একটা বহু পুরোনো ছবি দেখে আমার মনে হলো এই সাদা জীবনের কালো কথায় এই ছবি আর একজন বিখ্যাত মহিলা সাংবাদিককে নিয়ে কিছু কথা লেখা যেতে পারে। আসলে ছবিময় জীবন আর জীবনময় ছবির প্রভাব আমাদের বারবার তাড়া করে ফেরে এই আমাদের ছোট্ট কদিনের জীবনে। দিনে, রাতে, দুপুরে, সন্ধ্যায় সব সময় দরজায় ঠকঠক আওয়াজ করে আর কি। আমি ভাবি দরজা বন্ধ করে আগল তুলে চুপটি করে ঘাপটি মেরে বসে থাকবো আমি। না, কিন্তু পারি না আমি কিছুতেই চুপ করে বসে থাকতে দরজা বন্ধ করে।
বহু পুরোনো সেই পোদ্দার কোর্টের চব্বিশ ঘন্টা অফিস এর একটি ছবিতে সবার সাথে দাঁড়িয়ে থাকা এই আমি। যদিও সেটা স্বর্ণযুগের অফিস নয়। যে ছবি ওলটপালট করে দরজা ভেঙে দুদ্দাড় করে ঢুকে পড়ে কেমন করে এই রাতের অন্ধকারে আমার মনের গহন বনে। যে ছবিতে দেখলাম আমার বহু পুরোনো বস অনির্বাণ চৌধুরীর একদিকে আমি দাঁড়িয়ে আছি আর তার একটি হাত আমায় আগলে ধরে আছে কাঁধের ওপর। বেশ ভালো লাগলো ছবিটা দেখে আমার। যদিও আজ আমি বাতিল এর দলে আর তাঁর এই বিখ্যাত হাত এখন অন্যজনের কাঁধে দন্ডায়মান। যারা আজ বাংলা মিডিয়ার আইকন হয়ে হাসি মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক ওদিক। উজ্জ্বল আর আনন্দের ঝিলিক মারা সেই হাসি দেখে বেশ ভালই লাগে আমার। থাক এসব না বলা কথা, বেশি না বলাই ভালো কি বলেন আপনারা। অকথিত থাক সেই সব কথা।
আর অন্য পাশে একসময়ের বিশ্বস্ত সেই বর্তমানের বিশিষ্ট সাংবাদিক ডেপুটি এডিটর থেকে ক্রমেই আকাশ পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া সেই ম্যানেজিং এডিটর সেই ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক। এডিটর এর বড়ো ভরসার বড়ো কাছের সেই ধ্রুব। যাকে চব্বিশ ঘণ্টা নিয়ে আসার আগে এডিটর এর জনমত সমীক্ষায় কতজন যে কত কিছুই বলেছিল সেসব আজ অতীত স্মৃতি মাত্র। এডিটর এর দুপাশে দুজনে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। ঠিক যেনো পিলার বা স্তম্ভের মতো। বেশ ভালই লাগলো টোটো চালকের এই বহু পুরোনো ছবি দেখে। বাংলার দেশের সেরা বিখ্যাত সাংবাদিকদের সাথে ছবি দেখে এই , রাতবিরেতে কেনো আপ্লুত হলাম আমি। যে ছবি আমায় মনে করিয়ে দিলো টোটো চালকের জীবনের আগে আমার একটা সুন্দর ফেলে আসা জীবন ছিল। যে জীবনের কিছু কথা, কিছু স্মৃতি আমায় রাতের বেলায় কাতর করে। যা আজও ঝলমল করে আমার স্মৃতি জুড়ে আজও বিরাজ করছে জ্বল জ্বল করে আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে।
যদিও এই লেখা যাকে নিয়ে লিখবো বলে ভেবেছি সেটার সাথে এই ভূমিকার কোনো যোগই নেই। কিন্তু যাঁকে নিয়ে এই লেখা আজকে। তার জন্য আমি আগাম অনুমতি চেয়ে নিয়েছি আমি অনেক আগেই তাঁর কাছ থেকে। সেই বিখ্যাত মহিলা সাংবাদিক এর কাছ থেকে একেবারে মৌখিক নয়, লিখিত অনুমতি নিয়েছি আমি। যাতে কোনোভাবেই সেই আগের একদিন একটি রাজনৈতিক খবরে তাঁর ফোন না নিয়ে কেনো নবান্নের রিপোর্টার এর ফোন নেওয়া হয়েছে তার জবাবদিহি করতে গিয়ে আমার মত অকুতোভয় সাংবাদিক এর প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়েছিল। যার জন্য অ্যাসাইনমেন্টের চেয়ারে বসে সেদিন আমার প্রায় চাকরি চলেই গেছিলো আর কি আর একটু হলেই।
কি ভয় নিয়ে আর টেনশন নিয়ে যে সেই কটা বছর চাকরি করতে হয়েছে আমায় সেই সময় সেটা একমাত্র আমিই জানি। যা আমি আমার ত্রিশ বছর ধরে রিপোর্টার জীবনে এত ভয় পেয়ে কাজ করিনি কোনদিন ফিল্ডে। একবার ডেপুটি এডিটর এর কাছে আর তারপর সোজা এডিটর অনির্বাণ চৌধুরীর ঘরে ঢুকে পড়া। কেনো এমন ভুল হলো এ্যাসাইনমেন্ট এর। তার সঠিক বিচার চাই। যেটা প্রতিদিন আমাদের ওপর চাপ আসতো নানা প্রান্ত থেকে। সেই চাপ এর গল্প লিখবো একদিন। বাংলা মিডিয়ার শিরদাঁড়া নয় বাথরুম অ্যাসাইনমেন্টের আসল অবস্থা আর আসল গল্পকথা। যদিও সেই যাত্রায় আমার চাকরি বেঁচে যায় আর কি। হয়তো বসদের জন্য বেঁচে যাই আমি।
হ্যাঁ,কিছু কিছু মানুষ এই মিডিয়াতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন যাদের বস ভাগ্য খুব ভালো বরাবর। সেটা যদিও তাঁরই কথা আমার নিজের নয়। আর তার বাস্তবিক আক্ষরিক প্রমাণ যেমন আমরা হাতে নাতে পেয়েছি বহুবার তেমন তার নানা ছবির টুকরো তাঁর ফেসবুকের কোলাজে দেখলাম। সেটাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে নানা রূপে, নানা ভাবে। সেই নানা নামী চ্যানেলে কাজ করা, জাতীয় সংবাদমাধ্যমের এজেন্সীতে কাজ করতে করতে হঠাৎ জী গ্রুপের চ্যানেলে যোগদান করা। আর তারপর নিজের অধ্যবসায় আর নিষ্ঠা আর কর্ম কৃতিত্বের জোরে অন্যদের সবাইকে পিছনে ফেলে দিয়ে শুধুই দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা সামনের দিকে। দুই বস ডেপুটি এডিটর আর এডিটর এর কাছের মানুষ হয়ে কাজের জোর দেখিয়ে নিজের পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়া। যাতে কিছুটা হলেও সেই সময় এই যৌথ পরিবারের চিফ রিপোর্টার কিন্তু সেটাকে মেনে নিতে পারেন নি মনে প্রাণে। বহু ক্ষেত্রেই যেটা নিয়ে কিছুটা মান আর অভিমান পর্ব চললেও পরে সেটা মুড়ি খেয়ে মিটে যেতো দুজনের মধ্যে।
যাকগে এসব কথা বাদ দিন। সেই বিখ্যাত মহিলা সাংবাদিক যে পশ্চিমবাংলায় সর্ব প্রথম বাংলা মিডিয়াতে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এর সাক্ষাৎকার নিয়ে হৈ চৈ হুল্লোড় ফেলে দিলেন একদিন। হ্যাঁ, চব্বিশ ঘন্টা ছেড়ে সে তখন নিউজ এইট্টিন বাংলা চ্যানেলের বড়ো পদে কর্মরত সেই তাঁর মেন্টর ধ্রুবর হাত ধরে। দুর থেকে সেই সাক্ষাৎকার দেখে আমার বেশ ভালো লেগেছিল সেদিন। যাক আমার পরিচিত একজন এই ভাবে নিজের কর্মদক্ষতায় এগিয়ে যাচ্ছে এটা অবশ্যই গর্বের বিষয়, আনন্দের কথা। সেই আমাদের সবার চেনা রিপোর্টার কমলিকা সেনগুপ্ত। জানি তিনি কি মনে করবেন বা করতে পারেন ভেবেই আগে থাকতেই তাই অনুমতি নিয়ে এই লেখার জন্য কলম ধরলাম আমি আজ।
কমলিকার এই পাগলের মত ছুটে বেড়ানো নিউজ এর জন্য। এই ওর একটা স্টোরি যাওয়ার জন্য লেগে থাকা ডেস্কের লোকদের কাছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ওর এই বার বার ঘ্যান ঘ্যান করা চ্যানেলের কর্তাদের কাছে। নিজেকে বারবার প্রমোট করা অফিস এর বসদের কাছে। এটাই ওর আসল ইউএসপি। যা আজ ওকে সেই ছোটো চ্যানেল আকাশ এর সীমানা ছাড়িয়ে আজ ওকে এক বৃহৎ আকাশে পৌঁছে দিয়েছে। যেটা হয়তো ওর সেই চব্বিশ ঘণ্টার অনেক সহকর্মী যারা ওর সামনে মুখে হাসি রেখে কথা বললেও, হিংসা করতো আড়ালে আবডালে সেটা তারা কিন্তু ওর মতো এগিয়ে যেতে পারেনি কেউ।
আসলে বস এর কাছের হলেও, বস এর প্রিয় হলেও, বস এর হাত তাঁর কাঁধের ওপর থাকলেও, বস ভাগ্য ভালো হলেও আকাশের ওপরে ওঠার জন্য আরও কিছু পরিশ্রম লাগে যেটা ওর সাংবাদিক জীবনে ছিল। আর তাই বোধহয় আজ ও কেমন তড়তড়িয়ে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে গেছে জাতীয় চ্যানেলের বুম হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক সেদিক। যেটা দেখে ওর এই ঝলমলে সাংবাদিক জীবন দেখে আমার মনে হলো কিছু লিখে ফেলি। আমার এই এলোমেলো, এলেবেলে জীবনে, যেখানে ওপরে ওঠা নেই, যেখানে খবর নিয়ে পাগলামো নেই, যেখানে আর কেনো এর ফোনো না নিয়ে অন্য কারুর ফোন কেনো গেছে চ্যানেলে তার জন্যে সেই ভয় পাওয়া নেই। শুধু এই স্থবির বেনাপোল এর জীবনে আছে শুধু মানুষকে দেখো, জীবনকে দেখো, জীবনই হলো সব থেকে বড় শিক্ষক।
সেই কথাকে আপ্তবাক্য করেই, আমি আজ শুধু জীবন দেখার কাজ করে চলেছি। আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায়।
আমাদের কমলিকা - অভিজিৎ বসু।
চৌঠা নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্যে ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন