেকে রিক্সা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে তার যেমন অবস্থা হবে। ঠিক তেমনি তফাৎ হলো এই ওপরে উঠে যাওয়া লোকদের সঙ্গে নিচে নেমে যাওয়া লোকদের। যে পার্থক্য একটা খাতায় কলমে হয়েই যায়। কিন্তু তাতে কি জীবন কাটিয়ে দেওয়ার জন্য খুব বেশি কিছুর ফারাক মনে হয়। জীবন তো তার নিজের নিয়মে, নিজের গতিতেই  এগিয়ে চলে। কে শিরদাঁড়ার নিচে স্ক্রু টাইট দিয়ে জীবন ধারণ করবে। হাসি হাসি মুখ করে দাঁড়িয়ে থেকে অপমানিত হয়েও ওপরে উঠে অন্যদের টাটা করবে। আর বলবে দেখ কেমন লাগে। সেটা তো তার নিজের ব্যাপার। 


তাই হাতজোড় করে, পা ধরে, গাল শুনে, স্ক্রু টাইট করে বাঁচা যদি ওপরে উঠে যাওয়া হয় সেটা দরকার নেই আমার। আমার এই সবুজ মাঠ, বৃষ্টি ভেজা সকাল, সেই কঙ্কালীতলা হাট এর মাঝে সবাই মিলে বসে থাকা। সেই চেনা রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে হাটে যাওয়া, সেই তাল গাছ তলায় দাঁড়িয়ে তাল তুলে ব্যাগে ভরে আনন্দে নেচে নেচে ঘরে ফেরা।সেই অচেনা অজানা লোকের কাছে শুনতে পাওয়া কাকা, অনেকদিন পর হাটে এলেন শীতকাল পড়লে একটু বেচা কেনা হবে মনে হয় এখানে। এদের তো ওপরে ওঠার কোনো তাড়া নেই। নিচে মাটির গন্ধ মেখে প্রজাপতি ডানার ঝাপটা খেয়ে এরা সব বেশ দিব্যি  মাটিতেই বসে আছে। কোনো ক্ষোভ, কোনো কষ্ট, যন্ত্রণা, দুঃখ, অভিমান, অপমান কিছুই যে নেই তাদের। শুধু হাসি মুখেই দিন যাপন করা। ওপরে উঠে নয়, নিচু হয়েই। 

মনে পড়ে গেলো আমার সেই নেদারল্যান্ড দেশ এর কথা। যার আর এক নাম হল্যান্ড। উত্তর পশ্চিম ইউরোপের একটি ছোট রাষ্ট্র। যদিও হল্যান্ড হলো নেদারল্যান্ডসের একটি অঙ্গ রাজ্য। ভাবছেন এই উঁচু আর নিচু লিখতে বসে কেনো এই দেশের নাম আসছে।  বলছি আমি সেই কথা, নেদারল্যান্ডস কথার আক্ষরিক অর্থ হলো নিম্নভূমি। এই দেশের কোথাও খুব উঁচু পাহাড় নেই একটাও। একটি টিলা আছে যার উচ্চতা মাত্র ৩২২ মিটার। যে টিলার নাম ভালসবেয়ার। একেই ওরা পাহাড় বলে। ঠিক যেনো একটা ফ্ল্যাট কান্ট্রি, আর ফ্ল্যাট মেন্টালিটি নিয়ে বেঁচে থাকা একটি সুখের আর স্বপ্নের দেশ। 


আপনার অঢেল সম্পদ অর্থ বিত্ত থাকতেই পারে কিন্তু সেই বিত্ত প্রদর্শন করলে সেখানকার মানুষ সেটা পছন্দ করে না একদম।  ২০১৭ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সুখ প্রতিবেদনে বিশ্বের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ সুখী দেশের মর্যাদা  দেওয়া হয় এই দেশকে। যা এই দেশের জীবনযাত্রার উচ্চমানের একটা প্রতিফলন। আর ২০১৮ সালে উন্নততর জীবন সূচক অনুযায়ী নেদারল্যান্ডস বিশ্বের প্রথম স্থান অধিকারী একটি দেশ কাজ - জীবন ভারসাম্যের বিচারে। 

যে দেশে একটাই কথা সবাই মনে করে সাধারণ থাকো। তুমি অতি সাধারণ থাকো। সে তুমি যে কাজই করো সেটা কিছুতেই কিন্তু ছোটো কাজ নয়। আর বিত্তশালী হলেও উঁচু নিচু ভেদাভেদ ভুলে একসাথে বাস করো সবাই মিলেমিশে। তাহলে যে আমায় বললো, এই উঁচু আর নিচুর কথা। দাদা আমরা নিচু আর ওরা হলো  উঁচু। জীবনের এই উঁচু আর নিচু এই কথা ভুলে কেমন সুখেই তো আছে নেদারল্যান্ডসের সেই সুখী মানুষরা। যাঁরা উঁচু নিচু কোনো ভেদ না করেই দিব্যি সুখেই বেঁচে আছে একে ওপরে হাসিমুখে।

 তাহলে আর আমাদের এই কথা ভেবে লাভ কি। ওরা উঁচু আর আমরা নিচু। এই মাটির গন্ধ মাখা জীবন, ভোররাতে ঝিঁঝিঁর অবিরাম ডাক, হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিস ফিস শব্দ, আর এই কার্তিক মাসের ভোরবেলায় পশ্চিম আকাশে মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা চাঁদের নরম এলোমেলো আলোকে বুকে আঁকড়ে আমরা না হয় নিচু হয়েই বেঁচে থাকার চেষ্টা করি এই ধূলিধুসর  সমাজে। ওই উঁচু, অনেক উঁচু মানুষদের ভীড়ে আমরা না হয় গুটিকয় মানুষ একটু নিচু হয়েই বেঁচে থাকি।

উঁচু আর নিচু - অভিজিৎ বসু।
পঁচিশে অক্টোবর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্যে গুগল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...