সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলার বুলবুলি পাচার যোগীরাজ্যে

খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বর্গি এল দেশে।
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কিসে?
ধান ফুরল, পান ফুরল, খাজনার উপায় কী?
আর ক’টা দিন সবুর কর রসুন বুনেছি।।
ধনিয়া পিঁয়াজ গেছে পচে সর্ষে ক্ষেতে জল।
খরা-বন্যায় শেষ করিল বর্ষার ফসল।।
ধানের গোলা, চালের ঝুড়ি সব শুধু খালি।
ছিন্ন কাপড় জড়িয়ে গায়ে শত শত তালি।

সেই কবেই তো আমরা বুলবুলির ধান খাওয়ার কথা গান শুনেছি ছোটো বেলায় । হ্যাঁ, এই গান শুনিয়ে বর্গি আসার ভয় দেখিয়ে ছোটো বেলায় মা, ঠাকুমারা সব আমাদের ঘুম পাড়াতেন। আমরাও কেমন ভয়ে ভয়ে ঘুম জড়ানো চোখে শুয়ে শুয়ে এই ছড়া শুনতাম। সেই বাংলার বুলবুলি পাখি পাচার হয়ে যাচ্ছে ট্রেন পথে যোগিরাজ্যে। কারণ এই বুলবুলি পাখি চড়া দামে বিকোবে আসন্ন কুম্ভ মেলায়।  

হ্যাঁ, আপনি ঠিক শুনছেন একদম ভুল নয় বাংলার বুলবুলি পাখি পাচার হচ্ছে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ ও কানপুরে যা আগত কুম্ভমেলায় বিক্রির উদ্দেশ্যে স্টক করছে কিছু পাখি মাফিয়া। উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলা থেকে ভয়ানক ভাবে এই পাখি পাচার হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের কিছু পাখি পাচারকারী বনগাঁ, চাকদহ, আকাইপুর, মাঝের গ্রাম, বেথুয়াডহরি ও কৃষ্ণনগরে ঘাটি গেড়েছে। তারা এই সমস্ত অঞ্চলের গ্রামাঞ্চলের কিছু অসাধু লোকদের টাকার লোভ দেখিয়ে বুলবুলি পাখি ধরাচ্ছে। এটা চলবে মকর সংক্রান্তি পর্যন্ত। 


এই মাসের দশ তারিখে এরকমই একটি অপারেশনে ১৫০ টি বুলবুলি পাখি যা রানাঘাট থেকে উত্তরপ্রদেশে পাচারের সময় শিয়ালদহ আজমের এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার করা হয়। বনদফতর এই পাখি ধরে ট্রেনের ভিতর থেকে। পাচারকারীরা বাদ দিচ্ছেন না বুলবুলি পাখিকেও।

বাংলা বুলবুল যার বৈজ্ঞানিক নাম Pycnonotus cafer লালপুচ্ছ বুলবুলি বা কালচে বুলবুলি Pycnonotidae (পাইকনোনোটিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Pycnonotus (পাইকনোনোটাস) গণের এক প্রজাতির অতি পরিচিত দুঃসাহসী এক পাখি। বুলবুলি হিসেবে এরা সুপরিচিত। পাখিটি পূর্ব, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয়। বাংলা বুলবুলের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ দক্ষিণ আফ্রিকার নিবিড়পিঠ পাখি। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ৪১ লাখ ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। পৃথিবীতে এদের মোট সংখ্যা কত তা এখনও অজানা। লড়াকু পাখি হিসেবে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি রয়েছে পাখিটির। বাংলার শহর-নগর-গ্রামে-গঞ্জে প্রচুর পরিমানে বাংলা বুলবুল দেখা যায়। বাংলা সাহিত্যের গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও লোকগাঁথায় বার বার এসেছে এ পাখিটির নাম।
এই বাংলা বুলবুল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় পাখি। এই এলাকার বাইরে চীনেও এদের দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, মায়ানমার ও ভিয়েতনাম বাংলা বুলবুলের স্থায়ী আবাস।


বাংলা বুলবুল আমাদের অতি পরিচিত ছোট বাদামি রঙের এক বৃক্ষচারী পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ২০ সেন্টিমিটার, ডানা ১০ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ২ সেন্টিমিটার, লেজ ৯.৫ সেন্টিমিটার ও পা ২.২ সেন্টিমিটার। ওজন ৪২ গ্রাম। মাথার কালো ঝুঁটি দেখে খুব সহজেই এদের শনাক্ত করা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা কালো বা কালচে-বাদামি। বাদামি দেহের শেষাংশ ও ডানার প্রান্ত কালচে-বাদামি। পেট অপেক্ষাকৃত ফিকে বাদামি। দেহতলে এবং কখনও কখনও উপপ্রজাতিভেদে পিঠে মাছের আঁশের মত ফিকে দাগ থাকে। পালকের গড়ন আঁশের মত বলে এমনটা হয়। লেজ বাদামি হলেও লেজের আগা কিছু দূর গাঢ় বাদামি হয়ে প্রান্ত একদম সাদা। লেজের গোড়ার দিকটা সাদা। এর দেহের সবচেয়ে দৃষ্টব্য ও বিচিত্র স্থানটি হল এর টকটকে লাল অবসারণী-ঢাকনি। এ লাল অবসারনীর জন্যই এর ইংরেজি নাম হয়েছে Red-vented Bulbul।

বাংলা বুলবুলের ঠোঁট দূর থেকে কালো দেখালেও তা আসলে কালচে-নীল। চোখ কালচে বাদামি। পা ও পায়ের পাতা সামান্য বাদামি-কালো। মুখের ভেতরটা ধূসর, বেগুনি ও হলুদে মেশানো। স্ত্রী ও পুরুষ বুলবুল দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ অপেক্ষা কৃত হালকা।

বাংলা বুলবুল প্রচণ্ড লড়াকু পাখি। লড়াইবাজ পাখি হিসেবে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি ছিল এর। ইরান, ইরাক আফগানিস্তানের কোথাও কোথাও এখনও বুলবুলির লড়াই হয়। বাংলাদেশেও একসময় এদের লড়াই হত। শুধু পোষা বুলবুল নয়, বুনো বুলবুলও লড়াইয়ে মেতে ওঠে অনেকসময়। লড়াইয়ে এতই মশগুল হয়ে পড়ে যে কখনও কখনও শিকারীর কবলে পড়ে যায়।


বাংলা বুলবুল শহর, গঞ্জ, গ্রাম, পাতাঝরা বন, প্যারাবন, গ্রামীণ বন, বনের প্রান্ত, ক্ষেতখামার ও বাগানে বিচরণ করে। ঝোপঝাড় ও গাছের পাতায় এরা খাবার খুঁজে বেড়ায়। তীব্র রাসায়নিক পদার্থ এরা এড়িয়ে চলে। এদের খাদ্যতালিকার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে পোকামাকড়। এছাড়া ফুলের পাপড়ি মধু ও ফলও খায় এরা। প্রয়োজনে ছোট সরীসৃপও খায়।
বিজ্ঞানীরা পাখি নিয়ে গবেষণা করার একটি পর্যায়ে লক্ষ্য করেন যে কিছু কিছু পাখি ভিটামিন সি হজম করতে পারে না৷ বাংলা বুলবুল হল সেই পাখি যার মধ্যে বিজ্ঞানীরা সর্বপ্রথম এই গুণটি দেখতে পান৷ আগাছাজাতীয় গাছের বীজও এরা খায়। সচরাচর জোড়ায় জোড়ায় বা ছোট দলে ঘুরে বেড়ায়। উড়ন্ত শিকার ধরার সময় এরা সামান্য উড়ে আবার মাটিতে ফিরে আসে।

এপ্রিল-আগস্ট বাংলা বুলবুলের প্রধান প্রজনন মৌসুম। কখনও কখনও সেপ্টেম্বর পর্যন্তও এরা ডিম পাড়ে, ছানা ফোটায়। একজোড়া বাংলা বুলবুল এক প্রজনন মৌসুমে একাধিকবার ছানা তোলে। এসময় পুরুষ বুলবুল আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। পুরুষ বুলবুল মাথার ওপর ডানা মেলে ধরে ও স্ত্রী পাখির দিকে লেজ থড়িয়ে দিয়ে মনোরঞ্জনের চেষ্টা করে। বাসা বানাতে সময় লাগে ২-৫ দিন। সাধারণত এরা ছোট ঝোপঝাড়ে বাসা বানায়। এছাড়া গাছের গর্ত, ঝাপালো গাছ, নদীতীরের গর্ত, ভাসমান কচুরিপানা, বাসা-বাড়ির কার্নিশ এমনকি বাসের মধ্যেও বাসা বানায়। 

বাসার উচ্চতা ভূমি থেকে ৭-১০ ফুট উপরে হয়। ডাল, ধাতব তার, পাতা, কঞ্চি, ঘাস, চুল ইত্যাদি মাকড়শার জালে জড়িয়ে পরিপাটি করে বাটির মত বাসা বানায় এরা। বাসা বানানো হয়ে গেলে তিনটি ডিম পাড়ে। ডিমগুলো হালকা গোলাপি রঙের, তার উপরে লাল লাল ছিটমত থাকে। ডিমের প্রশস্ত দিকে ছিট তুলনামূলক ঘন। ১৪ দিনের মাথায় ডিম ফুটে ছানা বের হয়। বাবা-মা উভয়েই সন্তান দেখাশোনার ভার নেয়। কিন্তু সেই বাংলার বুলবুলি পাচার হয়ে যাচ্ছে যোগী রাজ্যে। বর্গির বেশ ধরে পাচারকারীরা ভালই কাজ চালাচ্ছে তারা।


বাংলার বুলবুলি পাচার যোগিরাজ্যে - অভিজিৎ বসু।
তেইশ নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য গুগল ও নান্টু।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...