সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নব দুর্গার অন্যতম দেবী কালরাত্রি

নব দুর্গার অন্যতম রূপ হলেন শক্তির দেবী কালরাত্রি।
কালরাত্রি একজন হিন্দু দেবী। তিনি নবদুর্গার অন্যতম এবং দেবী দুর্গার সপ্তম শক্তি বলে তাঁকে পূজো করা হয়। দেবী কালরাত্রির আবাস কৈলাস পর্বত। দেবীর বাহন হলো গর্দভ আর সঙ্গী দেবাদিদেব শিব। কাল রাত্রি ভীষণদর্শনা দেবী। তার গায়ের রং ঘন অন্ধকারের মতো কালো। তিনি এলোকেশিণী। তার গলায় বজ্রের মালা দোলে। তিনি ত্রিনয়না এবং তার চোখগুলি ব্রহ্মাণ্ডের মতো গোলাকার। তার নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে ভয়ংকর অগ্নিশিখা নির্গত হয়।

 কালরাত্রির বাহন গর্দভ বা গাধা। তিনি চতুর্ভূজা; তার চার হাতে বর ও অভয়মুদ্রা এবং খড়্গ ও লোহার কাঁটা রয়েছে। কাল রাত্রির রূপ ভয়ংকর হলেও তিনি শুভফলের দেবী। তার অপর নাম শুভঙ্করিণী। কালরাত্রি পূজো করা হয় তাই শুভ ফল লাভের আশায়।

হিন্দুদের বিশ্বাস যে, কালরাত্রি দুষ্টের দমন করেন, গ্রহের বাধা দূর করেন এবং ভক্তদের আগুন, জল, জন্তুজানোয়ার, শত্রু ও রাত্রির ভয় থেকে মুক্ত করেন। তারা বিশ্বাস করেন, কালরাত্রির উপাসক তাকে স্মরণ করলেই দৈত্য, দানব, রাক্ষস, ভূত ও প্রেত পালিয়ে যায়। এই বিশ্বাস নিয়ে মা কালরাত্রির পূজো করা হয়।

কালরাত্রি দুর্গাপূজার সপ্তম দিনে পূজিত হন। শাক্ত শাস্ত্রানুযায়ী, "সেই দিন সাধকের মন সহস্রার চক্রে অবস্থান করে। তাঁর জন্য ব্রহ্মাণ্ডের সকল সিদ্ধির দ্বার অবারিত হয়ে যায়। এই চক্রে অবস্থিত সাধকের মন সম্পূর্ণ ভাবে মাতা কালরাত্রির স্বরূপে অবস্থান করে। তাঁর সাক্ষাৎ পেলে সাধক মহাপুণ্যের ভাগী হন। তাঁর সমস্ত পাপ ও বাধাবিঘ্ন নাশ হয় এবং তিনি অক্ষয় পুণ্যধাম প্রাপ্ত হন।"

নবরাত্রির সপ্তম দিনে দেবী কালরাত্রির পুজো করা হয়। দেবী দুর্গার এই ভীষণ রূপ অনেকটাই অন্যরকম। কালরাত্রির বাহন হল গাধা। তাঁর গলায় ঝুলছে বজ্রের মালা। কালরাত্রির তিন চোখ ও চার হাত। নিশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে অগ্নিশিখা নির্গত করেন এই দেবী।

হিন্দু ধর্ম অনুসারে কালরাত্রি দুষ্টের দমন করেন, গ্রহের বাধা দূর করেন এবং ভক্তদের আগুন, জল, জন্তু জানোয়ার, শত্রু ও রাত্রির ভয় থেকে মুক্ত করেন।
কাজলের মতো ঘোর কালো এই দেবীর গাত্রবর্ণ। পুরাণ অনুসারে দুই রাক্ষস শুম্ভ ও নিশুম্ভ এবং তাঁদের দৈত্যসেনাকে দেখে অত্যন্ত ক্র‌ুদ্ধ হয়ে ওঠেন দেবী দুর্গা। তখন এই ভয়ানক রূপ ধারণ করেন তিনি। সেই রূপ হলো মা দুর্গার কালরাত্রি রূপ।

দেবী কালরাত্রির চারটি হাত। ওপরের ডান হাতে আশীর্বাদ, নীচের ডান হাতে অভয় মুদ্রা। বাঁ দিকে ওপরের হাতে খড়গ এবং নীচের বাম হাতে রয়েছে লোহার কাঁটা। দেবী ত্রিনয়নী এবং তাঁর চোখগুলি ব্রহ্মাণ্ডের মতো গোলাকার। দেবী কালরাত্রির চুল খোলা এবং গলায় বজ্রের মালা। এই দেবী গাধার ওপর আসীন এবং তাঁর নিশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে ভয়ংকর অগ্নিশিখা নির্গত হয়। কালরাত্রির রূপ ভয়ংকর হলেও তিনি শুভফলের দেবী। তাই তাঁর অপর নাম শুভঙ্করী।

  
হিন্দু ধর্ম অনুসারে কালরাত্রি দুষ্টের দমন করেন, গ্রহের বাধা দূর করেন এবং ভক্তদের আগুন, জল, জন্তু জানোয়ার, শত্রু ও রাত্রির ভয় থেকে মুক্ত করেন। ভক্তেরা বিশ্বাস করেন যে, যিনি কালরাত্রির উপাসক তাকে স্মরণ করলেই দৈত্য, দানব, রাক্ষস, ভূত ও প্রেত পালিয়ে যায়। কালরাত্রি নবরাত্রির সপ্তম দিনে পূজিতা হন। শাক্ত শাস্ত্রানুযায়ী, "সেই দিন সাধকের মন সহস্রার চক্রে অবস্থান করে। তাঁর জন্য ব্রহ্মাণ্ডের সকল সিদ্ধির দ্বার অবারিত হয়ে যায়। এই চক্রে অবস্থিত সাধকের মন সম্পূর্ণ ভাবে মাতা কালরাত্রির স্বরূপে অবস্থান করে। তাঁর সাক্ষাৎ পেলে সাধক মহাপুণ্যের ভাগী হন। তাঁর সমস্ত পাপ ও বাধা বিঘ্ন নাশ হয় এবং তিনি অক্ষয় পুণ্যধাম প্রাপ্ত হন।"

ভক্তদের দর্শন দিতে নবরাত্রিতে নাকি নিজেই আসেন দেবী। ভগবত্‍ পুরাণ অনুসারে দেবী কালরাত্রি চণ্ড ও মুণ্ডর চুলের মুঠি ধরে তা ধড় থেকে আলাদা করে দেন। চণ্ড ও মুণ্ডের হত্যা করার জন্য দেবী কালরাত্রি আর এক নাম চামুণ্ডা নামেও পরিচিত। কালরাত্রির পুজোয় অবশ্যই ভোগ হিসেবে ক্ষীর ও খিচুড়ি নিবেদন করতেই হয়। এই দেবীর প্রিয় ফুল হল রক্তজবা। ১০৮টি জবা ফুল দিয়ে গাঁথা মালা দেবীর চরণে অর্পণ করতে হয়। তাহলে সব বাধা বিঘ্ন কেটে যায়। জয় মা কালরাত্রি জয়। 

নবদুর্গা শক্তির দেবী কালরাত্রি - অভিজিৎ বসু।
নয় অক্টোবর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য গুগল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...