আজ বিশ্ব বয়ফ্রেন্ড দিবস। দিনের আর শেষ নেই। প্রতি বছর এই অক্টোবর মাসের তিন তারিখ হলো বিশ্ব বয়ফ্রেন্ড দিবস। অন্য আর পাঁচটা দিনের থেকে একটু আলাদা একটা দিন। যে বিশেষ দিনটি পালিত হচ্ছে প্রেমিকদের জন্য। 2014 সাল থেকে এই বিশেষ দিনটি পালন করা শুরু হয় সারা বিশ্ব জুড়ে। যদিও দু বছর পর থেকে 2016 সাল থেকে এই বিশেষ দিনটি জনপ্রিয় হয়। বর্তমানে সারা বিশ্ব জুড়েই এই দিনটি বেশ হৈ হৈ করে পালন করা হয়।
একদম প্রেমের, ভালবাসার মানুষের সাথে আনন্দে কাটানো একটা মজার দিন। গোলাপ দিবস, ভ্যালেন্টাইন দিবস, হাগ দিবস, চকলেট দিবস, প্রেম দিবস এমন নানা দিনের মাঝে বয়ফ্রেন্ডের জন্য একটা গোটা দিবস আর কি চাই বলুন তো। আগে তো এত দিন পালন এর হিড়িক ছিল না জীবনে। প্রেমের ঢেউ যে সে সময় বুকের মাঝে ধাক্কা মারতো না সেটা কিন্তু নয়। গতানুগতিক ধারা মেনে লুকিয়ে চুরিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে একটু রাস্তার পাশে দেখা করে বা গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে একটু কথা বলে মনের তৃপ্তি লাভ আর কি। তার মাঝে হাজারো মানুষের ভীড় উপচে পড়ছে এদিক ওদিক থেকে। এই ভাবেই চলে যেতো প্রেমে পড়া যুগলের দিন যাপন।
সেখানে আবার এই বয়ফ্রেন্ড দিবস, গার্ল ফ্রেন্ড দিবস এর কোনো দিন গণনার বিষয় সমূহ ছিলই না বলা যায়। কোনো ভাবে লুকিয়ে চুরিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে একটু প্রেমের বাতাস নিয়ে ঘরে ফিরে আসা প্রেমিক আর প্রেমিকার। আর বাড়ি ফিরেই আবার নানা প্রশ্ন আর জিজ্ঞাসার সামনে পড়া দুজনকেই। এই তো ছিল আদ্যিকালের সেই পাঁশুটে প্রেমের নানা বহর। আজ কাল যদিও জীবনের আপডেট ভার্সান এর যুগে আমরা দ্রুত বদলে গেছি। বদলে গেছে আমাদের জীবন যাত্রা। বদলে গেছে আমাদের জীবনের প্রেম ভালোবাসাও। হাতে হাত ধরে ছেলের বাড়ী থেকে সেজে গুজে মেয়ের হাসি মুখে ঘুরতে যাওয়া বিয়ের অনুষ্ঠান এর আগে সেটা কোনো ব্যাপারই নয় আজকাল। আবার বিয়ের আগে মেয়ের বাড়ী এসে ছেলের সারাদিন কাটিয়ে হাসি ঠাট্টায় মসগুল হয়ে দিন কাটিয়ে যাওয়ায় কোনো সমস্যার নয়।
কারণ আমরা সবাই আপডেটেড ভার্সন এর মানুষ, প্রেমিক, প্রেমিকা থেকে শুরু করে ভিন্ন ধরনের ভিন্ন গোত্রের মানুষ। যারা জানি ভালবাসাকে চেটেপুটে গিলে খেতে হয় এইভাবেই নানা দিন যাপনের মধ্য দিয়ে। জীবনকে উপভোগ করতে হয় এইভাবেই। আর সেটা না পারলে তুমি আসলে ব্যাকডেটেড একজন মানুষ। সে ভালো প্রেমিক বা প্রেমিকা যাই হও তুমি।
বিশ্ব বয়ফ্রেন্ড দিবস এর দিন আমার মনে পড়ে গেলো এই আমাদের সময় এর ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলা দুই প্রেমিক আর প্রেমিকার কথা। হ্যাঁ সেই পিয়াস আর মৌসুমীর কথা। ওদের সাথে কলেজে পড়তে গিয়ে আমার আলাপ হয়। ওদের দুজনের মধ্যে এই সমঝোতা, ভালোবাসা, গভীর গোপন ভালোবাসার সম্পর্কের বন্ধন দেখে বেশ ভালো লাগতো আমার। একে অপরের পরিপূরক হয়ে বেঁচে থাকত ওরা।
আসলে দিন যাপন হোক বা না হোক ভালোবাসার স্পর্শ গভীর গোপন চিনচিনে ব্যাথা তো বুকের মাঝে চেপে বসেই থাকে। যে সম্পর্ক রক্তের না হলেও কেমন করে যে বুকের মাঝে জড়িয়ে যায়। কেমন করে কে যে সেই চিনচিনে ব্যাথাটা সারা শরীরে মনে ছড়িয়ে পড়ে কে জানে। আজ এই বিশ্ব বয় ফ্রেন্ড দিবস এর দিনে আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে সে কথাই লিখতে ইচ্ছা হলো। শুধু কি দিন যাপন করেই বুকের মাঝে জড়োয়ার বাক্সের মত টিকে থাকে ভালোবাসার সোনার পাথর বাটি। নাকি এমনি করেই হাসি মুখে একে অপরকে আঁকড়ে জড়িয়ে ধরে কষ্ট করেও বেঁচে থাকে ভালোবাসার কম দামের সরু পলকা হারের চেন।
কে জানে হয়তো আমরা ব্যাকডেটেড সব মানুষ তাই তো আজ এই দিনটা বিশ্বের প্রেমের দরবারে হৈ চৈ করে হাজির হয়েছে মাথা উঁচু করে। সদর্পে আর সগর্বে। কোনো লুকিয়ে চুরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে ঘুরে কে কোথায় আছে দেখে নয় একদম সটান বয় ফ্রেন্ডের হাতকে বুকের মাঝে ধরে দিন পালন করে ছবি তুলে ধরে রাখা। সোস্যাল মিডিয়ায় ভরে উঠেছে নানা মজার সব কথা। এই দিন পালন নিয়ে নানা মিম ছড়িয়ে পড়ছে দিকে দিকে।
কিন্তু এসবের মাঝেও যে বেঁচে থাকে নানা গভীর গোপন হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা। যে ভালবাসা বুকে নিয়ে আজও কেউ কেউ একা একাই দিন যাপন করে এই পৃথিবীতে। আবার কেউ দুজন মিলে বুড়ো হয়ে ভাবে নাই বা থাকলো দিবস পালন। নাই বা হলো হৈ হুল্লোড় করে ভালোবাসার সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ। যা একান্তই ব্যক্তিগত নিজের সেটা না হয় তাদের কাছেই লুকিয়ে থাক। এইভাবেই না হয় কেটে যাক ভালো বাসার দুই জীবনের ভালোবাসার সফরনামার এই
জীবন গাড়ি। যে গাড়ি গড়গড়িয়ে চলে একে অপরের হাত ধরে হাজার দুঃখ কষ্টকে ঝড় ঝাপটাকে সামলে হাসি মুখে।
বিশ্ব বয়ফ্রেন্ড দিবস - অভিজিৎ বসু।
তেসরা অক্টোবর,দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য গুগল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন