সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমলকী গাছের বন্ধুত্ব

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ সেই আমলকী গাছের  কথা। যে আমলকী গাছ কে সাক্ষী রেখে আমরা দুজন ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করেছি। সেই আমলকী গাছের বন্ধুত্ব আজ আমাদের এতটা পথ এগিয়ে নিয়ে এলো ধীরে ধীরে কেমন করে কে জানে। সেই করোনা কালে যখন সব জায়গায় ফাঁকা নির্জন রাস্তাঘাট। কথা বলার লোক পাওয়া ভার একদম। সেই সময় আমরা একজন কলকাতায় আর অন্যজন বোলপুরের রতনপল্লীর সেই বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে শুধু গল্প করেই দিন কাটিয়ে দিলাম আর কী। সেই আমলকী গাছের সামনে দাঁড়িয়ে। শুধুই ঘণ্টার পর ঘন্টা গল্প করে। কোনো দেওয়া আর নেওয়ার হিসেব না কষেই।

 আর সেটাই যে থেকে গেলো আজও কেমন করে এতদিন পরেও কে জানে। কেউ কেউ বলেন প্রেমিক বা প্রেমিকা থাকার থেকে একটা ভালো বন্ধু থাকা খুব দরকার এই জীবনে। যার কাছে দিনে, রাতে, দুপুরে সব কিছুই বলা যায় স্বচ্ছন্দে, দ্বিধা দ্বন্দ কাটিয়ে। নিজের সুখ,দুঃখ, রাগ, অভিমান, যন্ত্রণা, ক্ষোভ, বিক্ষোভ আর আনন্দের কথা বলা যায় এক লহমায়। কে কি ভাববে তার হিসেব না করে যখন তখন ফোন করা যায় তাকে। আর সেই দুজনের এই অমলিন সম্পর্কটা দাঁড়িয়ে থাকেনা কোনো স্বার্থের আর দেওয়া নেওয়ার ওপর। কারুর কোনো গোপনীয়তা থাকলেও কেউ সেটা জানতে পেরেও দুঃখ পায়না কিছুতেই। মনে করে না এমন গোপন করলো ও আমায়। কিন্তু সেই বন্ধু আর আছে কোথায় এই হাটে, মাঠে, ঘাটে, আর বাজারে একজন সঠিক বন্ধু মেলা ভার। আজকাল পকেটে রেস্ত থাকলে প্রেমিক বা প্রেমিকা জুটলেও জুটে যাবে কিন্তু বন্ধু পাওয়া খুব দুষ্কর ব্যাপার।


এই বন্ধু, বন্ধুত্ব, আমলকী গাছের ফাঁকে বসন্ত বৌরির লুকিয়ে থাকা, ওই পাখির দীঘল চোখের মিষ্টি চাওনি, সেই গাছের ডালে নিস্তব্ধ দুপুরে ঠকঠক আওয়াজ,সেই রতনপল্লীর নির্জন গা ছমছম করা রাস্তা, ভোরবেলায় মিষ্টি ফুলের মাতাল করা গন্ধ, সেই দূরে ছাতিম তলার হাতছানি, গরম কালে ভোরবেলায় ফাঁকা রাস্তায় আম কুড়িয়ে ঘরে ফেরা, কালবোশেখীর ঝড় এলেই পাকা আম এর খোঁজে ব্যাগ নিয়ে  রাস্তায় বেরিয়ে পড়া, এই সব আর পাবো কোথায়। সব যে হারিয়ে গেছে বহুদিন আগেই। 

সেই আমলকী-বন কাঁপে, যেন তার বুক করে দুরু দুরু।
পেয়েছে খবর, পাতা-খসানোর সময় হয়েছে শুরু।

সত্যিই অসাধারণ এই লাইন লিখে গেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমলকী বন কাঁপছে তার বুক দুরু দুরু করছে। কারণ পাতা খসানোর সময় যে শুরু হয়েছে সে জেনে গেছে ইতিমধ্যেই। যাকগে আজ সাদা জীবনের কালো কথায়, সেই আমলকী গাছের বন্ধুত্বের এক অমলিন সম্পর্কের কথা লেখার ইচ্ছা হলো আমার হঠাৎ করেই। এতদিন যে সম্পর্ককে লুকিয়ে চুরিয়ে রেখে দিয়েছিলাম। আজ মনে হলো সেটা আর লুকিয়ে রেখে লাভ কি। জনসমক্ষে তাকে প্রকাশ করে দেওয়াই ভালো। 

 হ্যাঁ, সেই বিখ্যাত দীপেন্দ্র গোস্বামীর কথা আজ আমার এলোমেলো এলেবেলে  টোটো চালকের জীবনে আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে। যে কথা হয়তো এত তাড়া তাড়ি লিখতাম না আমি। কিন্তু একটা ফোন, কিছু কথা, কিছু ঘটনার পর মনে হলো কি আর হবে লুকিয়ে লুকিয়ে রেখে না হয় সবাইকে জানিয়েই দি খোলা জানলার মত করেই। সবাই জানুক যে অনেকে যা বলেন ও বা কেউ কেউ জানেন যে ওর জন্যেই নাকি আমি চব্বিশ ঘণ্টার কাজ ছেড়ে চলে এসেছিলাম সেটা কিন্তু ঠিক নয়। সেই কথা আমি আগেও লিখেছি অনেকবার। যদিও আজ আমি সেই কথা লিখতে বসিনি। আমি শুধু এটা লিখতে বসলাম করোনা কালের সেই কিছু দিনের কথা, আলাপ, একটু একটু করে কেমন সেটা শক্ত হয়ে যাওয়া আর জমাট হয়ে যাওয়া এক সম্পর্কের গল্প। 

যদিও অনেকেই ভাবেন কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই আমার এই ব্লগ লেখা। কাউকে খুশি করা আর কাউকে অখুশি করার জন্যে আমার এই লেখা লেখা খেলা করা। বেকার জীবনের এই টোটো চালকের এই একটা রাতদুপুর হলেই ভূতের মতো খেলতে নামা মাঠের বাইরে চলে গিয়েও। আর সেই নকল মাঠে নামার মজা লুটে বেঁচে থাকা। সে আপনাদের যার যা মনে হয় ভাবতে পারেন বা বলতে পারেন। তাতে আমার কিছুই হবে না আর আসবেও না।

 আমি যেমন কাঠ বেকার হয়ে জীবন কাটাবো সেটাই কাটিয়ে যাবো। আর সেও হয়তো একভাবেই জীবন কাটাবে। কিন্তু আমরা দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে আলগোছে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবো। ক্ষেতের সবুজ তাজা পিয়াঁজকলি, কচি ঢেঁড়স, কচি লাউ, কচি কালো বেগুন, আর সবুজ কচি ডুমুরের গল্প করে। খারাপ নয় কিন্তু বেশ কি বলেন। আমলকী গাছের বন্ধুত্বে এমন গল্পই তো স্বাভাবিক ঘটনা। হ্যাঁ , আজ সেটা লিখতেই কলম ধরলাম আমি। শুধু হয়তো কলকাতার এক বিখ্যাত সাংবাদিক ও লেখকের ফোন না পেলে এই সব কথা লিখতাম না এত কিছুই। 

কারণ আমি যখন স্বেচ্ছায় কাজ ছেড়ে এই মিডিয়ার মাঠের বাইরে চলে গেলেও সে যখন আমায় ডেকে পর পর দু বার, আবার কলকাতা টিভিতে কাজ দিলো বেশ ভালো লাগলো আমার। আবার সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে ঢোকার ছাড়পত্র পেলাম আমি। বেশ ভালই লাগলো কিন্তু। সেই পুরোনো অফিস, সেই পুরোনো অ্যাসাইনমেন্টের টেবিল, সেই পুরোনো দিনের স্মৃতি, সেই দৌড়ঝাঁপ মনে পড়ে গেলো অনেক কথা। 

যাই হোক ও আমায় বহুদিন পর একটা গতিময় জীবন দিয়েছিল। যে জীবনটা হয়তো আমরা দুজনেই আবার ফেরত পেতে চাইছি খুব বেশি করে। আর সেটা জানতেই কলকাতা থেকে আসা বিভিন্ন লোকজন এর ফোন পেয়ে আমার বেশ মজা লাগলো আজ। এই আপাত স্থবির জীবনে কেমন যেন একটু হেমন্তের পাকা ধানের শীষে দোলা লাগলো। তবু কেউ জানতে চেয়ে ফোন করে এটাই বা কম কী টোটো চালকের জীবনে এর প্রাপ্তি অনেক বেশি কি বলেন আপনারা। 

জানিনা আমি যেটা ওর কাছে চেয়েছি সেটা হবে কি না এই জীবনে। ওর মোবাইল ফোন থাকবে আমার কাছে আর বহু পুরোনো দিনের বন্ধু বান্ধব ওকে ফোন করবে আর আমি সেই ফোন ধরবো। ও পাশে বসে থাকবে আর মিটি মিটি হাসবে আমার দিকে তাকিয়ে। কি মজা যে হবে সেদিন। সত্যিই যদি এমন কোনো দিন আসে তাহলে বেশ ভালই লাগবে। বেশিদিন এর বন্ধুত্ব গড়ে না উঠলেও এই দাবি করতে আমি যেমন কোনো দ্বিধা করিনি, সঙ্কোচ বোধ করিনি। আর ও নিজেও বোধহয় বলেনি বা ভাবেনি যে কেনো এটা কেনো দেবো তোমায় আমি। আসলে আলাপ পরিচয় কুড়ি বছর বা ত্রিশ বছর হলেও এমন কথা বলার সাহস দেখানো যায়না সবাইকে।

সেই প্রেস ক্লাবে বসে দুজনের আপনমনে গল্প করা। কত চেনা মানুষের আনাগোনা আর পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া। যারা একদিন ওর মুখের কথা শুনবে বলে দাঁড়িয়ে থাকতো অফিসে লাইন দিয়ে আজ তারাই যে কত দূরে সরে গেছে। সত্যিই জীবন বোধহয় এমনই হয়। আর তাই সেই কঠিন কঠোর শক্ত নারকেল নাড়ুর জীবনের মাঝে একটু অন্য ধরনের জীবনের গল্প লিখতে ইচ্ছা হলো আমার এই রাতের বেলায়। 

যে বেকার জীবনে আর যাই হোক প্ল্যান করে, ভেবে চিন্তে, হিসেব কষে কোনো কথা বলা নেই। যে জীবনে জড়িয়ে আছে আমলকী গাছের হিমশীতল ছায়া, পাখির কিচির মিচির, পাতার ঝিরি ঝিরি শব্দ, হয়তো সেই শব্দে দুজনের গভীর গোপন যন্ত্রণা,কষ্ট, ব্যাথা, লুকিয়ে আছে গভীর সংগোপনে আড়াল করে ওই বসন্তবৌরির মতই। তবু সব কিছুকে বুকের মাঝে চেপে , সবার হাসি ঠাট্টা তামাশাকে উপেক্ষা করে আমরা দুজন বেঁচে আছি শুধু সেই আমলকী গাছের বন্ধুত্বকে সঙ্গী করে। যেনো কোনোদিন এই সম্পর্কে চির না ধরে। 

আমলকী গাছের বন্ধুত্ব - অভিজিৎ বসু।
তেশরা নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্যে ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...