সাদা জীবনের কালো কথায় এক বাংলা টিভি মিডিয়ার বিরাট কোহলি আর ভিভিয়ান রিচার্ডস, এর মিশ্রণে তৈরি এক আদ্যন্ত হার্ডকোর রিপোর্টার এর কথা। যে রিপোর্টারকে শুধু মাত্র একটা খবরের লিড বা সূত্র দিলেই যে মাকড়সার মতো জাল বিছিয়ে খবর যোগাড় করতে যে সিদ্ধহস্ত নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আর হাসিমুখে। শুধু স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নয় যে কোনো ইন্সিডেন্ট এর মাঝে, যে বিরাট কোহলি স্টাইলে ব্যাট করে অন্য যে কোনো চ্যানেল এর রিপোর্টারদের কুপোকাত করে হাসি মুখে মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়ে।
সত্যিই বলতে কি একজন টিভি চ্যানেলের রিপোর্টার হিসেবে সন্দীপ সরকার একদম ফিট ব্যক্তি। যাকে নিয়ে কোনো কথাই বলতে পারবে না কোনো বস কোনো ভাবেই কোনো সময়। বস এর অনুগত একজন সৈনিক, সদাই ওর মুখে হাসি লেগে আছে , কোনো কঠিন কাজেও না নেই ওর। যে কোনো সময়, যে কোনো দরকার পড়লে যাকে নির্দ্ধিধায় সব কিছু বলা যায় একটু চিন্তা ভাবনা না করে যে ও কি ভাববে বলবো এটা। এক নম্বর চ্যানেল এর লোক হলেও গুরু গম্ভীর মুখে যে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় না একদম কোনো সময়। আসলে ওর এই সবার সাথে মিশে যাওয়া যে কোনো কাজ দিলে করে দেওয়া এটাই বোধ হয় ওকে অন্যদের থেকে কয়েক কদম এগিয়ে রেখেছে অন্য যে কোনো রিপোর্টার এর থেকে হাজার গুণ।
তাই তো সেই করোনার সময় কারুর বাড়িতে ওর প্রাক্তন বসের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিতে ওর কিছুই মনে হয়নি একটুও। কোনো বিখ্যাত ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে ওর দ্বারস্থ হতে আমার মনে হয়নি যে কি মনে করবে ও। ওকে বলবো এটা করে দেবে একটু আমার বন্ধুর জন্য। অনেকেই হেল্থ বিটের রিপোর্টার হলে ভাবেন আমি কি শুধু ডাক্তার ধরার কল। আবার সেই যে বিখ্যাত দেশপ্রিয় পার্কের মণ্ডপ এর ঠাকুর দেখবো বলে আমি মেয়েকে নিয়ে গিয়ে ওর দ্বারস্থ হলে, ও হাসি মুখে আমার মেয়েকে বাঁশের বেড়া টপকে মেয়েকে নিয়ে হাত ধরে সেই বিরাট ঠাকুর এর সামনে নিয়ে গিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। এটাই হলো আমাদের সেই সন্দীপ সরকার। যে রিপোর্টার হলেও সহজ সরল সাদামাটা একজন মানুষ। যাকে ধরা যায় ছোঁয়া যায় যে কোনো সময়।
আসলে কারুর সম্পর্কে এত ভালো কিছু লিখতে হয় এই লিখতে বসে ভেবে আর বলে শেষ করা যায় না কিছুতেই। যার একটা স্বপ্ন ছিল এক সময় সে এক নম্বর চ্যানেলে কাজ করবে সে। তাই ও যখন দু নম্বর চ্যানেল চব্বিশ ঘন্টা থেকে একনম্বর চ্যানেলে এবিপি আনন্দ গোষ্ঠীতে চলে গেলো আমার মনে হয়েছিল আমি এমন একজনকে হারালাম, যাকে যে কোনো সময় বলা যেতো এই খবরটা হয়েছে একটু যাবে করে দাও কোনো লোক নেই আর আমার হাতে এখন। ও হয়তো হেসে বলতো দাদা বাকি সব কোথায় গেলো কাউকেই তো দেখছি না আর অফিসে। বলে ক্যামেরা আর লাইভ ইউ নিয়ে বেরিয়ে পড়তো হাসিমুখে।
আর এটার জন্য আমি, ও চব্বিশ ঘন্টা ছেড়ে চলে যাবার পর মনে হয়েছিল যে আমরা একটা ভালো স্ট্রাইকারকে হারালাম। যাকে এই খবরের খেলার মাঠে যে কোনো পজিশনে স্বচ্ছন্দে খেলানো যায় নিশ্চিন্তে নিরাপদে আর নির্ভয়ে। যাকে হারিয়ে দু নম্বর চ্যানেলের মাঠটা কেমন ফাঁকা হয়ে গেলো দুম করে। যে কোনো জায়গায় যে কোনো মাঠের কোচ নিশ্চিন্তে নিরাপদে নির্ভয়ে থাকবে যদি ও মাঠে থাকে। সেটাই আমরা হারালাম একদিন। আসলে সবাইকে কি আর ধরে রাখা যায়। আজ মনে হয় ওর সেদিনের সিদ্ধান্ত একদম সঠিক ছিল। না, হলে ওর এই উত্থান উন্নতি দেখা হতো না আমার।
যাকগে সন্দীপ বা টাকলা ওকে এই নামে ওর প্রাক্তন বস ডাকে ওকে। আমিও ওকে ওই নামে না ডাকলেও বলি আমাদের সন্দীপ। এটা বলতে লজ্জা হয় না যেনো আমার কোনোদিন। তবে আমার এই সবার সাথে এডজাস্ট করে চাকরি করতে না পারা নিয়ে ওর সহজ কথা, আচ্ছা সবাই পারে কাজ করতে তুমি পারোনা কেনো কে জানে। তোমার সবার সাথে ঝামেলা হয় কেনো। সত্যিই তো আমি পারিনা কাজ করতে সব জায়গায়। ওর এই জবাব সেদিন দিতে পারিনি আমি ওকে। কিন্তু তবু ওর সাথে সম্পর্কের অবনতি হয়নি কোনোদিন কোনো সময় আজ অবধি। কাজ ছেড়ে, মিডিয়া ছেড়ে চলে গেলেও ওর আর আমার যোগাযোগ আজও রয়ে গেছে সেই একভাবেই।
আসলে কি জানেন সন্দীপ এর কথা বলতে গিয়ে ভীড় করে বহু স্মৃতি। নানা কথা যা হয়ত গুছিয়ে লিখতে পারছি না আমি আজ। তবে সেই যে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এর জেলা সফরে হুগলী জেলাতে গিয়ে আমায় ফোনে যোগাযোগ করা দাদা তুমি কোথায়। আমি তোমার বাড়ির পাশে এসেছি, আছি শ্রীরামপুরে। আমি ওর সাথে গিয়ে দেখা করলাম। ছিল সেই প্রবীর চক্রবর্তী চব্বিশ ঘণ্টার বিখ্যাত তৃণমূল এর বিট রিপোর্টার। কথা হলো দেখা হলো সেই সেলুনে চুল কাটার সময়। একজন বিখ্যাত এক নম্বর চ্যানেল এর রিপোর্টার আর একজন বেকার লোকের সাথে দেখা হলো বহুদিন পরে। ওর আর আমার যে অমলিন সম্পর্ক ছিল সেটা এক রয়ে গেছে দেখে সেদিনও ভালো লাগলো বেশ আমার। আসলে কারুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠলে সেটা বোধহয় এইভাবেই টিকে যায় সে কেউ সাংবাদিক থেকে টোটো চালক হয়ে গেলেও।
ওকে বলেছিলাম একদিন আমিও রাস্তায় নেমে ঘুরে ঘুরে তোমার মত রিপোর্টারি করতে চাই একটু। ও সঙ্গে সঙ্গে আমায় বলেছিল না, তুমি আর পারবে না দাদা। সেদিন খুব রাগ হয়েছিল কিছুটা অভিমানও। তাহলে আমি সত্যিই বাতিল হয়ে গেছি এই মিডিয়াতে মাঠের বাইরে চলে গেছি আমি। আর রাস্তায় নেমে ঘুরে খবর করতে পারবো না কে জানে। হয়তো ঠিক কথাই বলেছে ও। তবু একবার পরীক্ষা দিতে ইচ্ছা করে আমার একান্ত ভাবেই।
সেই যেদিন পোদ্দার কোর্টে কলকাতা টিভিতে কাজ করছি শুনে ও দেখা করতে এলো। সাথে সেই বিখ্যাত সাংবাদিক ঝিলম করঞ্জয়। যার সাথে কথা বলতে গেলে অনেক ভেবে আর ভয় পেয়ে কথা বলতে হয় আমায়। মেপে কথা বলতে হয়। আমরা কালাম এর দোকানে চা খেলাম। দেখা হলো কানাই এর সাথে ক্যামেরাম্যান চব্বিশ ঘণ্টার। ভালো লাগলো বেশ। তিনজনে একটা ছবি তুলে রাখলাম। ও বললো এই এদিকে এসেছিলাম তাই তোমার সাথে দেখা করে গেলাম পোদ্দার কোর্টের অফিসে তুমি আছো তাই। এটাই আমাদের সন্দীপ। তবে ও বেশ কৃপণ স্বভাবের যা নিয়ে ওকে অনেক কিছু বললেও ও হাসি মুখে উড়িয়ে দিয়েছে রাগ না করে যেটা ওর সবথেকে বড়ো গুণ।
যাকে অনেক হিসেব করে নিকেশ করে ভেবে চিন্তে কারুর সাথে দেখা করতে আসতে হয় না। ভাবতে হয় না কেনো যাবো ওর কাছে দেখা করতে। আমি এক নম্বর চ্যানেল এর লোক, আর ওরা তো কোনো নম্বরেই নেই। আসলে ওর এই জীবন দর্শন, এই জীবনের সহজ সরল ভাবে ওর হেঁটে চলে বেড়ানো এটাই বোধহয় ওকে সেরা সাংবাদিক এর পুরষ্কার দিয়েছে ওর এই কর্মকৃতিত্বের জন্য। যে কৃতিত্বের দাবিদার ওরই প্রাপ্য। হয়তো আরও অনেক ঘটনা রয়ে গেছে যা মনে পড়লো না তবু আজ মনে হলো বাংলা টিভি মিডিয়ার এই সহজ সরল বিরাট আর ভিভিয়ান স্টাইলের মিশ্রণের ডাকাবুকো রিপোর্টার এর কথা একটু লিখতে। আমাদের সন্দীপকে একটাই অনুরোধ, তুমি ঠিক এমনই থেকো বদলে যেওনা তুমি। তাহলে আমরা তোমার নাগাল পাবো না।
আমাদের সন্দীপ সরকার - অভিজিৎ বসু।
চৌদ্দ নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন