কিছু কিছু মানুষের হাসি মাখা মুখটা মনে পড়লেই কেমন মনটা ভালো হয়ে যায় যেনো এই পৌষের কুয়াশা মাখা সকাল বেলায়। কতদিন যে সামনাসামনি দেখা হয়নি তার সাথে। কতদিন যে একসাথে পথ হাঁটা হয়নি আর। কতদিন যে গলা শোনা হয়নি তার। কি রে কি খবর তোর। এই বলেই পিঠের ওপর হাতটা নিয়ে চাপড়ে দেওয়া। ভাবটা এমন ভয় নেই কোনও তোর কাজ করে যা তুই।
হ্যাঁ, যে প্রথম আমায় ভোটের সময় ইটিভির জেলা থেকে কলকাতায় ডিউটির সময় কলকাতা অফিসে সারাদিন বসিয়ে না রেখে কলকাতা শহরে প্রথম লাইভ করার সুযোগ করে দেয়। সেই হায়দরাবাদ থেকে আসা বড়ো ওবি ভ্যান দিয়ে বলে যা লাইভ করে আয় তুই। যদিও ভোটের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব পালন করা আশপাশের কর্তা ব্যক্তিরা সেটা শুনে খুব একটা খুশি হয়নি সেই দিন। কারণ হয়তো আমি দেখতে খারাপ বলে। কিন্তু কিছু বলতেও পারেনি তার মুখের ওপর। সেই দক্ষিণ কলকাতায় তথাগত রায়কে নিজে বলে দিয়ে এক ভোটকেন্দ্র থেকে লাইভ করানো। সালটা ২০০২ হবে বোধহয় খুব সম্ভবত।
সেই জেনারেটর দিয়ে ওবি চলা। রাস্তায় কালীঘাট থানার পুলিশের এসে বলা গাড়ি দাঁড় করানো যাবে না এইভাবে। আর তার মাঝেই ধুতি পরে সাদা গাড়ী করে বিজেপির নেতা তথাগত রায়ের এসে হাজির হয়ে যাওয়া। আর আমার টেনশন হলেও প্রথম জীবনের লাইভ করা যা দেখানো হলো ইটিভি বাংলার নেটওয়ার্কে। অফিস ফিরে আসতেই জড়িয়ে ধরে সবার সামনে হায়দরাবাদ এর লোকদের সামনে বলা আরে অভিজিৎ তুই তো ফাটিয়ে দিলি ভাই। হ্যাঁ, সেই আমাদের সবার পরিচিত মাটির গন্ধ মাখা এক সহজ সরল জীবন যাপন করা এক সাংবাদিক রবিশঙ্কর দত্ত। সেই সবার রবিদা। আজ সাদা জীবনের কালো কথায় সেই রবিদার কথা।
কিছু কিছু মানুষ বোধহয় এমন হয় অন্যকে ঠেলে কাজে এগিয়ে দিয়ে সেই লোকটার কাছ থেকে সেরা কাজটা আদায় করে নিয়ে তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে কেমন হাসি মুখে বলে বাহ দারুন ফাটিয়ে দিলি ভাই তুই। আর সেই জেলা থেকে আসা মানুষটাকে বুঝিয়ে দেওয়া তাকে দিয়েই কাজ করা যায়। যা অন্যরা এই ভাবে নিজেদের পছন্দের রিপোর্টারদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে শুধুমাত্র পিঠ চাপড়ে তাকে প্রজেক্ট করে। আর এক্ষেত্রে সেই না পারা মানুষটাকে দিয়ে কাজ করিয়ে সবার সামনে তাকে যোগ্য বলে প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া। এটাই বোধহয় একজন ভালো বস এর গুণ। নিজের লোক নয়, নিজের দল বা গোষ্ঠীর লোক নয় কাজের লোক। যেটা মাথায় নিয়ে চলতো রবিদা। আজ সেটাই আর দেখা যায়না কোথাও।
সেই কতদিন আগে সেক্টর ফাইভের সেই বাসস্ট্যান্ড এর পাশে রাস্তায় দেখলাম দাঁড়িয়ে আছে রবিদা। বাস ধরে ধর্মতলা যাবে অফিস। ভীড় বাস বললো কি রে কি খবর তোর। বললাম চলে যাচ্ছে। মনে পড়ে গেলো সেই এবেলার চাকরির সময় ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া। সেই মধুমিতা দিকে বলে দেবো বলে আশ্বাস দেওয়া আমায় যদিও পরে আমার সেই চাকরি হয়নি হয়তো দেখতে ভালো নয় বলেই এবেলায়। হয়তো বাংলার সেরা সাংবাদিক এর আমায় দেখে পছন্দ হয়নি বলেই। সে কথা আজ থাক পরে বলবো আমি একদিন।
সেই একবার ইলেকট্রনিক মিডিয়া, একবার প্রিন্ট মিডিয়া এইভাবেই এদিক ওদিক করে ধীরে সুস্থে প্রিন্ট মিডিয়াতে আটকে পরা। সেই তপন শিকদারের প্রিয় সাংবাদিক হয়েও, সেই কত যে নানা ধরনের খবর করা বিজেপির বিরূদ্ধে। সেই বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমুল, সিপিএমের সব রাজনীতির দলের নেতাদের কাছেই গ্রহণযোগ্য এই হাসিমুখের সাংবাদিক। কিন্তু তার জন্য কোনোদিন কোনোভাবেই যে নিজের চারপাশে একটা শনির বলয় করে রেখে দিয়েছে। কাউকে সেই বৃত্তে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়।
আর এটাই বোধহয় রবিদার স্বাভাবিক প্রকৃতি। সাদা বাড়িতে কাজ করেও কেমন একটা সহজ হাসিখুশি মন নিয়েই বেঁচে থাকা মাটির কাছে মাটির গন্ধ মেখে হাসি মুখে। হয়তো আরও দু চার কথা লেখা যেতো। হয়তো আরও কিছু বলা যেতো। সেসব না হয় দেখা হলেই কথা হবে সামনে থেকে। তুমি হেসে বলবে কি যে করিস না তুই অভিজিৎ। মাথা ঠাণ্ডা রেখে চল তুই। আমি চুপ করে শুনবো তোমার কথা আমার এলোমেলো এলে বেলে জীবনকে সঙ্গে নিয়ে। ভালো থেকো তুমি রবি দা।
ইটিভির রবি দা - অভিজিৎ বসু।
চব্বিশ ডিসেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন